Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইউসুফ কারযাবির কতক ভ্রান্তিমূলক চিন্তাধারাঃ কাফিরদের ব্যাপারে কারযাবির দৃষ্টিভঙ্গি || শাইখ নাসির ইবনু হামদ আল-ফাহাদ ||

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইউসুফ কারযাবির কতক ভ্রান্তিমূলক চিন্তাধারাঃ কাফিরদের ব্যাপারে কারযাবির দৃষ্টিভঙ্গি || শাইখ নাসির ইবনু হামদ আল-ফাহাদ ||


    কারযাবি মুমিনদের জন্য আলওয়ালা এবং কাফিরদের থেকে আলবারা আকিদার রীতিমতো মৃত্যু ঘটিয়েছেন। এখানে তার কয়েকটি বক্তব্য উল্লেখ করছি।

    ১. খ্রিস্টানদের ব্যাপারে তিনি বলেছেন—
    “সবকিছুই আমাদের মাঝে এবং তাদের মাঝে যৌথ। আমরা এক মাতৃভূমির সন্তান, আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন, আমরা এক জাতি; আমি তাদেরকে বলি— ‘আমার খ্রিস্টান ভাইয়েরা!’ কতক লোক এ ব্যাপারটি নিয়ে আমার ওপর আপত্তি জানায়— আমি কীভাবে বলি যে— ‘আমাদের খ্রিস্টান ভাইয়েরা’ মুমিনরাই কেবল ভাই-ভাই। হাঁ, আমরা মুমিন। আর তারাও অন্য বিবেচনায় মুমিন।”[1]

    ২. একই প্রোগ্রামে ‘কিবতিদের’ (খ্রিস্টানদের এক সম্প্রদায়) সম্পর্কে তিনি বলেছেন—
    “আদর্শের মতবিরোধকে কেন্দ্র করে তারা হাজার হাজার শহিদের খুন পেশ করেছে।”

    ৩. তিনি বলেন—
    “মুসলিমরা অমুসলিমদেরকে ভালোবাসার মাঝে দোষের কিছু নেই।”[2]

    ৪. তিনি বলেন-
    “আমাদের মাঝে এবং ইহুদিদের মাঝে বৈরিতা শুধু ভূমির জন্য, দ্বীনের জন্য নয়।”[3] এবং তিনি দৃঢ়তার সাথে দাবি করেছেন, আল্লাহ তাআলার বাণী— “তুমি অবশ্যই উপলব্ধি করবে মুসলিমদের প্রতি সর্বাপেক্ষা কঠোর শত্রুতা পোষণকারী হচ্ছে ইহুদিরা এবং সে-সকল লোক, যারা শিরক করে”[4] রাসুলুল্লাহ সা. এর সময়কালে প্রয়োগযোগ্য ছিলো; বর্তমানকালে নয়।[5]

    অথচ এটা তো জ্ঞাত বিষয় যে, তিনিই এই আয়াতের শেষাংশকে বর্তমানকালে মুসলমানদের সাথে খ্রিস্টানদের নিকটবর্তিতার পক্ষে প্রমাণস্বরূপ উল্লেখ করেন।[6] তার বক্তব্য হলো—
    “যখন মুসলমানরা শক্তিশালী হবে, তখন নিঃসন্দেহে তাদের খ্রিস্টান ভাইয়েরাও শক্তিশালী হবে এবং যখন মুসলমানরা লাঞ্ছিত হবে, তখন খ্রিস্টানরাও লাঞ্চিত হবে।”[7]

    ৫. তিনি অনেক জায়গায় দৃঢ়তার সাথে দাবি করেছেন-
    “ইসলাম –তার দাবি অনুসারে— বিধর্মীদের বিকৃত
    ধর্মগুলোকে মর্যাদা দেয়।”[8]

    তিনি আরো দাবি করেছেন যে, “বিধর্মীরা মুসলমানদের মতোই। মুসলমানদের যা যা প্রাপ্য, তাদেরও তা তা প্রাপ্য। মুসলমানদের ওপর যা যা আরোপিত হয়, তাদের ওপরও তা তা আরোপিত হবে।”[9]

    “ভূমিসংক্রান্ত বিষয়গুলো আমাদের এবং খ্রিস্টানদের মাঝে যৌথ। ইসলাম আমাদের মাঝে এবং তাদের মাঝে ঐক্যের বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে; ভিন্নতার ক্ষেত্রগুলোর ওপর নয়।”[10]

