ইস্যুময় জীবন : ধ্বংসাত্মক একটি ফাঁদ
ইস্যুময় জীবন মূলত একটি ফাঁদ, যা মানুষের প্রকৃত লক্ষ্য ভুলিয়ে তাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। ইস্যুর ফাঁদে কেউ একবার আটকা পড়লে সেখান থেকে বের হওয়াটা বড়ই কঠিন। বস্তুত মানুষ নিজের ভালো-মন্দ বুঝার চেয়ে অন্যের কর্ম দ্বারা প্রভাবিত হতেই বেশি পছন্দ করে। এজন্যই বিভিন্ন ইস্যুতে দেখা যায়, যে বিষয়ে তার কথা বলার যোগ্যতা নেই, সে বিষয়ে সে বিজ্ঞজনোচিত মন্তব্য করে বসে; যদিও সেটা তার মুর্খতা বৈ আর কিছুই নয়। এগুলো বেশিরভাগ সময়ই ক্রিয়া হিসেবে নয়; বরং প্রতিক্রিয়া হিসেবে হয়ে থাকে। কেউ চরম অন্ধভক্তির বশে, আবার কেউবা মাত্রাতিরিক্ত বিরোধিতার বেশে। উভয়টিই প্রান্তিকতা। ইসলাম এ ধরনের প্রান্তিকতা পরিহার করে চলতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু মানুষ ইসলামের পরিবর্তে নিজের নফসকেই বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এজন্যই বিভিন্ন ইস্যুতে ভারসাম্যপূর্ণ আচরণের পরিবর্তে ফিতনা-ফাসাদই বেশি চোখে পড়ে।
নীরবতা যে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আমল, সে কথা মানুষ বেমালুম ভুলে গেছে। সকল বিষয়ে কথা বলাটাই এখন মানুষের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসার আগে এ রোগের প্রকোপ অনেক কম থাকলেও বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে (!) তা একপ্রকার মহামারীর আকার ধারণ করেছে। সবজান্তা প্রবণতাই হলো এ রোগের মূল কারণ। আর তাই যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে কথা বলাটা এখন ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে। কে বলছে, কী বলছে, কার পক্ষে বলছে, কার বিরুদ্ধে বলছে, এসব ব্যাপারে সম্যক খোঁজ না নিয়েই মানুষ নেমে পড়ে অন্ধ পক্ষপাতিত্ব ও চরম বিরোধিতায়। নিজ মাসলাকের হলে সর্বদোষ মাফ, আর ভিন্ন মাসলাকের হলে সবই খারাপ—এমন জঘন্য মানসিকতা আজ সর্বত্র বিরাজমান। আর তাই বিভিন্ন ইস্যুতে সত্য ও বাস্তবতা জানার চাইতে অধিকাংশ মানুষের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় কে জিতবে, আর কে হারবে।
এজন্য অনলাইনে যেকোনো ইস্যু আসলে আমাদের করণীয় হলো, প্রথমেই কোনো মন্তব্য না করা এবং যথাসম্ভব নীরবতা অবলম্বন করে পুরো বিষয়টি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। মোটকথা, ঘটনাটির ভালো-মন্দ দিকগুলো জানা এবং সেটার শারয়ি দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করা। সত্য জানার ইচ্ছায় পক্ষ-বিপক্ষ সবার লেখা পড়া। এরপর ভালোভাবে চিন্তা করে, আল্লাহ তাআলার দিকে মনোনিবেশ করে এবং সম্ভব হলে যোগ্য এক বা একাধিক রাব্বানি আলিমের সাথে আলোচনা করে কোনো একটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া। সাধারণভাবে একজন মানুষের জন্য এতটুকু করাই যথেষ্ট। অতঃপর নিজে যোগ্য আলিম ও অনুসরণীয় কেউ হলে ইখতিলাফের আদব পুরোপুরি বজায় রেখে বিষয়টি নিয়ে দালিলিক আলোচনা করা কিংবা বড় ধরনের ক্ষতি বা ফিতনার আশঙ্কা থাকলে নীরব থাকা—উভয়টিরই সুযোগ আছে। অবস্থা বুঝে যেকোনোটি অবলম্বন করা যায়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, ইসলামের মৌলিক বিষয়ে ভালোভাবে ইলম অর্জন না করে এসব ইস্যুর পেছনে পড়ে থাকা একটি ফিতনা। বিশেষত বিভিন্নভাবে মুসলিমদের একদলকে অপর দলের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করা, দলিলহীনভাবে কারও নিয়তের ওপর আক্রমণ করা, অন্যায়ভাবে কাউকে মন্দ ট্যাগ বা উপাধি দেওয়া, পক্ষপাতিত্ব করতে গিয়ে অন্যায়কে সমর্থন করা, বিরোধিতা করতে গিয়ে সীমালঙ্ঘন করা—এগুলো সবই ইসলামে নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেকে আছে, যারা দ্বীনের মৌলিক বিষয়ের জ্ঞান না রাখলেও এসব নিয়ে মাতামাতি করতে খুব পছন্দ করে। দ্বীনের ক্ষতিকে দ্বীন মনে করে সওয়াবের প্রত্যাশা করে। এটা ঠিক নয়। এমন প্রবণতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। ইস্যুর ফাঁদ থেকে বের হয়ে আমাদের প্রকৃত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সকল প্রকারের ফিতনা ও সীমালঙ্ঘন থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন।
