ইমাম শাফিয়ী রহ. এর জিহাদ
যুদ্ধবিদ্যা ইমাম শাফিয়ী রহ. এর অন্যতম শখের বিষয় ছিল। ছোট বেলা থেকেই এটি তার প্রিয় বিষয় ছিল। এজন্য তিনি একজন বিশিষ্ট তীরন্দাজ ও ঘোড়সওয়ার মুজাহিদে পরিণত হন। তিনি বলেন,
অন্য বর্ণনায় আছে যে তিনি বলেন,
অন্য বর্ণনায় বলেন,
ইমাম শাফিয়ী রহ. এর বিশিষ্ট শাগরেদ রবি বিন সুলাইমান রহ. বলেন,
তার আরেক শাগরেদ ইমাম মুযানী রহ. বলেন,
ইমলা বলা হয়: উস্তাদ বসে মুখস্থ বলবেন আর শাগরেদরা লিখবে। আগের যুগে এভাবেই পাঠ দেয়া হতো।
লক্ষণীয়, তীরন্দাজি শাফিয়ী রহ. এর কাছে এতই প্রিয় ছিল যে, তার প্রিয় শাগরেদ মুযানী রহ.কে তীরন্দাজ বলে ডাকতেন। সম্ভবত তিনি দক্ষ তীরন্দাজ ছিলেন। পাশাপাশি শাগরেদের জন্য তিনি তীরন্দাজি ও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার বিধিবিধান সম্বলিত একটা কিতাবই রচনা করেছেন এবং ইমলা করিয়ে শাগরেদকে তা লিখিয়েও দিয়েছেন।
শাফিয়ী রহ. এর মূল ব্যস্ততা যদিও ইলম নিয়ে ছিল, তথাপি তিনি আল্লাহর রাস্তায় রিবাত তথা ইসলামী সীমান্ত প্রহরার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে বর্ণিত আছে।
তার বিশিষ্ট শাগরেদ রবি বিন সুলাইমান রহ. বলেন,
সীমান্ত অঞ্চল, যেদিক দিয়ে কাফেরদের আক্রমণের আশঙ্খা থাকে, সেখানে গিয়ে পাহারাদারি করাকে রিবাত বলে।
হাদিসে এসেছে,
অন্য হাদিসে এসেছে,
রিবাতের এত ফজিলতের কারণেই বড় বড় উলামায়ে কেরাম সীমান্ত অঞ্চলে চলে যেতেন রিবাতের জন্য। অনেকে সপরিবারে গিয়ে বসবাস করতেন। উদ্দেশ্য থাকতো সীমান্ত পাহারা। বর্ণনা থেকে বুঝা গেল, ইমাম শাফিয়ী রহ. সুযোগ মতো রিবাতে চলে যেতেন। পাহারা দিতেন আর ইবাদাত বন্দেগী করতেন। কারণ, ঘরে বসে যিকির আযকার, তিলাওয়াত ও ইবাদাত বন্দেগী করলে যে সওয়াব পাওয়া যাবে, ময়দানে গিয়ে করলে তার শত-হাজারো গুণ বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু আমাদের হযরতওয়ালারা বুঝেছেন উল্টো।
যুদ্ধবিদ্যা ইমাম শাফিয়ী রহ. এর অন্যতম শখের বিষয় ছিল। ছোট বেলা থেকেই এটি তার প্রিয় বিষয় ছিল। এজন্য তিনি একজন বিশিষ্ট তীরন্দাজ ও ঘোড়সওয়ার মুজাহিদে পরিণত হন। তিনি বলেন,
ولدت بعسقلان، فلما أتى عليّ سنتان حملتني أمي إلى مكة، وكانت نَهْمتي في شيئين: في الرّمي، وطلب العلم، فنلت من الرمي حتى كنت أصيب من عشَرة عشرة. اهـ
