জিহাদি আন্দোলন নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি ও জবাব
রামযি ইউসুফ
রামযি ইউসুফ
জিহাদি আন্দোলন সংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে সম্প্রতি অনলাইনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তাই সংক্ষেপে কয়েকটি কথা উল্লেখ করছি। ইনশাআল্লাহ আন্তরিক ভাইবোনেরা এ থেকে উপকৃত হবেন।
।
১। আল-কায়েদা আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে কাজ করছে। কর্মকান্ড চলছে এ সংগঠনের ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার অধীনে। আল-কায়েদা নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুসারে এ ভূখন্ডে সারিয়াহ (সামরিক অপারেশন) চালানো হয়েছে। আবার এ ভূখন্ড থেকে অন্যান্য জিহাদের ময়দানে বাংলাদেশী ভাইরা হিজরত করেছেন। ক্বীতাল করেছেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় ইনশাআল্লাহ শাহাদাত অর্জন করেছেন। অর্থাৎ এ ভূখন্ড মুহাজির ও আনসার, দুটোই জন্ম দিয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
এর প্রমাণ হিসেবে দেখুন আস সা(হা)ব মিডিয়া থেকে প্রকাশিত –
ক) আল কায়েদা উপমহাদেশের আচরণবিধি
লিংক- http://gazwah.net/?p=10727
খ) শাইখ আসিম উমারের বার্তা - এ ধূলো মিটবার নয় – আস সাহাব (মে, ২০১৫)।
লিংক [বাংলা]-* http://gazwah.net/?p=10981
লিংক [উর্দু, আরবি ও ইংরেজি]- https://archive.org/details/dust-wil...m-umar-english
গ) আল হাদিদ নিউজ রিপোর্ট পর্ব ৩, আস সাহাব, ২০১৬।
লিংক- [বাংলা সাবটাইটেল] http://gazwah.net/?p=10534
লিংক [মূল উর্দু]-https://matboaatejihad.net/?p=2351
ঘ) আস সাহাব মিডিয়া থেকে বের হওয়া বাংলা ভিডিও “আমাদের মারকায”, এবং “জীবনের সফলতা” (খুরাসানে হিজরত করা বাংলাদেশী মুহাজিরদের ভিডিও)
লিংক [আমাদের মারকায]- http://gazwah.net/?p=4478
লিংক [জীবনের সফলতা]- http://gazwah.net/?p=4476
ঙ)শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরির ৯/১১ হামলার ১৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্য (أباة الضيم), আস সাহাব (সেপ্টেম্বর, ২০১৬)। "অত্যাচার মানবো না" শিরোনামে বঙ্গানুবাদ আন নাসর মিডিয়া থেকে প্রকাশিত। গাযওয়া সাইটে শাইখের মূল ভিডিও আছে বাংলা সাবটাইটেল সহ।
লিংক [অনুবাদ]- http://gazwah.net/?p=5137
লিংক [মূল আরবি]- https://archive.org/details/obat11-DR
আন নাসর মিডিয়া থেকে প্রকাশিত –
ক)জিহাদের পাথেয় – আমেরিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশী মুজাহিদিনের বিএম হামলা,
লিংক- http://gazwah.net/?p=13762
খ) প্রকৃত মুক্তির জীবন -উস্তাদ আবু ইউসুফ (রহিমাহুল্লাহ)
লিংক- http://gazwah.net/?p=23973
.
