আলকায়েদা-আইএস: ঐক্য সম্ভব কি?
=====
=====
গত কয়েক দিন ধরে ফোরামে এক কমেন্টে আলকায়েদা আইএস নিয়ে কথা উঠেছে।
এক ভাই তামান্না জাহির করেছেন যে, আলকায়েদা আইএসের মাঝে সমঝোতা হয়ে উভয়ে এক প্লাটফর্মে চলে আসলে ভাল হতো। এতেই উম্মাহর খায়র।
মুহতারাম ভাইয়ের তামান্না অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। গোটা উম্মাহ এক প্লাটফর্মে এসে গেলেই তো ভাল হয়। এটাই তো খাঁটি মুমিনের আকাঙ্খা। তবে এখানে কিছু কথা আছে।
# উম্মাহর দ্বন্দ্ব থেকেই যাবে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন, উম্মাহ তিয়াত্তর দলে ভাগ হয়ে পড়বে। এক দল জান্নাতি। বাকিরা জাহান্নামি। হযরত উসমান রাদি.কে শহীদ করার ঘটনা কেন্দ্র করে উম্মাহর বিভক্তি শুরু। কিয়ামত পর্যন্ত উম্মাহর আর কখনও এক হতে পারবে না। দ্বন্দ্ব থেকেই যাবে। এটিই আল্লাহ তাআলার ফায়সালা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
سألت ربى ثلاثا فأعطانى ثنتين ومنعنى واحدة سألت ربى أن لا يهلك أمتى بالسنة فأعطانيها وسألته أن لا يهلك أمتى بالغرق فأعطانيها وسألته أن لا يجعل بأسهم بينهم فمنعنيها. -صحيح مسلم : 7442
(আমার উম্মতের ব্যাপারে) আল্লাহ তাআলার কাছে তিনটি আবেদন করেছিলাম। আল্লাহ তাআলা দু’টি কবুল করেছেন, একটি ফিরিয়ে দিয়েছেন। ১. আবেদন করেছিলাম যেন (পূর্বেকার উম্মতদের মতো) ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দিয়ে উম্মতকে ধ্বংস না করেন। এটি কবুল করেছেন। ২. আবেদন করেছিলাম যেন পানিতে ডুবিয়ে উম্মতকে (সমূলে) ধ্বংস না করেন। এটিও কবুল করেছেন। ৩. আবেদন করেছিলাম উম্মত যেন নিজেরা মারামারি না করে। এটি তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। -সহীহ মুসলিম: ৭৪৪২
(আমার উম্মতের ব্যাপারে) আল্লাহ তাআলার কাছে তিনটি আবেদন করেছিলাম। আল্লাহ তাআলা দু’টি কবুল করেছেন, একটি ফিরিয়ে দিয়েছেন। ১. আবেদন করেছিলাম যেন (পূর্বেকার উম্মতদের মতো) ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দিয়ে উম্মতকে ধ্বংস না করেন। এটি কবুল করেছেন। ২. আবেদন করেছিলাম যেন পানিতে ডুবিয়ে উম্মতকে (সমূলে) ধ্বংস না করেন। এটিও কবুল করেছেন। ৩. আবেদন করেছিলাম উম্মত যেন নিজেরা মারামারি না করে। এটি তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। -সহীহ মুসলিম: ৭৪৪২
অন্য হাদিসে ইরশাদ করেন,
فَإِذَا وُضِعَ السَّيْفُ فِي أُمَّتِي لَمْ يُرْفَعْ عَنْهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ. مسند أحمد: 17115، قال المحققون: حديث صحيح. اهـ
আমার উম্মতের মাঝে যখন একবার তরবারি জারি হবে, কিয়াম পর্যন্ত আর বন্ধ হবে না। -মুসনাদে আহমাদ: ১৭১১৫
আমার উম্মতের মাঝে যখন একবার তরবারি জারি হবে, কিয়াম পর্যন্ত আর বন্ধ হবে না। -মুসনাদে আহমাদ: ১৭১১৫
উসমান রাদি.কে শহীদ করার মধ্য দিয়ে তরবারি জারি হয়ে গেছে। তা চলবেই কিয়ামত পর্যন্ত।
অতএব, মুসলিম উম্মাহর নিজেদের মাঝেই হক বাতিলের দ্বন্দ্ব থাকবে। নিজেরা পরস্পর মারামারি করবে। একেবারে সম্পূর্ণ বিভেদ কখনও উঠে যাবে না। এটি আল্লাহ তাআলার চিরন্তন ফায়সালা।
