তামিম আদনানিকে নিয়ে সংশয়ের জওয়াব
بسم الله الرحمن الرحيم
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصبحه أجمعين. أما بعد
আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহ এক প্রশ্নের উত্তরে তামিম আদনানি হাফিজাহুল্লাহর ব্যাপারে মন্তব্য করেছে যে, তিনি মাজহুল। আর মাজহুলের বয়ান শুনা বা তার থেকে ইলম নেয়া জায়েয নেই। بسم الله الرحمن الرحيم
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصبحه أجمعين. أما بعد
এর আগেও কেউ কেউ এ ধরনের সংশয় ছড়িয়েছিল। এক ভাই বিষয়টির সমাধান জানতে চেয়েছেন। ইনশাআল্লাহ আমি বিয়ষটি পরিষ্কার করতে চেষ্টা করবো। ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।
এক.
যারা বলেন, তামিম আদনানি মাজহুল, তার থেকে ইলম নেয়া যাবে না: আসলে তাদের উদ্দেশ্য জনসাধারণকে শরীয়তের উপর উঠানো, না’কি জিহাদ থেকে সরানো- একটু খেয়াল করে দেখা উচিৎ।
আসলে কি এ কথা তারা এ জন্য বলছে যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে তামিম আদনানির বয়ান শুনা হারাম হচ্ছে তাই জনসাধারণকে হারাম থেকে সতর্ক করছে, না’কি জিহাদ বিরোধী মিশন এবং তাগুতের দালালির অংশ হিসেবে বলছে- একটু ফিকির করা উচিৎ।
দুই.
মাজহুলের বিধান কি শুধু তামিম আদনানির *উপরই প্রযোজ্য না’কি অন্য সকলের বেলায়ই প্রযোজ্য? তাদের শায়খদেরকে ক’জন চেনে? তারা যে শত শত কিতাব রিসালা আপলোড করে সেগুলোর লেখকদেরকে ক’জন চেনে?
যেমন ধরুন, আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ। তার ব্যাপারে কয়েকটি প্রশ্ন করি-
১. তার বাড়ি কোথায়?
২. তার বংশ পরিচয় কি?
৩. তিনি কোথায় কোথায় পড়াশুনা করেছেন?
৪. তিনি কি কি যোগ্যতা লাভ করেছেন?
৫. তিনি কি তার উস্তাদ, পিতা মাতা ও অন্যান্য মুরব্বির ফরমাবরদার ছিলেন, না’কি নাফরমান ও অবাধ্য ছিলেন?
৬. তিনি কি পড়াশুনায় মনোযোগী ছিলেন না অমনোযোগী?
৭. ছাত্র যামানায় তিনি কি একজন দ্বীনদার তালিবে ইলম ছিলেন নাকি ভবঘুরে ও ফাসেক প্রকৃতির ছাত্র ছিলেন?
৮. তার উস্তাদগণ তার ব্যাপারে কি সাক্ষ্য দিচ্ছেন? তারা কি তার জন্য দোয়া করেছেন না’কি বদদোয়া করেছেন?
৯. উস্তাদগণ কি তাকে কিতাবাদি পড়ানো, ওয়াজ নসিহত করা ও ফতোয়া দেয়ার অনুমতি দিয়েছেন না’কি দেননি? না’কি অযোগ্য হওয়ার কারণে এ থেকে বারণ করেছেন?
১০. পরিবারের লোকদের সাথে এবং আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিদের সাথে তিনি কি ভাল ব্যবহার করেন? তাদের হক আদায় করেন? না’কি তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং তাদের হক নষ্ট করেন?
১১. তিনি কি নামাযি না’কি বেনামাযি?
১২. আদেল না ফাসেক?
১৩. সর্বোপরি তিনি কি বয়ান বক্তৃতা ও ফতোয়া প্রদানের যোগ্য না’কি অযোগ্য?
এ প্রশ্নগুলো তাদের একজন প্রসিদ্ধ শায়েখের ব্যাপারে করলাম। জিজ্ঞেস করি, এদেশের কতজন আহলে হাদিস এ প্রশ্নগুলোর উত্তর যথাযথ জানেন? যদি না জেনে থাকেন তাহলে তার বয়ান শুনেন কিভাবে আর তার মাসআলা মাসায়েল নেন কিভাবে?
