শ্যামল ভট্টাচার্য হচ্ছেন এমন একজন স্কুল শিক্ষক যাকে সারা বাংলাদেশ চিনে এবং যার মৃত্যুতে বগুড়া শহরের দোকানপাট বন্ধ ছিল। এমনই এক স্কুল শিক্ষকের ঔরসে জন্ম নেওয়া সূর্য-সন্তান যিনি একাধারে ইকনমিস্ট, মানবাধিকার কর্মি, ভিন্নমতাবলম্বী, পার্সিকিউটেড হিউম্যান রাইটস এক্টিভিস্ট, ১৯টি বইয়ের লেখক, ইউটিউবার; ডাক্তার পিনাকী ভট্টাচার্য। বর্তমানে তিনি ফ্রান্সে বসবাস করলেও তার মূল ঠিকানা প্রত্যেক ফ্যাসিবিরোধী, দেশপ্রেমিক বাংলাদেশির হৃদয়।
19/11/2022 রাতে Pinaki Bhattacharya নামক ইউটিউব চ্যানেলে পাপ্লিশ হয় "ফারদিন কেন খু*ন হলো ? Pinaki Bhattacharya || The Untold" এই ভিডিওতে ডাক্তার পিনাকী ভট্টাচার্য ফারদিনের খুনীকে উন্মোচন করতে নিজেকে একজন গোয়েন্দা হিসেবে দাবি না করলেও তিনি কাল্পনিক কিছু ডট তৈরি করে সেগুলোকে পর্যায়ক্রমে যুক্ত করতে গিয়ে জেনে বা না জেনে বাংলাদেশি মুজাহিদদের এক সোনালী ইতিহাসকে কলঙ্কিত করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা করেছেন।
তিনি তার "ফারদিন কেন খু*ন হলো ? Pinaki Bhattacharya || The Untold" শিরোনামের ভিডিওতে আলোচনা করতে করতে একপর্যায়ে বাংলাদেশি মুজাহিদদের অন্যতম এক সোনালী ইতিহাস "২০১৩ সালের ব্লগার হত্যাকাণ্ড"কে বাংলাদেশের রাজনীতির সাথে যুক্ত করেন। কারণ হিসেবে বলেন-
"বাংলাদেশে দীর্ঘ দিনধরে মানুষ নাস্তিকতার চর্চা করে আসছে। সমাজ জানতো, বাবা-মা জানতো যে, সন্তান কমিউনিস্ট বা তথাকতিত প্রগতিশীল। কিন্তু পরস্পরের সম্পর্ক কনফ্রন্টেশনাল ছিল না; মানে মুখোমুখি, হাতাহাতির, সংঘাতের সম্পর্ক ছিল না। সমাজ এই নাস্তিকতার চর্চাকে একটা সীমার মধ্যে স্পেইস দিতো। একই ডাইনিং টেবিলে নামাযী বাবা-মার সাথে পারিবারিকভাবে বসে ডিনার করতে পারত নাস্তিক ছেলে। পারিবারিক কতাবার্তা সবই স্বাভাবিক ছিল। তাই স্থান ও কাল মেনে নিজেকে নাস্তিক পরিচয় দিতে কেউ ভয় পায়নি বা কারো অসুবিধা হতো না। কিন্তু কখনও এমন রক্তারক্তি হয়নি"।
ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য যেন সাধারণ জনগণকে এমনটাই বুঝেতে চেয়েছেন যে- ২০১৩ সালের আগে নাস্তিকদের কোনো সমস্যাই হতো না কিন্তু হঠাৎ করে ২০১৩ সাল থেকে কেন এই নাস্তিক ব্লগার হত্যাকাণ্ড? হঠাৎ করে ইসলামি জঙ্গী কোত্থেকে আসলো? আর আসলো তো আসলো একে বারে এতগুলো ব্লগার হত্যাকাণ্ড? এত শক্তি ইসলামি জঙ্গীরা কোত্থেকে পেল? না... না... না... এখানে তো অনেক বড় একটা কিন্তু আছে! আর কিন্তুটা হল- এসবই হাসিনা সরকার নিজের জন্য গোয়েন্দা দিয়ে করিয়েছে।
এটা অবশ্য বলা বাহুল্য যে, ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়াগুলোতে বেশ জনপ্রিয়। তাকে অনেক বড় একটা শ্রেণি নিয়মিত ফলো করে থাকেন। তার ফলোয়ারের মধ্যে অনেক জিহাদি মন-মানসিকতার ব্যক্তিও রয়েছেন। তার উক্ত বক্তব্যের কারণে সাধারণ মানুষসহ জিহাদি মন-মানসিকতার ব্যক্তিগণ সংশয়গ্রস্ত হয়েছেন, হচ্ছেন এবং হবেন। ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্যের এই ভিডিওটির উপর সরাসরি প্রশ্ন তোলা যায়। কিন্তু এর মানে এই না যে তার অন্য সকল ভিডিও ধোয়া তুলসি পাতা। বিষয়টি নিঃসন্দেহে এমন নয়, বরং তার অধিকাংশ ভিডিওই প্রশ্নবিদ্ধ ও ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে পূর্বেও বিভিন্নজন এই ফোরামে এই বিষয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
