Announcement

Collapse
No announcement yet.

চলমান দ্বন্দ্ব-কলহের শেষ কোথায় :

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • চলমান দ্বন্দ্ব-কলহের শেষ কোথায় :

    চলমান দ্বন্দ্ব-কলহের শেষ কোথায় :

    ভুল ব্যাখ্যা ও দ্বীনের তাহরিফ নতুন কিছু নয়। তাবিয়িযুগ থেকে এর ধারাবাহিকতা চলে আসছে। তাহরিফ করেছে একদল। খণ্ডন করেছেন উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা। কেউ বুঝেছে, কেউ বুঝেনি। আল্লাহ যাদের হিদায়াত নসিব করেছেন, তারা ফিরে এসেছে। অন্যরা ধ্বংস হয়ে গেছে। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। সালাফের কর্মপন্থা এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিল। ফিরকায়ে বাতিলার মোকাবেলার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হবে, শক্তিবল ব্যয় করতে হবে, তা যেমন শরিয়াহ সমর্থন করে না, বিবেকও এর অনুমোদন দেয় না। এতে মুসলিমদের কোন্দল না কমে বরং আরও বৃদ্ধিই পায়। হিদায়াতের পরিবর্তে সংঘাত শুরু হয়।

    ইসলামের মেজাজ হলো, কাফিরদের মোকাবেলায় নিজেদের সর্বোচ্চ জান_মাল_মেধা_সময় সব ব্যয় করা। কিন্তু মুসলমানদের পারস্পরিক ইখতিলাফি ও খিলাফি বিষয়ে শুধু প্রমাণাদি ও আদিল্লার ওপর ক্ষান্ত থাকা। হ্যাঁ, কোথাও ফাসাদের চরম আশংকা থাকলে তথায় খলিফা শক্তি প্রয়োগ করবেন। এর বিপরীত অন্য কোনো কিছু করলে তা যেমন বাতিল আকিদা-বিশ্বাস মূলোৎপাটন করতে পারে না, সাথে ফিতনাকেও দমন করতে সক্ষম হয় না। মাঝে দিয়ে মুসলমানদের রক্তক্ষয় ও তাগুতদের বিজয় অর্জন হয়।

    আজ আমরা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এক দল আরেকদলকে যেভাবে আক্রমণ শুরু করি, কাট্টা কাফিরদের বিরুদ্ধেও আমাদের অধিকাংশ লোক এমন জোশ ও জজবা দেখাতে পারবে কিনা সন্দেহ। এভাবেই তাগুতদের অর্ধেক যুদ্ধ আমরাই করে দিচ্ছি। ওদের আর যুদ্ধ করার কীইবা দরকার! কেউ তাদের সত্যিকার বিরোধিতা করলেও তাদের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে, কী মুসলিম আর কী অমুসলিম, সবাই একযোগে তাদের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ি। সামরিকভাবে তো বটেই, মিডিয়া সন্ত্রাসের সাথেও আমাদের মুসলিম নামধারীদের থাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন। এই হলো বর্তমানে আমাদের অধিকাংশ মুসলিমদের করুণ হালত!

    তাহরিফের বিষয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে আশ্চর্য এক প্রান্তিকতা লক্ষ করা যায়। কী হক, আর কী বাতিল, উভয় পক্ষই শুধু বিপরীত পক্ষের তাহরিফগুলো নিয়েই আলোচনা করে। এগুলোকেই দ্বীন মনে করে জীবনের অধিকাংশ সময় এর পেছনে ব্যয় করে দেয়। কিন্তু নিজ দলের কারও ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ তুললে প্রথমে অভিযোগকারীর চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করা হয়। অপ্রাসঙ্গিক বিভিন্ন ইস্যু এনে তাকে চরমভাবে নাজেহাল করে তোলা হয়। মুতাদিল কিছু মানুষ বিষয়টি পর্যালোচনার পর্যায়ে ভাবলেও অন্যদের তীব্র আক্রমণ ও অশালীন মন্তব্যে সমর্থন তো দূরে থাক, বেচারা অভিযোগকারীর "ছেড়ে দে মা কেঁন্দে বাঁচি" অবস্থা হয়। এভাবেই অসংখ্য সত্য আমাদের অন্যায় আক্রমণে হারিয়ে যায়।