অন্য হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
وإن ربى قال يا محمد إنى إذا قضيت قضاء فإنه لا يرد وإنى أعطيتك لأمتك أن لا أهلكهم بسنة بعامة وأن لا أسلط عليهم عدوا من سوى أنفسهم يستبيح بيضتهم ولو اجتمع عليهم من بأقطارها - أو قال من بين أقطارها - حتى يكون بعضهم يهلك بعضا ويسبى بعضهم بعضا. -صحيح مسلم للنيسابوري: 7440
আর আমার রব আমাকে বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! আমি যখন কোনো ফায়সালা দিয়ে দিই তা আর কিছুতেই ঘুরানো হয় না। আপনার আবেদনের আমি এই সিদ্ধান্ত দিয়েছি যে, ১. ব্যাপক দু্র্ভিক্ষ দিয়েও আপনার উম্মতকে ধ্বংস করবো না; ২. ভিন জাতি কোনো শত্রুও তাদের উপর এমনভাবে চাপিয়ে দেবো না যে, তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দেবে। গোটা বিশ্বের সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসলেও না। ৩. তবে অবশেষে তারা নিজেরাই একে অপরকে ধ্বংস করবে এবং একে অপরকে বন্দী করবে। -সহীহ মুসলিম: ৭৪৪০
আর আমার রব আমাকে বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! আমি যখন কোনো ফায়সালা দিয়ে দিই তা আর কিছুতেই ঘুরানো হয় না। আপনার আবেদনের আমি এই সিদ্ধান্ত দিয়েছি যে, ১. ব্যাপক দু্র্ভিক্ষ দিয়েও আপনার উম্মতকে ধ্বংস করবো না; ২. ভিন জাতি কোনো শত্রুও তাদের উপর এমনভাবে চাপিয়ে দেবো না যে, তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দেবে। গোটা বিশ্বের সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসলেও না। ৩. তবে অবশেষে তারা নিজেরাই একে অপরকে ধ্বংস করবে এবং একে অপরকে বন্দী করবে। -সহীহ মুসলিম: ৭৪৪০
# খাওয়ারেজদের ব্যাপারে সুন্নাহর নির্দেশনা
সার্বিকভাবে আল্লাহ তাআলার ফায়াসালা এটাই যে, উম্মাহর মাঝে বিভক্তি, বিভেদ ও পরস্পর মারামারি থাকবে। বিশেষ করে চরমপন্থী খারেজিদের ব্যাপারে সুন্নাহয় বিশেষ নির্দেশনা এসেছে। এখানে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করছি,
এক.
عن علي رضي الله عنه، قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «سيخرج في آخر الزمان قوم أحداث الأسنان، سفهاء الأحلام، يقولون من خير قول البرية، يقرءون القرآن لا يجاوز حناجرهم، يمرقون من الدين كما يمرق السهم من الرمية، فأينما لقيتموهم فاقتلوهم، فإن في قتلهم أجرا، لمن قتلهم عند الله يوم القيامة». -صحيح البخاري: 6930
আলী রাযি. বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, শেষ যামানায় এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে যারা হবে অল্পবয়স্ক যুবক, নির্বোধ। তারা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ কিছু কথাবার্তা বলবে। তারা কুরআন পাঠ করবে; কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালীর নিচে প্রবেশ করবে না (অর্থাৎ যথাযথ বুঝবে না)। তীর শিকারের দেহ ভেদ করে যেমন বের হয়ে যায় তেমনই তারা দ্বীন থেকে। তাদেরকে যেখানেই তোমরা পাবে হত্যা করবে। তাদেরকে হত্যা করলে হত্যাকারীর জন্য কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়ালার নিকট মহা প্রতিদান রয়েছে। -সহিহ বুখারী: ৬৯৩০ দুই.
