পোস্ট নং-১
গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসী বিপ্লবের মাধ্যমে। তবে এক শতাব্দী পূর্বে ইংল্যান্ডে সংসদীয় (পার্লামেন্টারী) পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আদর্শগতভাবে জাতির প্রভুত্বের নীতি- যা হচ্ছে গণতান্ত্রিক মাযহাবের (বা ধর্মের) ভিত্তিস্বরুপ- ফরাসী বিপ্লবের পূর্বে কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠতে থাকে। জাহির প্রভুত্ব তত্ত্বের ভিত্তিস্বরুপে পরিগনিত সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা জন লক, মন্টিস্কু এবং জীন জ্যাক রুশোর লেখায় তা প্রতিভাত হয়ে উঠে। এটা ছিল প্রায় প্রায় এক হাজার বছর ধরে ইউরোপে বিস্তৃত ঐশ্বরিক প্রতিনিধিত্ব মতবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া এবং যুদ্ধ। পরিণামে যাজকদের সমর্থনে রাজাগণ চরম ক্ষমতার অধিকারী হয়।
প্রকৃতপক্ষে ইউরোপীয় সম্প্রদায়গুলো নিরংকুশ শাসনে দারুণভাবে জর্জরিত হয়। সে তুলনায় তাদের জন্য জাতির প্রভুত্ব অর্জন করা সর্বোত্তম বিবেচিত হয়, যাতে তারা রাজা এবং যাজকদের দাবীকৃত ঐশ্বরিক শাসনের চরম রাজত্ব থেকে রেহাই পেতে পারে। অতএব গণতন্ত্র মূলত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল খোদায়ী কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা পূর্বক মানুষকে সম্পূর্ণ কর্তৃত্বের মালিক বানিয়ে কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই নিজের জীবন বিধান রচনার পথ পরিস্কার করার জন্য। ঐশ্বরিক প্রতিনিধিত্বের মতবাদ থেকে জাতির প্রভুত্বের মতবাদে উত্তরণ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংঘটিত হয়নি; বরং এটা ছিল বিশ্বের রক্তাক্ততম ঘটনাগুলোর একটি।
ফরাসী বিপ্লবের তো নীতিই ছিল "সর্বশেষ যাজকের নাড়িভুড়ি দ্বারা ঝুলিয়ে সর্বশেষ রাজাকে ফাসি দাও। " ডক্টর সাফার আল-হাওয়ালি বলেন, "অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো ফলাফল নিয়ে ফরাসি বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটে। প্রকৃতপক্ষে, খ্রিস্টীয় ইউরোপের ইতিহাসে প্রথমবারের মত একটি ধর্মহীন প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। এর দার্শনিক ভিত্তি ছিল, আল্লাহর নামে কৃত শাসনের পরিবর্তে জনগনের নামে শাসন, ক্যাথলিকবাদের পরিবর্তে বিশ্বাসের স্বাধীনতা, ধর্মীয় আচরণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরিবর্তে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ এবং গীর্জার সিদ্ধান্তের পরিবর্তে মানুষের তৈরি আইন।" (ড. সফল আল-হাওয়ালির সেকুলারিজম, পৃষ্ঠা ১৬৯)
প্রকৃতপক্ষে ফরাসী বিপ্লবের নীতিমালা এবং শাসন পদ্ধতিতে জাতির প্রভুত্ব এবং বিধি-বিধান রচনায় তার অধিকারের মতবাদ পরিস্ফুটিত হয় ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের অধিকার ঘোষণার ষষ্ঠ বিধানে তদ্রুপই বর্ণিত হয়েছে: "আইন হচ্ছে জাতির ইচ্ছার অভিব্যক্তি "। তার অর্থ হচ্ছে, আইন চার্চ (গীর্জা) অথবা খোদায়ী ইচ্ছার অভিব্যক্তি নয়। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে ফরাসী শাসন পদ্ধতির সাথে একসঙ্গে প্রকাশিত মানুষের অধিকারের একটি ঘোষণার পঁচিশতম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে, " প্রভুত্ব জনসাধারণের মধ্যে কেন্দ্রীভূত"। (ড. সাইয়্যেদ সাবরি princples of ruling system, পৃ. ৫৩)
তাই আব্দুল হামিদ মিতওয়ালী বলেন, '১৭৮৮ সনের বিপ্লবের নীতিমালা ইউরোপীয় গণতান্ত্রিক নীতিমালার ভিত্তি হিসাবে পরিগনিত হয়।" [Ruling system in developing contries পৃ.৩০]
উপরোল্লিখিত সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা গেল গণতন্ত্র একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও বহু ইশ্বরে বিশ্বাসী একটি শিরকি মতবাদ ; ইসলাম ধর্মের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। কেননা আমাদের পবিত্র কুরআন বলছে,
ان الحكم الا لله
(আইনদাতা কেবল আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা) ।
গণতন্ত্র নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বিস্তর আলোচনা করার ইচ্ছা আছে যদি আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাওফিক দান করেন!
