Announcement

Collapse
No announcement yet.

সংশয়: লা তামান্নাও লিকাআল আদুউ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সংশয়: লা তামান্নাও লিকাআল আদুউ

    সংশয়: লা তামান্নাও লিকাআল আদুউ

    হাদিসে এসেছে, ‘লা তামান্নাও লিকাআল আদুউ’- ‘তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করো না।’


    হাদিস থেকে কেউ কেউ সংশয়ে পড়তে পারেন যে, হাদিসে শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। আর জিহাদ মানেই তো শত্রুর মুখোমুখী হওয়া। অতএব, হাদিসে জিহাদ নিষেধ করা হয়েছে। এক ভাই হাদিসটি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। তখন সংক্ষেপে হাদিসের মর্ম বলেছিলাম। ইনশাআল্লাহ এখানে একটু বিস্তারিত আলোচনা করবো। ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ!


    হাদিসটি বুখারি-মুসলিম উভয়ই রিওআয়াত করেছেন। বুখারি শরীফের রিওয়াতটি এমন,

    حدثني سالم أبو النضر مولى عمر بن عبيد الله كنت كاتبا له قال كتب إليه عبد الله بن أبي أوفى حين خرج إلى الحرورية فقرأته فإذا فيه : إن رسول الله صلى الله عليه و سلم في بعض أيامه التي لقي فيها العدو انتظر حتى مالت الشمس ثم قام في الناس فقال ( أيها الناس لا تمنوا لقاء العدو وسلوا الله العافية فإذا لقيتوهم فاصبروا واعلموا أن الجنة تحت ظلال السيوف . ثم قال اللهم منزل الكتاب ومجري السحاب وهازم الأحزاب اهزمهم وانصرنا عليهم ) –صحيح البخاري، رقم: 2861، ط. دار ابن كثير ، اليمامة – بيروت

    “উমার ইবনু উবায়দুল্লাহর আযাদকৃত গোলাম আবু নজর সালিম রহ. বর্ণনা করেন, আমি তার (উমার ইবনু উবায়দুল্লাহর) কেরানী ছিলাম। তিনি যখন হারুরিয়্যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযানে রওয়ানা হন, আব্দুল্লাহ ইবনু আবু আওফা রাদিয়াল্লাহু আনহু তার কাছে একটি পত্র লেখেন। আমি পত্রটি পড়লাম। তাতে লিখা ছিল,

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক যুদ্ধে শত্রুর মুখোমুখী হন। সূর্য (পশ্চিমাকাশে) ঢলে যাওয়া পর্যন্ত তিনি (হামলা না করে) অপেক্ষায় থাকলেন। এরপর জনসম্মুখে নসিহতের জন্য দাঁড়ান। বলেন, হে লোকসকল! তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করো না। বরং আল্লাহর কাছে নিরাপদ ও বিপদমুক্ত থাকার দোয়া কর। তবে শত্রুর মুখোমুখী যখন হয়েই পড়বে, ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করবে। শুনে রাখো! জান্নাত তরবারির ছায়াতলে। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! হে কিতাব অবতীর্ণকারী, মেঘমালা সঞ্চালনকারী, সম্মিলিত (কাফের) বাহিনিকে পরাভূতকারী! আপনি তাদের পরাভূত করুন। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের নুসরত করুন’!”- সহীহ বুখারি ২৮৬১


    বিশ্লেষণ
     হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি চিরাচরিত সুন্নতের প্রতি ঈঙ্গিত করা হয়েছে যে, ‘সূর্য (পশ্চিমাকাশে) ঢলে যাওয়া পর্যন্ত তিনি (হামলা না করে) অপেক্ষায় থাকলেন’।

    এটি রাসূলের যুদ্ধনীতি। দিনের শুরুভাগে যদি আক্রমণ না করতেন, বেলা চড়ে উঠলে আর আক্রমণ করতেন না। সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ার পর যখন জোহরের নামাযের সময় শুরু হত তখন আক্রমণ করতেন। যেমন এক হাদিসে এসেছে,
    كان النبي صلى الله عليه وسلم يحب أن ينهض إلى عدوه عند زوال الشمس –مسند الإمام أحمد، رقم: 19141، ط. الرسالة، قال شعيب الأرنؤوط: حديث صحيح، وهذا إسناد ضعيف. اهـ
    “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলে পড়ার সময় শত্রুর মোকাবেলায় নামতে পছন্দ করতেন।”- মুসনাদে আহমাদ ১৯১৪১


    অন্য হাদিসে এসেছে,
    كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا زالت الشمس يمهل ثم ينهد إلى عدوه –سنن سعيد بن منصور، رقم: 2518، ط. الدار السلفية – الهند
    “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। তারপর শত্রুর মোকাবেলায় নামতেন।”- সুনানু সাঈদ ইবনু মানসূর ২৫১৮


