সালাহউদ্দিন আইয়্যূবী ভাই জানতে চেয়েছেন-
[তাকি উসমানী সাহেব ও আরো কয়েকজন উর্দু ফাতওয়ার প্রণেতাগণ নতুন একটি দার আবিষ্কার করেছেন। তা হল: “দারুল আমান”। দারুল হরবে যদি মুসলিমরা নিরাপদে থাকতে পারে, তাহলে সেটা দারুল আমান। সেটার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যাবে না। তিনি নবী যুগে এর উদাহরণ দিয়েছেন হাবশাকে দিয়ে। যেহেতু সেখানে মুসলিমগণ নিরাপদে ছিলেন।
আরেকটি ব্যাপার হল: মুফতি শফী সাহেহবের মারিফুল কুরআনে সূরা কাসাসের একটি আয়াতের প্রাসঙ্গিক আলোচনায় তিনি বলেছেন: নিরাপত্তা চুক্তি দুই ধরণের; একটা হল: লিখিত বা ঘোষিত, আরেকটি হল: অঘোষিত বা অলিখিত। সূরা কাসাসের উক্ত আয়াতটি হল:
১৬ ) তিনি বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।”- কাসাস ১৫-১৬
তিনি এভাবে দলিল দেন যে: মূসা আলাইহিস সালাম যেই কিবতীকে হত্যা করেছিলেন, সে তো হারবীই ছিল। তাকে হত্যা করাতে দোষের কি? তথাপি কেন মূসা আলাইহিস সালাম এটাকে নিজের নফসের উপর জুলুম বিবেচনা করলেন?
এর উত্তরে তিনি বলেন: কিবতীদের সাথে যদিও লিখিত নিরাপত্তা চুক্তি হয়নি কিন্তু একসাথে পরস্পর মিলে মিশে নিরাপদে থাকার কারণে অলিখিত নিরাপত্তা চুক্তি হয়ে গেছে। এ কারণে এই হত্যার মাধ্যমে অনিচ্ছাকৃতভাবে মূসা আলাইহিস সালাম এই চুক্তিটি ভঙ্গ করেছেন।
এ হিসাবে তো ধরা হবে যে, আমাদের দেশে এবং সকল দেশে বসবাসকারী মুসলিমগণ ঐ দেশের কাফেরদের সাথে অলিখিত অঘোষিত চুক্তি করে ফেলেছে। তাই তাদেরকে হত্যা করা বৈধ হবে না।
এ দু’টি বিষয়ের সুন্দর উত্তর প্রয়োজন।]
উত্তর:
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
দারুল আমানের ব্যাপারে আপনি নিচের লেখাটা দেখতে পারেন:
দারুল আমানের প্রহসনের কবলে মুসলিম উম্মাহ!
আর অলিখিত চুক্তি তথা আমলী চুক্তির যে বিষয়টি মুফতি শফি রহ. থানবী রহ. থেকে বর্ণনা করেছেন, সেটা আগ্রাসী কাফেরদের বেলায় প্রযোজ্য নয়। আগ্রাসী কাফেরদের বিধান কা’ব বিন আশরাফের মতো, যাকে সাহাবায়ে কেরাম নিরাপত্তা ও আমান দেয়ার পরও হত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে ইবনে তাইমিয়া রহ. এর ফতোয়া আছে। আমাদের দেশের ও অন্যান্য দেশের কাফের ও মুরতাদ শাসকগুলো আগ্রাসী ও দখলদার কাফের। আমাদের উপর এরা চেপে বসেছে। যেকোন পন্থায় এদের কবল থেকে আমাদের নিজেদেরকে, নিজেদের ভূমি এবং দ্বীন ধর্মকে রক্ষা ও উদ্ধার করা আমাদের দায়িত্ব। এদের সাথে আমাদের কোন সময় কোন চুক্তি হয়নি। অধিকন্তু তাদের বিরুদ্ধে আমরা অনেক আগে থেকেই জিহাদের ঘোষণা দিয়ে রেখেছি। তারাও আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সর্বদা প্রস্তুত। আমরা যেমন তাদের নিরাপদ মনে করি না, তারাও আমাদের নিরাপদ মনে করে না। তারা সর্বদাই আমাদের তরফ থেকে ভয়ে থাকে। সামান্য থেকে সামান্য কোন সম্পৃক্তি কারো মাঝে দেখলেই তাকে বন্দী করে। জেলে দেয়। অমানবিক নির্যাতন চালায়। তাহলে আমাদের সাথে তাদের কিভাবে আমানের চুক্তি হল? বরং তারা আমাদের প্রকাশ্য দুশমন, আমরা তাদের প্রকাশ্য দুশমন।