বিস্তারিত জানতে পরবর্তী পোস্টে চোখ রাখুন।
চলবে→→→→
গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসী বিপ্লবের মাধ্যমে। তবে এক শতাব্দী পূর্বে ইংল্যান্ডে সংসদীয় (পার্লামেন্টারী) পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আদর্শগতভাবে জাতির প্রভুত্বের নীতি- যা হচ্ছে গণতান্ত্রিক মাযহাবের (বা ধর্মের) ভিত্তিস্বরুপ- ফরাসী বিপ্লবের পূর্বে কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠতে থাকে। জাহির প্রভুত্ব তত্ত্বের ভিত্তিস্বরুপে পরিগনিত সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা জন লক, মন্টিস্কু এবং জীন জ্যাক রুশোর লেখায় তা প্রতিভাত হয়ে উঠে। এটা ছিল প্রায় প্রায় এক হাজার বছর ধরে ইউরোপে বিস্তৃত ঐশ্বরিক প্রতিনিধিত্ব মতবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া এবং যুদ্ধ। পরিণামে যাজকদের সমর্থনে রাজাগণ চরম ক্ষমতার অধিকারী হয়।
প্রকৃতপক্ষে ইউরোপীয় সম্প্রদায়গুলো নিরংকুশ শাসনে দারুণভাবে জর্জরিত হয়। সে তুলনায় তাদের জন্য জাতির প্রভুত্ব অর্জন করা সর্বোত্তম বিবেচিত হয়, যাতে তারা রাজা এবং যাজকদের দাবীকৃত ঐশ্বরিক শাসনের চরম রাজত্ব থেকে রেহাই পেতে পারে। অতএব গণতন্ত্র মূলত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল খোদায়ী কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা পূর্বক মানুষকে সম্পূর্ণ কর্তৃত্বের মালিক বানিয়ে কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই নিজের জীবন বিধান রচনার পথ পরিস্কার করার জন্য। ঐশ্বরিক প্রতিনিধিত্বের মতবাদ থেকে জাতির প্রভুত্বের মতবাদে উত্তরণ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংঘটিত হয়নি; বরং এটা ছিল বিশ্বের রক্তাক্ততম ঘটনাগুলোর একটি।
ফরাসী বিপ্লবের তো নীতিই ছিল "সর্বশেষ যাজকের নাড়িভুড়ি দ্বারা ঝুলিয়ে সর্বশেষ রাজাকে ফাসি দাও। " ডক্টর সাফার আল-হাওয়ালি বলেন, "অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো ফলাফল নিয়ে ফরাসি বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটে। প্রকৃতপক্ষে, খ্রিস্টীয় ইউরোপের ইতিহাসে প্রথমবারের মত একটি ধর্মহীন প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। এর দার্শনিক ভিত্তি ছিল, আল্লাহর নামে কৃত শাসনের পরিবর্তে জনগনের নামে শাসন, ক্যাথলিকবাদের পরিবর্তে বিশ্বাসের স্বাধীনতা, ধর্মীয় আচরণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরিবর্তে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ এবং গীর্জার সিদ্ধান্তের পরিবর্তে মানুষের তৈরি আইন।" (ড. সফল আল-হাওয়ালির সেকুলারিজম, পৃষ্ঠা ১৬৯)
প্রকৃতপক্ষে ফরাসী বিপ্লবের নীতিমালা এবং শাসন পদ্ধতিতে জাতির প্রভুত্ব এবং বিধি-বিধান রচনায় তার অধিকারের মতবাদ পরিস্ফুটিত হয় ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের অধিকার ঘোষণার ষষ্ঠ বিধানে তদ্রুপই বর্ণিত হয়েছে: "আইন হচ্ছে জাতির ইচ্ছার অভিব্যক্তি "। তার অর্থ হচ্ছে, আইন চার্চ (গীর্জা) অথবা খোদায়ী ইচ্ছার অভিব্যক্তি নয়। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে ফরাসী শাসন পদ্ধতির সাথে একসঙ্গে প্রকাশিত মানুষের অধিকারের একটি ঘোষণার পঁচিশতম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে, " প্রভুত্ব জনসাধারণের মধ্যে কেন্দ্রীভূত"। (ড. সাইয়্যেদ সাবরি princples of ruling system, পৃ. ৫৩)
তাই আব্দুল হামিদ মিতওয়ালী বলেন, '১৭৮৮ সনের বিপ্লবের নীতিমালা ইউরোপীয় গণতান্ত্রিক নীতিমালার ভিত্তি হিসাবে পরিগনিত হয়।" [Ruling system in developing contries পৃ.৩০]
উপরোল্লিখিত সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা গেল গণতন্ত্র একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও বহু ইশ্বরে বিশ্বাসী একটি শিরকি মতবাদ ; ইসলাম ধর্মের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। কেননা আমাদের পবিত্র কুরআন বলছে,
ان الحكم الا لله
(আইনদাতা কেবল আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা) ।
গণতন্ত্র নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বিস্তর আলোচনা করার ইচ্ছা আছে যদি আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাওফিক দান করেন!
বিস্তারিত জানতে পরবর্তী পোস্টে চোখ রাখুন।
চলবে→→→→
Comment