    অন্য হাদিসে এসেছে,
    كان إذا لم يقاتل في أول النهار انتظر حتى تهب الأرواح وتحضر الصلوات –صحيح البخاري، رقم: 2989، ط. دار ابن كثير ، اليمامة – بيروت
    “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি দিনের শুরু ভাগে কিতাল না করতেন, (নুসরতের) বায়ুপ্রবাহ শুরু হওয়া ও নামাযের সময় উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন।”- সহীহ বুখারি ২৯৮৯


    হাফেয ইবনু হাজার রহ. (৮৫২ হি.) বলেন,
    فيظهر أن فائدة التأخير لكون أوقات الصلاة مظنة إجابة الدعاء وهبوب الريح قد وقع النصر به في الأحزاب فصار مظنة لذلك. اهـ
    “বুঝা গেল, যুদ্ধ পিছিয়ে দেয়ার ফায়েদা হচ্ছে যে, নামাযের সময় হচ্ছে দোয়া কবুলের সময়। আর জঙ্গে আহযাবে বায়ুপ্রবাহের দ্বারা বিজয় হয়েছিল। কাজেই বায়ুপ্রবাহও নুসরতের একটা সম্ভাব্য কারণ।”- ফাতহুল বারি ৬/১২১



    অধিকন্তু এ সময় বায়ুপ্রবাহের ফলে মন-মেজাজ ভাল থাকে। তাছাড়া এ সময় নামাযের পর মুসলমানরা মুজাহিদদের জন্য দোয়া করে।


    অতএব, আলোচ্য হাদিসে ‘সূর্য (পশ্চিমাকাশে) ঢলে যাওয়া পর্যন্ত তিনি (হামলা না করে) অপেক্ষায় থাকলেন’ দ্বারা উদ্দেশ্য: হামলা করার উদ্দেশ্যে জোহরের ওয়াক্ত আসার অপেক্ষায় থাকলেন।





    ‘এরপর জনসম্মুখে নসিহতের জন্য দাঁড়ান। বলেন, হে লোকসকল! তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করো না। বরং আল্লাহর কাছে নিরাপদ ও বিপদমুক্ত থাকার দোয়া কর’।


    বুঝা যাচ্ছে, জোহরের ওয়াক্ত আসার পর, নুসরতের বায়ুপ্রবাহ শুরু হওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবার হামলা করতে যাবেন। তবে হামলার আগে যুদ্ধের একটি আদব শিক্ষা দিচ্ছেন। নিজেদের শক্তির উপর ভরসা না করে আল্লাহ তাআলার নুসরত কামনা করা। আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করা যেন তিনি আমাদের বিপদমুক্ত রাখেন। সহীহ সালামতে বিজয় দান করেন। শত্রুর মুখোমুখী না হয়েই যদি বিজয় এসে যায়, তাহলে সেটাই ভাল। এর বিপরীতে এমন দোয়া না করা যে, ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে শত্রুর মুখোমুখী কর। সহীহ সালামতে বিজয় দিয়ো না। তাদের সাথে আমাদের যেন লড়াই হয়। আমরা যেন আমাদের বীরত্ব দেখাতে পারি। আমরা যে তোমার খাঁটি বান্দা এটা যেন প্রমাণ হয়ে যায়’। এ ধরণের কামনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ,


    # এ ধরণের কামনা নিজের বড়ত্বের আলামত। আল্লাহর নুসরতের বদলে নিজেদের শক্তি-সামর্থ্যের উপর ভরসার নামান্তর।

    ইমাম নববী রহ. (৬৭৬ হি.) বলেন,
    إنما نهى عن تمنى لقاء العدو لما فيه من صورة الاعجاب والاتكال على النفس والوثوق بالقوة. اهـ
    “শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করতে নিষেধ করা হয়েছে, কারণ বাহ্যত এটি আত্মগৌরব মনে হয়। মনে হয় যেন (আল্লাহর পরিবর্তে) নিজেদের উপর ভরসা করা হচ্ছে। যেন জাগতিক শক্তি-সামর্থ্যকে যথেষ্ট মনে করা হচ্ছে।”- আলমিনহাজ শরহু মুসলিম, ১২/৪৫



    # নফস বড় গাদ্দার। এখন যদিও মনে হচ্ছে যে, নামুক যুদ্ধে। দেখিয়ে দেব মজা। কিন্তু ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার পর দিল ঘুরে যেতে পারে। বরং এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক।

    যেমন বক্ষমান হাদিসের কোনো বর্ণনায় এসেছে,
    لا تمنوا لقاء العدو، فإنكم لا تدرون ما يكون في ذلك –مسند الإمام أحمد، رقم: 9196، ط. الرسالة، قال الشيخ شعيب الأرنؤوط : صحيح بطريقيه وشواهده. اهـ
    “তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করো না। কারণ, এতে শেষ পরিণতি কি হবে তোমাদের জানা নেই।”- মুসনাদে আহমাদ ৯১৯৬

