আমির ও মামুর নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
১.একজন আমীর তার প্রত্যেক মামুরের সাথে এমন ভাবে কথা বলা উচিত যাতে প্রত্যেক মামুর মনে করে যে,আমীর তাকে অন্য মামুরদের চেয়ে বেশি ভালোবাসে।
আমর বিন আস রাযি. ছিলেন আরবের গুণীজনদের একজন। জ্ঞানে-গুণে, মেধা ও প্রতিভায় তার সমকক্ষ ব্যক্তি আরবে কমই ছিল। গোটা আরবে চারজন ব্যক্তিকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। আমর রাযি. ছিলেন তাদের অন্যতম ।
তিনি নিজ গোত্রের সরদার ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি লক্ষ করলেন, পথে সাক্ষাৎ হলে আল্লাহর রাসূল তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসেন। মজলিসে উপস্থিত হলে নবীজী তার আগমনে আনন্দ প্রকাশ করেন। সবসময় হাসিমুখে তার সঙ্গে কথা বলেন এবং তার সবচে পছন্দনীয় নামে তাকে ডাকেন। এমন আচরণ দেখে আমর রাযি.-এর মনে হলো, আমিই হয়তো নবীজীর সবচে প্রিয় মানুষ। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে একদিন তিনি নবীজীকে প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার সবচে প্রিয় মানুষ কে? নবীজী বললেন, 'আয়েশা।
কে আপনার সবচেয়ে প্রিয়?
আমর রাযি. বললেন, 'না, আসলে আমি জানতে চাচ্ছি- পুরুষদের মাঝে আপনার সবচে প্রিয় ব্যক্তি কে? আমি আপনার পরিবার সম্বন্ধে প্রশ্ন করছি না।' নবীজী বললেন, 'আয়েশার পিতা (আবু বকর)'। আমর জিজ্ঞেস করলেন, 'তারপর?'
নবীজী বললেন, 'ওমর ইবনুল খাত্তাব'।
আমর আরয করলেন, 'তারপর?' নবীজী এবার ইসলাম গ্রহণ ও দ্বীনের জন্য কষ্ট বরণের ক্ষেত্রে অগ্রবর্তিতা হিসেবে এক একজন করে নাম বলতে লাগলেন। 'অমুক, তারপর অমুক, তারপর অমুক...।' আমর রাযি. বলেন, 'আমার নাম সবার শেষে বলেন কিনা, এই ভয়ে আমি আর প্রশ্ন না করে চুপ হয়ে গেলাম। লক্ষ করে দেখুন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন চারিত্রিক মাধুর্যতার মাধ্যমে আমর রাযি.-এর মন জয় করে নিয়েছিলেন। তাকে নিজের আপন বানিয়ে নিয়েছিলেন।
রাসূল সাঃ সবসময়ই তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেন। অনেকে মনে করে যে,হেসে হেসে কথা বললে ব্যক্তিত্ব কমে যাবে।এটা ভুল চিন্তা। রাসূল সাঃ সবসময় মুচকি হাসতেন,অথচ সাহাবীরা রাসূল সাঃ এর মজলিসে মাথা পর্যন্ত তুলতো না।
২.একজন আমীর তার মামূরকে সবসময় কোরআন হাদীস থেকে নতুন নতুন ইলম দিতে হবে।আমীর সবসময় একই কথা বার বার বলে যাবে না।আল্লাহ তা'য়ালা তেইশ বছর ব্যপি ওহী নাযিল করেছেন, এবং রাসূল সাঃ তেইশ বছর ব্যপি এই ওহীর ইলম বিতরন করেছেন। একজন আমীর নতুন ইলম এমন ভাবে বলবে যে ইলমের উপর আমীর আমল করবে যাতে করে মামুরদের মাঝে আলোচনা মুখ থেকে নয় বরং অন্তর থেকে আসে। যে ইলম আমিরের কলব নাড়া না দেয়, সে ইলম মামুরের কলব কিভাবে নাড়া দিবে?