আহলে হাদিসের তিনি তো একজন প্রসিদ্ধ শায়খ। আর যাদেরকে কেউ চিনে না, কখনও বাস্তবে দেখেনি- তাদের কথা না হয় বাদই দিলাম।
আর তাদের সাইটে যেসব কিতাব-রিসালা আপলোড দেয়া হয়, সেগুলোর লেখক অনুবাদকেরও তো একই হালত। সেগুলো ডাউনলোড করা ও পড়া কি তাদের দৃষ্টিতে হারাম হবে?
কাজেই তামিম আদনানিকে নিয়ে উঠেপড়ে লাগার আগে নিজের ঘরের খবর নিই।
তিন.
তামিম আদনানি বয়ান বক্তৃতায় ফতোয়া দিতে আসেন না। তিনি স্বাভাবিক এমনসব বিষয়ে সতর্ক করেন যেগুলো আমাদের চোখের সামনে দিয়ে চলে যাওয়া সত্বেও আমরা দেখি না বা দেখলেও সেভাবে অনুধাবন করি না।
আর মাসআলা মাসআয়েল যেগুলো আলোচনা করেন, সেগুলো তিনি নিজে থেকে বলেন না, প্রসিদ্ধ আইম্মায়ে কেরাম ও কিতাবাদির হাওয়ালায় কুরআন সুন্নাহ থেকে বলেন। এমনসব বিষয়ে কথা বলেন যেগুলো একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের বর্তমান যামানার প্রতিটি মুসলমানের জানা থাকার কথা ছিল। তাওহিদ, রিসালাত, আখিরাত, জিহাদ ইত্যাদি বিষয়ে একেবারে সাদামাটা কথা বলেন যেগুলো আমাদের আগে থেকেই জানা থাকার কথা ছিল। আমরা যখন গাফেল হয়ে আছি তখন তিনি আমাদের একটু সতর্ক করে দিচ্ছেন মাত্র।
তামিম আদনানির উদাহরণে অনেকটা এমন:
- এক এলাকায় রাতের গভীরে আগুন লেগেছে। কেউ টের পাচ্ছে না। দূর থেকে একজন অপরিচিত মুসাফির দেখতে পেয়ে পাহাড়ে উঠে চিৎকার করে এলাকাবাসীকে ডেকে বলছেন, হে এলাকাবাসী! দ্রুত জাগ্রত হন। আপনাদের বস্তিতে আগুন লেগেছে। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
- কিংবা এক এলাকায় সকলের অগোচরে শত্রু হামলা করতে আসছে। দূর পাহাড় থেকে একজন দেখতে পেয়ে এলাকাবসীকে সতর্ক করার জন্য চিৎকার করছেন।
এ ধরনের ক্ষেত্রে কেউ দ্বিমত করবে না যে, উক্ত অজানা অচেনা লোকের চিৎকারে সাড়া দিয়ে জাগ্রত হওয়া ও সতর্ক হওয়া সময়ের দাবি। মাজহুল লোকের এ চিৎকারকে কেউ ফতোয়া বলবে না। তার ডাকে সাড়া দিলে কেউ মাজহুল থেকে ফতোয়া নেয়া হচ্ছে বলবে না। একথাও কেউ বলবে না যে, তার ডাকে সাড়া দিয়ে আগুন ও শত্রু বাহিনির ব্যাপারে সতর্ক হলে বা খোঁজ খবর নিলে হারাম হবে।
অতএব, ভয়ানক কোন কিছুতে কারো ডাকে সতর্ক হওয়া এক জিনিস আর মাজহুল থেকে ফতোয়া নেয়া আরেক জিনিস। একেবারে মোটাবুদ্ধির বা মুআনিদ না হলে আশাকরি এতে কেউ দ্বিমত করবে না।
কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা এর দু’টি দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন-
দৃষ্টান্ত ১
আল্লাহ তাআলা আনতাকিয়াবাসীর হিদায়াতের জন্য তিনজন রাসূল পাঠালেন। তারা রাসূলদের মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করল এবং হত্যার হুমকি ধমকি দিতে লাগল। এলাকার শেষ প্রান্তে হাবিব নামক এক লোক বাস করতেন। তিনি নেককার ছিলেন। ঘটনা শুনতে পেয়ে তিনি কওমের মায়ায় ছুটে আসলেন এবং কওমকে আহ্বান জানালেন, তোমরা রাসূলদেরকে মেনে চল। এতেই তোমাদের কামিয়াবি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ رَجُلٌ يَسْعَى قَالَ يَاقَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِينَ (20)
