কুফফার জনসাধারণ নিয়ে ক’টি কথা
কাফেরদের জনসাধারণ হত্যার ব্যাপারে অনেকের যথেষ্ট সংশয়।
প্রথমত আমাদের দেখা উচিৎ, কাফেররা আমাদের জনসাধারণের সাথে কি ধরনের আচরণ করছে?
কেউ কি বলতে পারবে যে, কাফেররা আমাদের জনসাধারণকে হত্যা করে না?
বরং বলতে গেলে মুসলিম জনসাধারণই কাফেরদের টার্গেট। মুজাহিদদেরকে সাধারণত তারা পায় না। যদি হিসাব করা হয় দেখা যাবে এ পর্যন্ত যে সংখ্যক মুজাহিদ কাফেরদের হাতে শহীদ হয়েছেন সে হিসাবে নিহত মুসলিম জনসাধারণের সংখ্যা শত গুণ বেশি। আমাদের নারী, শিশু, বৃদ্ধ- কেউই এদের হাত থেকে নিরাপদ নয়।
ইরাকে কত লাখ শিশু হত্যা করেছে আমেরিকা তা কি আমাদের সামনে নেই?
মায়ানমারে যাদের হত্যা করা হয়েছে এবং হচ্ছে তারা কি মুজাহিদ না সাধারণ?
***
কাফেরদের এটাই চিরাচরিত রীতি। আল্লাহ তাআলা বার বার আমাদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন,
{إِنْ يَثْقَفُوكُمْ يَكُونُوا لَكُمْ أَعْدَاءً وَيَبْسُطُوا إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ وَأَلْسِنَتَهُمْ بِالسُّوءِ وَوَدُّوا لَوْ تَكْفُرُونَ}
“(তাদের চরিত্র হচ্ছে এই যে) যদি এরা তোমাদের কাবু করতে পারে, তাহলে এরা তোমাদের মারাত্মক শত্রুতে পরিণত হবে। (শুধু তাই নয়) নিজেদের হাত ও কথা দিয়ে তোমাদের অনিষ্ট সাধন করবে। (আসলে) এরা এটাই চায় যে, তোমরাও তাদের মতো কাফের হয়ে যাও।” -মুমতাহিনা: ২
وَمَا نَقَمُوا مِنْهُمْ إِلَّا أَنْ يُؤْمِنُوا بِاللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ (8) الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ (9)
“মহাপরাক্রমশালী, স্বীয় স্বত্তায় প্র্রশংসিত এবং আকাশ ও নভোমণ্ডলীর রাজাধিরাজ সম্রাট আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান আনা ছাড়া এদের শাস্তি দেয়ার আর কোন কারণই ছিল না। (সর্বোপরি সেই) আল্লাহ (জালেম ও মজলুমসহ) সকলের কার্যাবলী (যথাযথ) অবলোকন করছেন।” -সূরা বুরূজ: ৮-৯
لَا يَرْقُبُونَ فِي مُؤْمِنٍ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُعْتَدُونَ (10)
“কোনো ঈমানদারের ব্যাপারে এরা যেমন আত্মীয়তার ধার ধারে না তেমনি কোনো অঙ্গীকারের মর্যাদাও রক্ষা করে না। মূলত এরাই হচ্ছে সীমালঙ্গনকারী।” –তাওবা ১০
“(তাদের চরিত্র হচ্ছে এই যে) যদি এরা তোমাদের কাবু করতে পারে, তাহলে এরা তোমাদের মারাত্মক শত্রুতে পরিণত হবে। (শুধু তাই নয়) নিজেদের হাত ও কথা দিয়ে তোমাদের অনিষ্ট সাধন করবে। (আসলে) এরা এটাই চায় যে, তোমরাও তাদের মতো কাফের হয়ে যাও।” -মুমতাহিনা: ২
وَمَا نَقَمُوا مِنْهُمْ إِلَّا أَنْ يُؤْمِنُوا بِاللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ (8) الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ (9)
“মহাপরাক্রমশালী, স্বীয় স্বত্তায় প্র্রশংসিত এবং আকাশ ও নভোমণ্ডলীর রাজাধিরাজ সম্রাট আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান আনা ছাড়া এদের শাস্তি দেয়ার আর কোন কারণই ছিল না। (সর্বোপরি সেই) আল্লাহ (জালেম ও মজলুমসহ) সকলের কার্যাবলী (যথাযথ) অবলোকন করছেন।” -সূরা বুরূজ: ৮-৯
لَا يَرْقُبُونَ فِي مُؤْمِنٍ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُعْتَدُونَ (10)
“কোনো ঈমানদারের ব্যাপারে এরা যেমন আত্মীয়তার ধার ধারে না তেমনি কোনো অঙ্গীকারের মর্যাদাও রক্ষা করে না। মূলত এরাই হচ্ছে সীমালঙ্গনকারী।” –তাওবা ১০
