সম্মানিত ভাইয়েরা!
আজকে একটি গুরুত্বর্ণ বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি, আমরা যত ধরনের আযাব পতিত হয় সবগুলো আমাদের হাতের কামায়, নিজেদেরে কৃতকর্মের কারণে আল্লাহ আমাদেরকে এমনসব শাস্তি দিয়ে থাকেন। হোক সেটা জলে বা স্থলে। যে আযাব আসে সবগুলো মানুষের হাতের কামায়।
বর্তমানে যে করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত এক রোগ পৃথিবীতে দেখা যাচ্ছে তা কি আযাব?
হ্যা এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব।
চলুন আমরা জেনে নেই করোনা ভাইরাস কীভাবে আযাব হয়,
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ [٣٠:٤١]
স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।
আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।
এই আযাব-গযব সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا فَعَلَتْ أُمَّتِي خَمْسَ عَشْرَةَ خَصْلَةً حَلَّ بِهَا الْبَلاَءُ " . فَقِيلَ وَمَا هُنَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ
রাসূলাল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ আমার উম্মাত যখন পনেরটি বিষয়ে লিপ্ত হয়ে পড়বে তখন তাদের উপর বিপদ-মুসীবত এসে পড়বে। প্রশ্ন করা হল ইয়া রাসূলাল্লাহ! সেগুলো কি কি?
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا اتُّخِذَ الْفَىْءُ دُوَلاً وَالأَمَانَةُ مَغْنَمًا وَالزَّكَاةُ مَغْرَمًا وَتُعُلِّمَ لِغَيْرِ الدِّينِ وَأَطَاعَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ وَعَقَّ أُمَّهُ وَأَدْنَى صَدِيقَهُ وَأَقْصَى أَبَاهُ وَظَهَرَتِ الأَصْوَاتُ فِي الْمَسَاجِدِ وَسَادَ الْقَبِيلَةَ فَاسِقُهُمْ وَكَانَ زَعِيمُ الْقَوْمِ أَرْذَلَهُمْ وَأُكْرِمَ الرَّجُلُ مَخَافَةَ شَرِّهِ وَظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالْمَعَازِفُ وَشُرِبَتِ الْخُمُورُ وَلَعَنَ آخِرُ هَذِهِ الأُمَّةِ أَوَّلَهَا
فَلْيَرْتَقِبُوا عِنْدَ ذَلِكَ رِيحًا حَمْرَاءَ وَزَلْزَلَةً وَخَسْفًا وَمَسْخًا وَقَذْفًا وَآيَاتٍ تَتَابَعُ كَنِظَامٍ بَالٍ قُطِعَ سِلْكُهُ فَتَتَابَعَ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যখন গানীমাতের (যুদ্বলব্দ) মাল ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানতের মাল লুটের মালে পরিণত হবে, যাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে, জ্ঞান অর্জন করবে কিন্তু দ্বীনের জন্য না, পুরুষ স্ত্রীর অনুগত হয়ে যাবে কিন্তু নিজ মায়ের অবাধ্য হবে, বন্ধু-বান্ধবকে কাছে টেনে নিবে, কিন্তু পিতাকে দূরে ঠেলে দিবে, মসজিদে কলরব ও হট্টগোল করবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হবে, নিকৃষ্ট লোক সমাজের কর্ণধার হবে, কোন মানুষের অনিষ্ট হতে বাঁচার জন্য তাকে সম্মান দেখানো হবে, গায়িকা-নর্তকী ও বাদ্য যন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদপান করা হবে, এই উম্মাতের শেষ যামানার লোকেরা তাদের পূর্ববতী মনীষীদের অভিসম্পাত করবে,
তখন তোমরা অগ্নিবায়ু, ভূমিধস, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতি ও পাথর বর্ষণরূপ শাস্তির এবং আরো আলামতের অপেক্ষা করবে যা একের পর এক নিপতিত হতে থাকবে, যেমন পুঁতিরমালা ছিড়ে গেলে একের পর এক তার পুঁতি ঝরে পড়তে থাকে।
বি.দ্র: এখানে ২টি হাদিসের সম্বনয় করে দেওয়া হয়েছে।
তিরিমিজি: ২২১০, ২২১১
বনী ঈসরাইলকে আল্লাহ বর্তমান শাস্তির ন্যায় বিভিন্ন শাস্তি দিয়েছেন, যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوفَانَ وَالْجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ آيَاتٍ مُّفَصَّلَاتٍ فَاسْتَكْبَرُوا وَكَانُوا قَوْمًا مُّجْرِمِينَ [٧:١٣٣]
সুতরাং আমি তাদের উপর পাঠিয়ে দিলাম তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত প্রভৃতি বহুবিধ নিদর্শন একের পর এক। তারপরেও তারা গর্ব করতে থাকল। বস্তুতঃ তারা ছিল অপরাধপ্রবণ।
