قُل لَّن يَنفَعَكُمُ الْفِرَارُ إِن فَرَرْتُم مِّنَ الْمَوْتِ أَوِ الْقَتْلِ وَإِذًا لَّا تُمَتَّعُونَ إِلَّا قَلِيلًا
"বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে।"
সম্প্রতি তাগুত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মুরতাদ বাহিনী র*্যাবের উদ্যোগে 'নব দিগন্তের পথে' শীর্ষক পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে, আমাদের দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
যারা এভাবে পেছনে ফিরে যেতে চায় এবং দ্রুততার সাথে জিহাদের পথ ত্যাগ করে তাদের এই অদ্ভুত বাস্তবতার সম্মুখীন হয়ে, কিছু কথা না বললেই নয়।
এমুহুর্তে শাইখ সায়্যিদ কুতব রহ: এর এক উক্তির কথা মনে পড়ছে যখন তার বোন তাকে জামাল আব্দুল নাসেরের কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদনপত্র লেখার আহবান জানালেন তখন শাইখ রহ: বলেন (যা ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লেখা আছে),
"দিনে পাঁচ বার যে আঙ্গুল সালাতের মাঝে আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেয়, সে আঙ্গুল দিয়ে জালিমের নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদনপত্র লেখা সম্ভব নয়।"
আমি আশ্চর্য্যবোধ করি কিভাবে এমন শক্তিশালী, স্পষ্ট মর্মার্থ তাদের স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায়!!
যারা সাইয়্যিদ কুতুবের পথ ও পন্থার অনুসারী ছিল এবং তার কথায় অনুপ্রানিত হয়েছিল।
আর কিভাবে সায়্যিদ কুতুবের এই মহান উক্তিটি তাদের বয়ান বিবৃতি থেকে হারিয়ে যায়।
আমি আরো আশ্চর্যবোধ করি ধোকাবাজির চর্চা দেখে।যাতে বাস্তবতাকে পরিবর্তন করা হয়। বড়কে ছোট আর ছোটকে বড় বানানো হয়। তাদের অধিকাংশের দুঃসাহসিকতা দেখে অবাক লাগে!
আমরা দেখতে পাই, কতিপয় বিপ্লবী সংগ্রামী 'মুজাহিদ'দের। যারা রক্ত টগবগ করে উথলে ওঠার পর জিহাদী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিল। অতঃপর শহুরে জীবনব্যবস্থা, রাজনৈতিক বাস্তবতা, পশ্চিমা-ইউরোপীয় বস্তুবাদী সভ্যতা প্রভাবিত আধুনিক রাস্ট্রব্যবস্থার মাঝে বসবাস করতে করতে এক পর্যায়ে তাদের গায়ের রক্ত বরফের ন্যায় ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।
জিহাদের ময়দানের নের্তৃত্বদানকারী ব্যাক্তিবর্গের অবস্থা যদি এমন হয়, তবে তাদের ক্ষেত্রেও আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কিছু নেই যারা নিজেদেরকে মুজাহিদদের সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করে।
এবং তাদের ব্যাপারেও আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কিছু নেই যারা বিভিন্ন ইসলামী আন্দোলনের বা জিহাদী জামাতের সম্মুখসারিতে ছিল, অতঃপর কিছু সময় কারাগারে বা গোয়েন্দা হেফাজতে অতিবাহিত হওয়ার ফলে পশ্চাদপসরণ করে। তাদের কেউ কেউ তো এমনও যে, তারা প্রকাশ্যে প্ল্যাটফর্মে কিংবা সংবাদ সম্মেলন করে প্রত্যাবর্তনের এলান করে!!