    হাফেয ইবনু হাজার রহ. (৮৫২ হি.) বলেন,
    وقال بن دقيق العيد لما كان لقاء الموت من أشق الأشياء على النفس وكانت الأمور الغائبة ليست كالأمور المحققة لم يؤمن أن يكون عند الوقوع كما ينبغي فيكره التمني لذلك ولما فيه لو وقع من احتمال أن يخالف الإنسان ما وعد من نفسه ثم أمر بالصبر عند وقوع الحقيقة. اهـ
    “ইবনু দাকুকুল ঈদ রহ. বলেন, মৃত্যুর সম্মুখীন হওয়া সবচেয়ে কঠিন জিনিস। অধিকন্তু তা অজানা বিষয়, সামনে উপস্থিত নেই। যখন সম্মুখে আসবে, ভালোয় ভালোয় যেমন হওয়া দরকার তেমন হবে বলে কোন নিশ্চয়তা নেই। এ জন্য তা কামনা করা অপছন্দনীয়। তাছাড়া ব্যক্তি মনে মনে যে দৃঢ় অঙ্গীকার করে রেখেছে, পরে তার বিপরীতও হয়ে যেতে পারে। তবে সম্মুখে এসে গেলে সবর করতে আদেশ দেয়া হয়েছে।”- ফাতহুল বারি ৬/১৫৭


    উহুদের যুদ্ধে আমরা এর প্রমাণ দেখেছি। বদর যুদ্ধে যেসকল সাহাবি শরীক হতে পারেননি, তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল, একটা যুদ্ধ হলে বদরিদের মতো আমরাও দেখিয়ে দিতাম …! কিন্তু উহুদের দিন যখন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু পেছন দিয়ে হঠাৎ আক্রমণ করলেন, সাহাবায়ে কেরাম দিশেহারা হয়ে এদিক সেদিক ছুটতে লাগলেন। আল্লাহ তাআলা সাহাবাদের তিরস্কার করে বলেন,
    وَلَقَدْ كُنْتُمْ تَمَنَّوْنَ الْمَوْتَ مِنْ قَبْلِ أَنْ تَلْقَوْهُ فَقَدْ رَأَيْتُمُوهُ وَأَنْتُمْ تَنْظُرُونَ
    “মৃত্যুর সম্মুখীন হওয়ার পূর্বে তো তোমরা তা কামনা করতে। এখন তো তোমরা স্বচক্ষে তা প্রত্যক্ষ করলে।”- আলে ইমরান ১৪৩

    অর্থাৎ- কিন্তু তোমাদের সেই অঙ্গীকার কোথায় গেল? এখন কেন পলায়ন করলে?


    আবুস সাউদ রহ. (৯৮২ হি.) বলেন,
    وهو توبيخٌ لهم على تمنِّيهم الحربَ وتسبُّبهم لها ثم جُبنِهم وانهزامِهم. اهـ
    “আল্লাহ তাআলা তিরস্কার করছেন যে, তারাই তো যুদ্ধ কামনা করেছিল, যুদ্ধ ডেকে এনেছিল। এরপর ভীরুতা প্রদর্শন করে পালিয়ে গেল।”- তাফসিরে আবুস সাউদ ২/৯২


    যেখানে সাহাবায়ে কেরামের মতো ব্যক্তিরাও আকাঙ্ক্ষার পূর্ণ প্রতিফলন দেখাতে পারেননি, সেখানে পরবর্তীদের জন্য কিভাবে সম্ভব? এজন্যই যুদ্ধ কামনা করতে নিষেধ করা হয়েছে।



    # যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে কোন বিপদের বোঝা মাথায় নেয়, সাধারণত তারা তা রক্ষা করতে পারে না। এ কারণেই রাষ্ট্রীয় কোন পদ চাইতে হাদিসে নিষেধ এসেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    لا تسأل الإمارة فإنك إن أعطيتها عن مسألة أكلت إليها وإن أعطيتها عن غير مسألة أعنت عليها ». –صحيح مسلم، رقم: 4819، ط. دار الجيل بيروت + دار الأفاق الجديدة ـ بيروت
    “নেতৃত্ব চেয়ে নেবে না। কারণ, চেয়ে নিলে তোমাকে তোমার হাতে ছেড়ে দেয়া হবে। আর চাওয়া ছাড়াই এসে পড়লে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) নুসরত করা হবে।”- সহীহ মুসলিম ৪৮১৯