    একটি বিষয় আমাদের যত বেশি উপলব্ধি করা উচিত ছিল, বিষয়টি আমরা তত বেশি ভুলতে বসেছি। ইসলামে 'আল-ওয়ালা ওয়াল বারা' সম্পর্কে আমাদের মুসলিম সমাজের জাহালাত চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আপনি হয়তো সাধারণ মানুষের কথা ভাবছেন। না, আমি সাধারণদের কথা বলছি না। খাওয়াসের কথা বলছি। আপনি উপমহাদেশের প্রসিদ্ধ মাদরাসাগুলোতে গিয়ে সবচেয়ে ভালো উস্তাদ আর মেধাবী ছাত্রদের জিজ্ঞেস করে দেখুন, 'আল-ওয়ালা ওয়াল বারা' কী এবং মর্মার্থ ও হুকুম কী? দেখবেন, শতকারা প্রায় ৯৯% আপনার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকবে! বলবে এটা কী? মানতেকে 'হাইওয়ানে নাতিক' এর নাম শুনলেও এই বারো- চৌদ্দ বছরে তো এ অদ্ভুত শব্দটির সাথে কখনো পরিচয় ঘটেনি! এটা কাল্পনিক কোনো কাহিনী বলছি না; বরং এ চরম এক বাস্তবতা, যা আপনি চাইলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

    যখন আপনি 'আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা' কী, সেটাই বুঝবেন না, আপনি যখন জানবেন না কোথায় আল-ওয়ালার গুরুত্ব কী ও কেমন, কোথায় আল-বারার হুকুম ও প্রয়োগ হবে, তখন আপনি তাদের থেকে কীভাবে সংলগ্ন আচরণ আশা করেন। উগ্রতার সাথে যখন জাহালাত যুক্ত হয়, তখন সত্য ও হক তাদের থেকে হাজার মাইল দূরে অবস্থান করে। এমতাবস্থায় কে শোনাবে তাদের হকের বাণী? কে দেখাবে তাদের দূর দিগন্তের বিস্তৃত আলো?? কে বলবে তাদের তিক্ত ও লুকায়িত বাস্তবতার কথা??? আপনি এক তাহরিফ ঠেকাচ্ছেন, খুব ভালো কথা। কিন্তু এর জন্য যখন আপনি তাগুতের শরণাপন্ন হচ্ছেন, সেটা কি পেশাব দিয়ে ময়লা কাপড় ধোয়া হলো না? ময়লা থাকলে তো কমপক্ষে নামাজ পড়া যেত, কিন্তু পেশাবের দ্বারা পরিষ্কার করার পর যে তা নামাজেরও অনুপযোগী হয়ে গেল! এক ফুটো বন্ধ করতে গিয়ে আপনি কুড়াল মেরে পুরো ড্রামই ফাটিয়ে দিলেন! এমন প্রতিহত করার মানে কী? আরেক আবেগী শ্রেণি আছে, যারা মিছিল-মিটিং করে দুনিয়া জয় করে ফেলতে চায়! বাতিল প্রতিহত করতে চায়। এদের দেখে সত্যিই অবাক লাগে! এত সরল ও সহজ সমীকরণ?? তাগুতেরা এসব দেখে পর্দার আড়ালে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।

