আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ সমাজতন্ত্র নিয়ে
সমাজতন্ত্র*যার *(ইংরেজি:*Socialis) হচ্ছে এমন একটি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে উৎপাদনের উপকরণের সামাজিক মালিকানা এবং অর্থনীতির একটি সমবায়ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা,*এছাড়াও একই সাথে এটি একটি রাজনৈতিক মতবাদ ও আন্দোলন যার লক্ষ্য হচ্ছে এই ধরনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।*অর্থাৎ এটি এমন একটি সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে সম্পদ ও অর্থের মালিকানা সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন অর্থাৎ কোনো ব্যক্তিমালিকানা থাকে না। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনসাধারণের প্রয়োজন অনুসারে পণ্য উৎপাদন হয়। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে একটি দেশের কলকারখানা, খনি, জমি ইত্যাদি সামাজিক বা*রাষ্ট্রীয়*সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত হয়।
সমাজতন্ত্র হল*সাম্যবাদী*সমাজের প্রথম পর্যায়। উৎপাদনের উপায়ে সমাজতান্ত্রিক মালিকানা হলো এর অর্থনৈতিক ভিত্তি। সমাজতন্ত্র ব্যক্তিগত মালিকানার উৎখাত ঘটায় এবং মানুষে মানুষে শোষণ, অর্থনৈতিক সঙ্কট ও বেকারত্বের বিলোপ ঘটায়, উন্মুক্ত করে উৎপাদনী শক্তির পরিকল্পিত বিকাশ ও উৎপাদন সম্পর্কের পূর্ণতর রূপদানের প্রান্তর। সমাজতন্ত্রের আমলে সামাজিক উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল জনগণের স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি ও সমাজের প্রতিটি লোকের সার্বিক বিকাশ সাধন। সমাজতন্ত্রের মুলনীতি হলো 'প্রত্যেকে কাজ করবে তার সামর্থ্য অনুযায়ী এবং প্রত্যেকে গ্রহণ করবে তার প্রয়োজন অনু্যায়ী।*সমাজতন্ত্র দুই ধরনেরঃ*কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্র*ও*বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র।*সোভিয়েত ইউনিয়নে*সমাজতান্ত্রিক*রাষ্ট্র*কায়েম করা হয়েছিলো ১৯১৭ সালে। সমাজতন্ত্রে বৈরি শ্রেণি নাই, কেননা কলকারখানা, ভূমি, সবই সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সম্পত্তি। সমাজতন্ত্রে শ্রেণি শোষণ বিলুপ্ত হয়।শুরু হয় সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি
ব্যুৎপত্তিসম্পাদনা★★-------------
সমাজতন্ত্র শব্দটির ব্যবহার এবং শব্দটির উল্লেখযোগ্যতার ঐতিহাসিক পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য করে শব্দটির উৎপত্তি বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে দায়ী করা যেতে পারে । 'সোসালিজম' শব্দটি ১৮২৭ সালে ইংল্যান্ডে রবার্ট ওয়েন (১৭৭১-১৮৫৮) কো-অপারেটিভ ম্যাগাজিনে প্রথম ব্যবহার করেন।আধুনিককালে শব্দটির ব্যবহার ও সংজ্ঞা পাকাপোক্ত ১৬৮০’র বছরগুলোতে। সেই সময়ের আগে ব্যবহৃত সমবায়ী (co-operative), পারস্পরিক পন্থি (mutualist) এবং সঙ্ঘপন্থি (associationist) শব্দগুলোর পরিবর্তে সমাজতন্ত্র শব্দটি নানা লেখক ব্যবহার করেন।
*সমাজতন্ত্রের ইতিহাস★---------★-------★
সমাজতন্ত্রের ইতিহাসের উৎপত্তি ১৭৮৯ সালের*ফরাসি বিপ্লব*এবং তার থেকে উদ্ভূত পরিবর্তনের ভেতরে নিহিত, যদিও এটি আগের আন্দোলন এবং ধারনা থেকেও বিভিন্ন ধারনা গ্রহণ করেছে। এছাড়া উনিশ শতকের*কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্রিদের*দ্বারা কল্পিত নানা ব্যবস্থাগুলো পরবর্তীকালে পরিণত হয়েছিলো বৈজ্ঞানিক*সাম্যবাদের*নানা তাত্ত্বিক উৎসে।ফরাসি বিপ্লবের মূল লক্ষ্য সমাজতন্ত্র ছিল না যদিও সাম্যবাদ ও সমাজতন্ত্রের জন্মাগার ছিল সেটাই।