    অথচ ন্যায়পরায়ণ শাসকের মর্যাদার কথা সকলে জানি। যে সাত ব্যক্তিকে আরশের ছায়াতলে স্থান দেয়া হবে, তাদের একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক। এতদসত্বেও নেতৃত্ব পাওয়ার কামনা করতে, চেয়ে নিতে নিষেধ এসেছে। কারণ, পরে তার যথাযথ হক আদায় করা সাধারণত সম্ভব হয় না। এ কারণে যারা পদ চায় তাদেরকে পদ দিতে হাদিসে নিষেধ এসেছে।


    এমনিভাবে ফিতনা থেকে, দারিদ্রতা থেকে, অসুস্থতা থেকে পানাহ চাওয়ার কথা হাদিসে এসেছে। অথচ হাদিসে এসেছে:
    - ফিতনার সময় শরীয়ত যিন্দা করলে শহীদের সওয়াব মিলবে।
    - গরীবরা ধনীদের আগে জান্নাতে যাবে।
    - মহামারিতে মারা গেলে শহীদের সওয়াব পাবে।

    এতদসত্বেও এগুলো থেকে পানাহ চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কোন অঞ্চলে মহামারি দেখা দিলে সেখানে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ, সম্মুখীন হলে তখন সবর করা অতো সহজ হবে না। হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে হ্যাঁ! যদি এসেই পড়ে, তখন সবর করা।

    শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
    كره للمرء أن يتعرض للبلاء بأن يوجب على نفسه ما لا يوجبه الشارع عليه بالعهد والنذر ونحو ذلك أو يطلب ولاية أو يقدم على بلد فيه طاعون. كما ثبت في الصحيحين من غير وجه عن النبي صلى الله عليه وسلم {أنه نهى عن النذر؛ وقال: إنه لا يأتي بخير وإنما يستخرج به من البخيل} وثبت عنه في الصحيحين أنه قال لعبد الرحمن بن سمرة: {لا تسأل الإمارة فإنك إن أعطيتها عن مسألة وكلت إليها وإن أعطيتها من غير مسألة أعنت عليها؛ وإذا حلفت على يمين فرأيت غيرها خيرا منها فأت الذي هو خير وكفر عن يمينك} وثبت عنه في الصحيحين أنه {قال في الطاعون: إذا سمعتم به بأرض فلا تقدموا عليه وإذا وقع بأرض وأنتم بها فلا تخرجوا فرارا منه} . وثبت عنه في الصحيحين أنه قال: {لا تتمنوا لقاء العدو واسألوا الله العافية ولكن إذا لقيتموهم فاصبروا واعلموا أن الجنة تحت ظلال السيوف} وأمثال ذلك مما يقتضي أن الإنسان لا ينبغي له أن يسعى فيما يوجب عليه أشياء ويحرم عليه أشياء فيبخل بالوفاء؛ وكما يفعل كثير ممن يعاهد الله عهودا على أمور وغالب هؤلاء يبتلون بنقض العهود. ويقتضي أن الإنسان إذا ابتلي فعليه أن يصبر ويثبت. اهـ
    “নিজের উপর বোঝা টেনে আনা অপছন্দনীয়। যেমন অঙ্গীকার, মান্নত বা অন্য কোনভাবে শরীয়ত যা অবধারিত করেনি তা অবধারিত করে নেয়া। কিংবা কোন পদ তলব করা বা এমন অঞ্চলে যাওয়া যেখানে মহামারি চলছে। সহীহাইনে একাধিক সনদে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মান্নত করতে নিষেধ করেছেন। বলেছেন, ‘মান্নত কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। এর দ্বারা কেবল কৃপণ লোকদের থেকে কিছু সম্পদ বের করে নেয়া হয়’।

    সহীহাইনে আরো বর্ণিত আছে যে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনু সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছেন, ‘নেতৃত্ব চেয়ে নেবে না। কারণ, চেয়ে নিলে তোমাকে তোমার হাতে ছেড়ে দেয়া হবে। আর চাওয়া ছাড়াই এসে পড়লে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) নুসরত করা হবে। আর কোন কসম করার পর যদি এর ভিন্নটাতে কল্যাণ আছে বলে মনে কর, তাহলে ভালোটাই করবে আর কসমের কাফফারা দিয়ে দেবে’।

    সহীহাইনে আরো বর্ণিত আছে, মহামারির ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘কোন এলাকায় মহামারি পতিত হয়েছে শুনলে সেখানে যাবে না। আর কোন ভূমিতে থাকাবস্থায় পতিত হলে সেখান থেকে বের হয়ে পালাবে না’।

    সহীহাইনে আরো বর্ণিত আছে, তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করো না। বরং আল্লাহর কাছে নিরাপদ ও বিপদমুক্ত থাকার দোয়া কর। তবে শত্রুর মুখোমুখী যখন হয়েই পড়বে, ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করবে। শুনে রাখো! জান্নাত তরবারির ছায়াতলে’।


    এ ধরণের বিভিন্ন দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেগুলোর দাবি:

