মেটাভার্স—স্বপ্নীল ভুবনে মিথ্যার ফানুস
এমন এক পৃথিবী কল্পনা করুন, যেখানে কোনো কোম্পানি তাদের নতুন মডেলের একটি গাড়ি অনলাইন মার্কেটে ছেড়ে দিল আর আপনি ঘরে বসেই গাড়িটির টেস্টড্রাইভ করলেন। অথবা অনলাইন শপিং করার সময় একটি পোশাক পছন্দ হলো আর আপনি বেডরুমে বসেই ওই পোশাকের ডিজিটাল সংস্করণ গায়ে দিয়ে পছন্দ হওয়ার পর জামাটি কেনার জন্য অর্ডার দিলেন। বিষয়টা বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত সাই-ফাই মুভির মতো মনে হচ্ছে। কিন্তু সত্যি বলতে কি, এখন আর সেটা কল্পনার পর্যায়ে থাকছে না। এরকম প্রযুক্তি তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই শুরু করে হয়ে গেছে। এই প্রযুক্তির ফলে অনলাইনের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে বাস্তব পৃথিবীর মতো। মনে করুন, আপনার একজন বন্ধু মালদ্বীপে বেড়াতে যাওয়ার অপূর্ব কিছু ছবি পোস্ট করেছেন। ফেসবুক দেখার সময় এই প্রযুক্তির কারণে মনে হবে আপনিও সেখানে উপস্থিত আছেন। আর যে প্রযুক্তির মাধ্যমে এসব ঘটবে তার নাম হলো মেটাভার্স।
মেটাভার্স প্রযুক্তির ব্যাপারে ফেসবুক কিছুদিন আগে ঘোষণা দিলেও এটার ধারণা শুরু হয়েছে সেই ১৯৯২ সাল থেকেই। মেটাভার্স বলতে এমন এক প্রযুক্তির জগতকে বুঝায়, যেখানে মানুষ থিডি (ত্রিমাত্রিক) ভার্চুয়াল জগতে পরষ্পরে মিথস্ক্রিয়া করবে। মেটাভার্স হচ্ছে ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ, যেখানে আমাদের বাস্তব অস্তিত্ব ও ভার্চুয়াল অস্তিত্বকে মিশিয়ে দেওয়া হবে। বিশেষ এক চশমা ও হেডসেট সংযোগের মাধ্যমে মানুষ চলে যাবে ডিজিটাল জগতে। সেখানে প্রতিটি মানুষের থাকবে একটি অবতার (Avatar), যা দ্বারা মানুষ সে ভার্চুয়াল জগতে একে অপরের সাথে আড্ডা দেবে, ঘুরে বেড়াবে, অফিসের কাজ করবে, কেনাকাটা করবে, খেলাধুলা করবে ইত্যাদি। বলা যেতে পারে যে, মেটাভার্স প্রযুক্তিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ‘শেয়ার্ড ভার্চুয়াল জগৎ’-এ প্রবেশ করা যাবে। অর্থাৎ এটি হবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে ব্যবহার করে তৈরি এমন এক ডিজিটাল স্থান, যেখানে ডিজিটাল বিশ্বকে বাস্তব দুনিয়ার সাথে মিলিয়ে দেওয়া হবে।
মেটাভার্সের কারণে ইন্টারনেটের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে বাস্তব জগতের মতো যেখানে মানুষের যোগাযোগ হবে বহুমাত্রিক। মেটাভার্স প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষ কোনো কিছু শুধু দেখতেই পাবে না, তাতে নিজেকে সরাসরি জড়িয়ে ফেলতেও সক্ষম হবে। স্ক্রিনে এখনকার বেশিরভাগ স্পেস হচ্ছে টুডি বা দ্বিমাত্রিক। কিন্তু মেটাভার্স জগতে আমাদের অভিজ্ঞতা হবে থ্রিডির মতো। দূরের কোনো বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার সময় তার ত্রিমাত্রিক একটি দেহ আপনার ঘরেই দেখা যাবে। আপনিও কথা বলবেন, সেও বাস্তব মানুষের মতো করেই হাত-পা নাড়িয়ে কথা বলবে। মনে হবে একেবারে সামনা-সামনি বসেই তার সাথে আলাপ করছেন। বাস্তবে উপস্থিত না থেকেও এটা হবে এক জীবন্ত অনুভূতি। এ জগতে সব ধরনের কাজই করা যাবে একেবারে বাস্তব জীবনের মতোই। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কারও সাথে দেখার করার খুব একটা প্রয়োজনই হবে না। শরীর থাকবে ঘরে, কিন্তু দেখা ও অনুভবের জগৎ হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন—ভার্চুয়াল।
