"ভোট আমানত” এই নব্য আবিষ্কৃত এক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শ্লোগানের মুখে চুনকালি মেরে এর দাঁত ভাঙ্গা খন্ডন করে গেছেন আমাদের পূর্বসূরিরা অনেক আগেই।
#গনতান্ত্রিক_প্রক্রিয়ার_নির্বাচনে_ভোটভিক্ষুক_প্রতি টি_ব্যক্তিকে_লেকচারটি_শুনতে_দিন
মুফতি হামিদুল্লাহ জান সাহেব রাহিমাহুল্লাহ
[১] বলেনঃ
“ইসলামি গণতান্ত্রিক পাকিস্তান নয়! বরং শুধু ইসলামি পাকিস্তান!
গণতন্ত্রের এ কুকুরকে এ কূপ থেকে বের করা হলে তবেই
এ কূপ পবিত্র হবে,
অন্যথায় হাজারো বালতি পানি বের করলে এ কূপ পবিত্র হবে না!
“যত দিন এই গান্ধা গণতন্ত্র,
ইংরেজ প্রদত্ত শাসনব্যবস্থা এই দেশে থাকবে, ততদিন এই কূপ পাক হতে পারে না।
সর্বপ্রথম মৃত কুকুর এই কূপ থেকে বের করে ফেলতে হবে।
তারপর এই পানি পাক হবে।
যতক্ষণ মরা কুকুর পানিতে পরে থাকবে,
হাজার বালতি পানি বের করুন! আলিমগণ বসা আছেন,
(আমি প্রশ্ন রাখছি) সেই কূপ কি পাক হতে পারে? হতে পারে না।
সেই কূপ কি পাক হতে পারে? হতে পারে না। নারাজ হবেন না!
আমি একটি মৌলিক কথা বলছি, সংক্ষিপ্ত কথা বলছি।
কুরআনে কারিমের মাঝে আল্লাহ বলেছেন –
اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللہ
তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পন্ডিত ও ধর্ম যাজকদেরকে রাব্ব বানিয়ে নিয়েছে…
-- (সূরা তাওবাহ, ৩১)
এই আয়াতের ব্যাপারে হযরত আদি ইবনে হাতেম রাঃ জিজ্ঞাসা করেছেন-
তাফসিরে রুহুল মায়ানি উঠিয়ে দেখুন!
তাফসিরে মাজহারী উঠিয়ে দেখুন!
অন্যান্য তফসির উঠিয়ে দেখুন!
আরবি না বুঝলে উর্দুতে হযরত মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলবি রাহিমাহুল্লাহ
এর তাফসিরে মায়ারিফুল
কুরআন উঠিয়ে দেখুন!
যাইহোক হযরত আদি ইবনে হাতেম রাঃ জিজ্ঞাসা করলেন-
ইয়া রাসুলাল্লাহ!
আমরা আহলে কিতাবরা তো কখনো উলামাদের সামনে ইবাদত করতাম না সেজদা দিতাম না।
আমরা তো কখনো আমাদের পীরদের ইবাদত করতাম না।
তাহলে আল্লাহ তাআলা কিভাবে বললেন যে,
اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ
أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللہ
যে তারা তাঁদের পীরদের, মৌলবিদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করতো!
তো তারা কিভাবে রব বানাল? আমরা তো তাঁদের ইবাদত করিনি।
তখন হুজুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন-
হাদিস আছে-
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
তারা শরীয়ত প্রণয়নের হক, হালালকে হারাম করা ও হারামকে হালাল করার হক পীর ও মৌলবিদের দিয়েছিল।
অন্য ভাষায়
আইন প্রণয়নের হক পীর ও মৌলবিদের দিয়েছিল।
হারামকে হালাল সাব্যস্ত করে দেওয়া এবং হালালকে হারাম সাব্যস্ত করে দেওয়া, শরীয়ত প্রণয়নের হক, আইন প্রণয়ন, আইন তৈরির হক শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য সাব্যস্ত।
إن الحكم إلا لله
বিধানদাতা একমাত্র আল্লাহ তাআলা। (সূরা ইউসুফ, ৪০)
কেউ বলবে ভোট আমানত, কেউ বলবে ভোট ওয়াকালত বা প্রতিনিধিত্ব
কেউ বলবে ভোট হচ্ছে সাক্ষ্য।
ভোট যা কিছুই হোক,
আমি এক একটি কথা জিজ্ঞাসা করছি –
সাক্ষ্য দেওয়া হবে হকের ব্যাপারে।
যে বাতিল শাসনব্যবস্থা রয়েছে,
তার সমর্থনে ভোট দেওয়া হল
সেই বাতিল নেজামকে মেনে নেওয়া, এই বলা যে এই বাতিল শাসনব্যবস্থা সঠিক!