অধিকন্তু যদি আমানের চুক্তি কখনও হয়েও থাকে- যদিও তা হয়নি কখনও- তবুও আমাদের উপর নির্যাতন করার কারণে, আমাদের শত হাজারো ভাই বোনকে বন্দী ও নির্যাতন করার কারণে আমান ভেঙে গেছে। এখন তাদের রক্ত আমাদের জন্য হালাল। থানবী রহ. বা শফি রহ. কেউই আগ্রাসী কাফের ও মুরতাদদের বেলায় এ ধরণের আমলী আমান গ্রহণযোগ্য হবে বলেননি। সেখানে শুধু এতটুকু আছে যে, কিছু কাফের ও কিছু মুসলমান যদি কোন হুকুমতের অধীনে পারস্পরিক আমান ও বিশ্বস্ততার সাথে একত্রে বসবাস করে, তাহলে একে অপরের উপর হামলা করা ও লুটপাট করা জায়েয হবে না। কারণ, এটাও গাদ্দারি। এটা আমরাও অস্বীকার করি না। এদেশের হিন্দুদের বেলায় হয়তো কথাটা কিছুটা প্রযোজ্য হতে পারতো- যদি তারা আমাদের উপর কোন জুলুম বা আমাদের নিয়ে কোন সমালোচনা না করতো। এরপরও একান্ত সাধারণ হিন্দু, যারা আমাদের কোন ধরণের ক্ষতি বা সমালোচনা করছে না এবং এদেশের মুরতাদ হুকুমতের পক্ষে বা ভারতের জুলুমের পক্ষে তাদের কোন সমর্থন নেই- তাদেরকে হত্যা করা আমরা ভাল মনে করি না। আর না এতে জিহাদের কোন ফায়েদা আছে। পক্ষান্তরে যারা আামদের দ্বীনি বা দুনিয়াবি কোন ক্ষতিতে বা সমর্থনে লিপ্ত, তাদের রক্ত হালাল। এ ব্যাপারে আপনি নিচের লেখাটি দেখতে পারেন-
পথভ্রষ্ট রহমানীর ফতোয়া: ভারতের মুসলমানদের জন্য ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নাজায়েয!!
আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা
উপরোক্ত আয়াতের যে তাফসীর থানবী রহ. করেছেন, আবুস সাউদ রহ. আয়াতের এক তাফসীরে সেটা উল্লেখ করেছেন। তবে বিভিন্ন কারণে এ তাফসীরের চেয়ে ঐ তাফসির সঠিক মনে হচ্চে, যা আবুস সাউদ রহ. সহ অন্যান্য মুফাসির করেছেন। সেটা হল, নবুওয়াতের দাওয়াত পৌঁছার আগে কোন কাফের হত্যাযোগ্য নয়। যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
যেহেতু মূসা আলাইহিস সালাম তখন নবী হননি এবং কিবতিদের কাছে নবুওয়াতের দাওয়াত পৌঁছেনি, তাই তারা হত্যাযোগ্য ছিল না।
দ্বিতীয়ত মূসা আলাইহিস সালাম কিবতিকে হত্যার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে অনুমতি প্রাপ্ত ছিলেন না। কাফেরকে হত্যা করা সব শরীয়তের বিধান নয়। যেমন ধরুন, নূহ আলাইহিস সালাম, হুদ আলাইহিস সালাম বা সালেহ আলাইহিস সালামের শরীয়তে জিহাদের বিধান ছিল না। তাদের হত্যার বিধান ছিল না। এ কারণে সেসকল নবীর কেউই তাদের উম্মতের কাউকে হত্যা করেননি- যদিও উম্মত তাদের অনেক কষ্ট দিয়েছে।
মোটকথা- কোন কাফেরকে হত্যার জন্য দু’টি বিষয় আবশ্যক:
ক. তার কাছে নবুওয়াতের দাওয়াত পৌঁছা।
খ. উক্ত শরীয়তে ঈমান আনয়নে অস্বীকারকারী কাফেরদের হত্যার বিধান থাকা।
উক্ত কিবতির বেলায় এর কোনটিই পাওয়া যায়নি। হ্যাঁ, কিবতি যেহেতু বনি ইসরাইলের লোকটার উপর জুলুম করছিল তাই তাকে বাধা দেয়া যেত। তবে হত্যা করা উচিৎ হয়নি। ভুলক্রমে হলেও হত্যাটা অনুচিত হয়েছে। মূসা আলাইহিস সালাম বুঝতে পেরেছেন, এ কাজটা শয়তানের তরফ থেকে হয়েছে। তাকে অত্যধিক রাগান্বিত করে কিবতিকে হত্যা করিয়েছে। এজন্য তিনি আল্লাহ তাআলার কাছে মাফ চেয়েছেন। ইনশাআল্লাহ এটাই এ আয়াতের সঠিক তাফসির। অধিকন্তু আগের তাফসিরও যদি ধরা হয়, তবুও সেটা আগ্রাসী কাফেরের বেলায় প্রযোজ্য নয়।
[তাকি উসমানী সাহেব ও আরো কয়েকজন উর্দু ফাতওয়ার প্রণেতাগণ নতুন একটি দার আবিষ্কার করেছেন। তা হল: “দারুল আমান”। দারুল হরবে যদি মুসলিমরা নিরাপদে থাকতে পারে, তাহলে সেটা দারুল আমান। সেটার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যাবে না। তিনি নবী যুগে এর উদাহরণ দিয়েছেন হাবশাকে দিয়ে। যেহেতু সেখানে মুসলিমগণ নিরাপদে ছিলেন।
আরেকটি ব্যাপার হল: মুফতি শফী সাহেহবের মারিফুল কুরআনে সূরা কাসাসের একটি আয়াতের প্রাসঙ্গিক আলোচনায় তিনি বলেছেন: নিরাপত্তা চুক্তি দুই ধরণের; একটা হল: লিখিত বা ঘোষিত, আরেকটি হল: অঘোষিত বা অলিখিত। সূরা কাসাসের উক্ত আয়াতটি হল:
وَدَخَلَ الْمَدِينَةَ عَلَى حِينِ غَفْلَةٍ مِنْ أَهْلِهَا فَوَجَدَ فِيهَا رَجُلَيْنِ يَقْتَتِلَانِ هَذَا مِنْ شِيعَتِهِ وَهَذَا مِنْ عَدُوِّهِ فَاسْتَغَاثَهُ الَّذِي مِنْ شِيعَتِهِ عَلَى الَّذِي مِنْ عَدُوِّهِ فَوَكَزَهُ مُوسَى فَقَضَى عَلَيْهِ قَالَ هَذَا مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ عَدُوٌّ مُضِلٌّ مُبِينٌ (15) قَالَ رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَغَفَرَ لَهُ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ (16)
“১৫ ) তিনি শহরে প্রবেশ করলেন, যখন তার অধিবাসীরা ছিল বেখবর। তথায় তিনি দুই ব্যক্তিকে লড়াইরত দেখলেন। এদের একজন ছিল তাঁর নিজ দলের এবং অন্য জন তাঁর শত্রু দলের। অতঃপর যে তাঁর নিজ দলের সে তাঁর শত্রু দলের লোকটির বিরুদ্ধে তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করল। তখন মূসা তাকে ঘুষি মারলেন এবং এতেই তার মৃত্যু হয়ে গেল। মূসা বললেন, এটা শয়তানের কাজ। নিশ্চয় সে প্রকাশ্য শত্রু, বিভ্রান্তকারী।১৬ ) তিনি বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।”- কাসাস ১৫-১৬
তিনি এভাবে দলিল দেন যে: মূসা আলাইহিস সালাম যেই কিবতীকে হত্যা করেছিলেন, সে তো হারবীই ছিল। তাকে হত্যা করাতে দোষের কি? তথাপি কেন মূসা আলাইহিস সালাম এটাকে নিজের নফসের উপর জুলুম বিবেচনা করলেন?