ألا إنه سيخرج من أمتي أقوام أشداء أحداء، ذلقة ألسنتهم بالقرآن، لا يجاوز تراقيهم، ألا فإذا رأيتموهم فأنيموهم، ثم إذا رأيتموهم فأنيموهم، فالمأجور قاتلهم -مسند أحمد: 20446؛ قال المحققون: إسناده قوي على شرط مسلم. اهـ
শোনে রাখো! অচিরেই আমার উম্মতে এমন কতক লোক বের হবে যারা হবে কঠোর প্রকৃতির। যবান হবে ধারালো। যবানে কুরআনের অনল বর্ষাবে, কিন্তু কুরআন তাদের গলদেশ পেরিয়ে নিচে নামবে না। শোনো! যখন তাদের পাবে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। আবারও যদি পাও আবারও নিশ্চিহ্ন করে দেবে। তাদের হত্যাকারীরাই পাবে প্রতিদান। –মুসনাদে আহমাদ: ২০৪৪৬তিন.
لو يعلم الجيش الذين يصيبونهم ما قضي لهم على لسان نبيهم -صلى الله عليه وسلم- لاتكلوا عن العمل. –صحيح مسلم: 2516
যে বাহিনী তাদের মোকাবেলা করবে তারা যদি জানতো তাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যবানিতে তাদের জন্য যে কি প্রতিদানের ফায়সালা করে রাখা হয়েছে, তাহলে তারা এর উপর ভরসা করে অন্য সকল আমল ছেড়ে দিয়ে বসতো। -সহীহ মুসলিম: ২৫১৬চার.
لئن أنا أدركتهم لأقتلنهم قتل عاد. -صحيح البخاري: 3166
যদি আমি তাদের পেয়ে যাই, আদ জাতির মতো (সমূলে) হত্যা করবো। -সহীহ বুখারি: ৩১৬৬ইমাম নববি রহ. (৬৭৬হি.) বলেন,
"لئن أدركتهم لأقتلنهم قتل عاد" أي قتلاً عاماً مستأصلاً كما قال تعالى: {فهل ترى لهم من باقية} وفيه الحث على قتالهم. –شرح مسلم للنووي: 13\175
‘যদি আমি তাদের পেয়ে যাই, আদ জাতির মতো হত্যা করবো’ অর্থাৎ ব্যাপকভাবে হত্যা করে সমূলে উৎপাটন করবো। যেমন আল্লাহ তাআলা (আদ জাতির ব্যাপারে) বলেছেন, ‘তাদের একজনও কি আল্লাহর এই গজব থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে দেখতে পাচ্ছেন?’ এ হাদিসে এদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। -শরহে মুসলিম: ১৩/১৭৫
‘যদি আমি তাদের পেয়ে যাই, আদ জাতির মতো হত্যা করবো’ অর্থাৎ ব্যাপকভাবে হত্যা করে সমূলে উৎপাটন করবো। যেমন আল্লাহ তাআলা (আদ জাতির ব্যাপারে) বলেছেন, ‘তাদের একজনও কি আল্লাহর এই গজব থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে দেখতে পাচ্ছেন?’ এ হাদিসে এদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। -শরহে মুসলিম: ১৩/১৭৫
# খাওয়ারেজদের সমূলে নিঃশেষ করতে উৎসাহ দেয়া হল কেন?
আমরা দেখলাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খারেজি শ্রেণীর উদ্ভব হবে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। তাদের ব্যাপারে যুদ্ধ করার উৎসাহ দিয়ে গেছেন। এমনকি একেবারে আদ-সামুদের মতো সমূলে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বলে গেছেন। কেন?
অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি ইয়াহুদ নাসারাসহ সকল কাফেরের ব্যাপারে শরীয়ত বলেছে, যদি তারা তাওবা করে মুসলিম হয়ে যায় বা জিযিয়া কবুল করতে রাজি হয় তাহলে আর যুদ্ধ করা হবে না? যেখানে ইয়াহুদ নাসারা ও মুশরিকদের বিরুদ্ধে শরীয়ত এত কঠোর ফায়সালা দেয়নি সেখানে খারেজিদের ব্যাপারে কেন এত কঠিন ফায়সালা? অথচ তারা তো আমাদেরই ভাই। যেমনটা আলী রাদি. বলেছেন,
إخواننا بغوا علينا.