যে কোন ব্যক্তি এ ব্যাপারে ভিন্ন কিছু বলে, নিশ্চিতভাবে জানবেন তিনি বৈশ্বিক জিহাদ আন্দোলনের সাথে যুক্ত নেই।
।
২। মানহাজ শব্দটি দ্বারা বর্তমানে অধিকাংশক্ষেত্রে ‘পদ্ধতি’ অর্থ নেয়া হয়। বিশেষ করে ‘দ্বীন কায়েমের পদ্ধতি’ অর্থে মানহাজ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যদিও এ শব্দের মূল অর্থ ও ঐতিহাসিক প্রয়োগ আরো ব্যাপক। ‘দ্বীন কায়েমের পদ্ধতি’ অর্থে মানহাজ শব্দ বিভিন্ন দল ও আন্দোলনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। যেমন কেউ দ্বীন কায়েমের পদ্ধতি মনে করেন গণতন্ত্র। সেটা তাদের মানহাজ। কেউ মনে করেন তারবিয়া-তাসফিয়া, কেউ মনে করেন সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া – এগুলো তাদের মানহাজ। মুজাহিদিন মনে করেন দ্বীন কায়েমের পদ্ধতি হল বিশুদ্ধ তাওহিদের দাওয়াহ ও জিহাদ। এই জিহাদ কীভাবে হবে। কোন ভূখন্ডে কী দায়িত্ব হবে, সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে। এই লিখা এই আলোচনার জন্য উপযুক্ত নয়। সংক্ষেপে, আল-কায়েদার অবস্থান হল দ্বীন কায়েমের সঠিক পদ্ধতি হল দাওয়াহ ও জিহাদ। এটি মুজাহিদিনের মানহাজ।
।
৩। বাংলাদেশে কাজ করা মুজাহিদিন এবং বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দ কখনোই নিজেদের ক্ষেত্রে ‘মানহাজী’ শব্দ ব্যবহার করেননি। বরং সত্যিকারের মুজাহিদিনের দাওয়াতে অধিকাংশ সময় শরঈ পরিভাষা ব্যবহৃত হয়। এছাড়া নিজেদের পদ্ধতির আলোচনা করার সময় তাঁরা তাওহিদ ও জিহাদের মানহাজের কথা বলেন। কিংবা দাওয়াহ ও জিহাদের কথা বলেন। ‘মানহাজী’ শব্দটি তাঁদের ব্যবহার করা না। বরং এটি তাঁদের বিরোধিতকারীদের একাংশের আবিষ্কার করা শব্দ। কওমি অঙ্গনের কিছু ব্যক্তি এবং তাদের অনুসারীরা ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে কয়েক বছর ধরে মোটামুটি সক্রিয়ভাবে মুজাহিদিনের দাওয়াহর বিরোধিতা করেছে। এই বিরোধিতার মূল কারণ হল কুরআন সুন্নাহ ও সালফে সালেহিনের অবস্থানের আলোকে বলা মুজাহিদিনের দাওয়াহর বিভিন্ন দিক তাদের অগ্রজ অনুসরণীয় ব্যক্তিদের গ্রহণ করা অবস্থানের বিরুদ্ধে গেছে। ‘মানহাজী’ শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়েছে এধরণের একটি গ্রুপ থেকে।
কাফের সরকারগুলো মুজাহিদিনকে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে, কাউন্টার টেরোরিজম বিশেষজ্ঞরা বলে জিহাদি/জিহাদিস্ট। মুসলিম নামধারী মুরতাদ সরকারগুলো বলে ‘জঙ্গি’, ‘ইরহাবি’ ইত্যাদি। তেমনি বাংলাদেশের কওমি অঙ্গনের একটি অংশ বিরোধিতাস্বরূপ মুজাহিদিনের দাওয়াহ এবং তাঁদের আদর্শের সমর্থকদের ‘মানহাজী’ বলে। এই নামটি তাদের দেয়া। আশ্চর্যের বিষয় হল এসব গ্রুপে যারা সক্রিয় ছিল/আছে তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখন ‘মানহাজী’ নামের উৎস আবিষ্কারের জন্য গবেষণা করতে চাচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন শায়খ উসামার রহ. বক্তব্যের একটি সংকলনের নাম থাকে নাকি ‘মানহাজী’ শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়েছে!
