মুজাহিদিন আলিম ও ত্বলিবুল ইলমদের প্রতি আহবান!!

[Umm Khawla]

মুজাহিদিন আলিম ও ত্বলিবুল ইলমদের প্রতি আহবান!!
_
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। প্রিয়নবি, তাঁর সাহাবা ও পরিবারের উপর শান্তি ও দয়া বর্ষিত হোক।
.
দীর্ঘদিন হতাশার দরুণ ফোরাম ও অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে দূরে ছিলাম। কিন্তু আমার জিম্মাদারি ও কর্তব্যবোধ আমাকে আবারো এখানে আসতে বাধ্য করেছে। কিছুটা ভগ্নহৃদয়ে আমি বাংলাদেশের ভূখন্ডে তাওহিদ ও জিহাদের দাওয়াতি কর্মকাণ্ড নিয়ে আমার মতামত ও বক্তব্য তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ। সাহায্যকারী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
.
এই ফোরামের প্রত্যেক সদস্য, আমার প্রিয় ভাই ও বোন বিশেষভাবে ত্বলিবুল ইলম ও উলামাগণ, আপনাদের কাছে আমার আন্তরিক জিজ্ঞাসা, বিশ্বব্যাপী ও এই ভূখন্ডে আমাদের জিহাদের মূল উদ্দেশ্য কি?
.
-জিহাদের উদ্দেশ্য যদি হয় কেবল হাকিমিয়াহ প্রতিষ্ঠা তবে আমার ভাই, আপনারা কি খলিফা মামুনের মত কোনো খিলাফাত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছেন, যার খিলাফাতকালে আল্লাহর পবিত্র যাত ও সিফাতকে বিকৃত করা হয়েছিলো এবং হক উলামা ও তার অনুসারিদের হত্যা করা হয়েছিলো? আপনারা কি দাওলাতুল ইসলামিয়ার মত কোনো খিলাফাত চান যা ধুলোর পাহাড়ের মত নিমিষেই ভেঙ্গে পড়বে?
.
হে আমার প্রিয়ভাই, এই জিহাদ ও খিলাফাত তো আল্লাহর পবিত্র তাওহিদকে সমুন্নত করার জন্য এবং তাওহিদ কেবল হাকিমিয়াহতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং উলুহিয়াহ, রুবুবিয়াহ ও আসমা ওয়াস সিফাতও এর অন্তর্ভুক্ত। সাহাবারা এর উপরেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন এবং নেতৃত্ব প্রদানকারীদের একাত্মতা ও ঐক্যের ভিতও তাই।
.
আমরা ইতিমধ্যেই এই ভূখন্ডে আসমা ওয়াস সিফাতের কারণে হাকিমিয়াহতে আন্তরিক ও বুঝসম্পন্ন উলামাশ্রেণীয় কিছু ভাইদের মাঝে বিভেদ ও বৈপরীত্য লক্ষ্য করেছি। ফলস্বরূপ তাদের অনুসারীরাও বিভক্তিতে লিপ্ত হয়েছে। আমি এতে খুশি হয়েছি কেননা এটা আমাদের জন্য একটি শিক্ষা যে, কেবল হাকিমিয়াহতে একমত হলেই 'একাত্মতা' আসে না। আলগা ঐক্য হয়তো আসে, তবে তা স্থায়ী নয়। তাই মুজাহিদিন উলামা ও তলিবুল ইলমদের জন্য জরুরি হলো, তাওহিদের সকল শাখার উপরে ইলম অর্জন করা ও ঐক্যবদ্ধ হওয়া। নতুবা, সশস্ত্র জিহাদ এখনও শুরু হয়নি। এর পূর্বেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আপনারা কিভাবে আশা করছেন যে, জিহাদের ময়দানের অস্থিতিশীল ও চরম সংকটময় মুহুর্তে তারা পরস্পর উদারতার পরিচয় দেবে ও আমজনতার মাঝে ঐক্য স্থাপন করবে?
তাই, জিহাদের সশস্ত্র ময়দানে ঐক্যস্থাপন এবং বিজয় পরবর্তী খিলাফাতের স্থায়িত্বের জন্য 'উম্মতের দায়িত্বশীলদের' কেবল তাওহিদের একটি শাখার উপর ঐক্যবদ্ধ হওয়াই যথেষ্ট নয়, বরং পূর্ণাঙ্গ তাওহিদ ও বিশুদ্ধ আকিদাহর শক্তিশালী ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।
.
এর বাস্তব উদাহরণ হিসেবে, আপনারা জাবহাত আন নুসরা, হায়াতুত তাহরির আশ শাম (hts) ইত্যাদি জিহাদি দলগুলোর দিকে তাকাতে পারেন। তাদের সাথে আলকায়েদার আসমা ওয়াস সিফাতের আকিদাহ থেকে শুরু করে সববিষয়ে সর্বপ্রকার মিল বিদ্যমান ছিলো। তাসত্ত্বেও তাদের মাঝে বিভক্তি হয়েছে। তাহলে হে আমার দায়িত্বশীল ভাইয়েরা, আপনারা কিসের ভিত্তিতে, কোন অভিজ্ঞতার আলোকে শুধু হাকিমিয়াহকে আলকায়েদার 'উলামা ও নেতৃত্বস্থানীয়' পর্যায়ের অভ্যন্তরীণ ঐক্যের মাপকাঠি নির্বাচন করছেন? আল্লাহ আপনাদের বিনয়ি ও হিকমাহর অধিকারী করুন। আমিন।
.
এদেশের প্রিয় উলামা ও ত্বলিবুল ইলম, আমরা আপনাদের মাঝে আলকায়েদার বিশুদ্ধ মানহায ও ইলম দেখতে চাই। উসামা বিন লাদেন, ইব্রাহিম আর রুবাইশ, আলখুদাইর, আবদুল্লাহ আযযাম, হামযা আলমিশরি, আসিম আলমাকদিসি, আবু কাতাদাহ, আলওয়ান, নাসির আলফাহাদ এসকল পূর্বসূরি ও উলামাদের ইলমি প্রতিচ্ছবি দেখতে চাই।
মনে রাখবেন, আপনারা আওয়াম নন। আপনারা উম্মতের আলিম ও নেতা। তাই আকিদাহ আপনাদের জন্য কোনো অবসর সময়ের শৌখিনতা নয়।
একজন আওয়াম তাওহিদের কোনো একটি শাখার ব্যাপারে দুর্ভাগ্যবশত অজ্ঞ থাকতে পারে কিন্তু একজন আলিমের জন্য এই অজুহাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আলকায়েদার গ্লোবাল জিহাদ আবেগের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়, উলামাদের ত্যাগ ও ইলমের শক্ত ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত।
.
সুতরাং আপনারা অধ্যয়নে মনোযোগী হোন এবং বিশুদ্ধ তাওহিদ ও জিহাদের ফিকহ চর্চা করুন। এগুলোকে অবহেলা করলে আল্লাহর আযাবকে ভয় করুন। কেননা আসন্ন জিহাদের ময়দানে মুজাহিদিনদের মাঝে বিশৃঙ্খলার দায়ভার আপনারা ছাড়া আর কে নেবে?
.
লক্ষ্য করুন, দাওয়াহর পরিমণ্ডলে আমাদের দুই ধরণের ফায়দা হাসিল করা জরুরি।
(১) সাধারণ জনগণকে ব্যাপকভাবে হাকিমিয়াহর দাওয়াহ দেয়া যেন আল্লাহ ও মুজাহিদিনদের শত্রু তাগুত শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা তাদেরকে নিরাপত্তা বলয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।
.
(২) চূড়ান্ত গযওয়ার পরিস্থিতিতে একটি সংঘবদ্ধ দল গঠন করা ও তাদেরকে নেতৃত্ব দেবার গুণাবলিসম্পন্ন 'একদল নেতা ও মুজাহিদিন আলিম' তৈরি করা।
_