এসকল অপমানিত, গুজব রটনাকারী, জিহাদ হতে পিছিয়ে পড়া ব্যাক্তিদের আত্মপ্রকাশের বিষয়টি দাওওয়াতের ইতিহাস, সীরাতে রাসূল সাঃ আর সালাফদের আমলেও দেখতে পাওয়া যায়।
ইতিহাসের প্রতিটি স্তরেই এজাতীয় অগণিত উদাহারন পাওয়া যায়। আমাদের সময় ও প্রেক্ষাপটও এর ব্যাতিক্রম নয়। আমরাও এই স্তর পার করছি।
আমরা তাদেরকে এবং তাদের সমমনাদের সতর্ক করছি। কেননা এদের অবস্থা তো সেইসব সংশয়গ্রস্থ, দোদুল্যমান ও জিহাদের ময়দান হতে দ্রুতগামী পলায়নপরদের ন্যায় যাদের বৃত্তান্ত কুরআনুল কারীমে বর্ণিত আছে-
اَشِحَّۃً عَلَیۡکُمۡ ۚۖ فَاِذَا جَآءَ الۡخَوۡفُ رَاَیۡتَہُمۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَیۡکَ تَدُوۡرُ اَعۡیُنُہُمۡ کَالَّذِیۡ یُغۡشٰی عَلَیۡہِ مِنَ الۡمَوۡتِ ۚ فَاِذَا ذَہَبَ الۡخَوۡفُ سَلَقُوۡکُمۡ بِاَلۡسِنَۃٍ حِدَادٍ اَشِحَّۃً عَلَی الۡخَیۡرِ ؕ اُولٰٓئِکَ لَمۡ یُؤۡمِنُوۡا فَاَحۡبَطَ اللّٰہُ اَعۡمَالَہُمۡ ؕ وَ کَانَ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرًا
"তারা তোমাদের প্রতি কুন্ঠাবোধ করে। যখন বিপদ আসে, তখন আপনি দেখবেন মৃত্যুভয়ে অচেতন ব্যক্তির মত চোখ উল্টিয়ে তারা আপনার প্রতি তাকায়।
অতঃপর যখন বিপদ টলে যায় তখন তারা ধন-সম্পদ লাভের আশায় তোমাদের সাথে বাকচাতুরীতে অবতীর্ণ হয়। তারা মুমিন নয়। তাই আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ নিস্ফল করে দিয়েছেন। এটা আল্লাহর জন্যে সহজ।"
এবং সেই সমস্ত দৃঢ় প্রত্যয়ী প্রশান্ত হৃদয়ের অধিকারী দলের অবস্থাও স্মরণ করছি যারা স্বীয় রবের সাথে কৃত ওয়াদায় ছিল অবিচল। যারা আপন স্রষ্টার আঙ্গীকার পূরনে বদ্ধপরিকর। বিপদাপদ ও সংকট যাদেরকে একচুলও টলাতে পারে নি। পরীক্ষা যাদেরকে মোটেও বিচলিত করে নি, আর দুঃখ-কষ্ট যাদের ঈমান ও আনুগত্যই কেবল বৃদ্ধিই করেছে।
لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْءَاخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
وَلَمَّا رَءَا الْمُؤْمِنُونَ الْأَحْزَابَ قَالُوا هٰذَا مَا وَعَدَنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَصَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُۥ ۚ وَمَا زَادَهُمْ إِلَّآ إِيمٰنًا وَتَسْلِيمًا
مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عٰهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن قَضٰى نَحْبَهُۥ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا
"যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।
যখন মুমিনরা শক্রবাহিনীকে দেখল, তখন বলল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্নসমর্পণই বৃদ্ধি পেল।
মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।"
এটাই আল্লাহর সুন্নাত, যাতে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন নেই। আর আল্লাহর ওয়াদা যাতে নেই কোন তাবদিল।আর জমিনের কতৃত্ব আল্লাহর মুরাবিত, ধৈর্যশীল আর অবিচল বান্দাদের জন্য।
وَرَدَّ اللَّهُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِغَيْظِهِمْ لَمْ يَنَالُوا خَيْرًا ۚ وَكَفَى اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ الْقِتَالَ ۚ وَكَانَ اللَّهُ قَوِيًّا عَزِيزًا
وَأَنزَلَ الَّذِينَ ظٰهَرُوهُم مِّنْ أَهْلِ الْكِتٰبِ مِن صَيَاصِيهِمْ وَقَذَفَ فِى قُلُوبِهِمُ الرُّعْبَ فَرِيقًا تَقْتُلُونَ وَتَأْسِرُونَ فَرِيقًا
وَأَوْرَثَكُمْ أَرْضَهُمْ وَدِيٰرَهُمْ وَأَمْوٰلَهُمْ وَأَرْضًا لَّمْ تَطَـُٔوهَا ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرًا
"আল্লাহ কাফেরদেরকে ক্রুদ্ধাবস্থায় ফিরিয়ে দিলেন। তারা কোন কল্যাণ পায়নি। যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ মুমিনদের জন্যে যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফেরদের পৃষ্টপোষকতা করেছিল, তাদেরকে তিনি তাদের দূর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি নিক্ষেপ করলেন। ফলে তোমরা একদলকে হত্যা করছ এবং একদলকে বন্দী করছ।
তিনি তোমাদেরকে তাদের ভূমির, ঘর-বাড়ীর, ধন-সম্পদের এবং এমন এক ভূ-খন্ডের মালিক করে দিয়েছেন, যেখানে তোমরা অভিযান করনি। আল্লাহ সর্ববিষয়োপরি সর্বশক্তিমান।"
হ্যাঁ এটাই বাস্তব ঘটনা, যা ইতিহাসে বারংবার পুনারাবৃত্তি ঘটেছে। যার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। অতীতে যেমন ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। তাই প্রতিটি ব্যাক্তি যেন পূর্ববর্তীদের মধ্যে যারা লাঞ্চিত, তাদের শেষ পরিনতি সম্পর্কে সতর্ক থাকে। প্রত্যেক মুজাহিদের কাংক্ষিত গন্তব্যের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত, যা সবচেয়ে সঠিক রাস্তা।
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تَدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ وَ لَمَّا یَاۡتِکُمۡ مَّثَلُ الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلِکُمۡ ؕ مَسَّتۡہُمُ الۡبَاۡسَآءُ وَ الضَّرَّآءُ وَ زُلۡزِلُوۡا حَتّٰی یَقُوۡلَ الرَّسُوۡلُ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ مَتٰی نَصۡرُ اللّٰہِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ نَصۡرَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ
"তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে; যদিও পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদের অবস্থা এখনো তোমরা প্রাপ্ত হওনি?
দুঃখ-দারিদ্র্য ও রোগ-বালা-মুসিবত তাদেরকে স্পর্শ করেছিল এবং তারা ভীত-কম্পিত হয়েছিল। তারা এতদূর বিচলিত হয়েছিল যে, রসূল ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারিগণ বলে উঠেছিল, ‘আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে?’ জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।"
___________
অত্র আলোচনাটি প্রস্তুত করা হয়েছে শায়খ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ'র একটি লেখাকে কেন্দ্র করে। যা তিনি লিখেছিলেন মিশরে "শান্তির উদ্যোগ" নামক প্রায় একই রকম প্রতারণাপূর্ণ একটি সম্মেলন আয়োজিত হওয়ার পর।।
"বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে।"
সম্প্রতি তাগুত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মুরতাদ বাহিনী র*্যাবের উদ্যোগে 'নব দিগন্তের পথে' শীর্ষক পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে, আমাদের দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
যারা এভাবে পেছনে ফিরে যেতে চায় এবং দ্রুততার সাথে জিহাদের পথ ত্যাগ করে তাদের এই অদ্ভুত বাস্তবতার সম্মুখীন হয়ে, কিছু কথা না বললেই নয়।
এমুহুর্তে শাইখ সায়্যিদ কুতব রহ: এর এক উক্তির কথা মনে পড়ছে যখন তার বোন তাকে জামাল আব্দুল নাসেরের কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদনপত্র লেখার আহবান জানালেন তখন শাইখ রহ: বলেন (যা ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লেখা আছে),
"দিনে পাঁচ বার যে আঙ্গুল সালাতের মাঝে আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেয়, সে আঙ্গুল দিয়ে জালিমের নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদনপত্র লেখা সম্ভব নয়।"
আমি আশ্চর্য্যবোধ করি কিভাবে এমন শক্তিশালী, স্পষ্ট মর্মার্থ তাদের স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায়!!
