(বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ও সরকারী পাঠ্যবই। তুমুল ইসলাম বিদ্বেষের অপর এক নাম। এই সিরিজের প্রতিটি পর্বে শিক্ষা কারিকুলাম ও সরকারী পাঠ্যবইগুলোর বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গতানুগতিক আলোচনার বাইরে গিয়ে বইগুলোর সঠিক-ভুল তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। সবাই যেভাবে লেখে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। শুধু নির্দিষ্ট কয়েকটি ইস্যু নিয়েই লেখা হয়নি। বরং বইয়ের যেই যেই বিষয়ই ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে সব বিষয়েই লেখা হচ্ছে। আল্লাহই একমাত্র তাওফীকদাতা। প্রিয় পাঠক! আপনার সার্বিক সহায়তা কামনা করি। সকলে যার যার স্থান থেকে সিরিজটিকে বেশি বেশি প্রচার করার চেষ্টা করি। হিন্দুত্ববাদের ভয়াবহ হুমকির মোকাবেলায় তাওহীদের সুমহান বাণী ছড়িয়ে দেই; বাংলার আনাচে কানাচে!)
প্রিয় পাঠক! বাংলা বই থেকে আগে একটু ঘুরে আসি। গোরু না গরু? এবিতর্কে না-ই গেলাম। তবে বাংলা একাডেমি যে আসলে এদেশে বাঙালিয়ানার নামে হিন্দুত্ববাদের প্রচার করছে তা আমরা সবাইই কমবেশ জানি। এখন আমাদের কর্তব্য হলো, এই হিন্দুত্ববাদীদেরকে এদেশ থেকে হটিয়ে রাষ্ট্রে সঠিক ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা। এটা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব!
২য় শ্রেণীর বাংলা বইয়ের ০৮-১২ পৃষ্ঠায় আছে ডালিম কুমার কঙ্কাবতী নামে আজিব এক রূপকথা । সাথে আছে রাক্ষস নামের রূপকথার আরেক প্রাণী। রাক্ষস একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। আর এক রাজকুমার গিয়ে তাকে উদ্ধার করে আনে । রাজকুমার সাত সাগর তের নদী পাড়ি দেয়। তারপর সেই মেয়েটিকে নিয়ে ফিরে আসে। রাক্ষসের প্রাণ থাকে একটা কৌটার ভেতর। সেখানে থাকে একটা ভোঁমর । ভোঁমরটিকে মেরে ফেললে রাক্ষস মারা যায়।
এমন আজগুবি কাহিনীও কি পাঠ্যবইতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া খুব প্রয়োজন ছিল? ইসলামের ইতিহাসের কত চমৎকার স্পর্শকাতর টান টান উত্তেজনায় ভরপুর, ঈমান জাগানিয়া শিশুদের জন্য চমকপ্রদ কতো শতো ঘটনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের শিশুদেরকে কি সেগুলো পড়ানো যায় না? পাঠ্যবইয়ে কি সেই ঈমান জাগানিয়া ঘটনাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যায় না? আমরা কি মুসলিম নই? আমরা রাসূলুল্লাহর উম্মত নই? আমরা কি সাহাবাদের অনুসারী নই? আমাদের বুকে কি ঈমান নেই? তাহলে কেন আমরা সেই ঈমানওয়ালাদেরকেই আমাদের অনুসৃত বানাচ্ছি না? কেন আমরা রাসূলুল্লাহর আদর্শেই নিজেদের জীবন গড়ছি না? আমরা কি আল্লাহর সামনে দাঁড়াব না? সেদিন কী জবাব দেব আমরা?