“শহরের দূর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে আসল। বললো, হে আমার কওম! তোমরা রাসূলদের অনুসরণ কর।”- ইয়াসিন ২০
আমরা যখন কুরআন সুন্নাহ থেকে এবং ইসলাম ও মুসলমানদের নুসরত থেকে পিছপা হয়ে গেছি তখন তামিম আদনানির মতো লোকেরা আমাদের ডেকে বলছেন, তোমরা কুরআন সুন্নাহ এবং রাসূল ও সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ আঁকড়ে ধর। স্পষ্ট যে, এটা মাজহুল থেকে ইলম নেয়া না। তিনি ঐ দরদি লোকটির মতো শুধু এতটুকু আহ্বান জানাচ্ছেন যে, তোমরা রাসূল ও সাহাবাদের আদর্শ আঁকড়ে ধর।
দৃষ্টান্ত ২
মূসা আলাইহিস সালাম কিবতিকে হত্যা করে ফেললেন। ফিরাউনের কাছে সংবাদ পৌঁছে গেল। সে তার মন্ত্রী পরিষদের সাথে পরামর্শে বসেছে। সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে, তারা মূসা আলাইহিস সালামকে হত্যা করে ফেলবে। এক লোক মূসা আলাইহিস সালামের প্রতি দরদি ছিলেন। তিনি গোপনে এক সংক্ষিপ্ত পথ ধরলেন এবং সৈন্যদের আগেই মূসা আলাইহিস সালামের কাছে পৌঁছে গেলেন। গোপন ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্ক করে পালিয়ে যেতে বললেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ يَسْعَى قَالَ يَامُوسَى إِنَّ الْمَلَأَ يَأْتَمِرُونَ بِكَ لِيَقْتُلُوكَ فَاخْرُجْ إِنِّي لَكَ مِنَ النَّاصِحِينَ (20) فَخَرَجَ مِنْهَا خَائِفًا يَتَرَقَّبُ قَالَ رَبِّ نَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ (21)
“শহরের দূর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে আসল। আরজ করল, হে মূসা! পরিষদবর্গ আপনার ব্যাপারে পরামর্শ করছে যে, তারা আপনাকে হত্যা করে ফেলবে। অতএব, আপনি (শহর ছেড়ে) বেরিয়ে যান। নিশ্চয়ই আমি আপনার একজন হিতাকাঙ্খী। এতে তিনি ভয়ে ভয়ে পরিস্থিতির প্রতি নজর রেখে (সতর্কতার সহিত) সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লেন। দোয়া করলেন, হে আমার রব! জালিম কওম থেকে আপনি আমাকে মুক্তি দিন।” –কাসাস ২০-২১
আজ মুসলিমদের হালতও এমন। কুফফারগোষ্ঠী ও তাদের দালালরা উম্মাহর বিরুদ্ধে ভয়ানক ষড়যন্ত্র পাকাচ্ছে। তামিম আদনানির মতো দরদি লোকেরা কওমকে গোপনে গোপনে সতর্ক করছেন। এটা ফতোয়া ও ইলম নেয়ার বিষয় নয়, বিপদে সতর্ক করার বিষয়। অতএব, চিনি না জানি না- এসব বলে জনসাধারণকে এ ধরনের দরদি লোকের বয়ান থেকে বিরত রাখার অর্থ মূসা আলাইহিস সালামকে ফিরআউনের হাতে তুলে দিতে সহায়তা করা। বিশেষত আমরা স্পষ্টই দেখছি যে, তারা নিজেরাও কিছু বলছে না, বরং তাদের অনেকে যামানার ফিরআউনদের পক্ষে দালালি করছে।
চার.