আপনি (ভোটকে) শাহাদাত বলছেন! তো আমি শাহাদাত মানছি,
আপনি ওয়াকালত বলছেন!
তো আমি ওয়াকালত মানছি,
আপনি আমানত বলছেন!
তো আমি আমানতও মেনে নিচ্ছি।
আপনি যাই বলতে চান বলুন!
কিন্তু আপনি এটা বলুন যে, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, এই নাপাক শাসনব্যবস্থা, ইংরেজদের দেওয়া শাসনব্যবস্থা!
এটাকে কার্যকরভাবে মেনে নিবেন কি নিবেন না?
আমার মুহতারাম বুজুর্গ ভাই! কুরআন আইন প্রণয়ন ও বিধান প্রণয়নের ব্যাপারে ফায়সালা দিয়ে দিয়েছে।
মুসাল্লামুস সুবুত”
এর ইবারত হচ্ছে-
أجمعت الأمة على أن الحاكم هو الله تعالى
উম্মাহ একমত হয়েছে যে,
একমাত্র শাসক হচ্ছে আল্লাহ তাআলা। মুজতাহিদও আইন প্রণয়নকারী নন। তিনি হচ্ছে শরঈ বিধিবিধানের ব্যাপারে পারদর্শী।
তিনি শুধু বলে দেন, প্রণয়ন করেন না
আমরা বুজুর্গদের প্রতি সালাম পেশ করছি, আমরা বুজুর্গদের ইহতিরাম ও সম্মান করি।
আমরা বুজুর্গদের প্রতি মন্দ ধারনা করি না।
কিন্তু বুজুর্গদের এটাকে কিছু মৌলিক, কিছু অপরাগতা অথবা জরুরত বা ইজতিহাদি ভুল মনে করুন!
যিনি যেই ব্যাখ্যা করুক,
তিনি অংশ নিয়ে নিয়েছেন,
কিন্তু অভিজ্ঞতা এটাই প্রমান করে দেয় যে,
এই হযরতদের এই চেষ্টা প্রচেষ্টা কামিয়াব হতে পারবে না।
গণতান্ত্রিক পন্থায়।
সুতরাং
لا يلدغ المؤمن من جحر واحد مرتين
একজন মুমিন একই গর্তে দুইবার ধ্বংসিত হয়না।
পঞ্চাশ সালের চাইতে বেশি আমরা লোকদের কাছে ভোট চেয়েছি।
লোকেরা আমাদের ভোট দিয়েছেন, কখনো এমনও হয়েছে যে,
আমাদের ৮৫ মেম্বার (সংসদ সদস্য) অর্জন হয়েছে।
জাতীয় এসেম্বলিতে যথেষ্ট আধিক্য অর্জন হয়েছে।
কিন্তু আপনারা দেখেছেন –
কোন ইসলামী বিধানটা এসেছে? তারা বলে যে,
আমরা (ভোট/নির্বাচনের মাধ্যমে) প্রতিরক্ষা করছি,
প্রতিরক্ষা কাকে বলে?
নারী অধিকার বিল পাস হয়েছে।
কেউ এটাকে প্রতিহত করতে পেরেছে?
জবাব দিন!
বলুন!
শুধু(সংসদে কিছু) বলা তো উদ্দেশ্য নয়। প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্য তো হচ্ছে কাজটাকে রুখে দেওয়া হবে।
প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্য কী, সেটা বুঝে নিন! প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্য তো শুধুমাত্র বলা না!