প্রথমদিকের সমাজতন্ত্র-----------★-------★---------★
প্রাচীনকাল থেকেই সমাজতান্ত্রিক মডেল এবং ধারনায় সাধারণ বা জনমালিকানা সমর্থন করা ছিল বা বিদ্যমান ছিল। এটা যদিও বিতর্কিতভাবে, দাবি করা হয়েছে যে শাস্ত্রীয় গ্রিক দার্শনিক*প্লেটো,এবং*এরিস্টটল,ফার্সি এজমালি আদি-সমাজতান্ত্রিক মাজদাক*প্রমুখের সমাজতান্ত্রিক চিন্তার উপাদান রাজনীতিতে ছিল। তারা এজমালি সম্পত্তি এবং জন মঙ্গলকর ব্যবস্থার পক্ষ সমর্থন করেছিলেন।*আবু যার আল-গিফারীকেইসলামী সমাজতন্ত্রের একজন প্রধান পূর্বগামী হিসাবে অনেকেই কৃতিত্ব দিয়ে থাকেন।ফরাসি বিপ্লবেরস্বল্পকাল সময়ের মধ্যেই ফ্রাসোয়া-নোয়েল ব্যাবুফ, এটিনে-গ্যাব্রিয়েল মোরেল, ফিলিপ বোনার্তি, এবং অগাস্ট ব্লাঙ্কিদের মত কর্মী ও তাত্ত্বিকগণ ফরাসি শ্রম ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন প্রভাবিত করেছিলেন।ব্রিটেনে*টমাস পেইন*তার বই*কৃষিভিত্তিক ন্যায়বিচারেকর আদায়কারীদেরকে গরিবদের চাহিদা অনুসারে প্রদানের একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিলেন;যখন চার্লস হল*ইউরোপের রাষ্ট্রসমূহের জনগণের ওপর সভ্যতার প্রভাব*লিখেছেন, সেই বইয়ে তিনি তার সময়ের দরিদ্রের উপর পুঁজিবাদের প্রভাবকে নিন্দামূলক হিসেবে চিত্রিত করেন।*হলের বইটি টমাস স্পেন্সের কল্পলৌকিক প্রণালীসমূহকে প্রভাবিত করে।
প্যারিস কমিউন-----★------★-----★
প্যারিস কমিউন*হচ্ছে ১৮৭১ সালের ১৮ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত প্যারিস পরিচালনাকারী বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক সরকার। প্যারিসের মজুরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শ্রমিক শ্রেণির এই বিপ্লবী সরকার ৭৩ দিন টিকে থাকে। ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধে ফ্রান্সের পরাজিত হওয়ার পরে প্যারিসে যে বিদ্রোহ হয় তাই হচ্ছে প্যারিস কমিউন। কমিউনের নির্বাচন ২৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় এবং উক্ত নির্বাচনে ২০,০০০ অধিবাসীর বিপরীতে একজন হিসেবে ৯২ সদস্যের একটি কমিউন কাউন্সিল নির্বাচিত করা হয।
সমাজতন্ত্রের বৈশিষ্টস--------★----★---★
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কলকারখানা, জমি সম্পদ এবং উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণ উৎপাদনের উপকরণের উপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা স্বীকৃত থাকবে।
এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত সম্পদ ও মুনাফা অর্জন নিষিদ্ধ। সম্পদ ও উৎপাদনের উপকরণের উপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হলে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে। ফলে সমাজে শ্রেণি বৈষম্য ও শ্রেণি শোষণ বিলুপ্ত হবে।
এই অর্থব্যবস্থায় জাতীয় আয় বণ্টনের মূলনীতি হলঃ প্রত্যেকে তার নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করবে এবং কাজ অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাবে। এভাবে আয় ও সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিতের মাধ্যমে সামাজিক ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় দেশের উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা দেশ বা সমাজের কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে করা হয়। অর্থাৎ সামাজিক কল্যাণ সাধনই এই এই অর্থ ব্যবস্থার মুল উদ্দ্যেশ্য।
