এইতো কিছুকাল আগেও পৃথিবী ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রভিত্তিক জাতীয়তাকে বিদায় জানানোর দাবি তুলে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা, সমানাধিকার ও মানবাধিকার প্রভৃতি ফাঁকা বুলিকে খুব বেশি পরিমাণে মুখে আওড়িয়েছে। নিজেদের আদর্শের ভিত্তি এসব ঠুনকো জিনিসের ওপর দাঁড় করিয়েছে। One man, One vote । প্রতিটি ব্যক্তি পৃথিবীর শৃঙ্খলা পরিচালনায় সমঅধিকারপ্রাপ্ত। প্রত্যেকেই নিজের পছন্দসই শাসনব্যবস্থা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করার অধিকার রাখে। এগুলো এত বেশি উচ্চারিত হয়েছে যে, এখন পুরোই চর্বিতচর্বণ হয়ে গেছে।
প্রাচীন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ধারার অবসান ঘটিয়ে Nation States-এর ধারার সূচনা করা হয়েছে। কিন্তু (তাদের ভাষ্য অনুসারে) ‘ঈশ্বরহীন এই পৃথিবী’তে ব্যাপকভাবে কল্পিত বা ক্ষুদ্র পরিসরে চর্চিত নীতির বাইরে গিয়েও আমরা বেশ কিছু কট্টর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক ধারার উত্থান দেখতে পাই বর্তমানকালের কিছু রাষ্ট্রে। যেমন, ইজরায়েলের দিকে তাকালে দেখতে পাই ইহুদিবাদের দুর্বার রাজত্ব, ভারতের দিকে তাকালে দেখতে পাই উগ্র হিন্দুত্ববাদের হিংস্র শাসন আর চীন মিয়ানমার প্রভৃতি রাষ্ট্রের দিকে তাকালে দেখতে পাই শান্তির স্লোগানধারী বৌদ্ধদের অশান্ত সহিংস রাজত্ব।
অ্যামেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজের ভাষ্য অনুসারেই হোয়াইট হাউজের ইতিহাসে ইজরাইলের স্বার্থের সর্বাধিক সংরক্ষণকারী। ট্রাম্প শুধু একজন ক্রুসেডারই নয়; বরং ট্রাম্প একজন শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীও। তার গত তিন বছরের শাসনামলে প্রায় দুই হাজার কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হয়েছে শ্বেতাঙ্গদের হাতে। এমনকি কিছু হত্যাকাণ্ডের পেছনে মার্কিন পুলিশেরও প্রত্যক্ষ মদদ ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
এখন থেকে ছয় বছর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন গ্রহণ করে গেরুয়া সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা নরেন্দ্র মোদি। প্রথম দফার ক্ষমতার মেয়াদ সমাপ্ত করে সে এখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতার বাগডোর আগলে রেখেছে। এ সময়ে Mob Lynching, তিন তালাকের পরিবর্তিত আইন, গো-হত্যার বদলে মুসলিম হত্যা, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করা, কাশ্মীরে মুসলিম জেনোসাইডের ধারাপাত করা, বাবরি মসজিদের স্থলে রাম মন্দির নির্মাণের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করা, তাজমহলের নাম পরিবর্তন করে তেজ মন্দির রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রভৃতি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে মোদির বিজেপি সরকার।