    “এটা একান্ত অপরিহার্য যে, এই সম্মিলিত ভূমিসংক্রান্ত বিষয়গুলোর ব্যাপারে মুসলমানরা এবং খ্রিস্টানরা ঐক্যবদ্ধভাবে নাস্তিকতা, জুলুম এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।”[11]

    তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, “জিহাদ হলো সকল ধর্মের প্রতিরোধ রক্ষার্থে, শুধু ইসলামের প্রতিরোধের জন্য নয়।”[12]

    “বিধর্মীদের উৎসবগুলোতে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানোকে তিনি বৈধ ঘোষণা করেছেন।”[13]

    তেমনি মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বিধর্মীদের নিয়োগকর্মকেও তিনি বৈধ মনে করেন।”[14]

    একইভাবে তিনি দৃঢ়তার সাথে দাবি করেছেন-
    “যিম্মিদের থেকে জিযয়া নেয়া হয় শুধু তাদের মাতৃভূমির প্রতিরোধের মহান ব্রত পরিত্যাগ করার বিনিময় হিসেবে। বর্তমানে এই বিধানটি রহিত থাকবে। কারণ, এখন সৈন্য সংগ্রহের বিষয়টি বাধ্যতামূলকভাবে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মুসলিম কাফির সকলেই সমান।”[15]

    _________________________

    [1] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: গাইরুল মুসলিমিন ফি যিল্লিশ শারিয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ, তারিখ: ১২/১০/৯৭, আলজাযিরা চ্যানেল।

    তার অনেক বইয়েও তিনি এ বিষয়টি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে, অমুসলিমরা তার ভাই। উদাহরণস্বরূপ দ্রষ্টব্য— ফাতাওয়া মুআসিরাহ: ২/৬৬৮; আলখাসায়িসুল আম্মাহ লিল-ইসলাম: ৯০-৯২; মালামিহুল মুজতামায়িল মুসলিম: ১৩৮।

    টেলিভিশনের অনেক প্রোগ্রামেই তিনি দৃঢ়তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। সংশয় দূর করার জন্য বলে রাখছি, তার টেলিভিশন প্রোগ্রামের যে কথাগুলো আমি এখানে উদ্ধৃত করছি, তার কোনোটাই আমি স্বচক্ষে দেখি নি, নাউযুবিল্লাহ। আমি এগুলো উদ্ধৃত করেছি তার প্রকাশিত গ্রন্থাদি এবং অনলাইনে তার সাইটে প্রকাশিত তথ্যাদি থেকে।

    [2] গাইরুল মুসলিমিন ফিল মুজতামায়িল ইসলামি: ৬৮ (চতুর্থ সংস্করণ, প্রকাশকাল— ১৪০৫ হিজরি)।
    পূর্বোক্ত প্রোগ্রামেও তিনি এই দাবি করেছেন। এছাড়াও তার একাধিক গ্রন্থে এ বিষয়টি উল্লিখিত
    হয়েছে।

    [3] আলউম্মাতুল ইসলামিয়া, হাকিকাতুন লা ওয়াহম: ৭০ (প্রথম সংস্করণ, প্রকাশকাল– ১৪০৭ হিজরি)।
    এছাড়াও পরবর্তী টীকায় উল্লিখিত প্রোগ্রামেও তিনি একই দাবি করেছেন।

    [4] সুরা মায়িদা: ৮২। —অনুবাদক

    [5] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: আসসিরা‘ বাইনাল মুসলিমিন ওয়াল ইয়াহুদ, তারিখ: ৭/১২/৯৭৷

    [6] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: গাইরুল মুসলিমিন ফি যিল্লিশ শারিয়াহ আল-
    ইসলামিয়্যাহ, তারিখ: ১২/১০/৯৭।

    [7] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: আলইসলাম দ্বীনুল বাশায়ির ওয়াল মুবাশশিরাত, তারিখ: ২৪/০১/৯৯।

    [8] আলইসলাম ওয়াল ইলমানিয়্যাহ: ১০১; শারিয়াতুল ইসলাম, খুলুদুহা ওয়া সালাহুহা লিত-তাতবিক: ৫২। একই কথা তিনি তার অনেক টেলিভিশন প্রোগ্রামেও বলেছেন।