এর উত্তরে তিনি বলেন: কিবতীদের সাথে যদিও লিখিত নিরাপত্তা চুক্তি হয়নি কিন্তু একসাথে পরস্পর মিলে মিশে নিরাপদে থাকার কারণে অলিখিত নিরাপত্তা চুক্তি হয়ে গেছে। এ কারণে এই হত্যার মাধ্যমে অনিচ্ছাকৃতভাবে মূসা আলাইহিস সালাম এই চুক্তিটি ভঙ্গ করেছেন।
এ হিসাবে তো ধরা হবে যে, আমাদের দেশে এবং সকল দেশে বসবাসকারী মুসলিমগণ ঐ দেশের কাফেরদের সাথে অলিখিত অঘোষিত চুক্তি করে ফেলেছে। তাই তাদেরকে হত্যা করা বৈধ হবে না।
এ দু’টি বিষয়ের সুন্দর উত্তর প্রয়োজন।]
উত্তর:
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
দারুল আমানের প্রহসনের কবলে মুসলিম উম্মাহ!
আর অলিখিত চুক্তি তথা আমলী চুক্তির যে বিষয়টি মুফতি শফি রহ. থানবী রহ. থেকে বর্ণনা করেছেন, সেটা আগ্রাসী কাফেরদের বেলায় প্রযোজ্য নয়। আগ্রাসী কাফেরদের বিধান কা’ব বিন আশরাফের মতো, যাকে সাহাবায়ে কেরাম নিরাপত্তা ও আমান দেয়ার পরও হত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে ইবনে তাইমিয়া রহ. এর ফতোয়া আছে। আমাদের দেশের ও অন্যান্য দেশের কাফের ও মুরতাদ শাসকগুলো আগ্রাসী ও দখলদার কাফের। আমাদের উপর এরা চেপে বসেছে। যেকোন পন্থায় এদের কবল থেকে আমাদের নিজেদেরকে, নিজেদের ভূমি এবং দ্বীন ধর্মকে রক্ষা ও উদ্ধার করা আমাদের দায়িত্ব। এদের সাথে আমাদের কোন সময় কোন চুক্তি হয়নি। অধিকন্তু তাদের বিরুদ্ধে আমরা অনেক আগে থেকেই জিহাদের ঘোষণা দিয়ে রেখেছি। তারাও আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সর্বদা প্রস্তুত। আমরা যেমন তাদের নিরাপদ মনে করি না, তারাও আমাদের নিরাপদ মনে করে না। তারা সর্বদাই আমাদের তরফ থেকে ভয়ে থাকে। সামান্য থেকে সামান্য কোন সম্পৃক্তি কারো মাঝে দেখলেই তাকে বন্দী করে। জেলে দেয়। অমানবিক নির্যাতন চালায়। তাহলে আমাদের সাথে তাদের কিভাবে আমানের চুক্তি হল? বরং তারা আমাদের প্রকাশ্য দুশমন, আমরা তাদের প্রকাশ্য দুশমন।
অধিকন্তু যদি আমানের চুক্তি কখনও হয়েও থাকে- যদিও তা হয়নি কখনও- তবুও আমাদের উপর নির্যাতন করার কারণে, আমাদের শত হাজারো ভাই বোনকে বন্দী ও নির্যাতন করার কারণে আমান ভেঙে গেছে। এখন তাদের রক্ত আমাদের জন্য হালাল। থানবী রহ. বা শফি রহ. কেউই আগ্রাসী কাফের ও মুরতাদদের বেলায় এ ধরণের আমলী আমান গ্রহণযোগ্য হবে বলেননি। সেখানে শুধু এতটুকু আছে যে, কিছু কাফের ও কিছু মুসলমান যদি কোন হুকুমতের অধীনে পারস্পরিক আমান ও বিশ্বস্ততার সাথে একত্রে বসবাস করে, তাহলে একে অপরের উপর হামলা করা ও লুটপাট করা জায়েয হবে না। কারণ, এটাও গাদ্দারি। এটা আমরাও অস্বীকার করি না। এদেশের হিন্দুদের বেলায় হয়তো কথাটা কিছুটা প্রযোজ্য হতে পারতো- যদি তারা আমাদের উপর কোন জুলুম বা আমাদের নিয়ে কোন সমালোচনা না করতো। এরপরও একান্ত সাধারণ হিন্দু, যারা আমাদের কোন ধরণের ক্ষতি বা সমালোচনা করছে না এবং এদেশের মুরতাদ হুকুমতের পক্ষে বা ভারতের জুলুমের পক্ষে তাদের কোন সমর্থন নেই- তাদেরকে হত্যা করা আমরা ভাল মনে করি না। আর না এতে জিহাদের কোন ফায়েদা আছে। পক্ষান্তরে যারা আামদের দ্বীনি বা দুনিয়াবি কোন ক্ষতিতে বা সমর্থনে লিপ্ত, তাদের রক্ত হালাল। এ ব্যাপারে আপনি নিচের লেখাটি দেখতে পারেন-
পথভ্রষ্ট রহমানীর ফতোয়া: ভারতের মুসলমানদের জন্য ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নাজায়েয!!