ডাক্তার পিনাকী ভট্টাচার্য তার এক ইউটিউব ভিডিওতে (সরকার জয় বাংলা, তাই পিনাকীর নামে মামলা || Pinaki Bhattacharya || The Untold) ০৯:৫৭ টাইমে প্রথম আলোর মতিউর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন- "আমার স্ট্যাইটমেন্ট নেন নাই কেন? মতি ভাই! আমার নামে এটা লিখলেন একতরফা, আমার স্ট্যাইটমেন্ট নিবেন না? সাংবাদিকতা ভুলে গেছেন?" তাই পার্সিকিউটেড হিউম্যান রাইটস এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যকে আমিও ব্যক্তিগতভাবে এমনটা বলতে চাই "পিনাকী ভট্টাচার্য স্যার! আপনি মুজাহিদের সম্পর্কে জেনে-শোনে তারপর ভিডিওতে বলবেন না? ধারণা করে একতরফা এমন স্ট্যাইটমেন্ট দেওয়ার আগে ভালো করে ইসলামি জঙ্গীবাদ সম্পর্কে জেনে-শোনে নিবেন না? নাকি আপনি সাংবাদিকতা ভুলে গিয়েছেন ?" পিনাকী ভট্টাচার্য স্যার! আমি আপনার একটা ভিডিওতে আপনাকে ইনসাফ শব্দ উচ্চারণ করতে শোনেছিলাম! তা স্যার এটাই কি আপনার ইনসাফ? মুজাহিদিনদের কাজকে আপনি ত্বগুত হাসিনার গোয়েন্দাদের কাজ বলার চেষ্টা করছেন! এটা কেমন ধরণের ইনসাফ? হ্যাঁ... এটাও ঠিক যে সরকার জঙ্গী ঘটনা সাজায়, কিন্তু এর মানে তো এই না যে বাংলাদেশে কোনো ইসলামি জঙ্গী নেই এবং তারা কোনো কাজও করছেন না। আপনি আপনার ভিডিওতে এমনটা বলে হাজারও বিষয়ে অসংখ্য মানুষকে সংশয়ে ফেলে দিয়েছেন। এটা কেমন ইনসাফ !?
এই পর্যন্ত যতগুলো নাস্তিক-ব্লগারকে হত্যার সাথে বাংলার মুজাহিদগণ যুক্ত, তা তারা স্বীকার করেছেন এবং যেগুলোর সাথে যুক্ত নন তাও তারা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। আপনারা Ummah Network এর মুখপাত্র শায়েখ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহর কন্ঠে নাস্তিক-ব্লগার হত্যার এই পরিষ্কার ভিডিওটি দেখতে পারেন-
VIDEO || ইসলাম বিদ্বেষীদের ঘাড়ে ধারালো চাপাতি |
https://gazwah.net/?p=4880
https://gazwah.net/?p=4880
আপনারা এটি দেখতে পারেন "সমকামিতার প্রচারক ‘জুলহাজ মান্নান’ ও ‘সামির মাহবুব তনয়’ হত্যাকান্ডের দায়ভার গ্রহণ"
বাংলার সূর্য-সন্তান ও একাধারে ডাক্তার, ইকনমিস্ট, মানবাধিকার কর্মি, ভিন্নমতাবলম্বী, পার্সিকিউটেড হিউম্যান রাইটস এক্টিভিস্ট, ১৯টি বইয়ের লেখক, ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্যকে আমার পক্ষ থেকে আহবান করা হচ্ছে, তিনি যেন তার স্ট্যাইটমেন্ট সংশোধন করেন।
সবশেষে,
আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, ওরা ৯/১১ নিয়ে মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে, ৯/১১ নাকি মুজাহিদগণ করেননি!!! আর এবার ২০১৩ সালের ব্লগার হত্যা নিয়ে মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়েছে, ছড়াচ্ছে, ছড়াবে নাস্তিক-ব্লগার হত্যা নাকি মুজাহিদগণ করেননি!!! এরা ও ওরা একই শ্রেণির লোক।
আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনাও দেশ প্রেমের কথা বলে। শেখ হাসিনাও দুঃখি মানুষের কথা বলে। শেখ হাসিনার চোখেও অশ্রু দেখা যায়। শেখ হাসিনাও কথায় কথায় ইনশাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ বলে।
আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, বর্তমানে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। জনপ্রিয়তা পেতে মন ভুলানো সাধারণ মানুষের কথা বলতে হবে। জনপ্রিয়তা পেতে ও গদিতে বসতে দেশপ্রেমের কথা বলে ইমোশনাল করে কাজ করিয়ে নিতে হবে। বড় সার্কের হাত থেকে বাঁচতে ও কাঁধের উপর সার্কের হাত পেতে ইসলামি জঙ্গীর বিরুধীতা করতে হবে। বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলিমকে সম্মোহিত করতে হবে। দ্রুত জনপ্রিয়তা পেতে, এমন একটা বিষয় নিয়ে কথা বলতে হবে যেটা ট্রেন্ডিংয়ে আছে। হউক না সেই ট্রেন্ডিংয়ের বিষয়টি তালেবানের পক্ষে! কখনও সময়ের তাকীদে প্রয়োজনে নিজের পরিচয় ভুলে নতুন পরিচয় নিতে হয়। গিরগিটি। আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, চিড়া বল পিঠা বল, ভাতের মতন না, চাচী বল জেঠী বল মায়ের মতন না।
আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, হক্বের মাধ্যমেও সমাধান পাওয়া যায়, আবার বাতিলের মাধ্যমেও সমাধান পাওয়া যায়। কিন্তু বাতিলের মাধ্যমে সমাধানে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি থাকে ও তা অস্থায়ী হয় এবং তাতে থাকে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। পক্ষান্তরে হক্বের মাধ্যমে যে সমাধান হয় তা থাকে উপকারিতার মাধ্যমে টইটুম্বুর, হক্বের মাধ্যমে যে সমাধান হয় তা দীর্ঘস্থায়ী হয়। আর তাতে থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি। হক্বের সমাধানে থাকে ইহকাল ও পরকালে অফুরন্ত কল্যাণ।
یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡخَمۡرِ وَ الۡمَیۡسِرِؕ قُلۡ فِیۡهِمَاۤ اِثۡمٌ کَبِیۡرٌ وَّ مَنَافِعُ لِلنَّاسِ ۫ وَ اِثۡمُهُمَاۤ اَکۡبَرُ مِنۡ نَّفۡعِهِمَا
লোকেরা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, ‘উভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য যৎকিঞ্চিৎ উপকারও আছে, কিন্তু উভয়ের পাপ উপকার অপেক্ষা অধিক।’ (সূরা বাকার ২১৯)
দেখুন মদ ও জুয়ার মধ্যেও মানুষের জন্য উপকার রয়েছে। তাই বলে কি তা গ্রহণযোগ্য ? যেহেতু মদ ও জুয়ার মধ্যে মানুষের জন্য উপকার রয়েছে, সেহেতু এর মাধ্যমে মানুষের জন্য সমাধানও রয়েছে। তাই বলে কি তা গ্রহণযোগ্য ?
উপকারের থেকে অপকার বেশি। সমাধানের থেকে সমস্যা বেশী।
আমার এই লিখাটির মাধ্যমে ত্বগুত হাসিনা একটু হলেও উপকৃত হবে, এই বলে কি আমি ত্বগুত হাসিনার এজান্ডা বাস্তবায়নকারী হিসেবে পরিগণিত হবো ?
তালেবান রাশিয়ার কোমর ভেঙ্গে দিয়েছিল বলেই অ্যামেরিকা একক ভাবে আধিপত্য বিস্তার করে, তখন বলা হল তালেবান অ্যামেরিকার এজান্ডা বাস্তবায়নকারী ।
এখন তালেবান অ্যামেরিকার কোমর ভেঙ্গে দিয়েছে বলেই আজ চীন-রাশিয়া একক ভাবে আধিপত্য বিস্তার করার স্বপ্ন দেখছে, তো এখন কি বলা হবে যে, তালেবান চীন-রাশিয়ার এজান্ডা বাস্তবায়নকারী ?
হা ... হা ... হা ...
তালেবান রাশিয়ার কোমর ভেঙ্গে দিয়েছিল বলেই অ্যামেরিকা একক ভাবে আধিপত্য বিস্তার করে, তখন বলা হল তালেবান অ্যামেরিকার এজান্ডা বাস্তবায়নকারী ।
এখন তালেবান অ্যামেরিকার কোমর ভেঙ্গে দিয়েছে বলেই আজ চীন-রাশিয়া একক ভাবে আধিপত্য বিস্তার করার স্বপ্ন দেখছে, তো এখন কি বলা হবে যে, তালেবান চীন-রাশিয়ার এজান্ডা বাস্তবায়নকারী ?
হা ... হা ... হা ...
Comment