এই নাকি গবেষণা আর গবেষকদের অবস্থা। বাংলা ভাষায় একেই মনে হয় বলে সর্প হয়ে দংশন ওঝা হয়ে ঝাড়া। তারা নিজেরাই বিরোধিতা করে একটি নাম দিলেন। এখন নিজেরাই সেই নামের কল্পিত উৎস সন্ধানে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। শায়খ উসামার সেই সংকলন আলহামদুলিল্লাহ বাংলা করা হয়েছে, আজকে থেকে ৭/৮ বছর বা তার বেশি আগে। যখন অনলাইনে দাওয়ান তুঙ্গে ছিল। তখন অনলাইনে ‘মানহাজী’ শব্দ বা নাম ব্যবহার হয়নি। এই নামের ব্যবহার শুরু হয়েছে ২০১৭/১৮ থেকে ফেসবুকে কওমি অঙ্গনের কিছু ভাইদের পরিচালিত গ্রুপ থেকে। এই নামের উৎস সন্ধানে আন্তরিক হলে সেই গ্রুপ, আর নিজেদের এক্টিভিটি এবং পোস্ট হিস্ট্রি চেক করুন। উৎস পেয়ে যাবেন।
।
৪। জিহাদের সমর্থক ভাইরা যেমন নিজেদের ক্ষেত্রে সাধারনত ‘জঙ্গী’, ‘সন্ত্রাসী’ বা ‘ইরহাবি’ শব্দ ব্যবহার করবেন না, ঠিক তেমনিভাবে মানহাজী শব্দটি ব্যবহার থেকেও পারতপক্ষে বিরত থাকা উত্তম। কারণ এটি বিরোধিতাকারীদের দেয়া নাম, যা তুচ্ছার্থে ব্যবহৃত হয়। এটি কোন ফতোয়া না, আমার ব্যক্তিগত ভাবনা।
।
৫। বাংলাদেশে আল-কায়েদার ভাইদের দাওয়াতি মেহেনতের ফলে তাওহিদ ও জিহাদের দাওয়াহ এ ভূখন্ডে ছড়িয়ে পড়েছে। শাসনের ক্ষেত্রে শিরক, আল ওয়ালা ওয়াল বারা, জিহাদের ফরজিয়্যাত, দ্বীন কায়েমের সঠিক পদ্ধতি – এর মতো বিষয়গুলোর আলোচনা তাঁরাই অনলাইনে শুরু করেছেন এবং ব্যাপকভাবে ফোকাসে এনেছেন। পরে তা অফলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ রচনাবলী তাঁরা আরবী, ইংরেজি এবং উর্দু থেকে অনুবাদ করেছেন। গ্লোবাল জিহাদের ফিকির এবং মানহাজ (পদ্ধতি) তাঁরাই এ ভূখন্ডে পরিচিত করেছেন। পরে যারা বিভিন্ন ঘরানা থেকে এসে এসব বিষয়ে জেনেছেন এবং নিজেরা আলোচনা করেছেন তাঁদেরকে এই চিন্তার সাথে পরিচিত করিয়েছেন এই দাঈ ভাইয়েরাই। এছাড়া কারাবন্দী একজন আলিম এ ব্যাপারে এমন অবদান রেখেছেন যারা সমতুল্য কোন কাজ এভূখন্ডে আর দেখা যায়নি। আল্লাহ তাঁকে হক্বের উপর অবিচল রাখুন। তাঁর কল্যাণময় মুক্তি ত্বরান্বিত করুন। মূলত তাঁর আইনী জটিলতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় তাঁর বক্তব্যগুলো সেভাবে এখন দাওয়াতে ফোকাস করা হয় না। কিন্তু বাস্তবতা হল তিনি যে অবদান রেখেছেন তার ফসল আজো পাওয়া যাচ্ছে। এটি এমন এক সত্য কোন অস্বীকার করার উপায় নেই। ইনসাফকারীদের কাছে এ সত্য স্পষ্ট।
আজ যে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, বিভিন্ন ঘরানার লোক সেখানে এসে পক্ষে বিপক্ষে মত দিচ্ছে, সেটি আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁদের আন্তরিক দাওয়াহ এবং মেহেনত্রের ফসল। তাওহিদ ও জিহাদের দাওয়াহকে ইসলামপন্থীদের মাঝে মেনস্ট্রিমে নিয়ে আসায় তাদের দাওয়াতি অবদান কেবল অজ্ঞ এবং অহংকারী ব্যক্তিরা অস্বীকার করবে। যে এ সত্য স্বীকার করে না সে কেবল নিজেকেই ছোট করবে। নতুনের সংখ্যা বেশি হলেও, সবাই এ অঙ্গনে নতুন নয়।
।
৬। আল্লাহর ইচ্ছায় দাওয়াহ প্রসারিত হয়েছে, এবং আল্লাহ বিভিন্ন মানুষের অন্তরকে হক্বের প্রতি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। এর ফলে অনেকেই তাদের নিজ নিজ অবস্থান ও ব্যাকগ্রাউন্ডের (ঘরানার) জায়গা থেকে এই দাওয়াতকে প্রসারিত করায় ভূমিকা রেখেছেন। তবে যেকোন আদর্শের প্রসার হবার সাথে সাথে সেই আদর্শের প্রচারকারীদের মধ্যে কিংবা প্রচারিত আদর্শের বিশুদ্ধতায় কিছু সমস্যা ঢুকতে শুরু করে। অর্থাৎ হয় নতুন তৈরি হওয়া দাঈদের মানে কমতি আসে, অথবা নতুন দাঈরা পুরোপুরি সঠিকভাবে আদি আদর্শকে প্রচার করেন না। কিছু সংযোজন বিয়োজন করেন। এটি এ দুনিয়ার একটি বাস্তবতা। অনলাইন জগতেও এমন ঘটেছে।
