কিছু সরকারী পদক্ষেপ! দায়ী ভাইয়েরা কোথায়?
ঘটনা-১ঃ আলাউদ্দীন জিহাদি নামক এক ব্যক্তি শাইখ আহমদ শফি'র ইন্তেকালের পর একটি বিদ্বেষমূলক পোস্ট দেয়। আমার যতটুকু মনে হল সরকারী পুলিশ অনেকটা গায়ে পড়ে তাঁকে মামলা দিল, গ্রেফতার করে জেলে ঢুকালো।
ঘটনা-২ঃ গত কিছু দিন আগে বাংলাদেশের ইসলামী গণতান্ত্রিকদের মাঝে একটি একতার আভাস পাওয়া গিয়েছে। চরমনাইয়ের একটি সভায় মাওলানা মামুনুল হক মেহমান হয়েছেন। এবং সমমনা ইসলামী গণতান্ত্রিক দলগুলোর মাঝে ঐক্যের কথা ব্যক্ত করেছেন।
ঘটনা-৩ঃ গত কিছু দিন আগে শাইখ আহমদ শফি ও তাঁর কুপুত্রের বিরুদ্ধে হাটহাজারি মাদরাসায় আন্দোলন হয়। প্রায় সকল ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও মুসলিম জনসাধারণ এই আন্দোলনে সমর্থন করেন। পরিশেষে এই আন্দোলন সফল হয়।
সম্মানিত পাঠক! উপরের তিনটি ঘটনাকে কি আপনি সাদামাটা চোখে দেখেছেন? আপনি অনুগ্রহ করে আরেকটু গভীরে যান...
আসুন আমরা একটু ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করি-
আলাউদ্দিন জিহাদি প্রসঙ্গ-
সে একটি বিতর্কিত পোস্ট করে। পরিস্থিতি খারাপ হলে সে পোস্ট ডিলিট করে এবং লাইভে এসে ক্ষমা চায়। কিন্তু তাঁরপরও পুলিশ গ্রেফতার করে। স্থানীয় কিছু আলিম পরিচয়ধারী লোক এই পুলিশের সঙ্গ দেয়। অপরদিকে সেলিব্রেটি হিসেবে পরিচিত কিছু লোক এদেরকে সাপোর্ট করে ও পরিবেশ উত্তপ্ত করতে ভূমিকা রাখে। আর এই বেরেলবি মতাদর্শের লোকদের কথা তো বলাই লাগে না, তারা তো প্রতিপক্ষ ওয়াহাবিদের বিরুদ্ধে কোমরে গামছা বেঁধে নেমেছে। এর ফলে কথিত সুন্নি ও ওয়াহাবিদের মাঝে একটি বিবাদ শুরু হল। আগামী ওয়াজের সিজন পুরোটা এই বিবাদের আগুনে পেট্রল ঢালবে। ফলে ধর্মীয় অঙ্গনে একটি অস্থিরতা চলমান থাকবে। আর এখান থেকে তাগুত সরকার পুরোপুরি ফায়েদা অর্জন করবে। তারা তাদের ইসলামপন্থী প্রতিপক্ষদেরকে পরস্পর বিবাদে লাগিয়ে রাখতে পেরেছে।
চরমনাই ও মজলিস ঐক্য প্রসঙ্গ-
এই ঐক্যটি হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। এবং অধমের ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ হল- দীনী মহলে দ্রুত অগ্রসরমান জিহাদি ধারাকে প্রতিহত করার প্রকল্প হিসেবে এই ঐক্যটি হতে পারে। আলহামদু লিল্লাহ বাংলাদেশের মুসলিমদের মাঝে জিহাদি ধারা পসন্দনীয় হয়ে উঠছে। গণতন্ত্র ও কথিত ইসলামী গণতন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর দাওয়াত ও জিহাদের চিন্তাধারা বিকশিত হচ্ছে আলহামদু লিল্লাহ। হতে পারে এই ধারাকে প্রতিহত করার প্রকল্প হিসেবে এই ঐক্য অথবা এই ধরণের আরও ঐক্য সংগঠিত হবে। আমি এটা বলছি না যে চরমনাই পীর বা মামুনুল হক সাহেব এই রকম প্লান থেকেই ঐক্য করছেন। তবে যে কোন ঘটনার অন্তরালে যে আরও কিছু ঘটনা থাকে, তাতো আর বলার অপেক্ষা রাখে না!
হাটহাজারী মাদরাসার আন্দোলন প্রসঙ্গ-
প্রথমত এউ ঘটনার পর আলিম সমাজকে তাগুত সরকার ও তাদের দালালরা আরও কয়েকভাবে বিভক্ত করবে, যার বিভিন্ন চিত্র ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান হচ্ছে। দালালদের বাইরেও আলিমদের মধ্যে ভালো হিসেবে পরিচিত একটি অংশ ইতিমধ্যেই আন্দোলন বিরোধী কাতারে অবস্থান নিয়েছে।
দ্বিতীয়ত এই ঘটনার আগে হোক বা পরে হোক তাগুত সরকার সম্ভবত আলিমদেরকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করেছে- ১- দালাল বা সরকারী আলিম, ২- ইসলামী গণতন্ত্রপন্থী ও তাদের সমর্থক আলিম। ৩- হক্কানি আলিম, যারা হয়তো মুজাহিদদের সাপোর্ট করেন অথবা সাপোর্ট না করলেও গণতন্ত্রের পক্ষে নন।
তাগুত সরকার হাটহাজারী বিরোধী আন্দোলনকে তৃতীয় শ্রেণীর আলিমদের আন্দোলন ধরে নিয়ে অপপ্রচার করার চেষ্টা চালাচ্ছে বা চালাবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণীর আলিমদের অনেকে এই এপ্রোচে লেখালেখিও শুরু করেছে।
সম্মানিত পাঠক! এই ভূখণ্ডের জিহাদি আন্দোলন, হক্কানি আলিম সমাজ ও দ্বীনদার মুসলিমগণ নানা ধরণের চক্রান্তের শিকার। উপরের তিনটি ঘটনা একটু গভীর থেকে চিন্তা করে দেখুন! তাগুত সরকারের পাতা ফাঁদে নিজে পতিত না হই, অপরকেও সচেতন করি। দায়ী ভাইয়েরা দাওয়াতকে আরও প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার সাথে প্রদান করি। তাগুত হাজারো চক্রান্ত করুক! টাকলা মনিরুল ও তাঁর প্রভুরা যতই প্লান করুক! আমরা আমাদের রবের ওয়াদাহতে বিশ্বাস করি। নিশ্চয় আমাদের রব সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলকারী।
Comment