আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু!
মুহতারাম ভাইয়েরা, এ ফিতনা বাজগুলো উম্মাহর হৃদয়কে ধ্বংস করে দিচ্ছে দয়া করে দলিলভিত্তিক উত্তর দিয়ে উম্মাহর হৃদয়কে শান্ত করুন!
মুহতারাম ভাইয়েরা, এ ফিতনা বাজগুলো উম্মাহর হৃদয়কে ধ্বংস করে দিচ্ছে দয়া করে দলিলভিত্তিক উত্তর দিয়ে উম্মাহর হৃদয়কে শান্ত করুন!
পাকিস্তানে নবুওয়াত দাবীর অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা এবং আবেগী জাহেলদের কর্মকাণ্ড
-------------------
সম্প্রতি পাকিস্তানের পেশওয়ারে নবুওয়তের দাবীর অভিযোগে অভিযু্ক্তকে এক ব্যক্তির আদালতে শুনানি চলাকালীন খালিদ নামক আরেক ব্যক্তি গুলি করে হত্যা করেছে। এ নিয়ে অনেক জাহিল মুসলিম অজ্ঞতা ও অতি আবেগের ঠেলায় হত্যাকারীকে 'বীর' বলে প্রমোট করছে এবং স্যালুট জানাচ্ছে। ফেসবুকে অধিকাংশ মানুষ হত্যাকারীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ!
অথচ এটা হল, আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার শামিল। শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি যেমন চরম গর্হিত ও অন্যায় কাজ তেমনি প্রচলিত আইনেও দণ্ডনীয় অপরাধ।
আমাদের জানা জরুরি যে, মুরতাদ (ইসলাম ত্যাগী), ভণ্ডনবী, আল্লাহর-রাসূল, কুরআন ইত্যাদিকে গালমন্দ কারী ইত্যাদিকে হত্যা করার দায়িত্ব কার?
উত্তর হল, নি:সন্দেহে আল্লাহ-রাসূল, কুরআন ও ইসলামি বিধিবিধানকে কটুক্তি কারী ব্যক্তি কাফির-মুরতাদ, অনুরূপভাবে যে নিজেকে নবি দাবী করবে বা নবী সা.কে শেষ নবী বলে বিশ্বাস করবে না সেও কাফির-মুরতাদ। এমন স্বঘোষিত মুরতাদের শাস্তি হল,
তওবা না করলে মৃত্যুদণ্ড। এ ব্যাপারে কুরআন-হাদিসে পর্যাপ্ত বক্তব্য এসেছে।
কিন্তু ইসলামের এ সব হদ কায়েম বা ফৌজদারি দণ্ডবিধি (যথা: হত্যা, মৃত্যুদণ্ড, বেত্রাঘাত, জেল, জরিমানা বা অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ) বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব কার? সাধারণ মানুষের না কি সরকারের?
উত্তর, অবশ্যই হদ কায়েমের একমাত্র অধিকারী হল, সরকার বা তার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি; সাধারণ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নয়।
ইবনে রুশদ (Averroes) কুরতুবি [জন্ম: ১১২৬, মৃত্যু: ১১৯৮ খৃ] বলেন:
وأما من يقيم هذا الحد – أي : جلد شارب الخمر - فاتفقوا على أن الإمام يقيمه وكذلك الأمر في سائر الحدود
“আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, এই হদ (তথা মদ পানকারীর উপর চাবুক মারার বিধান) বাস্তবায়ন করবে ইমাম (রাষ্ট্রপ্রধান)। সকল হুদুদ (দণ্ড প্রয়োগ) এর ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য।” (বিদায়াতুল মুজতাহিদ ২/২৩৩)
তবে কেবল মনিব কর্তৃক দাস-দাসীর উপর দণ্ড প্রয়োগের বিষয়টি ভিন্ন। কারণ তা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
প্রকৃতপক্ষে এর পরিণতি খুব খারাপ। কারণ এ হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন বা উৎসাহিত করা হলে হয়ত কোন মাথামোটা অজ্ঞ বিদআতি বা ভিন্ন মতাদর্শী ব্যক্তি অতি উৎসাহী হয়ে আরেক জনকে 'গোস্তাখে রাসূল' (কেউ যদি রাসুল সা. কে নূরের তৈরি না মানে বা তিনি গায়েব জানতেন বলে স্বীকার না করে তাহলে কথিত সুন্নি জামাআতের লোকেরা তাকে 'গোস্তাখে রাসূল বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে বেয়াদবীকারী' বলে আখ্যায়িত করে), রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি কটুক্তি কারী, 'ফিতনাবাজ', খারেজি, শিয়া, কাদিয়ানি, নাস্তিক, মুরতাদ ইত্যাদি নানা অভিযোগ গুলি করে বসবে বা গলায় ছুরি চালিয়ে দিবে তখন পরিস্থিতি কী হবে?