এমন অনেক লেখক বক্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন যাদের দ্বারা একদিকে মুজাহিদিনের দাওয়াহ উপকৃত হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক দিক। সকলকেই সব বিষয়ে হুবহু একই জায়গাতে আসতেই হবে, এমন আশা করা বাস্তবসম্মত নয়। এবং মাসলাক নির্বিশেষে যেকোন দিক থেকে দ্বীন, শরীয়ত এ মুসলিমের রক্তের হেফাজতের উদ্দেশ্যে কাজ হলে তাতে সমর্থন দেয়া মুসলিমদের দায়িত্ব। যারা এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ আঞ্জাম দিয়েছেন, দিচ্ছেন আমরা তাঁদের সকলের জন্য দুয়া করি। কিন্তু একটি বিষয়টি মনে রাখা এবং বুঝা জরুরী, এই বক্তা, লেখক আল-কায়েদার অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাঁরা আল-কায়েদার আলিম ও নেতৃত্বের কিতাবাদি ও আলোচনা থেকে কিছু জিনিস নিয়েছেন আর তার সাথে নিজস্ব ধ্যানধারণা মিশিয়েছেন। পাঠক সমর্থকদের অনেকে তাদের এই নিজস্ব মানহাজ (পদ্ধতি)-কে তানজিমের অফিশিয়াল অবস্থান ধরে নিয়েছে। এটি অনেক ক্ষেত্রে হয়তো এই বক্তা-লেখকদের দোষ নয়। সমর্থকরা অজ্ঞতাবশত হয়তো অনেক ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়তি কথা ভেবে নিয়েছেন। কিন্তু যেভাবেই হোক শেষ হিসাবে ক্ষতি হয়েছে।
অনেক ভাই এমন কোন অবস্থানকে আল-কায়েদার অবস্থান মনে করে অনুসরণ করছেন যা আসলে আল-কায়েদার অবস্থানের সাথে মিলে না, কিংবা অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত। আবার অনেক ক্ষেত্রে নিজস্ব চিন্তাচেতনা ও আদর্শ প্রচার করা একাধিক বক্তা, লেখক, আলোচক একে অপরের সাথে কোন বিষয় নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। তখন অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা যায়। অনেকে এই তর্ক দেখে ভুলবশত ধরে নিয়েছেন যে আল-কায়েদার ফিকির এবং পদ্ধতি নিয়ে তর্ক চলছে। আসলে দ্বন্দ্ব বা বিতর্ক চলছে একজন নির্দিষ্ট পাবলিক ব্যক্তির অবস্থানের সাথে আরেকজন পাবলিক ব্যক্তির অবস্থানের পার্থক্য নিয়ে। সমর্থক ভাইবোনদের উচিৎ এসব অনর্থক আলাপ এড়িয়ে যাওয়া। তানজিমের কাজের একটি বৈশিষ্ট্য হল গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও আলোচনাকে অগ্রাধিকার দেয়া। এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব এমন তর্ক পারতপক্ষে এড়িয়ে যাওয়া। মোটা দাগে যে হুমকি ও জরুরতের ব্যাপারে উম্মত একমত সেগুলোকে দাওয়াতে প্রাধান্য দেয়া। কার মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যগুলো আছে কার মধ্যে তা নেই সেটা বুঝার মতো যোগ্যতা পাঠকদের তৈরি করতে হবে।
।
৭। এ বিষয়টি বুঝা আবশ্যক যে দ্বীনের বন্ধন কোন সংগঠনের বন্ধনের চেয়ে অনেক ব্যাপক ও শক্তিশালী। দ্বীনের মজলুম বিষয় নিয়ে আলোচনা করা প্রত্যেক আন্তরিক দাঈকে আল্লাহর রাহে আমরা ভালোবাসি। তাদের সাথে আমাদের বন্ধন দ্বীনের, তাওহিদের। যা ঠুনকো কোন বিষয় নয়। তবে এটি মনে রাখা জরুরী যে বর্তমানে ফেসবুকে যারা এ ধরণের বিষয়গুলো আলোচনা করেন এবং জনপ্রিয় তাদের কেউই আল কায়েদা উপমহাদেশের অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করেন না। একজনও না। কথাটি ভালোভাবে খেয়াল করুন।
