Announcement

Collapse
No announcement yet.

সংশয় নিরসন- ০২, খ. গুপ্ত হত্যা- হাদিস ৩. খালেদ ইবনে সুফিয়ান আলহুজালির ঘটনা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সংশয় নিরসন- ০২, খ. গুপ্ত হত্যা- হাদিস ৩. খালেদ ইবনে সুফিয়ান আলহুজালির ঘটনা

    গুপ্ত হত্যা: হাদিস-৩: খালেদ ইবনে সুফিয়ান আলহুজালির ঘটনা


    মুশরিক খালেদ ইবনে সুফিয়ান আলহুজালি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সমাবেশ করছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উনাইস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠান তাকে হত্যা করার জন্য। তিনি কৌশলে একে হত্যা করেন এবং কর্তিত মস্তক এনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে পেশ করেন। চতুর্থ হিজরির শুরুতে মুহাররাম মাসের ৫ তারিখ রোজ সোমবার তিনি মদীনা থেকে রওয়ানা করেন। হত্যা করে ১৮ দিন পর শনিবার মদীনায় উপস্থিত হন।

    ইমাম আহমাদ রহ., আবু দাউদ রহ. ও বাইহাকি রহ.সহ আরো অনেকে এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে আহমাদ রহ. এর বর্ণনাটি তুলনামূলক বিস্তারিত। এ বর্ণনায় এসেছে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে উনাইস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

    دعاني رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال : أنه قد بلغني أن خالد بن سفيان بن نبيح يجمع لي الناس ليغزوني وهو بعرنة فاته فأقتله قال قلت يا رسول الله أنعته لي حتى أعرفه قال إذا رأيته وجدت له اقشعريرة قال فخرجت متوشحا بسيفي حتى وقعت عليه وهو بعرنة مع ظعن يرتاد لهن منزلا وحين كان وقت العصر فلما رأيته وجدت ما وصف لي رسول الله صلى الله عليه وسلم من الاقشعريرة فأقبلت نحوه وخشيت أن يكون بيني وبينه محاولة تشغلني عن الصلاة فصليت وأنا أمشي نحوه أومئ برأسي الركوع والسجود فلما انتهيت إليه قال من الرجل قلت رجل من العرب سمع بك وبجمعك لهذا الرجل فجاءك لهذا قال أجل أنا في ذلك قال فمشيت معه شيئا حتى إذا أمكنني حملت عليه السيف حتى قتلته ثم خرجت وتركت ظعائنه مكبات عليه فلما قدمت على رسول الله صلى الله عليه وسلم فرآني فقال أفلح الوجه قال قلت قتلته يا رسول الله قال صدقت قال ثم قام معي رسول الله صلى الله عليه وسلم فدخل في بيته فأعطاني عصا فقال أمسك هذه عندك يا عبد الله بن أنيس قال فخرجت بها على الناس فقالوا ما هذه العصا قال قلت أعطانيها رسول الله صلى الله عليه وسلم وأمرني أن أمسكها قالوا أولا ترجع إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فتسأله عن ذلك قال فرجعت إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقلت يا رسول الله لم أعطيتني هذه العصا قال آية بيني وبينك يوم القيامة أن أقل الناس المتخصرون يومئذ يوم القيامة فقرنها عبد الله بسيفه فلم تزل معه حتى إذا مات أمر بها فصبت معه في كفنه ثم دفنا جميعا. (المسند للإمام أحمد بن حنبل، 16090)



    [تعليق شعيب الأرنؤوط : ابن عبد الله بن أنيس - وهو عبد الله بن عبد الله بن أنيس كما جاء مبينا من رواية محمد بن سلمة الحراني عن محمد بن اسحق عند البيهقي - ترجم له البخاري في التاريخ 5 / 125 وابن أبي حاتم 5 / 90 وابن حبان في الثقات 5 / 37 ولم يذكروا فيه جرحا ولا تعديلا وباقي رجال الإسناد ثقات غير محمد بن اسحق روى له البخاري تعليقا ومسلم متابعة وقد صرح بالتحديث
    وأخرجه أبو يعلى 905 وابن خزيمة 982 و 983 وابن حبان 7160 وأخرجه أبو داود 1249 مختصرا وحسن الحافظ في الفتح إسناد أبي داود]


    “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকলেন। ডেকে বললেন, আমার কাছে সংবাদ পৌছেছে যে, খালেদ ইবনে সুফিয়ান ইবনে নুবাইহ্ আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সমাবেশ করছে। সে (মক্কা থেকে নয় মাইল দূরে) উরানা উপত্যকায় আছে। তুমি গিয়ে তাকে হত্যা করে আস। তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (আমি তো তাকে চিনি না) তাকে চেনার আলামত বলে দিন, যাতে আমি তাকে চিনতে পারি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (তাকে চেনার আলামত হল,) যখন তুমি তাকে দেখবে, তখন তার ভয়ে তোমার মাঝে খানিকটা কম্পন অনুভব হবে।


    (এ আলামত বাতলানো মূলত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মু’জিযা। আব্দুল্লাহ ইবনে উনাইস রাদিয়াল্লাহু আনহুর সাধারণত কাউকে দেখে ভয় পেতেন না। এজন্য ঠিক এর বিপরীতে ভয় পাওয়াকে আলামত বানানো হয়েছে।)


    তিনি বলেন, আমি তরবারি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। অবশেষে তার নিকট উপস্থিত হলাম। সে উরানা উপত্যকায় ছিল। তার সাথে তার স্ত্রীরা ছিল। তাদের নিয়ে অবতরণের জন্য সে একটি ভাল জায়গা তালাশ করছিল। তখন আসরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল। আমি যখন তাকে দেখলাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিবরণ অনুযায়ী আমার মাঝে কিছুটা ভীতিজনিত কম্পন অনুভব করলাম। (এতে বুঝতে পারলাম যে, সে-ই আল্লাহর রাসূলের দুশমন খালেদ ইবনে সুফিয়ান।)