প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্য তো হচ্ছে রুখে দেওয়া। কে রুখেছে সে বিলকে? পাস হয়েছে কিনা বলুন!?
আমি আরজ করবো,
আল্লাহর ওয়াস্তে আগে বাস্তবতা বুঝুন!
হে মৌলবিরা! তাওবা করুন! আমি বলছি, আমি গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশ নিয়েছি। ৭০ সালে আমি মেম্বার (সংসদ সদস্য) ছিলাম।
মাওলানা সদর শহীদও পাস হয়েছিলেন।
৬০ হাজারের ভোটের লিড পেয়ে পাস হয়েছেন।
কিন্তু আমি পরিস্কার ভাষায় বলছি- আমি এই গুনাহ থেকে তাওবা করে নিয়েছি।
আল্লাহ আমার তাওবা কবুল করুন! আপনাদের কাছে দরখাস্ত করছি,
আপনারাও তাওবা করুন! আসুন! খেলাফত শাসনব্যবস্থার জন্য আন্দোলনের মুল ভিত্তি অনুসারে ময়দানে আসুন!
কেন ঘাবড়াচ্ছেন?
আসুন ময়দানে আসুন! দেখুন ইসলামী শাসনব্যবস্থা আসে কিনা! তো আমি শুধুমাত্র এটাই দরখাস্ত করবো এবং (দেশ) ইসলামী হবে কিন্তু কবে?
যখন আপনারা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে ছুটি দিয়ে দিবেন।
এবং এই নাপাক, এই মরা কুকুর আপনাদের কুপ থেকে তুলে ফেলতে হবে,
তারপরেই আপনাদের পাক পানি ব্যবস্থা হবে।”
সূত্র-
ইউটিউব ভিডিও লিংক https://www.youtube.com/watch?v=Mx7E_2t4Qzg
———————
মুফতি হামিদুল্লাহ জান সাহেব রহমাতুল্লাহ শরীয়তের দৃষ্টিতে গণতন্ত্রের অবস্থান এবং এর ক্ষতির দিক আলোচনা করতে গিয়ে বলেন,
“গণতন্ত্র বিশৃঙ্খলার মূল শেকড়। যতক্ষণ পর্যন্ত এ দেশ থেকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা শেষ না করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ দেশে ইসলাম কায়েমের কথা বলা অনর্থক হবে।
তিনি আরো বলেন,
এ দেশের আইনে যে পরিমাণ ধর্মহীনতা আছে আমরা এ রাষ্ট্রব্যবস্থা (গণতন্ত্র) দ্বারা কখনো তা নি:শেষ করতে পারব না।
ইসলাম রক্ষার্থে যারা নিজেদের সংসদে থাকা জরুরী মনে করেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,
যদি এ শাসন ব্যবস্থার অনুগামী হয়ে ইসলাম রক্ষার কথা ভাবেন তাহলে তা রূপকথার গল্প বৈ কিছু হবে না।
অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের আলোকে এ বিষয়টি প্রমাণিত যে, পাশ্চাত্যের এ গণতন্ত্র মূলত ধর্মহীনতা, অশ্লিলতা ও সকল বিশৃঙ্খলার মূল।
বিশেষত সংসদ সদস্যদের আইন প্রণয়ণের অধিকার দেয়া সরাসরি কুরআন, সুন্নাহ ও উম্মতের এজমার বিরুদ্ধাচরণ।
আর ভোট দেয়া পাশ্চাত্যের গণতন্ত্র ব্যবস্থাকে বাস্তবে মেনে নেয়া এবং সকল মন্দ কাজে শরীক হওয়ারই নামান্তর।
এজন্য বর্তমানে পাশ্চাত্য ব্যবস্থার অনুগামী হয়ে ভোট দেয়া শরীয়তের দৃষ্টিতে না জায়েয”।
সূত্র- শাইখের ভিডিও বয়ান। ————————
কওমি/দেওবন্দী কোন আলিম বা তলাবা হামিদুল্লাহ জান রাহিঃ'কে চিনেনা সেটা আমাদের জানা নেই।
✍️ এক মুওয়াহহিদ
Comment