যারা সাইয়্যিদ কুতুবের পথ ও পন্থার অনুসারী ছিল এবং তার কথায় অনুপ্রানিত হয়েছিল।
আর কিভাবে সায়্যিদ কুতুবের এই মহান উক্তিটি তাদের বয়ান বিবৃতি থেকে হারিয়ে যায়।
আমি আরো আশ্চর্যবোধ করি ধোকাবাজির চর্চা দেখে।যাতে বাস্তবতাকে পরিবর্তন করা হয়। বড়কে ছোট আর ছোটকে বড় বানানো হয়। তাদের অধিকাংশের দুঃসাহসিকতা দেখে অবাক লাগে!
আমরা দেখতে পাই, কতিপয় বিপ্লবী সংগ্রামী 'মুজাহিদ'দের। যারা রক্ত টগবগ করে উথলে ওঠার পর জিহাদী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিল। অতঃপর শহুরে জীবনব্যবস্থা, রাজনৈতিক বাস্তবতা, পশ্চিমা-ইউরোপীয় বস্তুবাদী সভ্যতা প্রভাবিত আধুনিক রাস্ট্রব্যবস্থার মাঝে বসবাস করতে করতে এক পর্যায়ে তাদের গায়ের রক্ত বরফের ন্যায় ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।
জিহাদের ময়দানের নের্তৃত্বদানকারী ব্যাক্তিবর্গের অবস্থা যদি এমন হয়, তবে তাদের ক্ষেত্রেও আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কিছু নেই যারা নিজেদেরকে মুজাহিদদের সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করে।
এবং তাদের ব্যাপারেও আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কিছু নেই যারা বিভিন্ন ইসলামী আন্দোলনের বা জিহাদী জামাতের সম্মুখসারিতে ছিল, অতঃপর কিছু সময় কারাগারে বা গোয়েন্দা হেফাজতে অতিবাহিত হওয়ার ফলে পশ্চাদপসরণ করে। তাদের কেউ কেউ তো এমনও যে, তারা প্রকাশ্যে প্ল্যাটফর্মে কিংবা সংবাদ সম্মেলন করে প্রত্যাবর্তনের এলান করে!!
এসকল অপমানিত, গুজব রটনাকারী, জিহাদ হতে পিছিয়ে পড়া ব্যাক্তিদের আত্মপ্রকাশের বিষয়টি দাওওয়াতের ইতিহাস, সীরাতে রাসূল সাঃ আর সালাফদের আমলেও দেখতে পাওয়া যায়।
ইতিহাসের প্রতিটি স্তরেই এজাতীয় অগণিত উদাহারন পাওয়া যায়। আমাদের সময় ও প্রেক্ষাপটও এর ব্যাতিক্রম নয়। আমরাও এই স্তর পার করছি।
আমরা তাদেরকে এবং তাদের সমমনাদের সতর্ক করছি। কেননা এদের অবস্থা তো সেইসব সংশয়গ্রস্থ, দোদুল্যমান ও জিহাদের ময়দান হতে দ্রুতগামী পলায়নপরদের ন্যায় যাদের বৃত্তান্ত কুরআনুল কারীমে বর্ণিত আছে-
اَشِحَّۃً عَلَیۡکُمۡ ۚۖ فَاِذَا جَآءَ الۡخَوۡفُ رَاَیۡتَہُمۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَیۡکَ تَدُوۡرُ اَعۡیُنُہُمۡ کَالَّذِیۡ یُغۡشٰی عَلَیۡہِ مِنَ الۡمَوۡتِ ۚ فَاِذَا ذَہَبَ الۡخَوۡفُ سَلَقُوۡکُمۡ بِاَلۡسِنَۃٍ حِدَادٍ اَشِحَّۃً عَلَی الۡخَیۡرِ ؕ اُولٰٓئِکَ لَمۡ یُؤۡمِنُوۡا فَاَحۡبَطَ اللّٰہُ اَعۡمَالَہُمۡ ؕ وَ کَانَ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرًا
"তারা তোমাদের প্রতি কুন্ঠাবোধ করে। যখন বিপদ আসে, তখন আপনি দেখবেন মৃত্যুভয়ে অচেতন ব্যক্তির মত চোখ উল্টিয়ে তারা আপনার প্রতি তাকায়।
অতঃপর যখন বিপদ টলে যায় তখন তারা ধন-সম্পদ লাভের আশায় তোমাদের সাথে বাকচাতুরীতে অবতীর্ণ হয়। তারা মুমিন নয়। তাই আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ নিস্ফল করে দিয়েছেন। এটা আল্লাহর জন্যে সহজ।"