৩. মামুরদের মাঝে শারীরিক বা মেধাগত দূর্বলতা দেখলে এজন্য অবহেলা না করে বরং দরদের সাথে দূর্বলতা দূর করার চেষ্টা করা ।কোন মামুরের মেধা কম হলে বা আমল অথবা অন্য কোন দূর্বলতা থাকলে এজন্য অবহেলা না করে কাছে টেনে নিবে।জিবরাইল আঃ যখন ওহী নিয়ে রাসূল সাঃ এর নিকট এসে পড়তে বললেন, রাসূল সাঃ বললেন আমি পড়তে পারি না। তখন জিবরাইল আঃ রাসূল সাঃ কে জড়িয়ে ধরলেন। একজন শিক্ষকেরও উচিত তার ছাত্রদের মাঝে মাঝে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরা।কল্পনা করে দেখুন একটা জামায়াতে একদম উপরের কোন ব্যক্তি যদি নিম্ন পর্যায়ের কোন ব্যক্তিকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে, খুব আন্তরিকতা দেখায় তখন দেখা যাবে যে,নিম্ন পর্যায়ের ব্যক্তির মাঝেও দ্বীনের প্রতি আগ্রহ অনেক বেড়ে যাবে৷
৪.আমির তার মামুরের মাঝে কোন ভুল দেখলে এমন ভাবে সংশোধন করার চেষ্টা করবে যাতে মামুর নিজেই সংশোধন হয়ে যায়,যেন নিজেই নিজের ভুল বুজতে পারে।যেমন এক সাহাবী রাসূল সাঃ এর নিকট যিনার অনুমতি চাইলো। তখন রাসূল সাঃ তাকে এমন ভাবে নসীহাহ দিলেন যে সাহাবী নিজ থেকেই নিজের ভুল বুঝতে পারলো
একদা এক যুবক আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, ‘আপনি আমাকে ব্যভিচার করার অনুমতি দিন!’ তিনি বললেন, “তুমি কি তোমার মায়ের সাথে তা পছন্দ কর? তোমার বোন বা মেয়ের সাথে, তোমার ফুফু বা খালার সাথে তা পছন্দ কর?” যুবকটি প্রত্যেকের জন্য উত্তরে একই কথা বলল, ‘না। আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার জন্য আমার জীবন উৎসর্গ হোক। (তাদের সঙ্গে আমি এ কাজ করতে চাই না।)’ তখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তাহলে লোকেরাও তো পছন্দ করে না যে, কেউ তাদের মা, মেয়ে, বোন, খালা বা ফুফুর সাথে ব্যভিচার করুক।( আহমদ)
রাসূল (সাঃ) সাহাবীকে প্রথমেই নিষেধ করলেন না, বরং এমন ভাবে বুঝালেন যে, সাহাবীর নিজের ভিতরেই অনুশোচনা চলে আসছে।
আমাদেরও উচিত কাহারো মাঝে কোন বিশেষ সমস্যা দেখলে তা খুব সুন্দর ভাবে দূর করার চেষ্টা করা৷ এমন ভাবে কথা বলা যাতে নিজেই নিজের ভুল বুজতে পারে৷
★★★★★★★★★★★★★★★
১.একজন আমীর তার প্রত্যেক মামুরের সাথে এমন ভাবে কথা বলা উচিত যাতে প্রত্যেক মামুর মনে করে যে,আমীর তাকে অন্য মামুরদের চেয়ে বেশি ভালোবাসে।
আমর বিন আস রাযি. ছিলেন আরবের গুণীজনদের একজন। জ্ঞানে-গুণে, মেধা ও প্রতিভায় তার সমকক্ষ ব্যক্তি আরবে কমই ছিল। গোটা আরবে চারজন ব্যক্তিকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। আমর রাযি. ছিলেন তাদের অন্যতম ।
তিনি নিজ গোত্রের সরদার ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি লক্ষ করলেন, পথে সাক্ষাৎ হলে আল্লাহর রাসূল তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসেন। মজলিসে উপস্থিত হলে নবীজী তার আগমনে আনন্দ প্রকাশ করেন। সবসময় হাসিমুখে তার সঙ্গে কথা বলেন এবং তার সবচে পছন্দনীয় নামে তাকে ডাকেন। এমন আচরণ দেখে আমর রাযি.-এর মনে হলো, আমিই হয়তো নবীজীর সবচে প্রিয় মানুষ। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে একদিন তিনি নবীজীকে প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার সবচে প্রিয় মানুষ কে? নবীজী বললেন, 'আয়েশা।
কে আপনার সবচেয়ে প্রিয়?
আমর রাযি. বললেন, 'না, আসলে আমি জানতে চাচ্ছি- পুরুষদের মাঝে আপনার সবচে প্রিয় ব্যক্তি কে? আমি আপনার পরিবার সম্বন্ধে প্রশ্ন করছি না।' নবীজী বললেন, 'আয়েশার পিতা (আবু বকর)'। আমর জিজ্ঞেস করলেন, 'তারপর?'