    আমরা যেভাবে পক্ষ-বিপক্ষ গোমরাহ প্রমাণ করতে মেতে উঠছি, এক পক্ষ আরেক পক্ষকে শক্তি দিয়ে ঘায়েল করছি, মেজরিটি পার্সেন্ট সময় এর পেছনেই ব্যয় করছি, ভয় হয়, না জানি আবার নব্য কোনো হালাকু খাঁ চলে আসে। সে সময়ের বাগদাদের সাথে বর্তমানের খুব বেশি অমিল দেখছি না; বরং ক্ষেত্রবিশেষে বর্তমান তো সে যুগকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাই নতুন হালাকু খাঁদের আগমন ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। জাতিকে কে বুঝাবে যুগের সংকটের কথা? বললেই তো এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীরা চেঁচিয়ে উঠবে। জানিয়ে দেবে, এটা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। এ ব্যাপারে আকাবিরের মানহাজ থেকে এক চুল পরিমাণ সরলেও নিশ্চিত গোমরাহি! এত সব ফতোয়ার ভিড়ে কীভাবে সতর্ক করব? কীভাবে উম্মাহকে জানাব, কী ভয়ংকর বিপদ সামনে অপেক্ষা করছে?

    শেষ একটি কথাই বলব, মাওলানা সাদকে বাতিল বলুন, জাকির নায়েককে দালাল বলুন, সালমান নদবিকে বিষফোঁড়া বলুন, তাবলিগকে অজাহাতি-ইতাআতিতে ভাগ করুন, মাদরাসাকে সরকারি-বেসরকারি করুন; মানলাম সব ঠিক আছে। শুধু ছোট্ট একটি প্রশ্ন রাখতে চাই, এভাবে ফিরকাবন্দি ও দলাদলি করে আখেরে আমরা কী পাচ্ছি? তাগুতের করুণায় বেঁচে থেকে আমরা দ্বীনের কী উন্নয়ন ঘটাচ্ছি?? গ্লোবাল ওয়ারের এ যুগে আমরা কতটা পিছিয়ে আছি, তা কি নীরবে-নিভৃতে কখনো ভেবে দেখছি??? আসলে না আমরা কুকুরের মতো করে হলেও বেঁচে থাকতে পছন্দ করি, এটাই মূল সমস্যা। বয়ান ও ওয়াজের ময়দানে টিপু সুলতানের ঐতিহাসিক উক্তি "শেয়ালের মতো হাজার বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সিংহের মতো একদিন বেঁচে থাকাই শ্রেয়" জোর গলায়ই বলে থাকি, কিন্তু মঞ্চ থেকে নামার পর আবার সে শেয়াল হয়েই তাগুতের পিছে পিছে দৌড়াই। এভাবেই চলছে আমাদের জীবনকাল। লক্ষ্য আর কত দূর? মানজিল আর কত দেরি?? এখনও কি আমাদের বোধদয় হবে না???

    আহ!!!
    #সংগৃহীত

  • #2
    মাশা-আল্লাহ্!

    সমসাময়িক একটি বিষয় তুলে ধরেছেন,খুব সুন্দর হয়েছে...
    আল্লাহ সুবঃ আপনাদের উত্তম যাঝা দান করুন ও আমাদের সকলকে দ্বীনের সহিহ বুঝ দান করুন, আমীন!
    বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
    কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

    Comment


    • #3
      আকিদাতুল ওয়ালা ওয়ালবারা ত খোদ আপনি দারুল উলুম দেওবন্দের দারুল-ইফতার ওয়েব সাইটে "আক্কীদা ও ইমানিয়াত"শিরোনামের ছাওয়াল-জওয়াব দেখুন, আপনার চোখ নিচেই থাকবে,উপরে উঠতে চাবে না।
      অবিরাম করাঘাতে বদ্ধ দরজাও খুলে যায়।

      Comment


      • #4
        যাজাকুমুল্লাহ আখি
        এত কিছুর পরেও আল্লাহর তাআলার রহমতে আমরা আশার আলোই দেখি ইনশাআল্লাহ

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ।
          আপনার কাজে আল্লাহ বারাকাহ দান করুন,আমিন।

          Comment


          • #6
            মাশাল্লাহ উত্তম বার্তা। যাজাকাল্লাহু খাইরান। স্যোশাল মিডিয়াতে শেয়ার করলাম ভাই

            Comment

            Working...
            X