একমাত্র অস্ত্র ব্যতীত আর কিছুর মূল্য এরা বুঝে না। এরা বিবেচনা করে ঈমানের ভিত্তিতে। প্রতিটি ঈমানদার এদের দুশমন। যখন সুযোগ পাবে তখনই হত্যা করবে, ক্ষতি করবে। সামরিক বেসামরিকের কোনো ব্যবধান তাদের কাছে নেই। মহিলা-বৃদ্ধের সম্মান তারা দিতে জানে না। কোমলমতি শিশুদের প্রতি দয়া ভালবাসাও তাদের জন্মে না। তাদের কাছে হিসাব একটাই। সেটা হলো ঈমান।
তারা যখন আমাদের সাথে এ আচরণ করে, তখন আমরাও যদি করতাম তাহলে প্রচলিত দুনিয়ার হিসেব অনুযায়ী সমালোচনার কিছু হওয়ার তো কথা ছিল না। কিন্তু দেখা যায় যখনই মুজাহিদগণ সুযোগ পেয়ে কাফেরদের কোনো বারে, ক্লাবে বা সমাবেশে হামলা করেন তখনই এক দল লোক চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। অথচ লাখো লাখো শিশু যে নির্দয়ভাবে নিহত হচ্ছে এ সীমালঙ্গন যেন তাদের চোখে পড়ে না।
তাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা আল্লাহ তাআলার এ আয়াত দু’টি নিয়ে একটু ফিকির করবেন,
فَمَنِ اعْتَدَى عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُوا عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدَى عَلَيْكُمْ- البقرة 194
‘যে তোমাদের প্রতি বাড়াবাড়ি করবে, তোমরাও ওর প্রতি বাড়াবাড়ি কর, যেরূপ বাড়াবাড়ি সে তোমাদের প্রতি করেছে।’ -সূরা বাকারা: ১৯৪
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُمْ بِهِ - النحل 126
‘আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়েছে।’ –সূরা নাহল: ১২৬
‘যে তোমাদের প্রতি বাড়াবাড়ি করবে, তোমরাও ওর প্রতি বাড়াবাড়ি কর, যেরূপ বাড়াবাড়ি সে তোমাদের প্রতি করেছে।’ -সূরা বাকারা: ১৯৪
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُمْ بِهِ - النحل 126
‘আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়েছে।’ –সূরা নাহল: ১২৬
জনসাধারণ কি যুদ্ধে শরীক নয়?
অধিকন্তু আমরা একটু বাস্তব দুনিয়ার প্রতি লক্ষ করি; আশাকরি পরিস্ফুটিত হয়ে যাবে যে, কাফেরদের জনসাধারণ ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমনিতে লিপ্ত কি’না। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শরীক কি’না।
# ভারতের চিত্র কি আমাদের সামনে নেই। প্রতি দিন যে খবর পাওয়া যাচ্ছে ভারতে এতজন মুসলিম নিহত এতজন আহত- এগুলো কারা করছে?
প্রশাসন তো শিকার করে না যে, তারা করছে। দুনিয়াব্যাপী কোনো চক্ষুষ্মানের কাছে অস্পষ্ট নয় যে, বেসামরিক মালউনরাই এগুলো করে যাচ্ছে আর প্রশাসন পেছন থেকে সাপোর্ট দিচ্ছে। এ কারণেই তো এক কিছু কিছু উলামায়ে সূ ফতোয়াও দিয়েছে যে, ভারত দারুল আমান। কারণ, হত্যা যা করছে জনাসাধারণ করছে; তাদের দৃষ্টিতে সরকারিভাবে না’কি হচ্ছে না এসব। এ ব্যাপারে আলহামদুলিল্লাহ একবার আলোচনা করেছিলাম।
# ভারতে এ পর্যন্ত যতগুলো গণহত্যা হয়েছে সেগুলো কারা করেছে?
# বাবরি মসজিদ কারা গুঁড়িয়েছে?
এখন যদি আমরা ভারতের মালউনদের হত্যা করতে থাকি, তাহলেই চেঁচামেচি শুরু হবে- আমরা বেসমারিক নিরপরাধ নাগরিক হত্যা করে ফেলছি। যেন এতদিন মালউনরা যা করেছে এর বদলা নেয়ার সামান্য অধিকারটুকুও আমাদের নেই।
এ গেল এক কথা।
আরো কয়েকটি প্রশ্ন করি। এগুলোর সদোত্তর দিলে আশাকরি সন্দেহ অনেকটাই কাটবে।
@ আমেরিকার সরকার ও নেতা-নেত্রীদের কি তাদের জনগণ নির্বাচন করেনি?