    - নিজের উপর বিভিন্ন বিষয় অবধারিত করে নেয়া বা হারাম করে নেয়ায় পা না বাড়ানোই উচিৎ। কারণ, পরে তা রক্ষা করে চলা সম্ভব হবে না। অনেকেই অনেক বিষয়ে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়। কিন্তু তাদের অধিকাংশই অঙ্গীকার ভঙ্গের সম্মুখীন হয়।

    - আরো দাবি: বিপদের সম্মুখীন হলে সবর করবে। অটল থাকবে।”- মাজমুউল ফাতাওয়া ১০/৩৮



    ইবনু বাত্তাল রহ. (৪৪৯ হি.) বলেন,
    نهى الرسول أمته عن تمنى لقاء العدو؛ ولأنه لا يعلم ما يئول أمره إليه ولا كيف ينجو منه، وفى ذلك من الفقه النهى عن تمنى المكروهات، والتصدى للمحذورات، ولذلك سأل السلف العافية من الفتن والمحن؛ لأن الناس مختلفون فى الصبر على البلاء، ألا ترى الذى أحرقته الجراح فى بعض المغازى مع رسول الله (صلى الله عليه وسلم) فقتل نفسه، وقال الصديق: (لأن أعافى فأشكر أحب إلى من أن أبتلى فأصبر). اهـ
    “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করতে নিষেধ করেছেন। তাছাড়া তার জানা নেই যে, পরিস্থিতি শেষে কোন দিকে গড়াবে। এও জানা নেই যে, কিভাবে তা থেকে নাজাত মিলবে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে, অপছন্দনীয় বিষয়াশয়ের আকাঙ্ক্ষা করা বা স্বেচ্ছায় নিজেকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সম্মুখীন করা নিষেধ। এ কারণে সালাফগণ ফিতনা ও শাসকদের বালা থেকে নিরাপদ থাকার দোয়া করতেন। কেননা, বিপদে সবর করার শক্তি সকলের সমান নয়। ঐ লোকের অবস্থাটা কি দেখনি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন এক যুদ্ধে যে জখমের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে আত্মহত্যা করেছিল?! (আবু বকর) সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘বিপদে পড়ে সবর করার চেয়ে সুস্থ ও নিরাপদ থেকে শুকর করা আমার কাছে অধিক প্রিয়।”- শরহুল বুখারি লি ইবনি বাত্তাল ৫/১৮৫


    # শরীয়ত প্রথমেই কাফের সাথে যুদ্ধে লেগে যেতে আদেশ দেয়নি। প্রথমে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিতে বলেছে। তাতে সম্মত না হলে জিযিয়া কবুলের দাওয়াত দিতে বলেছে। কোনটাতেই সম্মত না হলে তখন যুদ্ধের আদেশ। উদ্দেশ্য- ভালোয় ভালোয় কাজ হয়ে গেলে বিপদে জড়ানোর দরকার নেই। জিহাদের উদ্দেশ্য কাফেরদের মেরে শেষ করে ফেলা নয়। উদ্দেশ্য ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসা। প্রথমে তা সম্ভব না হলে অন্তত ইসলামী শাসনের অধীনে নিয়ে আসা। যাতে এক দিকে তাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়, অন্যদিকে ইসলামের সৌন্দর্য দেখে আস্তে আস্তে মুসলমান হয়ে যায়। মারামারি-কাটাকাটি ও ধ্বংসাযজ্ঞ চালানো উদ্দেশ্য নয়। এগুলো করা হবে প্রয়োজনের তাগিদে। অতএব, কোন মুমিনের উচিৎ নয় সংঘর্ষে জড়ানোর কামনা করা। সহীহ সালামতে নিরাপদে উদ্দেশ্য হাসিল হওয়ার দোয়া করবে। যদি এভাবে কাজ না হয় তখন যুদ্ধের বিধান।

    ইমাম কাসানী রহ. (৫৮৭ হি.) সুন্দর কথাই বলেছেন,
    ولأن القتال ما فرض لعينه بل للدعوة إلى الإسلام، والدعوة دعوتان: دعوة بالبنان، وهي القتال ودعوة بالبيان، وهو اللسان، وذلك بالتبليغ والثانية أهون من الأولى؛ لأن في القتال مخاطرة الروح والنفس والمال، وليس في دعوة التبليغ شيء من ذلك، فإذا احتمل حصول المقصود بأهون الدعوتين لزم الافتتاح بها. اهـ
    “যুদ্ধ এ জন্য ফরয করা হয়নি যে, এটি স্বতন্ত্র একটি মাকসাদ। বরং ফরয করা হয়েছে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার লক্ষ্যে। আর দাওয়াত দুই প্রকার:

    এক. দাওয়াত বিলবানান তথা শক্তিবলে দাওয়াত। এটি হল যুদ্ধ।

    দুই. দাওয়াত বিলবায়ান তথা বুঝানোর মাধ্যমে দাওয়াত। এটি হবে যবান দ্বারা তাবলিগ করার মাধ্যমে।

    দ্বিতীয়টি প্রথমটি থেকে সহজ। কেননা, যুদ্ধে জান-মাল হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। তাবলিগের মাধ্যমে দাওয়াতে এর কিছুই নেই। যখন সহজ দাওয়াতের মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তখন এটি দিয়েই শুরু করা আবশ্যক।”- বাদায়িউস সানায়ি ৭/১০০


    মোটকথা, মারামারি মূল উদ্দেশ্য নয়। মূল উদ্দেশ্য কুফর বিদূরিত করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা। যত সহজে তা সম্ভব হয়, ততই ভাল। তাই নিরাপদে, সহজে ও সহীহ সালামতে কাজ হয়ে যাওয়ার দোয়া করাই কাম্য। মারামারির আকাঙ্ক্ষা কাম্য নয়।


     হাদিসের পরের অংশ: ‘তবে শত্রুর মুখোমুখী যখন হয়েই পড়বে, ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করবে। শুনে রাখো! জান্নাত তরবারির ছায়াতলে’।

    দুনিয়ার স্বাভাবিক রীতি এটাই যে, কাফেররা মৌখিক দাওয়াতের দ্বারা ইসলাম গ্রহণে আগ্রহী হয় না কিংবা জিযিয়া কবুল করতেও সম্মত হয় না। আমরা আমাদের দায়িত্ব হিসেবে আল্লাহ তাআলার কাছে কোনরূপ সংঘর্ষ ছাড়াই উদ্দেশ্য হাসিলের দোয়া করব। তবে সব সময় সংঘর্ষ ছাড়া সমাধান হবে না। সংঘর্ষে জড়াতেই হবে। তখন শরীয়ত আদেশ দিয়েছে সবরের সাথে মোকাবেলার। অসংখ্য অগণিত নিয়ামত ও মান-মর্যাদার লোভ দেখিয়ে আল্লাহ তাআলা এ সময় টিকে থাকার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। ভীরুতা ও কাপূরুষতা থেকে বারণ করেছে। পলায়ন করা হারাম করেছেন।

    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ}
    “হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে মোকাবেলায় লিপ্ত হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর যাতে তোমরা উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার। এবং আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা`আলা ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।”- সুরা আনফাল: ৪৫-৪৬

    হাফেয ইবনু হাজার রহ. বলেন,
    قال القرطبي وهو من الكلام النفيس الجامع الموجز المشتمل على ضروب من البلاغة مع الوجازة وعذوبة اللفظ فإنه أفاد الحض على الجهاد والإخبار بالثواب عليه والحض على مقاربة العدو واستعمال السيوف والاجتماع حين الزحف حتى تصير السيوف تظل المتقاتلين وقال بن الجوزي المراد أن الجنة تحصل بالجهاد. اهـ
    “কুরতুবি রহ. বলেন … রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ বাণীটি জিহাদের প্রতি উৎসাহ দিচ্ছে। জিহাদের বিনিময়ে যে প্রতিদান মিলবে তারও জানান দিচ্ছে। উৎসাহ দিচ্ছে শত্রুর নিকটবর্তী হতে। তরবারি চালাতে। লড়াইয়ের ময়দানে একে অপরের নিকটে জমায়েত হতে। যেন লড়াইকারীদের মাথার উপর তরবারি ছায়াদানকারী শামিয়ানার মতো হয়ে যায়। ইবনুল জাওযি রহ. বলেন, উদ্দেশ্য- জান্নাত জিহাদের দ্বারা মিলবে।”- ফাতহুল বারি ৬/৩৩



     আশাকরি উপরোক্ত আলোচনা থেকে পরিষ্কার যে, এ হাদিসে জিহাদ ছাড়তে বলা হয়নি, বরং জিহাদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তবে জিহাদের একটি আদব শিখানো হয়েছে যে, নিজেদের শক্তি-সামর্থ্যের উপর কখনও ভরসা করবে না। ভরসা করবে আল্লাহর উপর। আল্লাহর নুসরতের উপর। বিপদাপদের সম্মুখীন হওয়ার কামনা করবে না। সহীহ সালামতে উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যাওয়ার দোয়া করবে। এজন্য ইবনু কুতায়বা রহ. (২৭৬হি.) এ হাদিসকে নিম্নোক্ত শিরোনামের অধীনে এনেছেন,
    آداب الحرب ومكائدها
    “যুদ্ধের আদব ও কলা-কৌশল।”- উয়ূনুল আখবার ১/১৮৫