আমাদের ভাইয়েরা আমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ৩৮৯১৮
আমাদের ভাইয়েরা আমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ৩৮৯১৮
হাফেয ইবনে হাজার রহ. (৮৫২হি.) এর হিকমত উল্লেখ করে বলেন,
قال بن هبيرة وفي الحديث أن قتال الخوارج أولى من قتال المشركين والحكمة فيه أن في قتالهم حفظ راس مال الإسلام وفي قتال أهل الشرك طلب الربح وحفظ رأس المال أولى. –فتح الباري: 12\301
ইবনে হুবায়রা রহ. বলেন, এ হাদিস প্রমাণ যে, খাওয়ারেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মুশরেকদের বিরুদ্ধে (আক্রমণাত্মক) যুদ্ধ করার চেয়ে অগ্রগণ্য। এর হিকমত এই যে, এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দ্বারা ইসলামের মূলধন হেফাজত হবে, আর মুশরেকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয় লাভ অর্জনের উদ্দেশ্যে। মূলধন হেফাজত করা অগ্রাধিকারযোগ্য। -ফাতহুল বারি: ১২/৩০১
খারেজিদের বিরুদ্ধে কঠোরতার মৌলিক কারণ বলা যায়,
ক. এরা ঘরের শত্রু। আগে ঘর ঠিক করা জরুরী। নয়ত যেকোনো সময় সুযোগ বুঝে এরা সর্বনাশ করবে।
খ. খারেজিরা আমাদের মুরতাদ মনে করে আর কাফেররা আমাদেরকে আসলি কাফের মনে করে। স্পষ্ট যে, মুরতাদের বিধান কঠিন। এ কারণে বাগে পেলে খারেজিরা আমাদেরকে কখনও ছাড়বে না। কারণ, তাদের আকিদা অনুযায়ী আমরা মুরতাদ। আর মুরতাদকে বাঁচিয়ে রাখা নাজায়েয। পক্ষান্তরে আসলি কাফেরকে জিযিয়া নিয়ে বাঁচিয়ে রাখা যায়। এ কারণে হাদিসে এসেছে, তারা মুশরিকদের ছেড়ে দেবে কিন্তু মুসলিমদের অবশ্যই হত্যা করবে।
এ দু’টি দিক বিবেচনা করলে খারেজিরা কাফেরদের চেয়েও বেশি ভয়ংকর, যদিও তারা আমাদের ভাই। এ কারণে এদেরকে সমূলে ধ্বংস করতে বলা হয়েছে হাদিসে।
# ঐক্য কখন সম্ভব?
ঐক্য তখনই সম্ভব যখন আপনি আমার ব্যাপারে আশ্বস্ত, আমিও আপনার ব্যাপারে আশ্বস্ত। কিন্তু যখন জানা আছে, সুযোগ পেলেই আপনি আমাকে হত্যা করবেন, তখন কি ঐক্য সম্ভব?
তাহলে খারেজিদের সাথে কিভাবে ঐক্য সম্ভব? তাদের সাথে ঐক্য করবো আর তারা বাগে পেয়ে ধরে ধরে আমাদের হত্যা করবে। আমরা দেখেছি, শামে যখন মুজাহিদরা নুসাইরিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেছেন, আইএসে এসে পিছন দিয়ে মুজাহিদদের উপর হামলা করেছে। এদের না সামলে আপনি কিভাবে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন?
কাজেই আইএস আলকায়েদা ঐক্য বিবেকও সমর্থন করে না। বিশেষ ক্ষেত্রে চুক্তি-সমঝোতা করা গেলেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাওয়া কিছুতেই সম্ভব না।