মেটাভার্সে ইন্টারনেট জগতকে বাস্তব জগতের মতোই মনে হবে। সহজ উদাহরণ দিয়ে যদি বলি, এখন আমরা অনলাইনে পণ্য দেখে শপিং করি, ক্যাশ অন ডেলিভারি বা ক্রেডিট কার্ডে দাম মেটাই। মেটাভার্সে চোখে ভিআর ডিভাইস যুক্ত করে আপনি ডিজিটাল শপিং ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করবেন যেখানে পছন্দের পোশাকটির একটি ডিজিটাল সংস্করণ আপনার অ্যাভাটারের গায়ে পরিয়ে মনমতো হলে এবার পোশাকটি কিনে ফেললেন। অ্যাভাটার হবে আপনারই ডিজিটাল শরীর। তাই মনে হবে যেন সত্যিই পোশাকটি আপনিই গায়ে দিয়েছেন! কাগজের মুদ্রা বা ক্রেডিট কার্ডের জায়গা দখল করবে ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি। শুধু শপিং নয়, মেটাভার্সের জগতে এভাবে সবকিছুই হবে ভার্চুয়ালি। থ্রিডি গেইম কিংবা থ্রিডি মুভির মাধ্যমে থ্রিডি ভার্চুয়াল জগতের কিছুটা হলেও আমরা ধারণা পাই, কিন্তু সামনের পৃথিবীতে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রায় সবকিছুই হবে থ্রিডি এবং যে প্ল্যাটফর্মে এটি সংঘটিত হবে সেটাই হলো মেটাভার্স।
সাধারণ মানুষের কাছে মেটাভার্স প্রযুক্তিকে আপাতত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর এর কোনো সংস্করণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আসলে এটি তার চেয়েও অনেক বেশি। প্রযুক্তিবিদরা জানিয়েছেন, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সঙ্গে মেটাভার্সের তুলনা আজকের দিনের স্মার্টফোনের সঙ্গে আশির দশকের মোবাইল ফোনের তুলনা করার মতো। বর্তমানে ভিআর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনলাইন গেমিং এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু মেটাভার্সের ব্যবহার হবে সকল বিষয়ে—অফিসের কাজ থেকে শুরু করে খেলা, কনসার্ট, সিনেমা, এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার বেলাতেও। গুগল ম্যাপে যখন কোনো রাস্তা দিয়ে যান, স্ট্রিট ভিউতে আপনি আশেপাশের গাড়ি-বাড়ি-দোকানপাট সব দেখতে পান। আমি চাইলে ঢাকায় বসে লন্ডনের কোনো রাস্তা দেখতে পারি। এ পর্যন্ত কিন্তু হয়ে গেছে। এটা হলো মেটাভার্সের সূচনাপর্ব। এর পরে যেটা হবে তা হচ্ছে, এসব জায়গায় থাকার যে অভিজ্ঞতা সেটা আমরা সেখানে না থেকেও ফিল করতে পারব।
গত কয়েক বছরে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। কিছু হেডসেট তৈরি হয়েছে, যা মানুষের চোখের সঙ্গে এমন চালাকি করতে পারে যে, আপনি যখন ভার্চুয়াল পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবেন তখন মনে হবে সবকিছু থ্রিডি-তে দেখতে পাচ্ছেন। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, মেটাভার্স প্রযুক্তি তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ফেসবুকের পাশাপাশি মাইক্রোসফট, অ্যাপল, গুগল, রোব্লক্স ও ফোর্টনাইট নির্মাতা এপিক গেইমস কোম্পানিও মেটাভার্স তৈরিতে অংশ নিচ্ছে। ইন্টারনেটের গতি আরো দ্রুত হওয়ার সাথে সাথে, বিশেষ করে ফাইভজি পুরোপুরিভাবে বাজারে আসার পরেই সব সমস্যার সমাধান ঘটবে বলে আশা করা যায়। দশ বছর আগে মেটাভার্স কেবল একটি ধারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে এটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা মেটাভার্স তৈরির প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। আগামী আট থেকে দশ বছরের মধ্যেই পুরো বিশ্বকে মেটাভার্স প্রযুক্তির আওতায় আনার জোর চেষ্টা চলছে।