এবং সেই সমস্ত দৃঢ় প্রত্যয়ী প্রশান্ত হৃদয়ের অধিকারী দলের অবস্থাও স্মরণ করছি যারা স্বীয় রবের সাথে কৃত ওয়াদায় ছিল অবিচল। যারা আপন স্রষ্টার আঙ্গীকার পূরনে বদ্ধপরিকর। বিপদাপদ ও সংকট যাদেরকে একচুলও টলাতে পারে নি। পরীক্ষা যাদেরকে মোটেও বিচলিত করে নি, আর দুঃখ-কষ্ট যাদের ঈমান ও আনুগত্যই কেবল বৃদ্ধিই করেছে।
لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْءَاخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
وَلَمَّا رَءَا الْمُؤْمِنُونَ الْأَحْزَابَ قَالُوا هٰذَا مَا وَعَدَنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَصَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُۥ ۚ وَمَا زَادَهُمْ إِلَّآ إِيمٰنًا وَتَسْلِيمًا
مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عٰهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن قَضٰى نَحْبَهُۥ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا
"যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।
যখন মুমিনরা শক্রবাহিনীকে দেখল, তখন বলল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্নসমর্পণই বৃদ্ধি পেল।
মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।"
এটাই আল্লাহর সুন্নাত, যাতে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন নেই। আর আল্লাহর ওয়াদা যাতে নেই কোন তাবদিল।আর জমিনের কতৃত্ব আল্লাহর মুরাবিত, ধৈর্যশীল আর অবিচল বান্দাদের জন্য।
وَرَدَّ اللَّهُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِغَيْظِهِمْ لَمْ يَنَالُوا خَيْرًا ۚ وَكَفَى اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ الْقِتَالَ ۚ وَكَانَ اللَّهُ قَوِيًّا عَزِيزًا
وَأَنزَلَ الَّذِينَ ظٰهَرُوهُم مِّنْ أَهْلِ الْكِتٰبِ مِن صَيَاصِيهِمْ وَقَذَفَ فِى قُلُوبِهِمُ الرُّعْبَ فَرِيقًا تَقْتُلُونَ وَتَأْسِرُونَ فَرِيقًا
وَأَوْرَثَكُمْ أَرْضَهُمْ وَدِيٰرَهُمْ وَأَمْوٰلَهُمْ وَأَرْضًا لَّمْ تَطَـُٔوهَا ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرًا
"আল্লাহ কাফেরদেরকে ক্রুদ্ধাবস্থায় ফিরিয়ে দিলেন। তারা কোন কল্যাণ পায়নি। যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ মুমিনদের জন্যে যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফেরদের পৃষ্টপোষকতা করেছিল, তাদেরকে তিনি তাদের দূর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি নিক্ষেপ করলেন। ফলে তোমরা একদলকে হত্যা করছ এবং একদলকে বন্দী করছ।
তিনি তোমাদেরকে তাদের ভূমির, ঘর-বাড়ীর, ধন-সম্পদের এবং এমন এক ভূ-খন্ডের মালিক করে দিয়েছেন, যেখানে তোমরা অভিযান করনি। আল্লাহ সর্ববিষয়োপরি সর্বশক্তিমান।"
হ্যাঁ এটাই বাস্তব ঘটনা, যা ইতিহাসে বারংবার পুনারাবৃত্তি ঘটেছে। যার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। অতীতে যেমন ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। তাই প্রতিটি ব্যাক্তি যেন পূর্ববর্তীদের মধ্যে যারা লাঞ্চিত, তাদের শেষ পরিনতি সম্পর্কে সতর্ক থাকে। প্রত্যেক মুজাহিদের কাংক্ষিত গন্তব্যের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত, যা সবচেয়ে সঠিক রাস্তা।