“আমার জন্ম আসকালানে। দু’ বছর বয়সে আমার মা আমাকে নিয়ে মক্কায় চলে আসেন। আমার শখ ছিল দু’টি বিষয়: ১. তীরন্দাজি; ২. ইলম অন্বেষণ। তীরন্দাজিতে আমি এমনই পারদর্শীতা অর্জন করেছি যে, দশটিতে দশটিই টার্গেটে গিয়ে বিঁধতো।”- মানাকিবুশ শাফিয়ী লিলবাইহাকি ২/১২৭-১২৮অন্য বর্ণনায় আছে যে তিনি বলেন,
تمنيت من الدنيا شيئين: العلم والرمي. فأما الرّمي فإني كنت أصيب من عشرة عشرة. اهـ
“দুনিয়াতে আমার আকাঙ্খার বস্তু ছিল দু’টি: ইলম ও তীরন্দাজি। তীরন্দাজিতে আমি এমনই পারদর্শীতা অর্জন করেছি যে, দশটিতে দশটিই টার্গেটে গিয়ে বিঁধতো।”- মানাকিবুশ শাফিয়ী লিলবাইহাকি ২/১২৮অন্য বর্ণনায় বলেন,
كنت ألزم الرمي حتى كان الطبيب يقول لي: أخاف أن يصيبك السل من كثرة وقوفك في الحر. اهـ
“আমি তীরন্দাজি নিয়ে পড়ে থাকতাম। এমনকি ডাক্তার আমাকে বলতো, ‘তুমি রোদ্রে যেভাবে পড়ে থাক, আমার ভয় হচ্ছে যে, তুমি যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে পড়বে।”- তারিখে বাগদাদ ২/৩৯২ইমাম শাফিয়ী রহ. এর বিশিষ্ট শাগরেদ রবি বিন সুলাইমান রহ. বলেন,
كان الشافعي أفرس خلق الله وأشجعه، وكان يأخذ بأذنه وأذن الفرس، والفرس يعدو، فيثب على ظهره وهو يعدو. اهـ
“শাফিয়ী রহ. অতুলনীয় ঘোড় সওয়ার এবং নেহায়েত বীর বাহাদুর ছিলেন। (এমনকি) তিনি এক হাতে নিজের কান আরেক হাতে ঘোড়ার কান ধরে ঘোড়া দৌড়াতে পারতেন। ঘোড়া প্রবল বেগে দৌড়তে থাকতো। ঘোড়া দৌড়তো আর তিনি ঘোড়ার পিঠে লাফাতে থাকতেন।”- মানাকিবুশ শাফিয়ী লিলবাইহাকি ২/১২৯তার আরেক শাগরেদ ইমাম মুযানী রহ. বলেন,
كان الشافعي يسميني القطامي الرامي، ووضع «كتاب السبق والرمي» بسببي، وأملاه عليّ. اهـ
“শাফিয়ী রহ. আমাকে তীরন্দাজ কাতামি নামে ডাকতেন। আমার জন্যই তিনি كتاب السبق والرمي (ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ও তীরন্দাজির বিধি বিধান) কিতাবটি লেখেন এবং ইমলা করিয়ে আমাকে তা লিখিয়ে দেন।”- মানাকিবুশ শাফিয়ী লিলবাইহাকি ২/১২৯ইমলা বলা হয়: উস্তাদ বসে মুখস্থ বলবেন আর শাগরেদরা লিখবে। আগের যুগে এভাবেই পাঠ দেয়া হতো।
লক্ষণীয়, তীরন্দাজি শাফিয়ী রহ. এর কাছে এতই প্রিয় ছিল যে, তার প্রিয় শাগরেদ মুযানী রহ.কে তীরন্দাজ বলে ডাকতেন। সম্ভবত তিনি দক্ষ তীরন্দাজ ছিলেন। পাশাপাশি শাগরেদের জন্য তিনি তীরন্দাজি ও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার বিধিবিধান সম্বলিত একটা কিতাবই রচনা করেছেন এবং ইমলা করিয়ে শাগরেদকে তা লিখিয়েও দিয়েছেন।