এইতো এক বছর আগের কথা। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জুমআর নামাজে সমবেত মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। ঘাতক নিজেকে বিভিন্ন আলামতের দ্বারাই ক্রুসেডের আদর্শে আদর্শবান সৈনিক হিসেবে প্রকাশ করে। আক্রমণকারী তার অস্ত্র ও অন্যান্য আসবাবপত্রে কালো কালি দিয়ে যাদের নাম লিখে রেখেছিল, তাদের মধ্যে একজন ছিল পোল্যান্ডের বাদশাহ। এ বিষয়টির বিশ্লেষণ করতে গিয়ে পোল্যান্ডের জনৈক মন্ত্রী বলে, ‘এই বাদশাহ আমাদের গর্ব, যিনি ইউরোপে মুসলমানদের (উসমানি সালতানাত) কপালে পরাজয়ের তিলক এঁকেছেন’।
নয়া পোল্যান্ডের অবস্থার দিকে নজর দিলেও দেখা যায়, সেখানকার আইনে স্পষ্ট বলা আছে, পোল্যান্ডের ইমিগ্রেশন পলিসি মোতাবেক রাষ্ট্রে মুসলমান ও কৃষ্ণাঙ্গদের অবস্থানের ব্যাপারটি বিবেচনাধীন (অর্থাৎ নিষিদ্ধ)।
কিছুদিন আগে ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ‘ট্রাম্পের ব্রিটিশ ভার্সন’ Boris Johnson এর নেতৃত্বে Conservative Party (রক্ষণশীল দল) জয়লাভ করে। Boris Johnson একজন শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ-পূজারী, বিকৃত খ্রিষ্টধর্মের কট্টর অনুসারী এবং আপাদমস্তক অ্যান্টি মুসলিম।
জিনজিয়াং (পূর্ব তুর্কিস্তান)-এ বসবাসকারী এক কোটিরও অধিক মুসলমানের ওপর চীনের ভয়াবহ নির্যাতন, কাজাখ অঞ্চলে এই বৌদ্ধদের তাণ্ডবলীলা, মুসলিম নারীদের পর্দার ওপর অবৈধ হস্তক্ষেপ, আল-কুরআন বাতিল করার ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের কথা না হয় না-ই বললাম।
দুঃখ শুধু এটাই যে, বিভিন্ন ফাঁকা বুলি আওড়িয়ে এবং অলীক স্বপ্নের পেছনে তাড়িত করে নব্য ক্রুসেডার গোষ্ঠী এবং তাদের এজেন্টরা গোটা দুনিয়ার মুসলমানদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে। তবে নিজেরা ঠিক ঠিকই যা হাসিল করার তা পুরোদস্তুর হাসিল করে নিচ্ছে। এরপরও কবে যে এই জাতির ঘুম ভাঙবে, জাতির আলিমরা কবে যে বাস্তবতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ও সচেতন হয়ে শক্ত হাতে ডুবুডুবু তরীর হাল ধরবে এবং দুর্বার প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলবে, তা আল্লাহই ভালো জানেন।
প্রাচীন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ধারার অবসান ঘটিয়ে Nation States-এর ধারার সূচনা করা হয়েছে। কিন্তু (তাদের ভাষ্য অনুসারে) ‘ঈশ্বরহীন এই পৃথিবী’তে ব্যাপকভাবে কল্পিত বা ক্ষুদ্র পরিসরে চর্চিত নীতির বাইরে গিয়েও আমরা বেশ কিছু কট্টর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক ধারার উত্থান দেখতে পাই বর্তমানকালের কিছু রাষ্ট্রে। যেমন, ইজরায়েলের দিকে তাকালে দেখতে পাই ইহুদিবাদের দুর্বার রাজত্ব, ভারতের দিকে তাকালে দেখতে পাই উগ্র হিন্দুত্ববাদের হিংস্র শাসন আর চীন মিয়ানমার প্রভৃতি রাষ্ট্রের দিকে তাকালে দেখতে পাই শান্তির স্লোগানধারী বৌদ্ধদের অশান্ত সহিংস রাজত্ব।
অ্যামেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজের ভাষ্য অনুসারেই হোয়াইট হাউজের ইতিহাসে ইজরাইলের স্বার্থের সর্বাধিক সংরক্ষণকারী। ট্রাম্প শুধু একজন ক্রুসেডারই নয়; বরং ট্রাম্প একজন শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীও। তার গত তিন বছরের শাসনামলে প্রায় দুই হাজার কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হয়েছে শ্বেতাঙ্গদের হাতে। এমনকি কিছু হত্যাকাণ্ডের পেছনে মার্কিন পুলিশেরও প্রত্যক্ষ মদদ ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