এটা এমন এক পথ যে পথে চলতে গিয়ে আদম আ: ক্লান্ত হয়েছেন।
নূহ আ: হয়েছেন সর্বশ্রান্ত।
ইব্রাহীম আ: হয়েছেন অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত।
ছুরির নিচে যবেহ হওয়ার জন্য শুয়েছেন ইসমাইল।
খুব স্বল্প মূল্যে বিক্রিত হয়েছেন ইউসুফ, থাকতে হয়েছে দীর্ঘদিন কারাগারে।
এ পথে চলতে গিয়ে যাকারিয়্যাহ আ: করাতের মাধ্যমে হয়েছেন দ্বিখন্ডিত।
জবাইয়ের শিকার হয়েছেন পুন্যবানদের নেতা ইয়াহইয়া।
কঠিন কষ্টে নিপতিত হয়েছেন আইয়ুব।
যে পথে চলতে গিয়ে প্রচুর কাদঁতে হয়েছে দাউদকে।
অরাজক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে ইসাকে।
(আলাইহিমুস সালাম)
মুহাম্মদ সা: এর ন্যায় মহামানবের সাথে লেগেছিল সর্ব প্রকারের দুঃখ-কষ্ট আর দারিদ্রতা!
নূহ আ: হয়েছেন সর্বশ্রান্ত।
ইব্রাহীম আ: হয়েছেন অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত।
ছুরির নিচে যবেহ হওয়ার জন্য শুয়েছেন ইসমাইল।
খুব স্বল্প মূল্যে বিক্রিত হয়েছেন ইউসুফ, থাকতে হয়েছে দীর্ঘদিন কারাগারে।
এ পথে চলতে গিয়ে যাকারিয়্যাহ আ: করাতের মাধ্যমে হয়েছেন দ্বিখন্ডিত।
জবাইয়ের শিকার হয়েছেন পুন্যবানদের নেতা ইয়াহইয়া।
কঠিন কষ্টে নিপতিত হয়েছেন আইয়ুব।
যে পথে চলতে গিয়ে প্রচুর কাদঁতে হয়েছে দাউদকে।
অরাজক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে ইসাকে।
(আলাইহিমুস সালাম)
মুহাম্মদ সা: এর ন্যায় মহামানবের সাথে লেগেছিল সর্ব প্রকারের দুঃখ-কষ্ট আর দারিদ্রতা!
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تَدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ وَ لَمَّا یَاۡتِکُمۡ مَّثَلُ الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلِکُمۡ ؕ مَسَّتۡہُمُ الۡبَاۡسَآءُ وَ الضَّرَّآءُ وَ زُلۡزِلُوۡا حَتّٰی یَقُوۡلَ الرَّسُوۡلُ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ مَتٰی نَصۡرُ اللّٰہِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ نَصۡرَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ
"তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে; যদিও পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদের অবস্থা এখনো তোমরা প্রাপ্ত হওনি?
দুঃখ-দারিদ্র্য ও রোগ-বালা-মুসিবত তাদেরকে স্পর্শ করেছিল এবং তারা ভীত-কম্পিত হয়েছিল। তারা এতদূর বিচলিত হয়েছিল যে, রসূল ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারিগণ বলে উঠেছিল, ‘আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে?’ জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।"
___________
অত্র আলোচনাটি প্রস্তুত করা হয়েছে শায়খ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ'র একটি লেখাকে কেন্দ্র করে। যা তিনি লিখেছিলেন মিশরে "শান্তির উদ্যোগ" নামক প্রায় একই রকম প্রতারণাপূর্ণ একটি সম্মেলন আয়োজিত হওয়ার পর।।
Comment