হ্যাঁ, তাঁদের কিছু বিষয়ে আল কায়েদার বক্তব্যের সাথে মিলবে। কিন্তু সমর্থক ভাইদের যে বিষয়টি বুঝা জরুরী তা হল – এর পাশাপাশি এসব বক্তা, আলোচকরা নিজস্ব ধ্যানধারণা প্রচার করেন। তারা সার্বিকভাবে নিজস্ব ধ্যানধারনা কিংবা ‘মানহাজ’ প্রচার করেন। এটি হারাম, হালাল, মুবাহ, মুস্তাহাব - তাঁদের কথা শুনা যাবে না, মানা যাবে না, তাঁরা ভুল বলছেন, শুদ্ধ বলছেন - এরকম কিছুই আমি বলছি না। সবাইকে আল কায়েদার সদস্য হতে হবে, বা হুবহু তাঁদের অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। সেটিও আমি বলছি না। এখানে তাদের সমালোচনা করা হচ্ছে না, আক্রমন করা হচ্ছে না। এটি কেবল একটি বিষয়ে মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হয় তা নিশ্চিতকরণে সতর্কতামূলক বক্তব্য। এটি কেবল আল কায়েদার অবস্থানের ব্যাপারে যেন বিভ্রান্তি তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য বলা হচ্ছে।
এসব বক্তা বা পাবলিক ফিগারদের বিভিন্ন বক্তব্যের মান ভুল-শুদ্ধ যাই হোক, তারা আল-কায়েদার অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই তাদের বক্তব্যকে তাদের নিজস্ব অবস্থান হিসাবে রেখে বিবেচনা করবেন। বক্তব্য এটুকুই। কেন এই কথাগুলো বলা জরুরী? উত্তর শায়খ আইমানের হাফি. একটি বক্তব্যে পাওয়া যায়, তিনি বলেছেন – ‘আল কায়েদা সর্বপ্রথম একটি বার্তা ও আদর্শের নাম। অতঃপর তা একটি জামআত বা সংগঠনের নাম’। তাই এই আদর্শ ও বার্তা ও অক্ষুণ্ণ রাখা, বিভিন্ন বক্তা ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের দ্বারা ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত পরিবর্তন বা বিকৃতি থেকে রক্ষা করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আদর্শিক বিশুদ্ধতা যদি অক্ষুন্ন না থাকে তাহলে ক্ষতির পাল্লা লাভের চেয়ে অনেক বেশি ভারী হয়ে পড়বে।
কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নাম আমি এখানে উল্লেখ করিনি। তাই মেহেরবানি করে কমেন্টবক্সে কেউ নির্দিষ্ট কারো নাম উল্লেখ করবেন না। এটি একটি আম কথা যা অনেকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এর বাইরে ফেসবুকে নিঃসন্দেহে এমন অনেক ভাই আছেন যারা সঠিকভাবে তানজিমের অবস্থান ধারণ করেন কিন্তু নানা কারণে তারা সেগুলো পাবলিকলি আলোচনা করতে পারেন না। আল্লাহ তাঁদের অবস্থান সহজ করে দিন।
।
৮। যারা আল কায়েদার অবস্থান সরাসরি জানতে চান তারা কষ্ট করে নিচের সাইটগুলোতে যাবেন –
এছাড়া অনুসরণ করুন শাইখুল হাদিস আবু ইমরান, শাইখ তামিম আল আদনানি, শাইখ শরিফুল আলম, উস্তাদ আহমেদ নাবিল, উস্তাদ আবু আনওয়ার আল হিন্দি এর আলোচনা। আল্লাহ তাঁদের সকলকে হেফাজত করুন। অনুসরণ করুন আন-নাসর, আল হিকমাহ এবং আল-ফিরদাউস মিডিয়ার রিলিজগুলো।
।
এই পুরো আলোচনা আমি একজন পর্যবেক্ষণকারী হিসাবে উপস্থাপন করছি। আমি নিজেকে আল-কায়েদার কোন সদস্য বলে দাবি করছি না। আমার এই বক্তব্যকে অফিশিয়াল বক্তব্য বলছি না। আমি কেবল মাত্র পাবলিক সোর্স থেকে সুনিশ্চিতভাবে যে তথ্যসমূহ জ্ঞাত তার ভিত্তিতে উপরের কথাগুলো বলেছি। পাঠক যাচাই করে দেখবেন এবং সঠিক প্রমান পেলে গ্রহণ করবেন। সকল প্রশংসা এক আল্লাহরই।
collected
Comment