নি:সন্দেহে এ ঘটনা সমাজে বিশৃঙ্খলা, রক্তপাত ও দাঙ্গা-হাঙ্গামাকে বৃদ্ধি করবে, আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে এবং ইসলাম বিদ্বেষীদের সামনে ইসলাম সম্পর্কে অন্যায় সমালোচনার দরজা খুলে দিবে। আল্লাহ মাফ করুন।
বি:দ্র: এই হত্যাকাণ্ডের সমর্থনে যে সব হাদিস পেশ করা হচ্ছে সেগুলো হয় মনিব কর্তৃক দাস-দাসীর উপর শাস্তি প্রয়োগ সংক্রান্ত (এটি জায়েজ) অথবা সরাসরি রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া এর নির্দেশ ক্রমে সংঘটিত বা সরকার প্রধান এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা অথবা জাল ও জইফ হাদিস। সাধারণ মানুষ কর্তৃক স্বপ্রনোদিত হয়ে নাস্তিক, মুরতাদ, নবীদাবী কারী বা নবীকে কটুক্তি কারী ইত্যাদিকে হত্যা করার ব্যাপারে কোন হাদিস নাই।
সুতরাং মানুষ হত্যার মত এমন একটি বিপদজনক বিষয়কে কোনভাবেই সমর্থন করা বা প্রমোট করা বৈধ নয়। যারা এ কাজকে সমর্থন করছে বা এর প্রশংসা ও উৎসাহ জোগাচ্ছে দৃঢ়ভাবে তাদের প্রতিবাদ করা দরকার।
আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের সঠিক জ্ঞান দান করুন এবং ফিতনা-ফ্যাসাদ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
আরও পড়ুন:
- আল্লাহ, রাসূল, কুরআন বা ইসলামের কোন বিধানকে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ ও গালমন্দ করার বিধান ও শাস্তি এবং এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের করণীয়
- কোনও অপরাধী বা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেয়া এবং ইসলাম বিদ্বেষী, ধর্মদ্রোহী বা নাস্তিকদেরকে গোপনে হত্যা করার বিধান
--আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
তথ্য সুত্রঃ https://www.facebook.com/groups/1811...2849185654436/
-------------------
সম্প্রতি পাকিস্তানের পেশওয়ারে নবুওয়তের দাবীর অভিযোগে অভিযু্ক্তকে এক ব্যক্তির আদালতে শুনানি চলাকালীন খালিদ নামক আরেক ব্যক্তি গুলি করে হত্যা করেছে। এ নিয়ে অনেক জাহিল মুসলিম অজ্ঞতা ও অতি আবেগের ঠেলায় হত্যাকারীকে 'বীর' বলে প্রমোট করছে এবং স্যালুট জানাচ্ছে। ফেসবুকে অধিকাংশ মানুষ হত্যাকারীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ!
অথচ এটা হল, আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার শামিল। শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি যেমন চরম গর্হিত ও অন্যায় কাজ তেমনি প্রচলিত আইনেও দণ্ডনীয় অপরাধ।
আমাদের জানা জরুরি যে, মুরতাদ (ইসলাম ত্যাগী), ভণ্ডনবী, আল্লাহর-রাসূল, কুরআন ইত্যাদিকে গালমন্দ কারী ইত্যাদিকে হত্যা করার দায়িত্ব কার?
উত্তর হল, নি:সন্দেহে আল্লাহ-রাসূল, কুরআন ও ইসলামি বিধিবিধানকে কটুক্তি কারী ব্যক্তি কাফির-মুরতাদ, অনুরূপভাবে যে নিজেকে নবি দাবী করবে বা নবী সা.কে শেষ নবী বলে বিশ্বাস করবে না সেও কাফির-মুরতাদ। এমন স্বঘোষিত মুরতাদের শাস্তি হল,
তওবা না করলে মৃত্যুদণ্ড। এ ব্যাপারে কুরআন-হাদিসে পর্যাপ্ত বক্তব্য এসেছে।
কিন্তু ইসলামের এ সব হদ কায়েম বা ফৌজদারি দণ্ডবিধি (যথা: হত্যা, মৃত্যুদণ্ড, বেত্রাঘাত, জেল, জরিমানা বা অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ) বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব কার? সাধারণ মানুষের না কি সরকারের?