***
আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা
উপরোক্ত আয়াতের যে তাফসীর থানবী রহ. করেছেন, আবুস সাউদ রহ. আয়াতের এক তাফসীরে সেটা উল্লেখ করেছেন। তবে বিভিন্ন কারণে এ তাফসীরের চেয়ে ঐ তাফসির সঠিক মনে হচ্চে, যা আবুস সাউদ রহ. সহ অন্যান্য মুফাসির করেছেন। সেটা হল, নবুওয়াতের দাওয়াত পৌঁছার আগে কোন কাফের হত্যাযোগ্য নয়। যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولًا
“রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকে শাস্তি দেই না।”- ইসরা ১৫যেহেতু মূসা আলাইহিস সালাম তখন নবী হননি এবং কিবতিদের কাছে নবুওয়াতের দাওয়াত পৌঁছেনি, তাই তারা হত্যাযোগ্য ছিল না।
দ্বিতীয়ত মূসা আলাইহিস সালাম কিবতিকে হত্যার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে অনুমতি প্রাপ্ত ছিলেন না। কাফেরকে হত্যা করা সব শরীয়তের বিধান নয়। যেমন ধরুন, নূহ আলাইহিস সালাম, হুদ আলাইহিস সালাম বা সালেহ আলাইহিস সালামের শরীয়তে জিহাদের বিধান ছিল না। তাদের হত্যার বিধান ছিল না। এ কারণে সেসকল নবীর কেউই তাদের উম্মতের কাউকে হত্যা করেননি- যদিও উম্মত তাদের অনেক কষ্ট দিয়েছে।
মোটকথা- কোন কাফেরকে হত্যার জন্য দু’টি বিষয় আবশ্যক:
ক. তার কাছে নবুওয়াতের দাওয়াত পৌঁছা।
খ. উক্ত শরীয়তে ঈমান আনয়নে অস্বীকারকারী কাফেরদের হত্যার বিধান থাকা।
উক্ত কিবতির বেলায় এর কোনটিই পাওয়া যায়নি। হ্যাঁ, কিবতি যেহেতু বনি ইসরাইলের লোকটার উপর জুলুম করছিল তাই তাকে বাধা দেয়া যেত। তবে হত্যা করা উচিৎ হয়নি। ভুলক্রমে হলেও হত্যাটা অনুচিত হয়েছে। মূসা আলাইহিস সালাম বুঝতে পেরেছেন, এ কাজটা শয়তানের তরফ থেকে হয়েছে। তাকে অত্যধিক রাগান্বিত করে কিবতিকে হত্যা করিয়েছে। এজন্য তিনি আল্লাহ তাআলার কাছে মাফ চেয়েছেন। ইনশাআল্লাহ এটাই এ আয়াতের সঠিক তাফসির। অধিকন্তু আগের তাফসিরও যদি ধরা হয়, তবুও সেটা আগ্রাসী কাফেরের বেলায় প্রযোজ্য নয়।
আল্লাহ তাআলার তাওফিক হলে এ বিষয়টি অন্য সময় বিস্তারিত আলোচনা করবো।
Comment