# খারেজিদের সাথে ঐক্যের ইতিহাস আছে কি?
যেদিন থেকে খারেজিদের উৎপত্তি, গোটা ইসলামি ইতিহাসের সকল খলিফা ও সুলতান (আদেল হোন আর জালেম হোন) খারেজিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেছেন। নিরুপায় হয়ে আফ্রিকার মুসলিমরা একবার এদের সাথে মিলে বাতিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিলেন। শেষে সুযোগ মতো এরা আহলুস সুন্নাহকে কাফেরদের হাতে ছেড়ে চলে গেছে। কাফেররা আহলুস সুন্নাহর আলেমদের পাইকারি হত্যা করেছে। ইতিহাস খুলে দেখুন। এদের সাথে ঐক্যের পরিণতি এর চেয়ে ভাল কিছু হবে না।
# আলী রাদি. ও মুআবিয়া রাদি. প্রসঙ্গ
ভাই আলী রাদি. ও মুআবিয়া রাদি. এর প্রসঙ্গ এনেছেন। মুহতারাম ভাই, পক্ষ সেখানে তিনটি ছিল: ১. আলী রাদি.; ২. মুআবিয়া রাদি.; ৩. হারুরিয়া তথা খারিজিরা।
মুআবিয়া রাদি.র বিরুদ্ধে আলী রাদি. যুদ্ধ করেছেন; তবে আগ্রহভরে নয়। নাখোশ দিলে। চেয়েছেন কোনোভাবে সমঝোতা হয় কি’না। পক্ষান্তরে খারিজিরা ছিল আলী রাদি. এর দলে। এরা যখন দল ত্যাগ করলো, আলী রাদি. বড় উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আগ্রহের সাথে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। এমনভাবে হত্যা করেছেন যে, এদের দশটা লোকও বাঁচতে পারেনি।
মুআবিয়া রাদি. ইজতিহাদি ভুল করে আলী রাদি.র বিরুদ্ধে গেছেন। তারা কেউ কাউকে তাকফির করতেন না। পক্ষান্তরে খারিজিরা উভয়কে তাকফির করতো। এরা ভয়ংকর সাপের চেয়েও ভয়ংকর। এজন্য আলী রাদি. এদের দশটা লোককেও বাঁচতে দেননি। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, যে কয়টা খারেজি বাঁচতে পেরেছিল, একেকটা ফিতনার বীজরূপে কাজ করেছে।
শাহরিসতানি রহ. (৫৪৮হি.) বলেন,
فقاتلهم علي رضي الله عنه بالنهروان مقاتلة شديدة، فما انفلت منهم إلا أقل من عشرة، وما قتل من المسلمين إلا أقل من عشرة، فانهزم اثنان منهم إلى عمان، واثنان إلى كرمان، واثنان إلى سجستان، واثنان إلى الجزيرة، وواحد إلى تل مورون باليمن، وظهرت بدع الخوارج في هذه المواضع منهم وبقيت إلى اليوم. –الملل والنحل، ج: 1، ص: 117، مؤسسة الحلبي
নাহরাওয়ানে তাদের সাথে আলী রাদি.-র ভয়ানক যুদ্ধ হয়। তাদের দশটা লোকও বাঁচতে পারেনি আর মুসলমানদের দশটা লোকও শহীদ হয়নি। এরপর তাদের দু’জন পালিয়ে যায় উম্মানে, দু’জন কারমানে, দু’জন সিজিস্তানে, দু’জন জাযিরায় এবং একজন ইয়ামানে। এদের থেকে ঐসব অঞ্চলে খাওয়ারেজদের বিদআত ছড়িয়েছে এবং আজ পর্যন্ত জারি আছে।” –আলমিলাল ওয়াননিহাল: ১/১১৭
নাহরাওয়ানে তাদের সাথে আলী রাদি.-র ভয়ানক যুদ্ধ হয়। তাদের দশটা লোকও বাঁচতে পারেনি আর মুসলমানদের দশটা লোকও শহীদ হয়নি। এরপর তাদের দু’জন পালিয়ে যায় উম্মানে, দু’জন কারমানে, দু’জন সিজিস্তানে, দু’জন জাযিরায় এবং একজন ইয়ামানে। এদের থেকে ঐসব অঞ্চলে খাওয়ারেজদের বিদআত ছড়িয়েছে এবং আজ পর্যন্ত জারি আছে।” –আলমিলাল ওয়াননিহাল: ১/১১৭
এ হল খারিজি। যেখানে যাবে ফিতনার চারা গজাবে। এরা সাধারণ বাগি নয়। সাধারণ ফাসেকও নয়। এমনকি ডাকাতও নয়। এরা আরও ভয়ংকর। এদের সাথে ঐক্য মানে নিজের কবর রচনা। বুদ্ধিমান কখনও এ ভুল করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা উম্মাহকে সকল ধরনের ফিতনা থেকে রক্ষা করুন। আমীন।
***
আবেদন
মুহতারাম ভাইয়েরা, কাউকে কষ্ট দেয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। হক, যা না বলে উপায় নেই তাই বলতে বাধ্য। কারও কাছে কোনো বিষয় অযৌক্তিক মনে হলে দলীলভিত্তিক সমালোচনার দাবি। অহেতুক ভুল ধরাধরি থেকে বেঁচে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
***
Comment