মেটাভার্সে এত এত সুবিধা কি এমনি এমনিই পাওয়া যাবে? না, এর জন্য আপনাকেও দিতে হবে বিশাল একটি মূল্য। কেননা, মেটাভার্স জগৎ হবে অনেক বেশি বায়োমেট্রিক তথ্যনির্ভর। অর্থাৎ, মেটাভার্স কোম্পানিগুলো আমাদের আঙুলের ছাপ শুধু নয়, বরং আমাদের দৃষ্টি, ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন, মস্তিষ্কের চিন্তা-ভাবনা, এমনকি আমাদের প্রাত্যহিক যাবতীয় কর্মকাণ্ডের ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। যেহেতু মানুষ জাগ্রত অবস্থা এমনকি নিদ্রিত অবস্থারও বেশিরভাগ সময় মেটাভার্স জগতে ব্যয় করবে, এর ফলে সেসব মানুষের ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্যের মালিকানা থাকবে মেটাভার্সের কাছে। প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষকদের মতে, মেটাভার্সের মাধ্যমে ফেসবুকসহ বিভিন্ন কোম্পানি মানুষের ব্যক্তিগত সকল তথ্য আরও সহজে হাতিয়ে নেবে, মানুষ অনেক বেশি ডিজিটাল সারভেইলেন্সের শিকার হবে, ব্যক্তিগত তথ্যের বাণিজ্যিক ব্যবহার বেড়ে যাবে এবং তথ্যের অপব্যবহার ঠেকানো কঠিনতর হয়ে উঠবে। মেটাভার্স হবে ডাটা ব্যবসায়ীদের জন্য সোনার খনি।
বিবিসি-সহ বিভিন্ন তথ্যউৎস থেকে আহরিত এ ছিল মেটাভার্সের সামান্য পরিচয় এবং সংক্ষিপ্ত ধারণা। মেটাভার্সের মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন কাজ-কর্মের অভাবনীয় অগ্রগতি এবং আনন্দ-বিনোদনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব হওয়ায় বাহ্যত বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ অনেক খুশি হলেও এতে মুমিনদের জন্য রয়েছে বিশাল এক অশনি সংকেত ও মহাবিপদের আগমনিধ্বনি। আপনি কি এমন সময়ের কথা কল্পনা করতে পারেন, যখন মানুষকে আপনি অনুভূতিহীন একটা রোবটের মতো করে আবিষ্কার করবেন? আপনি কথা বলতে চাইবেন, কিন্তু তার কথা বলার সুযোগ হবে না। আপনি দাওয়াত দিতে চাইবেন, কিন্তু তার সে দাওয়াত শোনার সময় হবে না। আপনি দ্বীনের পথে কষ্ট করার আহবান জানাবেন, কিন্তু আপনার আহবান তার কর্ণকুহরে পেীঁছবে না। মানুষ যন্ত্রমানবের মতো চলতে থাকবে। খাবে, ঘুমাবে, ঘুরবে, ফূর্তি করবে, ডিজিটাল মাধ্যমে কাজ করবে, হ্যাকিং করবে, ব্ল্যাকমেইল করবে। এভাবেই চলবে বেশিরভাগ মানুষের জীবন।
মেটাভার্সের প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে মানুষের স্বাধীনতাহরণ। মানুষের প্রকাশ্য থেকে গোপনীয় প্রায় সকল কার্যক্রমের তালিকা থাকবে তাদের হাতে। তাদের প্রযুক্তির ফাঁদে সকল মানুষের চলন-বলনকে বন্দী করে ফেলা হবে। এর মাধ্যমে বিশ্বের সবাইকে অনেকটা এক রাজ্যে এক রাজার আইনের মতো করে চলতে বাধ্য করা হবে। মানুষ মনে করবে, সে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে; অথচ বাস্তবতা হলো, সে থাকবে ইতিহাসের সর্বনিকৃষ্ট পরাধীনতার শিকলে বন্দী। সে ভাববে, নিজের মতো করে চলছে; অথচ সত্য হলো, সে পর্দার পেছন থেকে অদৃশ্য কোনো শক্তির ইশারায় পরিচালিত। নিজের দ্বীন-দুনিয়া, ভালো-মন্দ ও রাত-দিনের পার্থক্য ভুলে সে পড়ে রবে মেটাভার্সের রঙিন জগতে। স্বপ্নীল ভুবনের নেশাতুর দৃশ্যের মোহে সে বারবার ফিরে যেতে চাইবে মিথ্যার সে স্বর্গরাজ্যে। অবাক হওয়ার কিছু নেই, যদি কেউ প্রকৃত জান্নাতের বিবরণকে মিথ্যা ভেবে মেটাভার্সের লাল-নীল জগতকেই কল্পনার স্বর্গ ভেবে বসে!