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উৎপাদন, বণ্টন, বিনিয়োগ ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার জন্য কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ থাকে।
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শ্রমিকদের শোষনের কোন সুযোগ থাকে না এবং প্রত্যেকেই সমান সমান সুবিধা ভোগ করে। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে মানুষের সকল মৌলিক প্রয়োজনীয়তা যেমনঃ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদির নিশ্চয়তা বিধান করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, সাস্থ্য, যোগাযোগ প্রভৃতি সকল খাতে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে উন্নয়ন করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা মাফিক সকল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাই এই অর্থব্যবস্থায় বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনা থাকে না।
এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিকল্পিত উপায়ে উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা পরিচালিত হয় বিধায় অতি উৎপাদন বা কম উৎপাদনজনিত সঙ্কট দেখা দেয় না।
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দ্রব্যের মূল্য*পুঁজিবাদের*ন্যায় চাহিদা ও যোগানের ঘাত প্রতিঘাত অনুযায়ী আপনা আপনি নির্ধারিত হয় না। কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কতৃপক্ষই দ্রব্যসামগ্রীর দাম নির্ধারন করে থাকে।
সমাজতান্ত্রিক সমাজের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মূল উপাদানগুলি হলও রাষ্ট্র, সমাজের নেতৃজনিত ও চালিকা শক্তি মার্কসবাদী লেনিনবাদী পার্টি, নানা সামাজিক সংগঠন ও মেহনতি কর্মী দল।
চলবে ইনশাআল্লাহ
সামনের পর্বগুলো পেতে চোখ রাখুন দাওয়াহ ইলাল্লাহতে
সমাজতন্ত্র*যার *(ইংরেজি:*Socialis) হচ্ছে এমন একটি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে উৎপাদনের উপকরণের সামাজিক মালিকানা এবং অর্থনীতির একটি সমবায়ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা,*এছাড়াও একই সাথে এটি একটি রাজনৈতিক মতবাদ ও আন্দোলন যার লক্ষ্য হচ্ছে এই ধরনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।*অর্থাৎ এটি এমন একটি সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে সম্পদ ও অর্থের মালিকানা সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন অর্থাৎ কোনো ব্যক্তিমালিকানা থাকে না। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনসাধারণের প্রয়োজন অনুসারে পণ্য উৎপাদন হয়। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে একটি দেশের কলকারখানা, খনি, জমি ইত্যাদি সামাজিক বা*রাষ্ট্রীয়*সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত হয়।
সমাজতন্ত্র হল*সাম্যবাদী*সমাজের প্রথম পর্যায়। উৎপাদনের উপায়ে সমাজতান্ত্রিক মালিকানা হলো এর অর্থনৈতিক ভিত্তি। সমাজতন্ত্র ব্যক্তিগত মালিকানার উৎখাত ঘটায় এবং মানুষে মানুষে শোষণ, অর্থনৈতিক সঙ্কট ও বেকারত্বের বিলোপ ঘটায়, উন্মুক্ত করে উৎপাদনী শক্তির পরিকল্পিত বিকাশ ও উৎপাদন সম্পর্কের পূর্ণতর রূপদানের প্রান্তর। সমাজতন্ত্রের আমলে সামাজিক উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল জনগণের স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি ও সমাজের প্রতিটি লোকের সার্বিক বিকাশ সাধন। সমাজতন্ত্রের মুলনীতি হলো 'প্রত্যেকে কাজ করবে তার সামর্থ্য অনুযায়ী এবং প্রত্যেকে গ্রহণ করবে তার প্রয়োজন অনু্যায়ী।*সমাজতন্ত্র দুই ধরনেরঃ*কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্র*ও*বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র।*সোভিয়েত ইউনিয়নে*সমাজতান্ত্রিক*রাষ্ট্র*কায়েম করা হয়েছিলো ১৯১৭ সালে। সমাজতন্ত্রে বৈরি শ্রেণি নাই, কেননা কলকারখানা, ভূমি, সবই সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সম্পত্তি। সমাজতন্ত্রে শ্রেণি শোষণ বিলুপ্ত হয়।শুরু হয় সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি
ব্যুৎপত্তিসম্পাদনা★★-------------
সমাজতন্ত্র শব্দটির ব্যবহার এবং শব্দটির উল্লেখযোগ্যতার ঐতিহাসিক পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য করে শব্দটির উৎপত্তি বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে দায়ী করা যেতে পারে । 'সোসালিজম' শব্দটি ১৮২৭ সালে ইংল্যান্ডে রবার্ট ওয়েন (১৭৭১-১৮৫৮) কো-অপারেটিভ ম্যাগাজিনে প্রথম ব্যবহার করেন।আধুনিককালে শব্দটির ব্যবহার ও সংজ্ঞা পাকাপোক্ত ১৬৮০’র বছরগুলোতে। সেই সময়ের আগে ব্যবহৃত সমবায়ী (co-operative), পারস্পরিক পন্থি (mutualist) এবং সঙ্ঘপন্থি (associationist) শব্দগুলোর পরিবর্তে সমাজতন্ত্র শব্দটি নানা লেখক ব্যবহার করেন।
*সমাজতন্ত্রের ইতিহাস★---------★-------★
সমাজতন্ত্রের ইতিহাসের উৎপত্তি ১৭৮৯ সালের*ফরাসি বিপ্লব*এবং তার থেকে উদ্ভূত পরিবর্তনের ভেতরে নিহিত, যদিও এটি আগের আন্দোলন এবং ধারনা থেকেও বিভিন্ন ধারনা গ্রহণ করেছে। এছাড়া উনিশ শতকের*কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্রিদের*দ্বারা কল্পিত নানা ব্যবস্থাগুলো পরবর্তীকালে পরিণত হয়েছিলো বৈজ্ঞানিক*সাম্যবাদের*নানা তাত্ত্বিক উৎসে।ফরাসি বিপ্লবের মূল লক্ষ্য সমাজতন্ত্র ছিল না যদিও সাম্যবাদ ও সমাজতন্ত্রের জন্মাগার ছিল সেটাই।
প্রথমদিকের সমাজতন্ত্র-----------★-------★---------★
প্রাচীনকাল থেকেই সমাজতান্ত্রিক মডেল এবং ধারনায় সাধারণ বা জনমালিকানা সমর্থন করা ছিল বা বিদ্যমান ছিল। এটা যদিও বিতর্কিতভাবে, দাবি করা হয়েছে যে শাস্ত্রীয় গ্রিক দার্শনিক*প্লেটো,এবং*এরিস্টটল,ফার্সি এজমালি আদি-সমাজতান্ত্রিক মাজদাক*প্রমুখের সমাজতান্ত্রিক চিন্তার উপাদান রাজনীতিতে ছিল। তারা এজমালি সম্পত্তি এবং জন মঙ্গলকর ব্যবস্থার পক্ষ সমর্থন করেছিলেন।*আবু যার আল-গিফারীকেইসলামী সমাজতন্ত্রের একজন প্রধান পূর্বগামী হিসাবে অনেকেই কৃতিত্ব দিয়ে থাকেন।ফরাসি বিপ্লবেরস্বল্পকাল সময়ের মধ্যেই ফ্রাসোয়া-নোয়েল ব্যাবুফ, এটিনে-গ্যাব্রিয়েল মোরেল, ফিলিপ বোনার্তি, এবং অগাস্ট ব্লাঙ্কিদের মত কর্মী ও তাত্ত্বিকগণ ফরাসি শ্রম ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন প্রভাবিত করেছিলেন।ব্রিটেনে*টমাস পেইন*তার বই*কৃষিভিত্তিক ন্যায়বিচারেকর আদায়কারীদেরকে গরিবদের চাহিদা অনুসারে প্রদানের একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিলেন;যখন চার্লস হল*ইউরোপের রাষ্ট্রসমূহের জনগণের ওপর সভ্যতার প্রভাব*লিখেছেন, সেই বইয়ে তিনি তার সময়ের দরিদ্রের উপর পুঁজিবাদের প্রভাবকে নিন্দামূলক হিসেবে চিত্রিত করেন।*হলের বইটি টমাস স্পেন্সের কল্পলৌকিক প্রণালীসমূহকে প্রভাবিত করে।
প্যারিস কমিউন-----★------★-----★
প্যারিস কমিউন*হচ্ছে ১৮৭১ সালের ১৮ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত প্যারিস পরিচালনাকারী বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক সরকার। প্যারিসের মজুরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শ্রমিক শ্রেণির এই বিপ্লবী সরকার ৭৩ দিন টিকে থাকে। ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধে ফ্রান্সের পরাজিত হওয়ার পরে প্যারিসে যে বিদ্রোহ হয় তাই হচ্ছে প্যারিস কমিউন। কমিউনের নির্বাচন ২৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় এবং উক্ত নির্বাচনে ২০,০০০ অধিবাসীর বিপরীতে একজন হিসেবে ৯২ সদস্যের একটি কমিউন কাউন্সিল নির্বাচিত করা হয।