বর্তমানেও দেখা যাচ্ছে, আল্লাহ যখন কোন শাস্তি (বিভিন্ন প্রকারের রোগসহ আরো যা রয়েছে) দেন, তখন মুশরিক, কাফের, ইহুদীরা এর প্রতিকারের জন্য বিভিন্ন ঔষধ আবিষ্কার করে গর্ব করে থাকে। তারা বলে, আমাদের ১বছরের সময় দিলে আমরা করোনার জন্য ঔষধ আবিস্কার করে দিব, আমরা ঔষধ আবিষ্কার করতেছি।
নাউযুবিল্লাহ! যারা আল্লাহর আযাবকে নিয়ে এভাবে গর্ব করে আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করতে চাই, আমরা তাদের থেকে পানাহ চাই। আল্লাহ আমাদেরকে এমন গর্বকারীদেরে থেকে মুক্ত রাখুন। আমীন।
আল্লাহর রাসূল ﷺ ভিন্ন এ হাদিসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেন,
عَنْ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَجَاءَهُ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ثُمَّ قَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ الْمُؤْمِنِينَ أَفْضَلُ قَالَ : " أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا " . قَالَ فَأَىُّ الْمُؤْمِنِينَ أَكْيَسُ قَالَ : " أَكْثَرُهُمْ لِلْمَوْتِ ذِكْرًا وَأَحْسَنُهُمْ لِمَا بَعْدَهُ اسْتِعْدَادًا أُولَئِكَ الأَكْيَاسُ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলাম। এমতাবস্থায় এক আনসারী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে তাকে সালাম দিলো। অতঃপর বললো, হে আল্লাহর রাসূল! মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম কে? তিনি বলেনঃ স্বভাব–চরিত্রে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অধিক উত্তম। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান কে? তিনি বলেনঃ তাদের মধ্যে যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তারাই সর্বাধিক বুদ্ধিমান।
* আমরা যেন উত্তম ও বুদ্ধিমান মুমিন হতে পারি, আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমনি। *
এরপর আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ أَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ " يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيتُمْ بِهِنَّ وَأَعُوذُ بِاللَّهِ أَنْ تُدْرِكُوهُنَّ لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلاَّ فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلاَفِهِمُ الَّذِينَ مَضَوْا . وَلَمْ يَنْقُصُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ إِلاَّ أُخِذُوا بِالسِّنِينَ وَشِدَّةِ الْمَؤُنَةِ وَجَوْرِ السُّلْطَانِ عَلَيْهِمْ . وَلَمْ يَمْنَعُوا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ إِلاَّ مُنِعُوا الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ وَلَوْلاَ الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا وَلَمْ يَنْقُضُوا عَهْدَ اللَّهِ وَعَهْدَ رَسُولِهِ إِلاَّ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَخَذُوا بَعْضَ مَا فِي أَيْدِيهِمْ . وَمَا لَمْ تَحْكُمْ أَئِمَّتُهُمْ بِكِتَابِ اللَّهِ وَيَتَخَيَّرُوا مِمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ إِلاَّ جَعَلَ اللَّهُ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ " .
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেনঃ
হে মুহাজিরগণ!
তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে।
তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও।
যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসীবত এবং যাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়।
যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযীলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন।
এই ছোট সংক্ষিপ্ত ২টি হাদিস ও ২টি কুরআনের আয়াত থেকে বুঝা যায়, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের নামে যে আযাব আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছেন, তা আমাদের নিজেদের জন্যই । আমরা যদি পাপাচারে, অশ্লীলতা, বেহাপনায় এবং আল্লাহ অবাধ্যতা না করতাম, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে এই ভাইরাস নামের আযাবকে আমাদেরকে দিতেন না।
এখন এই আযাব দেওয়ার কারণ কি?
ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি যে, আল্লাহ যে আযাব দেন না কেন, আল্লাহ চান আমরা যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসি।
আমরা যেন আল্লাহর বিধান মেনে চলতে আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন।
বর্তমান আযাব থেকে আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন।
আমীন।
আজকে একটি গুরুত্বর্ণ বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি, আমরা যত ধরনের আযাব পতিত হয় সবগুলো আমাদের হাতের কামায়, নিজেদেরে কৃতকর্মের কারণে আল্লাহ আমাদেরকে এমনসব শাস্তি দিয়ে থাকেন। হোক সেটা জলে বা স্থলে। যে আযাব আসে সবগুলো মানুষের হাতের কামায়।
বর্তমানে যে করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত এক রোগ পৃথিবীতে দেখা যাচ্ছে তা কি আযাব?
হ্যা এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব।
চলুন আমরা জেনে নেই করোনা ভাইরাস কীভাবে আযাব হয়,
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ [٣٠:٤١]
স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।
আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।
এই আযাব-গযব সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا فَعَلَتْ أُمَّتِي خَمْسَ عَشْرَةَ خَصْلَةً حَلَّ بِهَا الْبَلاَءُ " . فَقِيلَ وَمَا هُنَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ
রাসূলাল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ আমার উম্মাত যখন পনেরটি বিষয়ে লিপ্ত হয়ে পড়বে তখন তাদের উপর বিপদ-মুসীবত এসে পড়বে। প্রশ্ন করা হল ইয়া রাসূলাল্লাহ! সেগুলো কি কি?
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا اتُّخِذَ الْفَىْءُ دُوَلاً وَالأَمَانَةُ مَغْنَمًا وَالزَّكَاةُ مَغْرَمًا وَتُعُلِّمَ لِغَيْرِ الدِّينِ وَأَطَاعَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ وَعَقَّ أُمَّهُ وَأَدْنَى صَدِيقَهُ وَأَقْصَى أَبَاهُ وَظَهَرَتِ الأَصْوَاتُ فِي الْمَسَاجِدِ وَسَادَ الْقَبِيلَةَ فَاسِقُهُمْ وَكَانَ زَعِيمُ الْقَوْمِ أَرْذَلَهُمْ وَأُكْرِمَ الرَّجُلُ مَخَافَةَ شَرِّهِ وَظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالْمَعَازِفُ وَشُرِبَتِ الْخُمُورُ وَلَعَنَ آخِرُ هَذِهِ الأُمَّةِ أَوَّلَهَا
فَلْيَرْتَقِبُوا عِنْدَ ذَلِكَ رِيحًا حَمْرَاءَ وَزَلْزَلَةً وَخَسْفًا وَمَسْخًا وَقَذْفًا وَآيَاتٍ تَتَابَعُ كَنِظَامٍ بَالٍ قُطِعَ سِلْكُهُ فَتَتَابَعَ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যখন গানীমাতের (যুদ্বলব্দ) মাল ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানতের মাল লুটের মালে পরিণত হবে, যাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে, জ্ঞান অর্জন করবে কিন্তু দ্বীনের জন্য না, পুরুষ স্ত্রীর অনুগত হয়ে যাবে কিন্তু নিজ মায়ের অবাধ্য হবে, বন্ধু-বান্ধবকে কাছে টেনে নিবে, কিন্তু পিতাকে দূরে ঠেলে দিবে, মসজিদে কলরব ও হট্টগোল করবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হবে, নিকৃষ্ট লোক সমাজের কর্ণধার হবে, কোন মানুষের অনিষ্ট হতে বাঁচার জন্য তাকে সম্মান দেখানো হবে, গায়িকা-নর্তকী ও বাদ্য যন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদপান করা হবে, এই উম্মাতের শেষ যামানার লোকেরা তাদের পূর্ববতী মনীষীদের অভিসম্পাত করবে,
তখন তোমরা অগ্নিবায়ু, ভূমিধস, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতি ও পাথর বর্ষণরূপ শাস্তির এবং আরো আলামতের অপেক্ষা করবে যা একের পর এক নিপতিত হতে থাকবে, যেমন পুঁতিরমালা ছিড়ে গেলে একের পর এক তার পুঁতি ঝরে পড়তে থাকে।
বি.দ্র: এখানে ২টি হাদিসের সম্বনয় করে দেওয়া হয়েছে।
তিরিমিজি: ২২১০, ২২১১
বনী ঈসরাইলকে আল্লাহ বর্তমান শাস্তির ন্যায় বিভিন্ন শাস্তি দিয়েছেন, যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوفَانَ وَالْجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ آيَاتٍ مُّفَصَّلَاتٍ فَاسْتَكْبَرُوا وَكَانُوا قَوْمًا مُّجْرِمِينَ [٧:١٣٣]
সুতরাং আমি তাদের উপর পাঠিয়ে দিলাম তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত প্রভৃতি বহুবিধ নিদর্শন একের পর এক। তারপরেও তারা গর্ব করতে থাকল। বস্তুতঃ তারা ছিল অপরাধপ্রবণ।