নবীজী বললেন, 'ওমর ইবনুল খাত্তাব'।
আমর আরয করলেন, 'তারপর?' নবীজী এবার ইসলাম গ্রহণ ও দ্বীনের জন্য কষ্ট বরণের ক্ষেত্রে অগ্রবর্তিতা হিসেবে এক একজন করে নাম বলতে লাগলেন। 'অমুক, তারপর অমুক, তারপর অমুক...।' আমর রাযি. বলেন, 'আমার নাম সবার শেষে বলেন কিনা, এই ভয়ে আমি আর প্রশ্ন না করে চুপ হয়ে গেলাম। লক্ষ করে দেখুন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন চারিত্রিক মাধুর্যতার মাধ্যমে আমর রাযি.-এর মন জয় করে নিয়েছিলেন। তাকে নিজের আপন বানিয়ে নিয়েছিলেন।
রাসূল সাঃ সবসময়ই তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেন। অনেকে মনে করে যে,হেসে হেসে কথা বললে ব্যক্তিত্ব কমে যাবে।এটা ভুল চিন্তা। রাসূল সাঃ সবসময় মুচকি হাসতেন,অথচ সাহাবীরা রাসূল সাঃ এর মজলিসে মাথা পর্যন্ত তুলতো না।
২.একজন আমীর তার মামূরকে সবসময় কোরআন হাদীস থেকে নতুন নতুন ইলম দিতে হবে।আমীর সবসময় একই কথা বার বার বলে যাবে না।আল্লাহ তা'য়ালা তেইশ বছর ব্যপি ওহী নাযিল করেছেন, এবং রাসূল সাঃ তেইশ বছর ব্যপি এই ওহীর ইলম বিতরন করেছেন। একজন আমীর নতুন ইলম এমন ভাবে বলবে যে ইলমের উপর আমীর আমল করবে যাতে করে মামুরদের মাঝে আলোচনা মুখ থেকে নয় বরং অন্তর থেকে আসে। যে ইলম আমিরের কলব নাড়া না দেয়, সে ইলম মামুরের কলব কিভাবে নাড়া দিবে?
৩. মামুরদের মাঝে শারীরিক বা মেধাগত দূর্বলতা দেখলে এজন্য অবহেলা না করে বরং দরদের সাথে দূর্বলতা দূর করার চেষ্টা করা ।কোন মামুরের মেধা কম হলে বা আমল অথবা অন্য কোন দূর্বলতা থাকলে এজন্য অবহেলা না করে কাছে টেনে নিবে।জিবরাইল আঃ যখন ওহী নিয়ে রাসূল সাঃ এর নিকট এসে পড়তে বললেন, রাসূল সাঃ বললেন আমি পড়তে পারি না। তখন জিবরাইল আঃ রাসূল সাঃ কে জড়িয়ে ধরলেন। একজন শিক্ষকেরও উচিত তার ছাত্রদের মাঝে মাঝে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরা।কল্পনা করে দেখুন একটা জামায়াতে একদম উপরের কোন ব্যক্তি যদি নিম্ন পর্যায়ের কোন ব্যক্তিকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে, খুব আন্তরিকতা দেখায় তখন দেখা যাবে যে,নিম্ন পর্যায়ের ব্যক্তির মাঝেও দ্বীনের প্রতি আগ্রহ অনেক বেড়ে যাবে৷
৪.আমির তার মামুরের মাঝে কোন ভুল দেখলে এমন ভাবে সংশোধন করার চেষ্টা করবে যাতে মামুর নিজেই সংশোধন হয়ে যায়,যেন নিজেই নিজের ভুল বুজতে পারে।যেমন এক সাহাবী রাসূল সাঃ এর নিকট যিনার অনুমতি চাইলো। তখন রাসূল সাঃ তাকে এমন ভাবে নসীহাহ দিলেন যে সাহাবী নিজ থেকেই নিজের ভুল বুঝতে পারলো
একদা এক যুবক আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, ‘আপনি আমাকে ব্যভিচার করার অনুমতি দিন!’ তিনি বললেন, “তুমি কি তোমার মায়ের সাথে তা পছন্দ কর? তোমার বোন বা মেয়ের সাথে, তোমার ফুফু বা খালার সাথে তা পছন্দ কর?” যুবকটি প্রত্যেকের জন্য উত্তরে একই কথা বলল, ‘না। আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার জন্য আমার জীবন উৎসর্গ হোক। (তাদের সঙ্গে আমি এ কাজ করতে চাই না।)’ তখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তাহলে লোকেরাও তো পছন্দ করে না যে, কেউ তাদের মা, মেয়ে, বোন, খালা বা ফুফুর সাথে ব্যভিচার করুক।( আহমদ)
রাসূল (সাঃ) সাহাবীকে প্রথমেই নিষেধ করলেন না, বরং এমন ভাবে বুঝালেন যে, সাহাবীর নিজের ভিতরেই অনুশোচনা চলে আসছে।
আমাদেরও উচিত কাহারো মাঝে কোন বিশেষ সমস্যা দেখলে তা খুব সুন্দর ভাবে দূর করার চেষ্টা করা৷ এমন ভাবে কথা বলা যাতে নিজেই নিজের ভুল বুজতে পারে৷
★★★★★★★★★★★★★★★
Comment