সমাজতন্ত্রের বৈশিষ্টস--------★----★---★
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কলকারখানা, জমি সম্পদ এবং উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণ উৎপাদনের উপকরণের উপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা স্বীকৃত থাকবে।
এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত সম্পদ ও মুনাফা অর্জন নিষিদ্ধ। সম্পদ ও উৎপাদনের উপকরণের উপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হলে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে। ফলে সমাজে শ্রেণি বৈষম্য ও শ্রেণি শোষণ বিলুপ্ত হবে।
এই অর্থব্যবস্থায় জাতীয় আয় বণ্টনের মূলনীতি হলঃ প্রত্যেকে তার নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করবে এবং কাজ অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাবে। এভাবে আয় ও সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিতের মাধ্যমে সামাজিক ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় দেশের উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা দেশ বা সমাজের কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে করা হয়। অর্থাৎ সামাজিক কল্যাণ সাধনই এই এই অর্থ ব্যবস্থার মুল উদ্দ্যেশ্য।
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উৎপাদন, বণ্টন, বিনিয়োগ ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার জন্য কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ থাকে।
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শ্রমিকদের শোষনের কোন সুযোগ থাকে না এবং প্রত্যেকেই সমান সমান সুবিধা ভোগ করে। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে মানুষের সকল মৌলিক প্রয়োজনীয়তা যেমনঃ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদির নিশ্চয়তা বিধান করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, সাস্থ্য, যোগাযোগ প্রভৃতি সকল খাতে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে উন্নয়ন করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা মাফিক সকল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাই এই অর্থব্যবস্থায় বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনা থাকে না।
এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিকল্পিত উপায়ে উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা পরিচালিত হয় বিধায় অতি উৎপাদন বা কম উৎপাদনজনিত সঙ্কট দেখা দেয় না।
সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দ্রব্যের মূল্য*পুঁজিবাদের*ন্যায় চাহিদা ও যোগানের ঘাত প্রতিঘাত অনুযায়ী আপনা আপনি নির্ধারিত হয় না। কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কতৃপক্ষই দ্রব্যসামগ্রীর দাম নির্ধারন করে থাকে।
সমাজতান্ত্রিক সমাজের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মূল উপাদানগুলি হলও রাষ্ট্র, সমাজের নেতৃজনিত ও চালিকা শক্তি মার্কসবাদী লেনিনবাদী পার্টি, নানা সামাজিক সংগঠন ও মেহনতি কর্মী দল।
চলবে ইনশাআল্লাহ
সামনের পর্বগুলো পেতে চোখ রাখুন দাওয়াহ ইলাল্লাহতে
Comment