Announcement

Collapse
No announcement yet.

ফিতনার আত্মপ্রকাশ

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ফিতনার আত্মপ্রকাশ

    হযরত হুযাইফা রা. বর্ণনা করেন,
    আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে বলতে শুনেছি,মানুষের অন্তরে চাটাইয়ের সুতার মতো ফেতনা ঢেলে দেয়া হবে |
    (অর্থাৎ চাটাই যে সুতা দ্বারা বানানো হয়,তা যেমন পরস্পর সংযুক্ত থাকে এবং সংখ্যা ও বেশি হয়,তেমনি এ ফেতনা ও একের পর এক বিপুল সংখ্যায় আসবে।)
    সুতরাং যে অন্তর ফেতনাগুলোকে গ্রহণ করবে,সে অন্তরে একটি কালো দাগ পড়বে, আর যে অন্তরে সকল ফেতনা দ্বারা প্রবাহিত হবে না,তাতে একটি সাদা দাগ পড়বে।
    মোটকথা,দুই ধরনের অন্তর হবে,একটি হবে মর্মর পাথরের মতো সাদা,যতদিন আসমান-জমিন কায়েম থাকবে,ততদিন ফেতনা একে ক্ষতি করতে পারবেনা।
    দ্বিতীয় টি হবে কাল ছাইয়ের মত এবং উল্টানো পাত্রের মতো, যাতে কিছু থাকে না।
    এ অন্তর না ভালো বিষয় জানবে,না মন্দ বিষয়ে কে মন্দ মনে করবে।শুধু জানবে প্রবৃত্তি পূজা যা তার অন্তরে গেঁথে গেছে।
    (মেশকাত: হাদিস নং৫১৪৫, সহীহ মুসলিমের সূত্রে)

    এ হাদীসে বর্ণিত তিনটি ভবিষ্যৎবাণীকে পূর্ণ হতে আমরা নিজ চোখে দেখেছি:

    ১. অধিক হারে লাগাতার ফেতনা প্রকাশ পাওয়া।
    এ ফেতনা আমাদের আকিদায়, আমাদের আমল ও ইবাদতে ও আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবন স্পষ্ট চোখে পড়ছে।
    আগত প্রতিদিন নতুন নতুন ফিতনার সংবাদ প্রদান করে।

    ২. ফেতনা গ্রহণকারী অন্তর কালো হয়ে যাবে এবং ভালো কে ভালো মনে করবে না।
    আজ আমরা দেখি,যে সকল কাজের কারণে অতীতের অনেক জাতির ওপর আযাব এসেছে,এখন মানুষ যে সকল মন্দ কাজকে মন্দ তো মনে করে না,বরং তারা নিজেদের অধিকার বলে দাবি করে।
    ব*্যভিচার,শয়তানের পূজা,মাপে কম দেওয়া ইত্যাদি পাপাচার পাশ্চাত্য পূর্ণ রূপ পেয়ে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে।
    মুসলমানদের মধ্যে প্রায় সকলে নিজ নিজ চিন্তা-চেতনাকে ধর্ম বানিয়ে এ ধোকায় লিপ্ত যে,এটাই তাদের মুক্তির উপায়।
    চিন্তার এ ফেতনা এতটাই ব্যাপক যে,এর মারাত্মক ফলাফলের ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ।
    সুদ কে হালাল মনে করে তারা ওপর ব্যবসার বুনিয়াদ রেখে বর্তমান বিশ্ব যে আযাবে নিপতিত,তা তো সবার নিকট স্পষ্ট।

    ৩. একটি জামাত সর্বদা কায়েম থাকবে,যারা এসকল ফেতনা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাবে এবং যাদের অন্তর মর্মর পাথরের মতো সাদা হবে।
    আসমান ও জমিন যতদিন বহাল থাকবে,ততদিন পর্যন্ত তাদের ওপর কোন ফেতনা প্রভাব ফেলবে না।
    এরা ঐ সকল লোক,যাদের আল্লাহ তাআলা কুরআন সুন্নাহ সহীহ ইলম দান করেছেন এবং তার উপর আমল করার তাওফিক দিয়েছেন।
    এমনি ভাবে সে সকল সাধারণ মানুষ,যাদের কে আল্লাহ তাআলা আখেরাতের ফিকির দান করেছেন;যারা দুনিয়ার নিন্দার পরোয়া না করে এই ধ*্যানে লিপ্ত যে,কিভাবে তারা স্বীয় প্রতিপালকের সন্তুষ্টি অর্জন করবে।
    আর যে সকল মোবাইল লীগ মানুষকে সঠিক দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব পালনার্থে নিজেদের ঘর-বাড়ী ও পরিবার পরিজনকে ছেড়ে দূর দূরান্ত সফর করে,তারাও কেয়ামত পর্যন্ত হকের উপর কায়েম থাকবে,ইনশাআল্লাহ।