আপনারাই বলুন, যোগ্য আলিম ব্যতীত গযওয়াতুল হিন্দের মুজাহিদিন দল গঠন, তাদের সংঘবদ্ধ রাখা এবং জিহাদকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করা যাবে কিরুপে?
.
অনেক কষ্ট নিয়ে বলতে হচ্ছে, আমাদের আলিম গড়ার কারিগর কওমি মাদ্রাসাগুলোর কারিকুলামে যা আছে তা পড়ে কেবল এই ভূখন্ডে কাগজে কলমে আলিমের স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব। এর চেয়েও দুঃখজনক হলো, ধরাবাঁধা সিলেবাসের বাইরে আমার অধিকাংশ ত্বলিবুল ইলম ভাইদের ইলম অর্জনের আর কোনো আগ্রহ নেই। প্রিয়ভাই ভুলে যাবেন না, আপনারা উম্মতের আলিম। কোনো সাধারণ দায়ি নন। আপনারা আপনাদের মর্যাদা ও দায়িত্বের বোঝাকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করুন। আমরা এই দেশে মাকদিসিকে দেখতে চাই, আলওয়ানকে দেখতে চাই, মুহাইসিনিকে দেখতে চাই। এটা আপনাদের উপর উম্মতের হক, মুজাহিদিনদের হক ও দ্বীনের জিম্মাদারি।
.
পরিশেষে, আল্লাহ আপনাদের ইস্তিকামাত রাখুন, আপনাদের সহায় হোন ও তার আওলিয়াদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আপনাদের দ্বারা মহান তাওহিদকে পুনরুজ্জীবিত করুন। আমাদের মুজাদ্দিদ উলামা ও তার যোগ্য উত্তরসূরি প্রয়োজন। অনুরোধ, নিরাশ করবেন না।
.
দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক রাসুলুল্লাহর প্রতি।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