ইস্যুময় জীবন মূলত একটি ফাঁদ, যা মানুষের প্রকৃত লক্ষ্য ভুলিয়ে তাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। ইস্যুর ফাঁদে কেউ একবার আটকা পড়লে সেখান থেকে বের হওয়াটা বড়ই কঠিন। বস্তুত মানুষ নিজের ভালো-মন্দ বুঝার চেয়ে অন্যের কর্ম দ্বারা প্রভাবিত হতেই বেশি পছন্দ করে। এজন্যই বিভিন্ন ইস্যুতে দেখা যায়, যে বিষয়ে তার কথা বলার যোগ্যতা নেই, সে বিষয়ে সে বিজ্ঞজনোচিত মন্তব্য করে বসে; যদিও সেটা তার মুর্খতা বৈ আর কিছুই নয়। এগুলো বেশিরভাগ সময়ই ক্রিয়া হিসেবে নয়; বরং প্রতিক্রিয়া হিসেবে হয়ে থাকে। কেউ চরম অন্ধভক্তির বশে, আবার কেউবা মাত্রাতিরিক্ত বিরোধিতার বেশে। উভয়টিই প্রান্তিকতা। ইসলাম এ ধরনের প্রান্তিকতা পরিহার করে চলতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু মানুষ ইসলামের পরিবর্তে নিজের নফসকেই বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এজন্যই বিভিন্ন ইস্যুতে ভারসাম্যপূর্ণ আচরণের পরিবর্তে ফিতনা-ফাসাদই বেশি চোখে পড়ে।
নীরবতা যে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আমল, সে কথা মানুষ বেমালুম ভুলে গেছে। সকল বিষয়ে কথা বলাটাই এখন মানুষের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসার আগে এ রোগের প্রকোপ অনেক কম থাকলেও বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে (!) তা একপ্রকার মহামারীর আকার ধারণ করেছে। সবজান্তা প্রবণতাই হলো এ রোগের মূল কারণ। আর তাই যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে কথা বলাটা এখন ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে। কে বলছে, কী বলছে, কার পক্ষে বলছে, কার বিরুদ্ধে বলছে, এসব ব্যাপারে সম্যক খোঁজ না নিয়েই মানুষ নেমে পড়ে অন্ধ পক্ষপাতিত্ব ও চরম বিরোধিতায়। নিজ মাসলাকের হলে সর্বদোষ মাফ, আর ভিন্ন মাসলাকের হলে সবই খারাপ—এমন জঘন্য মানসিকতা আজ সর্বত্র বিরাজমান। আর তাই বিভিন্ন ইস্যুতে সত্য ও বাস্তবতা জানার চাইতে অধিকাংশ মানুষের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় কে জিতবে, আর কে হারবে।
এজন্য অনলাইনে যেকোনো ইস্যু আসলে আমাদের করণীয় হলো, প্রথমেই কোনো মন্তব্য না করা এবং যথাসম্ভব নীরবতা অবলম্বন করে পুরো বিষয়টি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। মোটকথা, ঘটনাটির ভালো-মন্দ দিকগুলো জানা এবং সেটার শারয়ি দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করা। সত্য জানার ইচ্ছায় পক্ষ-বিপক্ষ সবার লেখা পড়া। এরপর ভালোভাবে চিন্তা করে, আল্লাহ তাআলার দিকে মনোনিবেশ করে এবং সম্ভব হলে যোগ্য এক বা একাধিক রাব্বানি আলিমের সাথে আলোচনা করে কোনো একটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া। সাধারণভাবে একজন মানুষের জন্য এতটুকু করাই যথেষ্ট। অতঃপর নিজে যোগ্য আলিম ও অনুসরণীয় কেউ হলে ইখতিলাফের আদব পুরোপুরি বজায় রেখে বিষয়টি নিয়ে দালিলিক আলোচনা করা কিংবা বড় ধরনের ক্ষতি বা ফিতনার আশঙ্কা থাকলে নীরব থাকা—উভয়টিরই সুযোগ আছে। অবস্থা বুঝে যেকোনোটি অবলম্বন করা যায়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, ইসলামের মৌলিক বিষয়ে ভালোভাবে ইলম অর্জন না করে এসব ইস্যুর পেছনে পড়ে থাকা একটি ফিতনা। বিশেষত বিভিন্নভাবে মুসলিমদের একদলকে অপর দলের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করা, দলিলহীনভাবে কারও নিয়তের ওপর আক্রমণ করা, অন্যায়ভাবে কাউকে মন্দ ট্যাগ বা উপাধি দেওয়া, পক্ষপাতিত্ব করতে গিয়ে অন্যায়কে সমর্থন করা, বিরোধিতা করতে গিয়ে সীমালঙ্ঘন করা—এগুলো সবই ইসলামে নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেকে আছে, যারা দ্বীনের মৌলিক বিষয়ের জ্ঞান না রাখলেও এসব নিয়ে মাতামাতি করতে খুব পছন্দ করে। দ্বীনের ক্ষতিকে দ্বীন মনে করে সওয়াবের প্রত্যাশা করে। এটা ঠিক নয়। এমন প্রবণতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। ইস্যুর ফাঁদ থেকে বের হয়ে আমাদের প্রকৃত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সকল প্রকারের ফিতনা ও সীমালঙ্ঘন থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন।
Comment