এবার আসি গণিত বইতে। ২য় শ্রেণীর গণিত বইয়ের শুরুতেও কয়েক পৃষ্ঠায় দেখানো হয়েছে, ছেলে এবং মেয়ে জোড়ায় জোড়ায় বসে বসে খেলছে। শুধু ছেলে - ছেলেও খেলছে না। এবং শুধু মেয়ে মেয়েও খেলছে না। বরং প্রত্যেকেই খেলছে তার বিপরীত লিঙ্গের সাথে । তারপর দেখানো হচ্ছে, দুজন শিক্ষার্থী রাস্তায় জেব্রাক্রসিং পার হচ্ছে। সেখানেও সেই দুইজনের একজন ছেলে এবং অপরজন হলো মেয়ে! এই হলো বইয়ের শুরুর দিকের কিছু দৃশ্য। আমরা আরেকটু সামনে যাই। হায়, সামনে এটা কি দেখলাম! পুরো বইয়ে শিক্ষার্থীদেরকে গণিতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কিছু আলোচনা করা হয়েছে। সেখানেও ছেলে এবং মেয়ে! জোড়ায় জোড়ায়। ছেলেটি বিভিন্ন প্রশ্ন করছে এবং মেয়েটি উত্তর দিচ্ছে।
আসলে সহশিক্ষা জিনিসটা কখনোই ভালো ছিল না। এখনোও ভালো না। এটা গর্হিত একটা কাজ। এটা খারাপ কাজ। এটা হারাম কাজ। এটা বর্জনীয়। এটা নোংরা। কিন্তু আগের সাথে এখনকার পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, আগে খারাপ সহশিক্ষাকে খারাপই মনে করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সেটাকে আধুনিকতা মনে করা হয়। আমরা দেখেছি, ইসলামের বিপরীতের সব আধুনিকতাই মূলত সত্যিকার অর্থে দুর্গন্ধযুক্ত পঙ্কিলতা দিয়ে ভরা। সমাজের ৫০% বা তার চেয়েও বেশি যেনা হচ্ছে আজ এই পর্দাহীনতা এবং সহশিক্ষার ভয়ঙ্কর অভিশাপে। সুতরাং হে মুসলিম, সহশিক্ষাকে বয়কট করুন। যে শিক্ষাব্যবস্থা সহশিক্ষাকে প্রমোট করে তাকেও বয়কট করুন। নিজের দ্বীন - ঈমানের স্বার্থেই এটি করুন। সহশিক্ষা সম্পর্কে শরীয়াহর অবস্থান বিস্তারিতভাবে জানতে পড়ুন, "সহশিক্ষার নোংরামি, ভণ্ডামি ও ক্ষতির দিকগুলো নিয়ে এবং আমাদের করণীয় সম্পর্কে প্রমাণ্য প্রবন্ধ - সরকারী পাঠ্যবই ও ইসলাম সিরিজের প্রাসঙ্গিক গবেষণা-প্রবন্ধ ও ফাতওয়া সংকলনঃ- ০১. সহশিক্ষা ও ইসলাম। https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/ফিতনা/196529
গণিত বইগুলোতে মারবেলের হিসাব দেখানো হয়। মারবেল খেলাকে প্রমোট করা হয়। যেমন বইতে এভাবে অঙ্ক আছে; রুমির কাছে ৭৫ টি এবং রাজুর কাছে ৪৯ টি মারবেল আছে। রুমি থেকে রাজুর কয়টি মারবেল বেশি বা কম আছে? বইতে হুবহু এভাবেই লেখা আছে। পাঠকবৃন্দ চাইলে যাচাই করে নিতে পারেন। আমরা পোস্টের শেষে বইটির পিডিএফ সংযুক্ত করে দিয়েছি। চিন্তা করুন, শিক্ষার্থীরা এখান থেকে কী বুঝে নেবে। তারা কি কখনো এটা বুঝবে যে, মারবেল খেলা ভালো না? এবং ছেলে মেয়ে একত্রে খেলা করা যায় না? না, কখনোই তারা এমনটা বুঝবে না। আসলে মূলত শিশুদেরকে এভাবেই ছোটকাল থেকেই অর্থহীন কাজে ও ফ্রী-মিক্সিংয়ে অভ্যস্ত করে গড়ে তোলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
শুধু কি এতটুকুই? আরো কিছু অঙ্ক আপনাদেরকে দেখাই, দেখুন। ক্রিকেট খেলায় বাংলাদেশ জাতীয় দল ১ম ইনিংসে ৪১৫ এবং ২য় ইনিংসে ৩২৭ রান করে । ঐ খেলায় বাংলাদেশ দল দুই ইনিংসে মোট কত রান করে? এই হলো অঙ্ক, এই হলো অঙ্কের নমুনা! এবার আপনারাই বিচার করুন, এখানে আমি কিছু বলব না। এই অঙ্কটি ২য় শ্রেণীর গণিত বইয়ের ৬৩ নম্বর পৃষ্ঠায় আছে। আরেকটু সামনে গিয়ে বইটির ৬৮ নং পৃষ্ঠায় দেখবেন এরকম আরো একটি অঙ্ক আছে। সেখানে বাংলাদেশ দল এবং শ্রীলঙ্কার দলের মাঝে খেলা হচ্ছে। লেখা আছে, একটি ক্রিকেট খেলায় বাংলাদেশ দল ৩৫৮ রান করেছে এবং শ্রীলঙ্কা দল ৩১২ রান করেছে । কোন দল বেশি রান করেছে এবং কত রান বেশি করেছে?