    কেয়ামতের আগে কেমন ফেতনা হবে,
    এ ব্যাপারে বুখারী-মুসলিমে বর্ণিত একটি হাদীস:-
    হযরত উসামা বিন যায়েদ রাঃ বলেন,একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম মদিনার একটি উচু বাড়ীতে আরোহন করলেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের কে সম্বোধন করে বললেন,আমি যা দেখছি,তোমরা কি তা দেখতে পাচ্ছ?
    সাহাবীরা বললেন জি, না।
    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বললেন,আমি ফেতনা দেখছি যা তোমাদের বাড়িঘরের উপর বৃষ্টির মত বর্ষিত হচ্ছে!
    (সহিহ বুখারি : হাদিস নং ৭০৬০)
    এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম, তোমাদের বাড়ি ঘরের উপর' শব্দ ব্যবহার করে বৃষ্টির মত ফেতনার কথা বলেছেন ।
    বাড়ি ঘরের উপর ফেতনার বৃষ্টি এযুগের এমন একটি ফেতনা, যা ভয়াবহ প্রভাব আমরা স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছি।
    তবুও আমরা তা থেকে বাঁচার চিন্তা না করে এর বাহারি চমকে বিভ্রান্ত হয়ে সময় ও টাকা-পয়সা নষ্ট করে নিজেদের দুনিয়া ও আখিরাত কে বরবাত করছি ।
    এ ফেতনা টিভি,ভিসিআর ও ডিসের মাধ্যমে আমাদের ঘরে প্রবেশ করছে ।
    আমাদের আত্মমর্যাদাহীনতার প্রমাণ হল- আমরা যাআল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকৃষ্ট দুশমনদের সংবাদমাধ্যম দ্বারা নিজেদের সন্তান -সন্ততিকে তাদের শয়তানি আকিদা, চিন্তা-চেতনা ও অপসংস্কৃতির জালে ফাঁসিয়ে ফেলছি।
    পরিস্থিতি তো এমন যে,আমাদের নিকৃষ্ট দুশমন ভারত ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করতে নিজেদের টিভি চ্যানেলে এমন একটি নাটক সিরিয়াল দেখানো শুরু করছে,যাতে তারা সূক্ষ্মভাবে মূর্তি পূজার আকিদা ও মতবাদ প্রচার করছে।
    ভারাক্রান্ত মনে বলছি,এ সকল হিন্দি সিরিয়াল যে পরিমাণ গুরুত্বের সাথে আমাদের বাড়ি ঘরে দেখা যাচ্ছে,তাতে এর ভয়াবহ প্রভাবে ধর্ষণকারীর অন্তরে অচিন্তনীয় পরিবর্তন আসছে।
    এ সকল সিরিয়াল কে নতুন প্রজন্মের মানসিক অবস্থার সাথে মিল রেখে তৈরি করা হয়।
    যার ফলে তরুণ প্রজন্ম এক পর্ব দেখে পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য অস্থির হয়ে যায়।
    এ সকল সিরিয়াল শত শত পর্বে বিন*্যস্ত হয়ে থাকে।
    আমাদের শীশু-কিশোরদের অপরিপক্ক মাথা এ সব দেখে দেখে হিন্দুয়ানী রীতিনীতি ও আকিদার প্রতি ধীরে ধীরে আকৃষ্ট হতে থাকে।
    অপরদিকে এ কারণে পরিবারের শান্ত পরিবেশ ভীষণ প্রবাহিত হয়।
    আমার কাছে বেশ কিছু সংসারের খবর এসেছে,যেখানে এ সকল সিরিয়ালের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়ে বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়ে গেছে!
    স্বামী সারাদিন জীবিকার কাজে ব্যস্ত থেকে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে দেখতে পায়_ স্ত্রী ও বাচ্চারা সিরিয়াল দেখায় মগ্ন।
    সে খাবার চাইলে বা কোন জরুরী কথা বললেও তার বিরক্ত হয়।
    আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই মুসিবত থেকে মুক্তি দান করুন,এসকল ফেতনা থেকে আমাদের নিরাপদে রাখুন এবং আমাদের রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কে এই সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সম্পর্কে সতর্ক করুন।

    আমীন (সুম্মা আমীন)

  • #2
    আল্লাহ, ফিতনার সময় আমরা যেনো ঈমানের উপর অটল থাকতে পারি আমাদের তাওফীক দান করুন, আমীন।
    বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

    Comment

    Working...
    X