বর্তমান প্রযুক্তির ধোঁকাগুলোই মানুষ ধরতে পারছে না, সেখানে মেটাভার্সের মতো বিগ প্রকল্পের ধোঁকা মানুষ বুঝতে পারবে- সে এক অলীক কল্পনা বৈ নয়। এখন তো মানুষ সাধারণ ফেসবুক, গেইম, পর্ন ও মুভির নেশায়ই ডুবন্তপ্রায়। তাহলে মেটাভার্সের যুগে মানুষের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা কি কখনো কল্পনা করতে পারেন? বস্তুত সে সময়টা দুনিয়াবিশ্বাসী লোকদের স্বর্ণযুগ হলেও আখিরাতবিশ্বাসী মুমিনদের জন্য হবে অগ্নিযুগ। বর্তমানের থিজি ও ফোরজি যুগের ইন্টারনেটেই যেখানেই আমাদের যুবসমাজ মৃতপ্রায়, সেখানে ফাইভজি ও সিক্সজির যুগে আমাদের যুবাদের অবস্থা কেমন হবে, ভাবা যায়? শুধু যুবকদের কথা বলছি কেন, শিশু বা বৃদ্ধরাও কি নিরাপদ থাকবে? না, বস্তুত সেসময় ফিতনার আগুন প্রায় প্রতিটি মানুষকে গ্রাস করে নেবে, কেবল তারা ব্যতীত যাদেরকে আল্লাহ বিশেষভাবে রহম করবেন। সে সময়ে ইমান-আমলের ওপর খুব কম মানুষই অবিচল থাকতে পারবে; যেভাবে এখন কিছু মানুষ আছে।
দাজ্জাল আসার আগেই যদি হয় মানুষের এ অবস্থা, না জানি দাজ্জাল আসলে কী অবস্থা হবে! মিথ্যা মিডিয়া ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ধোঁকায় দাজ্জালকে চিনবেই বা ক’জনে? মানুষ তো তাকে পুরো পৃথিবীর ত্রাণকর্তা ও রবই ভেবে বসবে! ভবিষ্যতে প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, তাতে বাহ্যিকভাবে আমাদের জীবনযাত্রার মান বাড়লেও কমছে মানবতা, নৈতিকতা, দ্বীনদারিতা ও ইমান-আমলের মান। দাজ্জাল কবে আসবে, সেটা তো আমরা নিশ্চিত বলতে পারি না, তবে সে আসার আগেই যা শুরু হতে যাচ্ছে, তাতে দাজ্জালের আগেই অসংখ্য মানুষ ইমানহারা হতে শুরু করবে। ইমানের নুর হারিয়ে সারাদিন সে পড়ে থাকবে জীবন্ত মুভি, ফিজিক্যাল পর্ন ও বাস্তবভিত্তিক গেমস নিয়ে। এ প্রজন্মের যুবকরা ছোটকালের মকতবের নুরানি সংস্পর্শে কিছুটা হলেও তো ইমানি চেতনা রাখে, কিন্তু দ্বীন-ইসলামের সাথে সম্পর্কহীন আগামী প্রজন্ম সে চেতনাটা কোথায় পাবে? কে তাদের দেখাবে পথের দিশা? কে দূর করবে তাদের বক্ষের সকল অমানিশা?
হয়তো শীঘ্রই সে যুগ আসছে, যখন জমিনের পিঠের চেয়ে পেটই হবে উত্তম আবাসস্থল, যখন লোকালয় থেকে পাহাড়ের নির্জন গুহাই হবে অধিক নিরাপদ। তখন মুমিনদের দুনিয়া হবে সংকীর্ণ, আর ফাসিক ও কাফিরদের দুনিয়া হবে প্রশস্ত। বর্তমান সময়েও অনেক জায়গায় এটা প্রযোজ্য, কিন্তু ভবিষ্যতে এটা হবে ব্যাপক ও বিস্তৃত। সে সময় আসার আগেই তাই একজন মুমিন প্রস্তুতি গ্রহণ করে। হয় সে গ্রহণ করে নির্জনতার পথ, হারিয়ে যায় লোকালয় হতে দূর বহুদূর, নয়তো সে গ্রহণ করে বজ্রকঠিন শপথ, আর চলে যায় আল্লাহর রাস্তায় তাঁর ক্ষমা ও জান্নাতের আশায়। সময় আসার আগেই তাই ভেবে রাখা উচিত, কোন পথে মুক্তি, কোন পথে ফিতনা থেকে অব্যহতি, আর কোন পথে মহান রবের সন্তুষ্টি। চিন্তাভাবনা না করে সময়ের গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে চলতে থাকলে কখন যে কে কোন ফাঁদে আটকা পড়বে, কেউ বলতে পারে না। বেলা থাকতেই তাই চাই ইলম ও আমল, দুআ ও ইসতিগফার, সচেতনতা ও সতর্কতা।
✍️
Collected
Comment