এরপর আরো সামনে গিয়ে দেখুন তারা লিখেছে। কীভাবে ছেলেরা বড় হয়ে ধীরে ধীরে টিম গঠন করবে, তারপর কিভাবে ক্লাব প্রতিষ্ঠা করবে; সেটাও তাদেরকে হাতে কলমে শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেখুন, বইটির ৭১ নং পৃষ্ঠায় লেখা আছে, ক্রিকেট খেলার ব্যাট ও বল কেনার জন্য ৭৫০ টাকা প্রয়োজন। সকল সদস্য মোট ৩৩০ টাকা দেয় । ক্লাবের অনুদান হিসেবে ২৫০ টাকা দেওয়া হলো। তাদের আর কত টাকা প্রয়োজন? এই হলো শিক্ষা আর শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা! ক্রিকেট খেলা খারাপ না। কিন্তু বাজি, লটারি এগুলো হারাম এবং খারাপ। একটি খেলার মাঝে যদি বাজি লটারি এগুলো থাকে, তাহলে সেই খেলাও হারাম হয়ে যায়। আপনি শরীরচর্চার জন্য ক্রিকেট ফুটবল খেলতে পারেন, যদি সেটা কোনো বাজি এবং লটারি ও হারামমুক্ত হয়। কিন্তু এখানে কথা হলো, একটি শিক্ষাব্যবস্থায় ছেলে-মেয়েদেরকে এসব অপ্রাসঙ্গিক পড়া কেন পড়ানো হচ্ছে? নাকি এর পিছনে লুকিয়ে আছে কোনো জটিল-কূটিল ষড়যন্ত্র? আমরা সেটাও দেখব; তবে সামনের পর্বগুলোতে।
পরিশেষে পাঠকদেরকে একটি কথা বলে যাই। অনুরোধ থাকবে আপনারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবেন। আচ্ছা বাচ্চাদের গণিত বইতে অঙ্কগুলো এভাবেও দেওয়া যেতো কিনা, যে রাফি ০২ রাকাত নামায পড়েছে। রাকিবও ০২ রাকাত নামায পড়েছে। তাহলে মোট কয় রাকাত নামায হলো? রাফি আজ ৫০ বার সুবহানাল্লাহ পড়েছে আর রাকিব পড়েছে ৪০ বার। তাহলে রাকিব রাফি থেকে কতটি সুবহানাল্লাহ কম পড়েছে? এবং আরো কতটি সুবহানাল্লাহ পড়লে রাকিব রাফির সমান হতো? পাঠকবৃন্দ! বইতে এভাবে দেওয়া যেতো কিনা? দেওয়া যেতো। কিন্তু আমরা দেখছি, বইগুলোতে এভাবে দেওয়া হচ্ছে না। কেন? ইসলাম বিদ্বেষ? নাকি অন্য কিছু? জানি না। আল্লাহ আমাদেরকে ও আমাদের প্রজন্মকে বেদ্বীনদের সকল ষড়যন্ত্র থেকে হেফাযত করুন। আমিন।
ইয়া রব্বাল আলামিন, আপনার দ্বীনকে যারা মুখের ফুঁৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়, তাদের উপর আমাদের শক্তিশালী করে দিন। এমন প্রচণ্ড আঘাত করার তাওফিক দিন, যেন আগামী হাজার বছর পরও তাদের কোন উত্তরসূরি দুনিয়ার বুকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে লক্ষবার ভাবে।
ধারাবাহিক চলবে......। আপনাদের মতামত জানাবেন। জাযাকুমুল্লাহ।
- একজন নারী বাইক নিয়ে গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মী সাজলে পর্দা কোথায়? শিশুরা এখান থেকে কী বার্তা পাবে?