শাফিয়ী রহ. এর মূল ব্যস্ততা যদিও ইলম নিয়ে ছিল, তথাপি তিনি আল্লাহর রাস্তায় রিবাত তথা ইসলামী সীমান্ত প্রহরার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে বর্ণিত আছে।
তার বিশিষ্ট শাগরেদ রবি বিন সুলাইমান রহ. বলেন,
خرجت مع محمد بن إدريس الشافعي من الفسطاط إلى الإسكندرية مرابطا، وكان يصلي الصلوات الخمس في المسجد الجامع، ثم يسير إلى المَحْرَس فيستقبل البحر بوجهه جالساُ يقرأ القرآن في الليل والنهار حتى أُحصيت عليه ستين ختمة في شهر رمضان. اهـ
“মুহাম্মাদ বিন ইদরিস শাফিয়ী রহ. এর সাথে একবার ফুসতাত থেকে ইস্কানদারিয়ায় রিবাত তথা সীমান্ত প্রহরায় বের হলাম। পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায তিনি জামে মসজিদে পড়তেন। এরপর পাহারার স্থানে চলে যেতেন। সমূদ্রের দিকে মুখ করে বসে পড়তেন। বসে বসে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। দিন-রাত সর্বক্ষণ তিলাওয়াত করতে থাকতেন। এমনকি আমি রমজান মাসে হিসেব করে দেখিছি যে, তিনি ষাট খতম করেছেন।”- মানাকিবুশ শাফিয়ী লিলবাইহাকি ২/১৫৮সীমান্ত অঞ্চল, যেদিক দিয়ে কাফেরদের আক্রমণের আশঙ্খা থাকে, সেখানে গিয়ে পাহারাদারি করাকে রিবাত বলে।
হাদিসে এসেছে,
رباط يوم في سبيل الله خير من الدنيا وما عليها
“একদিন রিবাতের দায়িত্ব পালন করা দুনিয়া এবং তার মাঝে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম।”- সহীহ বুখারি ২৮৯২অন্য হাদিসে এসেছে,
«رباط يوم وليلة خير من صيام شهر وقيامه، وإن مات جرى عليه عمله الذي كان يعمله، وأجري عليه رزقه، وأمن الفتان»
“এক দিন ও এক রাত রিবাতের দায়িত্ব পালন করা এক মাসের নামায ও রোযা থেকেও উত্তম। যদি রিবাতরত অবস্থায় মারা যায়, তাহলে সে যেসকল নেক আমল করতো, সেগুলো তার নামে জারি থাকবে (তথা সেগুলোর সওয়াব পেতে থাকবে)। তার রিযিক জারি হয়ে যাবে এবং কবরে আযাবের ফিরিশতার হাত থেকে নিরাপদ থাকবে।”- সহীহ মুসলিম ১৯১৩রিবাতের এত ফজিলতের কারণেই বড় বড় উলামায়ে কেরাম সীমান্ত অঞ্চলে চলে যেতেন রিবাতের জন্য। অনেকে সপরিবারে গিয়ে বসবাস করতেন। উদ্দেশ্য থাকতো সীমান্ত পাহারা। বর্ণনা থেকে বুঝা গেল, ইমাম শাফিয়ী রহ. সুযোগ মতো রিবাতে চলে যেতেন। পাহারা দিতেন আর ইবাদাত বন্দেগী করতেন। কারণ, ঘরে বসে যিকির আযকার, তিলাওয়াত ও ইবাদাত বন্দেগী করলে যে সওয়াব পাওয়া যাবে, ময়দানে গিয়ে করলে তার শত-হাজারো গুণ বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু আমাদের হযরতওয়ালারা বুঝেছেন উল্টো।
Comment