Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩২ || “ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র (সূরা আসরের আলোকে) ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ || ১৭তম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩২ || “ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র (সূরা আসরের আলোকে) ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ || ১৭তম পর্ব

    আন নাসর মিডিয়াপরিবেশিত

    ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
    একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র’’

    (সূরা আসরের আলোকে)

    ।।মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ ||
    এর থেকে৭তম পর্ব


    আল্লাহর দলই বিজয়ী



    إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا: এক আল্লাহর জন্য হয়ে যাওয়া, তাঁর জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার অদম্য ইচ্ছা, তাঁর জন্য জীবন, তাঁর জন্য মরণ, তাঁর জন্য ভালোবাসা, তাঁর জন্য ঘৃণা, তাঁর বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্ব, তাঁর শরীয়তের শত্রুদের সাথে শত্রুতা।

    وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ: আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা

    وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ: ভালো ও সওয়াবের কাজে সহায়তা এবং গোনাহ ও পাপাচারে কোনো সাহায্য নয়।

    وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ: পৃথিবীর বুক থেকে শয়তানিবাদ-মতবাদকে বিতাড়িত করে পূর্ণাঙ্গভাবে শুধু আল্লাহর হুকুমত প্রতিষ্ঠা করার জন্য। পুরো কুরআনকে বাস্তবায়ন করার জন্য। মানবতাকে কুফরের আঁধার থেকে বের করে আখিরাতের আলোর পথে নিয়ে আসার জন্য।

    وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ: অর্থাৎ পুরো দ্বীনের জন্য নবী এর দাওয়াতে অবিচল থাকা, দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাওয়া, মুছে যাওয়া, বাতিলের ভয়ে ভীত হয়ে এ দাওয়াতে বেশ-কম না করা; বরং এর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দেওয়া।


    সফলতার স্তরসমূহ



    সফল ব্যক্তিগণ মর্যাদার দৃষ্টিকোণে বিভিন্ন স্তরের হয়ে থাকেন। সুতরাং কে কত সফল হয়েছেন? কে কী পরিমাণ ক্ষতি থেকে বাঁচতে পেরেছেন? স্বীয় পুঁজিকে কে কত লাভজনক করতে পেরেছেন?- কুরআনে কারীম তা-ই বর্ণনা করছে-

    وَالسَّابِقُونَ السَّابِقُونَ ﴿الواقعة: ١٠﴾ أُولَٰئِكَ الْمُقَرَّبُونَ ﴿الواقعة: ١١﴾ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ ﴿الواقعة: ١٢﴾


    “অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই। তাঁরাই নৈকট্যশীল, (তাঁরা অবস্থান করবে) নেয়ামতপূর্ণ উদ্যানসমূহে।”(সূরা ওয়াকিয়াহ: ১০-১২)
    وَأَصْحَابُ الْيَمِينِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِينِ ﴿الواقعة: ٢٧﴾


    “যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান।” (সূরা ওয়াকিয়াহ: ২৭)

    وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ رَّضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ﴿التوبة: ١٠٠﴾


    “আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনছারদের মাঝে পুরাতন, এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন কানন-কুঞ্জ, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত প্রস্রবণসমূহ। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এটাই হল মহান কৃতকার্যতা।” (সূরা তাওবা: ১০০)

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَارَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ ﴿الصف: ١٠﴾ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿الصف: ١١﴾ يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ﴿الصف: ١٢﴾


    “মুমিনগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ। তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বসবাসের জান্নাতে উত্তম বাসগৃহে। এটা মহাসাফল্য।” (সূরা সাফফ: ১০-১২)

    إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ﴿التوبة: ١١١﴾


    “আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য।” (সূরা তাওবা: ১১১)

    فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَيُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِي رَحْمَتِهِ ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْمُبِينُ ﴿الجاثية: ٣٠﴾


    “যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তাদের পালনকর্তা স্বীয় রহমতে দাখিল করবেন। এটাই প্রকাশ্য সাফল্য।” (সূরা জাসিয়া: ৩০)

    يَوْمَ تَرَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ يَسْعَىٰ نُورُهُم بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِم بُشْرَاكُمُ الْيَوْمَ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ﴿الحديد: ١٢﴾


    “যেদিন আপনি দেখবেন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে, তাদের সম্মুখ ভাগে ও ডানপার্শ্বে তাদের জ্যোতি ছুটোছুটি করবে বলা হবেঃ আজ তোমাদের জন্যে সুসংবাদ জান্নাতের, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তাতে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই মহাসাফল্য।” (সূরা হাদীদ: ১২)

    يَوْمَ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ لِلَّذِينَ آمَنُوا انظُرُونَا نَقْتَبِسْ مِن نُّورِكُمْ قِيلَ ارْجِعُوا وَرَاءَكُمْ فَالْتَمِسُوا نُورًا فَضُرِبَ بَيْنَهُم بِسُورٍ لَّهُ بَابٌ بَاطِنُهُ فِيهِ الرَّحْمَةُ وَظَاهِرُهُ مِن قِبَلِهِ الْعَذَابُ ﴿الحديد: ١٣﴾


    “যেদিন কপট বিশ্বাসী পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী নারীরা মুমিনদেরকে বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্যে অপেক্ষা কর, আমরাও কিছু আলো নিব তোমাদের জ্যোতি থেকে। বলা হবেঃ তোমরা পিছনে ফিরে যাও ও আলোর খোঁজ কর। অতঃপর উভয় দলের মাঝখানে খাড়া করা হবে একটি প্রাচীর, যার একটি দরজা হবে। তার অভ্যন্তরে থাকবে রহমত এবং বাইরে থাকবে আযাব।” (সূরা হাদীদ: ১৩)

    تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ﴿النساء: ١٣﴾


    “এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন, যেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য।” (সূরা নিসা: ১৩)

    নবী কারীম ইরশাদ করেন-


    إِنَّ فِي الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ أَعَدَّهَا اللَّهُ لِلْمُجَاهِدِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا بَيْنَ الدَّرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ فَإِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ الْفِرْدَوْسَ فَإِنَّهُ أَوْسَطُ الْجَنَّةِ وَأَعْلَى الْجَنَّةِ أُرَاهُ فَوْقَهُ عَرْشُ الرَّحْمَنِ وَمِنْهُ تَفَجَّرُ أَنْهَارُ الْجَنَّةِ.


    “আল্লাহর পথের মুজাহিদদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে একশ’টি মর্যাদার স্তর প্রস্তুত রেখেছেন। দু’টি স্তরের ব্যবধান আসমান ও যমীনের দূরত্বের ন্যায়তোমরা আল্লাহর কাছে চাইলে জান্নাতুল ফিরদাউস-ই চাইবেকেননা, এটাই হলো: সবচাইতে উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। আমার মনে হয়, রাসূলুল্লাহ এ-ও বলেছেন, এর উপরে রয়েছে রহমানের আরশ। আর সেখান থেকেই জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৫৯৮, ই.ফা.)




    আরও পড়ুন​
    ১৬তম পর্ব -------------------------------------------------------------------------------------------- ১৮তম পর্ব

    Last edited by tahsin muhammad; 1 week ago.
Working...
X