বিস্তারিত জানতে পড়ুন; সরকারী পাঠ্যবই ও ইসলাম । পর্ব - ০৪
https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/ফিতনা/196457
- তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা বইটিতে খুবই নোংরাভাবে শিশুদেরকে মানবধর্মে দীক্ষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
- বইতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আমাদের মুসলিমদেরকে হিন্দু ও বিজাতীয়দের সাথে ভাই ভাই দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
- ইসলামী শরীয়াহ' মতে হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খৃষ্টান সহ দুনিয়াতে ইসলাম ব্যতিত যত ধর্ম বা মতবাদ আছে সব মিথ্যা হওয়ার কারণে দুনিয়াতে এসব ধর্মের প্রচার প্রচারণাও নিষিদ্ধ।
বিস্তারিত জানতে পড়ুন; সরকারী পাঠ্যবই ও ইসলাম । পর্ব - ০৬
https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/ফিতনা/196761
স্কুলের ২য় শ্রেণীর আমার বাংলা বইয়ের সরকারি পিডিএফ সংস্করণ লিঙ্ক।
https://drive.google.com/file/d/13O6...CxR14RDBS/view
স্কুলের ২য় শ্রেণীর গণিত বইয়ের সরকারি পিডিএফ সংস্করণ লিঙ্ক।
https://drive.google.com/file/d/1mkp...CRGP8HmCR/view
প্রিয় পাঠক! বাংলা বই থেকে আগে একটু ঘুরে আসি। গোরু না গরু? এবিতর্কে না-ই গেলাম। তবে বাংলা একাডেমি যে আসলে এদেশে বাঙালিয়ানার নামে হিন্দুত্ববাদের প্রচার করছে তা আমরা সবাইই কমবেশ জানি। এখন আমাদের কর্তব্য হলো, এই হিন্দুত্ববাদীদেরকে এদেশ থেকে হটিয়ে রাষ্ট্রে সঠিক ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা। এটা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব!
২য় শ্রেণীর বাংলা বইয়ের ০৮-১২ পৃষ্ঠায় আছে ডালিম কুমার কঙ্কাবতী নামে আজিব এক রূপকথা । সাথে আছে রাক্ষস নামের রূপকথার আরেক প্রাণী। রাক্ষস একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। আর এক রাজকুমার গিয়ে তাকে উদ্ধার করে আনে । রাজকুমার সাত সাগর তের নদী পাড়ি দেয়। তারপর সেই মেয়েটিকে নিয়ে ফিরে আসে। রাক্ষসের প্রাণ থাকে একটা কৌটার ভেতর। সেখানে থাকে একটা ভোঁমর । ভোঁমরটিকে মেরে ফেললে রাক্ষস মারা যায়।
এমন আজগুবি কাহিনীও কি পাঠ্যবইতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া খুব প্রয়োজন ছিল? ইসলামের ইতিহাসের কত চমৎকার স্পর্শকাতর টান টান উত্তেজনায় ভরপুর, ঈমান জাগানিয়া শিশুদের জন্য চমকপ্রদ কতো শতো ঘটনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের শিশুদেরকে কি সেগুলো পড়ানো যায় না? পাঠ্যবইয়ে কি সেই ঈমান জাগানিয়া ঘটনাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যায় না? আমরা কি মুসলিম নই? আমরা রাসূলুল্লাহর উম্মত নই? আমরা কি সাহাবাদের অনুসারী নই? আমাদের বুকে কি ঈমান নেই? তাহলে কেন আমরা সেই ঈমানওয়ালাদেরকেই আমাদের অনুসৃত বানাচ্ছি না? কেন আমরা রাসূলুল্লাহর আদর্শেই নিজেদের জীবন গড়ছি না? আমরা কি আল্লাহর সামনে দাঁড়াব না? সেদিন কী জবাব দেব আমরা?