[muhammad sadik]

খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন ৷ আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন ৷
পোষ্টটি সবার পড়া উচিত ৷
এই কথাগুলো বিশেষ করে উলামা ও ত্বলাবাদের দ্বায়িত্ববোধকে আরো বাড়িয়ে দিবে ৷

[খুররাম আশিক]

আলহামদুলিল্লাহ,, আপনার পোস্টটি সময় উপযোগী। এই ধরণের ইদানীংকালে খুবই প্রয়োজন। আমাদের কওমির অনেক ছাত্রই উস্তাদের প্রতি অন্ধ বক্ত হয়ে যান, ফলে উস্তাদ ভুল করলেও ভুলগুলোই তারা অনুসরণ করে থাকেন। তাছাড়া তাহকিক করার মতো ছাত্র ইদানীংকাল খুব কম বের হচ্ছে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অনেক মেধাবী ছাত্ররাই ইলমী দুনিয়াই না থেকে দৌড় দেয় ত্বাগুতী অর্থব্যবস্থায়। ফলে আকিদা, মানহাজ, সবই ভুলে যায়। আলহামদুলিল্লাহ,, ফোরাম তথা মুজাহিদদের মিডিয়ার বরকতে আজ অনেক ভাইই ফিরে আসতে শুরু করেছেন। আপনি লক্ষ করলে দেখবেন কোন ছাত্রের শাইখের বিরুদ্ধে কথা বললে ছাত্র কী ধরণের ব্যবহার করে। আপনি যদি অতী হিকমতের সাথেও বলেন ওমুক শাইখের কাজটা ভুল ছিলো এরপরেও দেখবেন অনেক ছাত্ররাই কবুল করছে না।
আল কায়দার ভাইয়েরা,, আকিদা মানহাজ সিরিজ করেছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি ভাইদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের ভাইদের মধ্যে যারা নতুন আসছেন তাদের জন্য আকিদার কিতাবগুলো প্রকাশ করা জরুরী। বাজারে অনেক আকিদার কিতাব পাওয়া যায়। কোন কিতাবটি সবচে গুরুত্বপূর্ণ তা বলে দেওয়া অপরিহার্য।

[আলী ইবনুল মাদীনী]

মাশাআল্লাহ, চমৎকার আলোচনা করেছেন ।

[আবু দুজানা11]