    [9] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: আসসিরা‘ বাইনাল মুসলিমিন ওয়াল ইয়াহুদ, তারিখ: ৭/১২/৯৭; বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: গাইরুল মুসলিমিন ফি যিল্লিশ শারিয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ, তারিখ: ১২/১০/৯৭, প্রভৃতি।
    তিনি তার অনেক বইয়েই এই কথা লিখেছেন, যেমন ‘আলহালাল ওয়াল হারাম’, ‘গাইরুল মুসলিমিন ফিল মুজতামায়িল ইসলামি'।

    [10] ফাতাওয়া মুআসিরাহ: ২/৬৭১; আসসাহওয়াতুল ইসলামিয়্যাহ বাইনাল ইখতিলাফিল মাশরু ওয়াত তাফাররুকিল মাযমুম: ১৪৭।

    [11] বারনামাজুল মুনতাদা, হালকাহ: মুসতাকবিলুল উম্মাহ বাইনাত তাফাউল ওয়াত তাশাউম, তারিখ: ৭/৩/৯৮ আবু ধাবি টিভি। আল্লাহ আমাদেরকে এবং সকল মানুষকে এসব থেকে সুরক্ষিত রাখুন। বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: গাইরুল মুসলিমিন ফি যিল্লিশ শারিয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ, তারিখ: ১২/১০/৯৭।

    [12] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: আলআলাকাতুদ দুওয়ালিয়্যাহ, তারিখ: ৮/৩/৯৮।

    [13] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: গাইরুল মুসলিমিন ফি যিল্লিশ শারিয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ, তারিখ: ১২/১০/৯৭; প্রাগুক্ত, হালকা: ফাযলুল আশরিল আওয়াখিরি মিন রামাদান, তারিখ: ২৬/১২/৯৯; ফাতাওয়া মুআসিরাহ: ২/৬১৭।

    [14] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: গাইরুল মুসলিমিন ফি যিল্লিশ শারিয়াহ আল-
    ইসলামিয়্যাহ, তারিখ: ১২/১০/৯৭; গাইরুল মুসলিমিন ফিল মুজতামায়িল ইসলামি: ২২।

    [15] বারনামুজ শারিয়াহ ওয়াল হায়াত, হালকাহ: গাইরুল মুসলিমিন ফি যিল্লিশ শারিয়াহ আল-
    ইসলামিয়্যাহ, তারিখ: ১২/১০/৯৭; গাইরুল মুসলিমিন ফিল মুজতামায়িল ইসলামি: ৫৫।

    অনুবাদ: আবু মুসান্না
    অনুলিপি: আবু আইমান (সালাবা)
    হে মু'মিনগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও।

  • #2

    هٰذانِ خَصمانِ اختَصَموا فى رَبِّهِم ۖ فَالَّذينَ كَفَروا قُطِّعَت لَهُم ثِيابٌ مِن نارٍ يُصَبُّ مِن فَوقِ رُءوسِهِمُ الحَميمُ

    [19] এই দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা সম্পর্কে বিতর্ক করে। অতএব যারা কাফের, তাদের জন্যে আগুনের পোশাক তৈরী করা হয়েছে। তাদের মাথার উপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে।
    আমরা যদি আল্লাহর বন্ধু হয়ে থাকি তাহলে আমরা কিভাবে আল্লাহ শত্রুদেরকে সহ্য করে থাকতে পারি। বরং তাদেরতো কোন ধর্মই নেই তাই তাদের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা আমাদের মূল্যবান ধর্ম বিসর্জন দিতে পারি না।
    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

    Comment


    • #3
      [81] وَلَو كانوا يُؤمِنونَ بِاللَّهِ وَالنَّبِىِّ وَما أُنزِلَ إِلَيهِ مَا اتَّخَذوهُم أَولِياءَ وَلٰكِنَّ كَثيرًا مِنهُم فٰسِقونَ [81] যদি তারা আল্লাহর প্রতি ও রসূলের প্রতি অবতীর্ণ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করত, তবে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই দুরাচার।
      পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

      Comment


      • #4
        অথচ ইনিই ২০০০ সালের আগে ইসরাইলে ঈশতিশহাদি হামলাকে জায়েজ ফতোয়া দিয়েছিলেন ! অবশ্য ওই পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার পরে আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি'র কায়েল হয়ে যায়, এমন নযীর আমাদের এই ভূমি সহ বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায় ! আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সীরাতে মুস্তাকীমের উপর কায়েম রাখেন। আমীন !

        Comment

        Working...
        X