মুসলিম দেশ। মুসলমানের দেশ। শিক্ষক মুসলিম, শিক্ষার্থীরাও মুসলমান। কিন্তু পাঠ্যবই এমন অনৈসলামিক কেন? এই পাঠ্যবই এবং এই সিলেবাসগুলো প্রস্তুত করার সময় মুসলিমদের কোনো ধর্মীয় অভিজ্ঞ আলেম ব্যক্তিত্বকে কি সাথে রাখা হয়েছে? না রাখা হলে হয়নি কেন? আলেমদের প্রতি তাদের এতো ঘৃণা কেন? দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম ও তরুণদের প্রতি এদের এতো আক্রোশ কেন? নাকি দেশের রাষ্ট্রক্ষমতাই এখন কাফেরদের হাতে? অন্তত দেশের শিক্ষা সেক্টরটা ইসলামিক হওয়ার দরকার ছিল । মুসলিমদের দ্বীনের উপর কোনো আঘাত না আসার দরকার ছিল। কিন্তু হলো কী! হে মুসলিম, ধর্মদ্রোহীতার ফিতনা থেকে নিজে বাঁচুন। আপনার সন্তানকে বাঁচান।
আসলে সহশিক্ষা জিনিসটা কখনোই ভালো ছিল না। এখনোও ভালো না। এটা গর্হিত একটা কাজ। এটা খারাপ কাজ। এটা হারাম কাজ। এটা বর্জনীয়। এটা নোংরা। কিন্তু আগের সাথে এখনকার পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, আগে খারাপ সহশিক্ষাকে খারাপই মনে করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সেটাকে আধুনিকতা মনে করা হয়। আমরা দেখেছি, ইসলামের বিপরীতের সব আধুনিকতাই মূলত সত্যিকার অর্থে দুর্গন্ধযুক্ত পঙ্কিলতা দিয়ে ভরা। সমাজের ৫০% বা তার চেয়েও বেশি যেনা হচ্ছে আজ এই পর্দাহীনতা এবং সহশিক্ষার ভয়ঙ্কর অভিশাপে। সুতরাং হে মুসলিম, সহশিক্ষাকে বয়কট করুন। যে শিক্ষাব্যবস্থা সহশিক্ষাকে প্রমোট করে তাকেও বয়কট করুন। নিজের দ্বীন - ঈমানের স্বার্থেই এটি করুন। সহশিক্ষা সম্পর্কে শরীয়াহর অবস্থান বিস্তারিতভাবে জানতে পড়ুন, "সহশিক্ষার নোংরামি, ভণ্ডামি ও ক্ষতির দিকগুলো নিয়ে এবং আমাদের করণীয় সম্পর্কে প্রমাণ্য প্রবন্ধ - সরকারী পাঠ্যবই ও ইসলাম সিরিজের প্রাসঙ্গিক গবেষণা-প্রবন্ধ ও ফাতওয়া সংকলনঃ- ০১. সহশিক্ষা ও ইসলাম। https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/ফিতনা/196529
গণিত বইগুলোতে মারবেলের হিসাব দেখানো হয়। মারবেল খেলাকে প্রমোট করা হয়। যেমন বইতে এভাবে অঙ্ক আছে; রুমির কাছে ৭৫ টি এবং রাজুর কাছে ৪৯ টি মারবেল আছে। রুমি থেকে রাজুর কয়টি মারবেল বেশি বা কম আছে? বইতে হুবহু এভাবেই লেখা আছে। পাঠকবৃন্দ চাইলে যাচাই করে নিতে পারেন। আমরা পোস্টের শেষে বইটির পিডিএফ সংযুক্ত করে দিয়েছি। চিন্তা করুন, শিক্ষার্থীরা এখান থেকে কী বুঝে নেবে। তারা কি কখনো এটা বুঝবে যে, মারবেল খেলা ভালো না? এবং ছেলে মেয়ে একত্রে খেলা করা যায় না? না, কখনোই তারা এমনটা বুঝবে না। আসলে মূলত শিশুদেরকে এভাবেই ছোটকাল থেকেই অর্থহীন কাজে ও ফ্রী-মিক্সিংয়ে অভ্যস্ত করে গড়ে তোলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
শুধু কি এতটুকুই? আরো কিছু অঙ্ক আপনাদেরকে দেখাই, দেখুন। ক্রিকেট খেলায় বাংলাদেশ জাতীয় দল ১ম ইনিংসে ৪১৫ এবং ২য় ইনিংসে ৩২৭ রান করে । ঐ খেলায় বাংলাদেশ দল দুই ইনিংসে মোট কত রান করে? এই হলো অঙ্ক, এই হলো অঙ্কের নমুনা! এবার আপনারাই বিচার করুন, এখানে আমি কিছু বলব না। এই অঙ্কটি ২য় শ্রেণীর গণিত বইয়ের ৬৩ নম্বর পৃষ্ঠায় আছে। আরেকটু সামনে গিয়ে বইটির ৬৮ নং পৃষ্ঠায় দেখবেন এরকম আরো একটি অঙ্ক আছে। সেখানে বাংলাদেশ দল এবং শ্রীলঙ্কার দলের মাঝে খেলা হচ্ছে। লেখা আছে, একটি ক্রিকেট খেলায় বাংলাদেশ দল ৩৫৮ রান করেছে এবং শ্রীলঙ্কা দল ৩১২ রান করেছে । কোন দল বেশি রান করেছে এবং কত রান বেশি করেছে?