লেখাটা পড়ে মনে হল, যেন ঘুমন্ত কোন চালককে হুড়মুড় করে সজাগ করে দেয়া হল।
সত্যিই তো! আমরা হলাম উম্মাহর নেতৃত্বের স্থানে। আমরা যদি এতো সামন্য কিছু বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকি আর এতো অল্পতেই বিভক্ত হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ি তাহলে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের আশা আমরা কীভাবে করতে পারি? (আল্লাহ না করুন) বিশৃঙ্খলার দায়ভার আমাদের ছাড়া আর কাদের উপর বর্তাবে?
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুক্ষ্ম ও সুপরিকল্পিত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের তাওফিক দিন।
বোনের ইলম ও কলমে বারাকাহ দান করেন। আমীন।

ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিই জিহাদের জন্য অধিক উপযুক্ত। শায়েখ আবু হামজা উসামা রাহিমাহুল্লাহ

[আবু যুবাইর]

মাশাআল্লাহ, উপকারী পরামর্শ দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা কবুল করুন। আমীন
নিয়মিত এমন পোস্ট দিয়ে আমাদেরকে উপকৃত করবেন, ইনশা আল্লাহ।

[Jahidur Rahman]

মাশাআল্লাহ চমৎকার একটি পোস্ট। প্রিয় ভাই আমি আপনার সাথে পুরোপুরি একমত। আমাদের এখন থেকেই মজবুত ভাবে একত্রিত হওয়া উচিত। যেন জিহাদের ময়দানে কোনোভাবেই আমাদের মাঝে ফাটল দেখা না দেয়। বিজয় পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আমাদের এখন থেকেই পরস্পরের সাথে আলোচনা করা উচিত। যাতে করে বিজয় পরবর্তী আমাদের মাঝে কোন বিশৃঙ্খলা না দেখা দেয়।

[Umm Khawla]

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়াহ বলেন, একজন লোক রাসুলুল্লাহর ﷺ এই হাদিসটি দেখলেন,
'আল্লাহর জন্য যে চল্লিশ সকাল আন্তরিকতা বা একনিষ্ঠতা (sincerity) অবলম্বন করবে তার অন্তর থেকে জিহবা পর্যন্ত হিকমাহর ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে।' সুতরাং তার বক্তব্য অনুযায়ী তিনি হকমাহর অধিকারী হওয়ার জন্য চল্লিশ সকাল আন্তরিকতা চর্চা করলেন। কিন্তু তিনি হিকমাহ লাভ করতে পারলেন না। তাই তিনি একজন বিজ্ঞ আলিমের কাছে অভিযোগ করলেন। আলিম তাকে বললেন, 'আপনি আল্লাহর জন্য (অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য) একনিষ্ঠতা অনুশীলন করেননি, বরং আপনার উদ্দেশ্য ছিলো হিকমাহ অর্জন করা।' সুতরাং, একনিষ্ঠতা হলো আল্লাহর চেহারা দেখার আকাঙ্ক্ষা, আপনি যদি এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেন তবে এর ফলাফলস্বরূপ আপনি হিকমাহ লাভ করবেন।
........
একইভাবে, রাসুলুল্লাহর ﷺ এই হাদিসের বেলাতেও একই কথা প্রযোজ্য, 'আল্লাহর জন্য যে বিনয় অবলম্বন করবে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।'
{সহিহ মুসলিম}]
.
সুতরাং, আমার ইমানের ভাই, আলকায়দার মানহায তো দলের ইমেজ ঠিক রাখার মাধ্যমে খিলাফাত প্রতিষ্ঠা না। বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইখলাসের সাথে কাজ করা। যদি তা করেন, তাহলে এর ফলাফলস্বরূপ আপনাদের ইমেজ ঠিক থাকবে ও খিলাফাত আসবে। তাই আপনারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুখলিস ও বিনয়ি হন। আওয়ামের কাছে ত্রুটি স্বীকার ও জবাব দেয়ার মানসিকতা রাখুন। আপনাদের জন্য দুয়া সবসময় ছিলো, আছে, থাকবে। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।