@ তাদের সামরিক খরচ, অস্ত্রপাতি, যুদ্ধের আসবাবপত্র, বেতন-ভাতা এগুলো কি জনসাধারণ থেকে আসছে না?
@ আমেরিকার সৈনিক ও গোয়েন্দাবাহিনির সদস্যদের কি জনসাধারণ থেকে নেয়া হয়নি? না’কি তারা মায়ের পেট থেকেই সৈনিক আর গোয়েন্দা হয়ে এসেছিল? মালউন নরেদ্র মোদি তো এক সময় একটা চায়ের দোকানদারই ছিল।
@ আমেরিকার সাধারণ জনগণ কি এ আকাঙ্খা রাখে না যে, যদি তারা এমপি-মন্ত্রী হতে পারতো? যদি তারা আর্মি, পুলিশ বা নেভিতে চাকরি পেতো? যদি তারা কোনো রাজনৈতিক নেতা পারতো?
সকলেরই জানা যে, এ ধরনের আকাঙ্খা তাদের বলতে গেলে সকলের অন্তরেই বিদ্যমান। এ কারণে তারা নিজেরা যদি অশিক্ষিত বা অযোগ্য হওয়ার কারণে কোনো পোস্টে চাকরি না পায়, সর্বোচ্চ চেষ্টা করে তাদের ছেলে মেয়েরা যেন অন্তত শিক্ষিত হয়ে কোনো বড় চাকরি করতে পারে। আমরা আমাদের দেশের জনগণের দিকে একটু লক্ষ করলেই বিষয়টা আরো স্পষ্ট বুঝতে পারবো।
@ আজ যদি আমেরিকার এক লাখ নতুন সৈন্য দরকার পড়ে তাহলে তারা কোত্থেকে নেবে? স্পষ্ট যে, জনসাধারণ আর তাদের সন্তানাদি থেকেই নেবে।
@ যদি আমেরিকার এক হাজার কোটি ডলার দরকার পড়ে তাহলে কোত্থেকে নেবে?
স্পষ্ট যে, জনসাধারণ থেকেই নেবে। এমনকি জনসধারণের অনেকে তো দ্বীনের কাজ মনে করে পরকালীন নাজাত আর খৃস্ট ধর্মের বুলন্দির লক্ষে অকাতরে দান করবে।
@ আজ যদি আমেরিকায় হামলা হয় আর সৈনিকরা প্রতিরক্ষার জন্য যথেষ্ট না হয় তাহলে কি আমেরিকা জনসাধারণকে মাঠে নামাবে না? তাদের অস্ত্র আর ট্রেনিং দেবে না?
আমরা ভারতের দিকে লক্ষ করি। তাদের জনগণ, এমনকি মহিলা এবং ছোট ছোট বাচ্চারাও ইসলামের বিরুদ্ধে স্বশস্ত্র ট্রেনিং নিচ্ছে।
আমাদের দেশেও তো একাত্তরে একটা যুদ্ধ হয়েছিল। বাঙালী জনগণকে তখন অস্ত্র-ট্রেনিং দেয়া হয়েছিল কথাটা সকলের জানা। আজ যাদের মুক্তিযোদ্ধা বলে পরম শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে তারা সকলেই নিয়মতান্ত্রিক বাহিনি ছিল না।
যখন ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী যুদ্ধের জনবল অর্থবল সবই জনসাধারণ থেকে আসছে, যখন জনগণ একটা সামরিক পোস্টে চাকরি পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে, যখন তাদের ছেলে-মেয়েগুলোকে সৈনিক ও গোয়েন্দা বানাতে তাদের প্রচেষ্টার কোনো কমতি নেই, যখন দেশ ও ধর্মের প্রতিরক্ষার জন্য তারা প্রয়োজনে মাঠে নামতে প্রস্তুত আছে- এত কিছুর পরও কিভাবে বলা যায় যে তারা নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক?
সহজ কথা, যুদ্ধ একটি ব্যাপক ময়দান। এ ময়দানে যে কেউ যেকোনোভাবে সহায়তা করবে বা তার মধ্যে সহায়তা করার মতো যোগ্যতা আছে সে-ই মুহারিব, মুকাতিল এবং ইসলামের দুশমন। হিংস্র বাঘ আর বিষাক্ত সাপের মতো তারা। যেকোনো সময় থাবা মারতে পারে। ছোবল দিয়ে বসতে পারে। এদেরকে হত্যা করাই যুক্তির দাবি। হ্যাঁ, মাসলাহাতের বিবেচনায় না করা হলে সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে এরা হিংস্র জানোয়ার আর বিষাক্ত সাপ। আল্লাহ তাআলা সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।
***
Comment