বর্তমানেও দেখা যাচ্ছে, আল্লাহ যখন কোন শাস্তি (বিভিন্ন প্রকারের রোগসহ আরো যা রয়েছে) দেন, তখন মুশরিক, কাফের, ইহুদীরা এর প্রতিকারের জন্য বিভিন্ন ঔষধ আবিষ্কার করে গর্ব করে থাকে। তারা বলে, আমাদের ১বছরের সময় দিলে আমরা করোনার জন্য ঔষধ আবিস্কার করে দিব, আমরা ঔষধ আবিষ্কার করতেছি।
নাউযুবিল্লাহ! যারা আল্লাহর আযাবকে নিয়ে এভাবে গর্ব করে আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করতে চাই, আমরা তাদের থেকে পানাহ চাই। আল্লাহ আমাদেরকে এমন গর্বকারীদেরে থেকে মুক্ত রাখুন। আমীন।
আল্লাহর রাসূল ﷺ ভিন্ন এ হাদিসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেন,
عَنْ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَجَاءَهُ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ثُمَّ قَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ الْمُؤْمِنِينَ أَفْضَلُ قَالَ : " أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا " . قَالَ فَأَىُّ الْمُؤْمِنِينَ أَكْيَسُ قَالَ : " أَكْثَرُهُمْ لِلْمَوْتِ ذِكْرًا وَأَحْسَنُهُمْ لِمَا بَعْدَهُ اسْتِعْدَادًا أُولَئِكَ الأَكْيَاسُ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলাম। এমতাবস্থায় এক আনসারী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে তাকে সালাম দিলো। অতঃপর বললো, হে আল্লাহর রাসূল! মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম কে? তিনি বলেনঃ স্বভাব–চরিত্রে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অধিক উত্তম। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান কে? তিনি বলেনঃ তাদের মধ্যে যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তারাই সর্বাধিক বুদ্ধিমান।
* আমরা যেন উত্তম ও বুদ্ধিমান মুমিন হতে পারি, আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমনি। *
এরপর আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ أَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ " يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيتُمْ بِهِنَّ وَأَعُوذُ بِاللَّهِ أَنْ تُدْرِكُوهُنَّ لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلاَّ فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلاَفِهِمُ الَّذِينَ مَضَوْا . وَلَمْ يَنْقُصُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ إِلاَّ أُخِذُوا بِالسِّنِينَ وَشِدَّةِ الْمَؤُنَةِ وَجَوْرِ السُّلْطَانِ عَلَيْهِمْ . وَلَمْ يَمْنَعُوا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ إِلاَّ مُنِعُوا الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ وَلَوْلاَ الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا وَلَمْ يَنْقُضُوا عَهْدَ اللَّهِ وَعَهْدَ رَسُولِهِ إِلاَّ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَخَذُوا بَعْضَ مَا فِي أَيْدِيهِمْ . وَمَا لَمْ تَحْكُمْ أَئِمَّتُهُمْ بِكِتَابِ اللَّهِ وَيَتَخَيَّرُوا مِمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ إِلاَّ جَعَلَ اللَّهُ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ " .
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেনঃ
হে মুহাজিরগণ!
তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে।
তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও।
যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসীবত এবং যাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়।
যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযীলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন।
এই ছোট সংক্ষিপ্ত ২টি হাদিস ও ২টি কুরআনের আয়াত থেকে বুঝা যায়, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের নামে যে আযাব আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছেন, তা আমাদের নিজেদের জন্যই । আমরা যদি পাপাচারে, অশ্লীলতা, বেহাপনায় এবং আল্লাহ অবাধ্যতা না করতাম, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে এই ভাইরাস নামের আযাবকে আমাদেরকে দিতেন না।
এখন এই আযাব দেওয়ার কারণ কি?
ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি যে, আল্লাহ যে আযাব দেন না কেন, আল্লাহ চান আমরা যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসি।
আমরা যেন আল্লাহর বিধান মেনে চলতে আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন।
বর্তমান আযাব থেকে আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন।
আমীন।
Comment