হারাম বাজি ও সুদি অর্থনীতির উপর ভিত্তি করে প্রচারিত এবং প্রতিষ্ঠিত একটি খেলার প্রচারণা চালানো হচ্ছে স্কুলের একটি পাঠ্যবইয়ে! হারাম বাজি, লটারি, জুয়া, মিথ্যা, সময় নষ্ট, মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্তকারী, অসংখ্য গুনাহের জন্মদাতা একটি খেলার প্রমোট করছে সারাদেশের সরকারী পাঠ্যবইগুলোতে। এই জাতির মুক্তি আর কীভাবে সম্ভব?
পরিশেষে পাঠকদেরকে একটি কথা বলে যাই। অনুরোধ থাকবে আপনারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবেন। আচ্ছা বাচ্চাদের গণিত বইতে অঙ্কগুলো এভাবেও দেওয়া যেতো কিনা, যে রাফি ০২ রাকাত নামায পড়েছে। রাকিবও ০২ রাকাত নামায পড়েছে। তাহলে মোট কয় রাকাত নামায হলো? রাফি আজ ৫০ বার সুবহানাল্লাহ পড়েছে আর রাকিব পড়েছে ৪০ বার। তাহলে রাকিব রাফি থেকে কতটি সুবহানাল্লাহ কম পড়েছে? এবং আরো কতটি সুবহানাল্লাহ পড়লে রাকিব রাফির সমান হতো? পাঠকবৃন্দ! বইতে এভাবে দেওয়া যেতো কিনা? দেওয়া যেতো। কিন্তু আমরা দেখছি, বইগুলোতে এভাবে দেওয়া হচ্ছে না। কেন? ইসলাম বিদ্বেষ? নাকি অন্য কিছু? জানি না। আল্লাহ আমাদেরকে ও আমাদের প্রজন্মকে বেদ্বীনদের সকল ষড়যন্ত্র থেকে হেফাযত করুন। আমিন।
ইয়া রব্বাল আলামিন, আপনার দ্বীনকে যারা মুখের ফুঁৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়, তাদের উপর আমাদের শক্তিশালী করে দিন। এমন প্রচণ্ড আঘাত করার তাওফিক দিন, যেন আগামী হাজার বছর পরও তাদের কোন উত্তরসূরি দুনিয়ার বুকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে লক্ষবার ভাবে।
ধারাবাহিক চলবে......। আপনাদের মতামত জানাবেন। জাযাকুমুল্লাহ।
- একজন নারী বাইক নিয়ে গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মী সাজলে পর্দা কোথায়? শিশুরা এখান থেকে কী বার্তা পাবে?
বিস্তারিত জানতে পড়ুন; সরকারী পাঠ্যবই ও ইসলাম । পর্ব - ০৪
https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/ফিতনা/196457
- তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা বইটিতে খুবই নোংরাভাবে শিশুদেরকে মানবধর্মে দীক্ষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
- বইতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আমাদের মুসলিমদেরকে হিন্দু ও বিজাতীয়দের সাথে ভাই ভাই দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
- ইসলামী শরীয়াহ' মতে হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খৃষ্টান সহ দুনিয়াতে ইসলাম ব্যতিত যত ধর্ম বা মতবাদ আছে সব মিথ্যা হওয়ার কারণে দুনিয়াতে এসব ধর্মের প্রচার প্রচারণাও নিষিদ্ধ।
বিস্তারিত জানতে পড়ুন; সরকারী পাঠ্যবই ও ইসলাম । পর্ব - ০৬
https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/ফিতনা/196761
স্কুলের ২য় শ্রেণীর আমার বাংলা বইয়ের সরকারি পিডিএফ সংস্করণ লিঙ্ক।
https://drive.google.com/file/d/13O6...CxR14RDBS/view
স্কুলের ২য় শ্রেণীর গণিত বইয়ের সরকারি পিডিএফ সংস্করণ লিঙ্ক।
https://drive.google.com/file/d/1mkp...CRGP8HmCR/view
Comment