بسم الله الرحمٰن الرحيم
اللهم لك الحمد في بلائك وصنيعك إلى خلقك ولك الحمد في بلائك وصنيعك إلى أهل بيوتنا ولك الحمد في بلائك وصنيعك إلى أنفسنا خاصة ولك الحمد بما هديتنا ولك الحمد بما سترتنا ولك الحمد بالقرآن ولك الحمد بالأهل والمال ولك الحمد بالمعافاة ولك الحمد حتى ترضى ولك الحمد إذا رضيت يا أهل التقوى ويا أهل المغفرة.আমরা বিশ্বাস করি
করোনা ভাইরাস আল্লাহর নাযিল করা তাকদির, যা ফেরাবার সাধ্য কারো নেই। এই ব্যাধি নাযিল করার অন্যতম কারণ মানুষের মাত্রাতিরিক্ত নাফরমানি। এছাড়াও আরো কোনো হেকমত এখানে থাকতে পারে, যা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন।
সুতরাং এ অবস্থায় আমাদের দায়িত্ব, বিনা বাক্যে আল্লাহর তাকদির ও ফায়সালা মেনে নেয়া এবং নববী নির্দেশনা অনুযায়ী আমল করতে থাকা। আশা করি আল্লাহ অচিরেই তার বান্দাদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন ইনশাআল্লাহ।
হাদীসের কিছু নির্দেশনা:
নিজেদের কৃত সকল পাপাচারের জন্য অনুতপ্ত হয়ে অধিক পরিমাণে তওবা ইস্তেগফার করা। বিশেষ করে আল্লাহর অসন্তুষ্টির সকল কাজকর্ম থেকে নিজেকে এবং যাদেরকে সম্ভব সকলকে বিরত রাখা। ফরজ ওয়াজিবের পাশাপাশি নফল সালাত, তিলাওয়াত, সাদাকাহ ইত্যাদির প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগী হওয়া।
নিজের জন্য এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করা, আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে সতর্ক হওয়ার তাওফীক দান করেন এবং তাঁর সকল আযাব গজব থেকে হেফাজত করেন।
এই আপদকালীন সময়ে যারা বিপদের সম্মুখীন হবেন, সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে যাওয়া আমাদের ঈমানী ও মানবিক দায়িত্ব। এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অধিক মুনাফা অর্জনের যে ঘৃণ্য প্রয়াস চালাচ্ছেন, তা ঈমান ও মানবতার জন্য লজ্জাজনক বিষয়।
উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে এরোগটি ছোঁয়াচে বা সংক্রামক। হাদীসে ছোঁয়াচে বিষয়ক নির্দেশনাগুলো বাহ্যত পরস্পর বিরোধী। হাদীসগুলোর ব্যাখ্যায় উলামায়ে কেরামের অনেকগুলো মতামত রয়েছে। উল্লেখযোগ্য একটি মত হল, কোনো রোগ সংক্রামক হওয়ার দুই অর্থ। ১. রোগটির সংক্রমিত হওয়ার এবং অন্যকে আক্রান্ত করার নিজস্ব সক্ষমতা আছে। সুতরাং জীবানু বা জীবানু বাহকের সংস্পর্শে গেলেই তাতে আক্রান্ত হওয়া নিশ্চিত। এটি জাহেলি যুগের একটি কুফুরি আকিদা। যেসব হাদীসে সংক্রমণ বলতে কিছু নেই বলা হয়েছে, সেখানে এ অর্থেই বলা হয়েছে। সুতরাং আমাদের আকিদা হল, রোগের নিজস্ব কোনো সক্ষমতা নেই। ২. সংক্রমনের দ্বিতীয় অর্থ হল, রোগটি সৃষ্টি হওয়ার একটি বাহ্যিক কারণ ও সূত্র হচ্ছে সংক্রমণ। কিন্তু রোগের স্রষ্টা মূলত আল্লাহ। সুতরাং জীবানু বা জীবানু বাহকের সংস্পর্শে গেলেই আক্রান্ত হওয়া অনিবার্য নয়। বরং আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন তবেই কেউ আক্রান্ত হবে, অন্যথায় নয়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে কাউকে সংক্রমণ ব্যতীতও আক্রান্ত করতে পারেন, যেমন প্রথম ব্যক্তিকে আক্রান্ত করেছেন।
এজাতীয় বিষয়ে একজন মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য হল, মুমিন বাহ্যিক উপায় উপকরণগুলো অবলম্বন করে, কিন্তু তার উপর ভরসা করে না, তার ভরসা থাকে আল্লাহর উপর। পক্ষান্তরে একজন কাফেরের দৃষ্টি বাহ্যিক উপায় উপকরণেই সীমিত থাকে।
সুতরাং এখানে আমাদের কর্তব্য হবে, রোগটি থেকে মুক্ত থাকার জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ যে নির্দেশনা দিবেন, শরীয়তের আওতায় থেকে সেসব নির্দেশনা মেনে চলার চেষ্টা করা। এটা এজন্যই করব যে, কল্যাণ অর্জনের জন্য তার বাহ্যিক উপায় উপকরণ গ্রহণ করা এবং অকল্যাণ থেকে মুক্ত থাকার জন্য তার বাহ্যিক উপায় উপকরণ গ্রহণ করা আল্লাহর নির্দেশ। কিন্তু একই সঙ্গে আমি এই বিশ্বাসও দৃঢ় রাখব যে, আল্লাহর যা ইচ্ছা তাই অবধারিত।
আল্লাহ না করুন, আমাদের কারো মাঝে কিংবা বিশেষ কোনো এলাকায় করোনার লক্ষণ পরিলক্ষিত হলে কোয়ারেন্টাইনসহ অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরিয়ত অনুমোদিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলব। এটা তাওয়াক্কুল কিংবা শরীয়ত পরিপন্থী হবে না ইনশাআল্লাহ। আবার কোনো রুগীর সেবা বা লাশ দাফন কাফনের প্রয়োজন দেখা দিলে, স্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়ম মেনে তাও করব ইনশাআল্লাহ।
Comment