ইতিহাসেরপ্রথমশান্তিসংঘ‘হিলফুলফুজুল’
সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি যে শুধু ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছেন, তা কিন্তু নয়। তিনি মানবজাতির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবেও শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছেন। সকল অন্যায়, অনাচার, অবিচার, শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সফল আন্দোলনকারী। তাঁর জীবনের প্রতিটি কাজ মানবজাতির জন্য পথপ্রদর্শক ও আদর্শ শিক্ষা হিসেবে সর্বজন সমাদৃত।
মহানবী (সা.)-এর জীবনের তেমনি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে যা আজও মানবজাতিকে শান্তির পথ দেখিয়ে আসছে। যার নাম হচ্ছে ‘হিলফুল ফুজুল’। এর অর্থ শান্তিসংঘ। নবুয়তপ্রাপ্তির ১৫ বছর আগে, মাত্র ২৫ বছর বয়সে মহানবী (সা.) এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছিলেন।
তিনি আরব সমাজের সব অন্যায়, অবিচার, শোষণ ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে তাঁর সমবয়সী কিছু যুবককে নিয়ে এ শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ সংঘের প্রতিটি কর্মসূচি থেকে যুবসমাজের জন্য বহু শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে।
আসুন দেখেনি ‘হিলফুল ফুজুল’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য-
১. মজলুম ও অসহায়দের সাহায্য করা।
২. সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা।
৩. বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মৈত্রী ও প্রীতির সম্পর্ক স্থাপন করা।
৪. পথিক ও মুসাফিরের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৫. কোনো জালেমকে মক্কায় প্রবেশ করতে না দেয়া এবং দুষ্কৃতকারীদের অন্যায় আগ্রাসন প্রতিরোধ করা।
ইতিহাস বলে, তৎকালীন আরব সমাজ থেকে অন্যায়, অপরাধ দূরীকরণে এ সংগঠনের অবদান ছিল অসামান্য।২. সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা।
৩. বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মৈত্রী ও প্রীতির সম্পর্ক স্থাপন করা।
৪. পথিক ও মুসাফিরের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৫. কোনো জালেমকে মক্কায় প্রবেশ করতে না দেয়া এবং দুষ্কৃতকারীদের অন্যায় আগ্রাসন প্রতিরোধ করা।
বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় মানুষ এখন বিচরণ মহাকাশে। কিন্তু আজ মানুষের জীবনে শান্তি নেই। সন্ত্রাস, গুম, খুন, ছিনতাই জনজীবনকে করে তুলেছে অস্থির। জবরদখল, জালিয়াতি, দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ, শ্রমিকের পাওয়া অনাদায়, আত্মসাৎ, মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড এখন নিত্যদিনের খবর।
পাশ্চাত্যের নোংরামি ও অপসংস্কৃতির সয়লাবে ভেসে যাচ্ছে আজকের যুব সমাজ। যাদের হাত ধরে সমাজের অন্যায়, অস্থিরতা দূর হওয়ার কথা, তারাই জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে। তাই যুবকদের ফিরে আসতে হবে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর আদর্শের প্রতি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘হিলফুল ফুজুল’র আলোকে যুবসমাজ গঠনে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই ফিরে আসবে জনজীবনে স্বস্তি, শান্তি ও শৃঙ্খলা। তাই আসুন হে ভাই! আমরা নবীজীর আদর্শে আদর্শবান হয়ে সমাজ থেকে পাশ্চাত্যের নোংরামি ও অপসংস্কৃতির এবং অশান্তি ও ঘোর অন্ধকার থেকে বের করে আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ) এর আলোর দিকে নিয়ে আসার কাজে জীবনকে উৎসর্গ করে দিই।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল যুবকদেরকে এই মহতি কাজ করার জন্য অগ্রসর হওয়ার তাওফিক দান করেন।আমিন।
Comment