এখন থেকে ছয় বছর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন গ্রহণ করে গেরুয়া সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা নরেন্দ্র মোদি। প্রথম দফার ক্ষমতার মেয়াদ সমাপ্ত করে সে এখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতার বাগডোর আগলে রেখেছে। এ সময়ে Mob Lynching, তিন তালাকের পরিবর্তিত আইন, গো-হত্যার বদলে মুসলিম হত্যা, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করা, কাশ্মীরে মুসলিম জেনোসাইডের ধারাপাত করা, বাবরি মসজিদের স্থলে রাম মন্দির নির্মাণের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করা, তাজমহলের নাম পরিবর্তন করে তেজ মন্দির রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রভৃতি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে মোদির বিজেপি সরকার।
এইতো এক বছর আগের কথা। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জুমআর নামাজে সমবেত মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। ঘাতক নিজেকে বিভিন্ন আলামতের দ্বারাই ক্রুসেডের আদর্শে আদর্শবান সৈনিক হিসেবে প্রকাশ করে। আক্রমণকারী তার অস্ত্র ও অন্যান্য আসবাবপত্রে কালো কালি দিয়ে যাদের নাম লিখে রেখেছিল, তাদের মধ্যে একজন ছিল পোল্যান্ডের বাদশাহ। এ বিষয়টির বিশ্লেষণ করতে গিয়ে পোল্যান্ডের জনৈক মন্ত্রী বলে, ‘এই বাদশাহ আমাদের গর্ব, যিনি ইউরোপে মুসলমানদের (উসমানি সালতানাত) কপালে পরাজয়ের তিলক এঁকেছেন’।
নয়া পোল্যান্ডের অবস্থার দিকে নজর দিলেও দেখা যায়, সেখানকার আইনে স্পষ্ট বলা আছে, পোল্যান্ডের ইমিগ্রেশন পলিসি মোতাবেক রাষ্ট্রে মুসলমান ও কৃষ্ণাঙ্গদের অবস্থানের ব্যাপারটি বিবেচনাধীন (অর্থাৎ নিষিদ্ধ)।
কিছুদিন আগে ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ‘ট্রাম্পের ব্রিটিশ ভার্সন’ Boris Johnson এর নেতৃত্বে Conservative Party (রক্ষণশীল দল) জয়লাভ করে। Boris Johnson একজন শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ-পূজারী, বিকৃত খ্রিষ্টধর্মের কট্টর অনুসারী এবং আপাদমস্তক অ্যান্টি মুসলিম।
জিনজিয়াং (পূর্ব তুর্কিস্তান)-এ বসবাসকারী এক কোটিরও অধিক মুসলমানের ওপর চীনের ভয়াবহ নির্যাতন, কাজাখ অঞ্চলে এই বৌদ্ধদের তাণ্ডবলীলা, মুসলিম নারীদের পর্দার ওপর অবৈধ হস্তক্ষেপ, আল-কুরআন বাতিল করার ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের কথা না হয় না-ই বললাম।
দুঃখ শুধু এটাই যে, বিভিন্ন ফাঁকা বুলি আওড়িয়ে এবং অলীক স্বপ্নের পেছনে তাড়িত করে নব্য ক্রুসেডার গোষ্ঠী এবং তাদের এজেন্টরা গোটা দুনিয়ার মুসলমানদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে। তবে নিজেরা ঠিক ঠিকই যা হাসিল করার তা পুরোদস্তুর হাসিল করে নিচ্ছে। এরপরও কবে যে এই জাতির ঘুম ভাঙবে, জাতির আলিমরা কবে যে বাস্তবতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ও সচেতন হয়ে শক্ত হাতে ডুবুডুবু তরীর হাল ধরবে এবং দুর্বার প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলবে, তা আল্লাহই ভালো জানেন।
Comment