অধিকন্তু তামিম আদনানি ধরনের ব্যক্তিদের যে অর্থে মাজহুল বলা হচ্ছে তারা সে অর্থে মাজহুল নন। তামিম আদনানিকে মাজহুল বলা যেতে পারে এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে, যে জীবনের এই প্রথম তামিম আদনানির একটা বয়ান ইউটিউবে দেখতে পেলো। এর আগে সে তামিম আদনানি সম্পর্ক কিছু জানে না। কারো কাছ থেকে তার ব্যাপারে কিছু শুনেওনি। তিনি ভাল না মন্দ, বিদআতি না আহলে হক, দরবারি না দরদি- কিছুই জানে না। এ ধরনের ব্যক্তির বেলায় বলা যেতে পারে যে, তামিম আদনানি মাজহুল। তার বেলায় আমরা বলবো না যে, আপনি তামিম আদনানি থেকে ইলম নিন। বরং যাচাই বাছাই করে নিতে বলবো।
পক্ষান্তরে সাধারণত যারা তামিম আদনানির বয়ান শুনেন, তারা বিভিন্ন মাধ্যমে স্পষ্ট করেই জানতে পেরেছেন যে, তামিম আদনানি একজন হকপন্থী ও দরদি মানুষ। তিনি কুরআন হাদিসের আলোকে হক ও সত্য কথা বলেন। উম্মাহর দুশমন ও দরবারিদের ষড়ষন্ত্র, কূটকৌশল ও অপব্যাখ্যার ব্যাপারে উম্মাহকে সতর্ক করেন। অনলাই-অফলাইন সব মিলিয়ে এমন অনেক মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জানতে ও অনুধাবন করতে পেরেছেন যে, এ ব্যাপারে তখন আর সন্দেহ থাকে না। তিনি তখন ঐ ব্যক্তির মতো নন, যিনি কোনে জানা শুনা ছাড়াই জীবনের প্রথম কোনো বক্তার বয়ান ডাউনলোড করছেন।
তামিম আদনানিদের বিয়ষটা অনেকটা এমন:
- কোনো রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে দুয়েকজন নির্ভরযোগ্য দূত মারফত কোনো ফরমান আসলো। এরপর সে ফরমান ছড়াতে ছড়াতে সারা দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে গেল।
- কিংবা কোনো রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বা ডেইলি সংবাদ বা খবরের মাধ্যমে জনগণকে সতর্ক করা হলো, অচিরেই আমাদের দেশে শত্রু বাহিনি হামলা করবে। সকলে সতর্ক থাকবেন। কিংবা দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সকলে সাবধান।
- কিংবা ইসলামী খিলাফতে রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি ওয়েবসাইট খোলা হলো। সেখানে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের ইসলাহের জন্য নিয়মিত বয়ান আপডেট দেয়া হয়। বক্তাদের সম্পর্কে জনগণ কিছু জানে না। তবে বয়ানের সাথে বক্তার নাম ও দেশের নাম দেয়া থাকে। এভাবে চলতে চলতে কয়েকজন বক্তা প্রসিদ্ধ হয়ে গেলেন। সকলে তাদের নাম জানে। তাদের ভাল মনে করে। শ্রদ্ধা করে। তাদের বয়ানের অপেক্ষায় থাকে।
এ ধরনের ক্ষেত্রে কেউ বলবে না যে, মাজহুল। তার কথা বিশ্বাস করা বা তার বয়ান শুনা হারাম। … ইত্যাদি।
অতএব, তামিম আদনানিকে মাজহুল বলার আগে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে তার হাইসিয়্যাত নিয়ে আবারও ফিকির করার আহ্বান জানাচ্ছি। নিজের মনমতো একটা বলে দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করলে এর দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে। আর আল্লাহ তাআলা ভাল করেই জানেন, ইসলাহ কার উদ্দেশ্য আর বিভ্রান্তি ছড়ানো কার উদ্দেশ্য।
অধিকন্তু আমরা এ কথাও বলি না যে, আপনারা অন্ধভাবে তামিম আদনানিদের কথা বিশ্বাস করে আমল শুরু করুন। বরং আপনারা নিজেরাই যাচাই বাছাই করে দেখুন, তারা সত্য বলেন কি’না। চোখ তো আপনাদেরও আছে। আর বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি তো আপনাদের চোখেরই সামনে। ফরযে আইন পরিমাণ ইলম অর্জন করা সকলের উপর ফরয। তামিম আদনানিরা তো কেবল সতর্ক করে যাচ্ছেন। বাকি দায়িত্ব কিন্তু আপনাদেরই। ওয়াল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআলা আ’লাম।
Comment