    ইবনু হাজার রহ. বলেন,
    وفي الحديث استحباب الدعاء عند اللقاء والاستنصار ووصية المقاتلين بما فيه صلاح أمرهم وتعليمهم بما يحتاجون إليه وسؤال الله تعالى بصفاته الحسنى وبنعمه السالفة ومراعاة نشاط النفوس لفعل الطاعة والحث على سلوك الأدب وغير ذلك. اهـ
    “হাদিস থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মুস্তাহাব বুঝা যাচ্ছে:
    - শত্রুর মুখোমুখী হলে দোয়া করা।
    - আল্লাহর কাছে নুসরত চাওয়া।
    - মুজাহিদদের এমনসব বিষয়ে অসীয়ত করা যেগুলো তাদের ইসলাহ করবে।
    - এমনসব বিষয় তা’লিম দেয়া যেগুলো তাদের প্রয়োজন পড়বে। …
    - আদব বজায় রেখে চলার প্রতি উৎসাহ দেয়া। এ ছাড়াও আরো বিভিন্ন বিষয়।”- ফাতহুল বারি ৬/১৫৭


    উভয় ইমামের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, হাদিসটি যুদ্ধের আদব বয়ান করার জন্য বলা হয়েছে, যুদ্ধ থেকে ফেরানোর জন্য নয়।

    অধিকন্তু হাদিসের শুরু-শেষ ও প্রেক্ষাপট থেকে বিষয়টি একেবারে স্পষ্ট:

    - হাদিসটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিহাদের ময়দানে বলেছেন।

    - রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দিনের শুরুভাগে হামলা করেননি, তখন হামলাটি যেন মোবারক সময়ে হয় এ জন্য জোহর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন।

    - জোহরের সময় হওয়ার পর যখন হামলা করবেন স্থির করেছেন তখন যুদ্ধের একটি আদব বর্ণনা করেছেন, পাশাপাশি সবরের সাথে টিকে থাকার উৎসাহ দিয়েছেন।

    - আমীর উমার ইবনু আব্দুল্লাহ রহ. যখন হারুরিয়্যা তথা খাওয়ারেজদের বিরুদ্ধে অভিযানে যাচ্ছেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনু আবু আওফা রাদিয়াল্লাহু আনহু তার কাছে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে এ কথা বলেননি যে, জিহাদে যাওয়া যাবে না, হাদিসে নিষেধ এসেছে। বরং তিনি যুদ্ধের একটি সুন্নত শিখালেন যে, যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন যেন বুঝিয়ে সুজিয়ে দলীল-প্রমাণ পেশ করে খাওয়ারেজদের পথে নিয়ে আসা যায়। সংঘর্ষ ছাড়াই উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করবেন। যেমনটা আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু করেছিলেন। নিজে গিয়ে এবং ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠিয়ে মুনাযারা করে খাওয়ারেজদের ভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করেছেন। এতে অধিকাংশ খাওয়ারেজ ফিরে আসে। বাকি যারা থেকে যায় তাদের সাথে কিতাল করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু আবু আওফা রাদিয়াল্লাহু আনহু এটিই শিক্ষা দিতে চাচ্ছেন।


    - কয়েকটি হাদিস থেকে বুঝা যায়, এ হাদিস খায়বারের যুদ্ধের সময়কার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগেও অনেক জিহাদ করেছেন, এর পরেও করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর সাহাবায়ে কেরাম জিহাদের পতাকা উড্ডীন করে দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে পড়েন। রোম-পারস্যসহ অর্ধেকেরও বেশি দুনিয়া বিজয় করেছেন। যদি এ হাদিসে জিহাদ নিষেধ করাই উদ্দেশ্য হতো, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য সেদিন জিহাদের ময়দানে থেকে যাওয়া জায়েয হতো না। এর পরে কোন যুদ্ধ করা জায়েয হতো না। সাহাবায়ে কেরামের সকল জিহাদ হারাম হতো। যেহেতু তা হয়নি, বুঝা গেল, জিহাদ নিষেধ করা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও উদ্দেশ্য নয়, সাহাবায়ে কেরামও এমনটি বুঝেননি। এর বিপরীত যারা বুঝবে তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ থেকে বিচ্যুত ও বিভ্রান্তির শিকার। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।


    মোটকথা- জিহাদের ব্যাপারে গোটা শরীয়তে যে শুধু হাদিস একটাই তা তো নয়। সবকিছু বাদ দিয়ে একটা হাদিসের পেছনে পড়ে মনমতো ব্যাখ্যা করে জিহাদের বিরুদ্ধে লেগে পড়া অন্তরের বক্রতার আলামত। আল্লাহ তাআলা এদের চিত্রটাই তুলে ধরেছেন,
    هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ
    “তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি আপনার উপর এই কিতাব নাযিল করেছেন, (যেখানে রয়েছে দু’ধরণের আয়াত) এর কিছু আয়াত হচ্ছে মুহকাম (সুস্পষ্ট দ্বর্থ্যহীন) এবং এগুলোই হচ্ছে কিতাবের মূল অংশ; আর কিছু আয়াত আছে মুতাশাবিহ (রূপক)। যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, তারা (সমাজে) ফিতনা বিস্তারের এবং আল্লাহর কিতাবের অপব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে কিতারেব মুতাশাবিহ আয়াতগুলোর পেছনে পড়ে থাকে।”- আলে ইমরান ৭