    (তিনি বলেন,) আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম। আমার ভয় হচ্ছিল যে, তার কাছে পৌঁছতে আমার কিছুটা সময় লাগবে, যার ফলে আমার নামায ছুটে যাবে। তাই আমি হাঁটতে হাঁটতে মাথার ইশারায় রুকু-সাজদা করে নামায আদায় করে নিলাম। আমি তার কাছে পৌঁছলে সে জিজ্ঞেস করল, মিয়া! তুমি কে? আমি উত্তর দিলাম, ‘(আমি) আরবের লোক, যে আপনার ব্যাপারে শুনতে পেয়েছে যে, আপনি এই (মুহাম্মাদ) লোকটির বিরুদ্ধে সৈন্য সমাবেশ করছেন; তাই সে আপনাকে সাহায্য করতে এসেছে’। সে জওয়াব দিল, হ্যাঁ, ঠিক আছে। আমি এরই প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, আমি তার সাথে খানিক্ষণ চললাম। (তার সাথে কথা-বার্তা বলতে বলতে ভাব জমালাম, আর তাকে হত্যার সুযোগ খুঁজছিলাম।) অবশেষে যখন সুযোগ পেয়ে গেলাম, তরবারি চালালাম। (তরবারির আঘাতে) তাকে হত্যা করলাম। এরপর (তার কর্তিত মস্তকটি নিয়ে) সেখান থেকে পালালাম। তার স্ত্রীদেরকে তার উপর পড়ে ক্রন্দনরত রেখে আসলাম।


    (এরপর তিনি পাহাড়েরর একটি গুহায় গিয়ে আশ্রয় নেন। হত্যাকারীকে খোঁজে বের করার জন্য লোক পাঠানো হল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা তাকে খোঁজে পায়নি। এরপর তিনি রাতের বেলা পথ চলতেন আর দিনের বেলা লুকিয়ে থাকতেন। এভাবে মদীনায় উপস্থিত হন।)


    (তিনি বলেন,) যখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হলাম এবং তিনি আমাকে দেখতে পেলেন, (খুশিতে) বলে উঠলেন, (তোমার) চেহারা কামিয়াব হোক! তিনি বলেন, আমি সংবাদ দিলাম, তাকে হত্যা করেছি ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সত্য বলেছ। (বলা হয় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগেই অহীর মাধ্যমে হত্যার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছিলেন।)


    (তিনি বলেন,) এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নিয়ে উঠলেন। তার ঘরে প্রবেশ করলেন। আমাকে একটি লাঠি উপহার দিলেন এবং সেটি আমার কাছে রাখতে আদেশ দিলেন। আমি লাঠিটি নিয়ে লোকজনের কাছে আসলাম। তারা আমার কাছে আবেদন করলো, ‘তুমি কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে এ লাঠির হেতু জিজ্ঞেস করতে পারবে না’? তিনি বলেন, (তাদের আবেদনে) আমি আবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলাম। আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কেন আমাকে এ লাঠি দিয়েছেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটি কেয়ামতের দিন তোমার ও আমার মাঝের সম্পর্কের পরিচয়বাহক হবে। (তখন আমি তোমার জন্য শাফাআত করে জান্নাতে তোমার মর্তবা বৃদ্ধি করতে পারবো। আর তুমি জান্নাতে এ লাঠিতে ভর দিয়ে যেভাবে চাও রাজত্ব করবে। আর শোন,) কেয়ামতের সেদিনে লাঠিতে ভর দেয়ার মর্যাদা কম লোকই লাভ করবে।


    আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু লাঠিটি তার তরবারির সাথে মিলিয়ে নিলেন। সেটি এরপর থেকে তার কাছেই ছিল। (অসীয়ত করে গেলেন, মারা গেলে যেন লাঠিটি তার কাফনে দিয়ে দেয়া হয়।) তিনি যখন মারা গেলেন, (অসীয়ত মতো) লাঠিটি তার কাফনে দিয়ে দেয়া হল এবং লাঠিসহ দাফন করা হল।”- মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ১৬০৯০

    ***


    এ হাদিস থেকে অতিরিক্ত একটি মাসআলা জানা গেল যে, গুপ্ত হত্যার জন্য একাকী অভিযান চালানোও জায়েয। আব্দুল্লাহ ইবনে উনাইস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে একাই পাঠানো হয়েছিল এবং তিনি একাই হত্যা করে ফিরে এসেছেন।




  • #2
    জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা অাপনার ইলম দ্বারা আমাদের উপকৃত করুন। আমীন।
    ফিরে এসো দ্বীনের পথে।

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা অাপনার ইলম দ্বারা আমাদের উপকৃত করুন। আমীন।
      কে আছো জোয়ান, হও আগোয়ান।

      Comment


      • #4
        আল্লাহ তায়ালা অাপনার ইলম দ্বারা আমাদের উপকৃত করুন। আমীন।

        Comment


        • #5
          আমাদের কতিপয় শাইখগন জিন্দেগীতেও এ-ই ঘটনা বর্ণনা করেনি। আল্লাহ আপনার ইলমে বারাকাহ দান করুন, আমীন। প্রিয় ভাই, অনুরোধ রইলো, প্রতিটি গুপ্তহত্যার ঘটনা ফোরামে রিলিজ করা হউক।
          والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

          Comment


          • #6
            মাসাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা আপনার ইলমী খেদমতকে কবুল করে নিন এবং ভরপুর জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন
            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

            Comment

            Working...
            X