উত্তর, অবশ্যই হদ কায়েমের একমাত্র অধিকারী হল, সরকার বা তার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি; সাধারণ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নয়।
ইবনে রুশদ (Averroes) কুরতুবি [জন্ম: ১১২৬, মৃত্যু: ১১৯৮ খৃ] বলেন:
وأما من يقيم هذا الحد – أي : جلد شارب الخمر - فاتفقوا على أن الإمام يقيمه وكذلك الأمر في سائر الحدود
“আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, এই হদ (তথা মদ পানকারীর উপর চাবুক মারার বিধান) বাস্তবায়ন করবে ইমাম (রাষ্ট্রপ্রধান)। সকল হুদুদ (দণ্ড প্রয়োগ) এর ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য।” (বিদায়াতুল মুজতাহিদ ২/২৩৩)
তবে কেবল মনিব কর্তৃক দাস-দাসীর উপর দণ্ড প্রয়োগের বিষয়টি ভিন্ন। কারণ তা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
প্রকৃতপক্ষে এর পরিণতি খুব খারাপ। কারণ এ হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন বা উৎসাহিত করা হলে হয়ত কোন মাথামোটা অজ্ঞ বিদআতি বা ভিন্ন মতাদর্শী ব্যক্তি অতি উৎসাহী হয়ে আরেক জনকে 'গোস্তাখে রাসূল' (কেউ যদি রাসুল সা. কে নূরের তৈরি না মানে বা তিনি গায়েব জানতেন বলে স্বীকার না করে তাহলে কথিত সুন্নি জামাআতের লোকেরা তাকে 'গোস্তাখে রাসূল বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে বেয়াদবীকারী' বলে আখ্যায়িত করে), রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি কটুক্তি কারী, 'ফিতনাবাজ', খারেজি, শিয়া, কাদিয়ানি, নাস্তিক, মুরতাদ ইত্যাদি নানা অভিযোগ গুলি করে বসবে বা গলায় ছুরি চালিয়ে দিবে তখন পরিস্থিতি কী হবে?
নি:সন্দেহে এ ঘটনা সমাজে বিশৃঙ্খলা, রক্তপাত ও দাঙ্গা-হাঙ্গামাকে বৃদ্ধি করবে, আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে এবং ইসলাম বিদ্বেষীদের সামনে ইসলাম সম্পর্কে অন্যায় সমালোচনার দরজা খুলে দিবে। আল্লাহ মাফ করুন।
বি:দ্র: এই হত্যাকাণ্ডের সমর্থনে যে সব হাদিস পেশ করা হচ্ছে সেগুলো হয় মনিব কর্তৃক দাস-দাসীর উপর শাস্তি প্রয়োগ সংক্রান্ত (এটি জায়েজ) অথবা সরাসরি রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া এর নির্দেশ ক্রমে সংঘটিত বা সরকার প্রধান এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা অথবা জাল ও জইফ হাদিস। সাধারণ মানুষ কর্তৃক স্বপ্রনোদিত হয়ে নাস্তিক, মুরতাদ, নবীদাবী কারী বা নবীকে কটুক্তি কারী ইত্যাদিকে হত্যা করার ব্যাপারে কোন হাদিস নাই।
সুতরাং মানুষ হত্যার মত এমন একটি বিপদজনক বিষয়কে কোনভাবেই সমর্থন করা বা প্রমোট করা বৈধ নয়। যারা এ কাজকে সমর্থন করছে বা এর প্রশংসা ও উৎসাহ জোগাচ্ছে দৃঢ়ভাবে তাদের প্রতিবাদ করা দরকার।
আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের সঠিক জ্ঞান দান করুন এবং ফিতনা-ফ্যাসাদ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
আরও পড়ুন:
- আল্লাহ, রাসূল, কুরআন বা ইসলামের কোন বিধানকে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ ও গালমন্দ করার বিধান ও শাস্তি এবং এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের করণীয়
- কোনও অপরাধী বা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেয়া এবং ইসলাম বিদ্বেষী, ধর্মদ্রোহী বা নাস্তিকদেরকে গোপনে হত্যা করার বিধান
--আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
তথ্য সুত্রঃ https://www.facebook.com/groups/1811...2849185654436/
Comment