    অধিকন্তু হাদিসটিও অস্পষ্ট নয়। হাদিসের শুরু-শেষ ও প্রেক্ষাপট থেকে এবং স্বয়ং হাদিসের শব্দ থেকেই স্পষ্ট যে, জিহাদের আদব বয়ান করা পাশাপাশি জিহাদের প্রতি উৎসাহ দেয়া হাদিসের উদ্দেশ্য। জিহাদের বিপরীত কোন কিছু হাদিসের কোনো একটি শব্দেও নেই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।
    وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصحبه اجمعين



  • #2
    মাশাআল্লাহ, খুব উপকারী আলোচনা।
    সকলের পড়া উচিত।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      মাশাল্লাহ, জাযাকুমুল্লাহ।বারাকুমুল্লাহ, হায়্যাকুমুল্লাহ,হাফিজাকুমুল্লাহ
      Last edited by abumuhammad1; 12-07-2019, 07:52 PM.

      Comment


      • #4
        সুপ্রিয় আখি, বাংলাদেশ আর্মি শান্তি মিশনের মালী ও সুমালিয়াতে আল কায়দার ভাইদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত, ত্বাগুতের আর্মির মধ্যে ফারদান মুসলিম থাকতে পারে/ ভবিষ্যতে যারা এই ন্যাক্কার বাহিনীকে শক্তিশালী করতে যাচ্ছে তাদেরও উপকার আসতে পারে, তাই অনুরোধ করছি, ত্বাগুতের প্রশাসনের অধিনে চাকরির উপর একটি আর্টিকেল আমাদের উপহার দিবেন। আপনার পোস্ট তো আমাদের চক্ষু শীতল করে।
        ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ, খুবই উপকারী পোষ্ট।
          আল্লাহ তা‘আলা মুহতারাম ভাইয়ের ইলমে ও আমলে আরো বারাকাহ দান করুন এবং উনার সকল ইলমী খেদমাতকে কবুল করুন। আমীন
          সুপ্রিয় ভাই- আপনি নিয়মিত ফোরামে ইলমী প্রশ্নগুলোর দিলে খুবই ভাল হয়। তাই আশা করি আপনি এদিকে একটু নজর রাখবেন, ইনশা আল্লাহ।
          আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে তাওফিক দান করুন। আমীন
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment


          • #6
            জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা।

            সম্মানিত ভাই, ভণ্ড সালাফী শায়খ আবু বকর এর বিভ্রান্তির খন্ডন নিয়ে আপনি যে লেখাটা লিখেছেন, ওটার লিংকটা একটু দিলে ভাল হত।

            Comment


            • #7
              Originally posted by salahuddin aiubi View Post
              জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা।

              সম্মানিত ভাই, ভণ্ড সালাফী শায়খ আবু বকর এর বিভ্রান্তির খন্ডন নিয়ে আপনি যে লেখাটা লিখেছেন, ওটার লিংকটা একটু দিলে ভাল হত।



              Comment


              • #8
                মাশাল্লাহ ভাই আল্লাহ তায়ালা আপনের ইলম ও আমলে বারাকা বাড়িয়ে দিন আমিন
                ভাই আপনাকে আল্লার জন্ন ভালোবাসি
                জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
                পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

                Comment


                • #9
                  Originally posted by ইলম ও জিহাদ View Post

                  প্রিয় ভাই, যাজাযাকাল্লাহ। ভাই যদি পারেন, ওয়ার্ড ফাইলটা হলে আরেকটু বেশি ভাল হত। আগে বলে দিতে ভুলে গেছিলাম।

                  Comment


                  • #10
                    মাশাআল্লাহ! খুবই উপকারী পোষ্ট ৷
                    গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

                    Comment


                    • #11
                      Originally posted by salahuddin aiubi View Post
                      প্রিয় ভাই, যাজাযাকাল্লাহ। ভাই যদি পারেন, ওয়ার্ড ফাইলটা হলে আরেকটু বেশি ভাল হত। আগে বলে দিতে ভুলে গেছিলাম।

                      Comment


                      • #12
                        Originally posted by ইলম ও জিহাদ View Post
                        جزاك الله وبارك الله و حياك الله وأطال الله ظلّك البارد علينا واستعملك الله في خدمة دينه بكثير مما قبل ووقفنا الله للاستفادة منك كثيرا كثيرا

                        Comment

                        Working...
                        X