Announcement

Collapse
No announcement yet.

Banality of Evil - অপরাধের সাধারণতা (২য় পর্ব)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • Banality of Evil - অপরাধের সাধারণতা (২য় পর্ব)

    আধুনিক সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে—মানুষ যা ভাবছে, যা অনুভব করছে, সেটাকে একক মানুষ হিসেবে দেখার বদলে সঙ্গে সঙ্গে সেটাকে একটা "থিওরি" বা "ফিলোসফি"র ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেউ কিছু বললেই বলা হয়, “ও তো পোস্টমডার্ন চিন্তা করছে”, “এই তো লিবারেল দৃষ্টিভঙ্গি”, কিংবা “এটা তো ইসলামপন্থিদের কথা”—মানে, কথা বললেই সেই কথার পেছনে একটা লেবেল সেঁটে দেওয়া হচ্ছে।

    ফলে কী হচ্ছে? মানুষ একে অপরকে সত্যিকার অর্থে বোঝার চেষ্টা করছে না। বরং সবাই একে অপরকে বিচার করে ফেলছে, এক মিনিটের মধ্যেই ফায়সালা দিয়ে দিচ্ছে—“এই লোকটা এই ক্যাটাগরির মানুষ।” এতে করে সমাজে সহানুভূতি হারিয়ে যাচ্ছে, আর মানুষ ক্রমেই অনুভূতিহীন হয়ে উঠছে। একটা কথা বললেই সেটাকে বুঝে নেয়ার আগেই দলে ভাগ করে ফেলি। Judgmental মনোভাব আমাদের সব জায়গায় ঢুকে গেছে।

    সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো—এই সব থিওরি আর দর্শনের ভিড়ে একজন মানুষ আর ‘নিজে’ থাকছে না। তার নিজের চিন্তা, নিজের অনুভব—সব কিছু চাপা পড়ে যাচ্ছে। সে হয়ে যাচ্ছে একটা দলের প্রতিনিধি, একটা দর্শনের নাম। তার আর নিজের পরিচয় নেই। তাকে যখন একটা নাম, একটা তত্ত্ব দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তখন সে আর চিন্তা করতে শেখে না। সে ভাবে, “আমার চিন্তা তো আমার না, এটা তো ওই দর্শনের কথা”—এইভাবে সে নিজের মত দেয়ার অধিকারও হারিয়ে ফেলে।

    এইভাবেই individuality—একজন মানুষ যা তাকে মানুষ করে তোলে—তা হারিয়ে যায়। সে হয়ে ওঠে একটা তত্ত্বের ছায়া, একটা দর্শনের মুখপাত্র। অথচ, ইসলাম মানুষকে শেখায় চিন্তা করতে, হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে, এবং নিজের পরিচয়ে বাঁচতে—আল্লাহর বান্দা হিসেবে। কিন্তু এই থিওরি-ফিলোসফির বন্যা সেই মানবিকতা, সেই আত্মপরিচয়টা ধুয়ে নিচ্ছে।

    শেষমেশ, সমাজে আমরা অনেক কিছু শুনি, জানি—কিন্তু আসল মানুষটা কোথায়? তার নিজের কথা, নিজের ব্যথা, নিজের চিন্তা—সেগুলোকে আমরা আর দেখতে পাই না। কারণ, আমরা মানুষ দেখি না, শুধু লেবেল দেখি।


    হ্যাঁ, মুসলিম সমাজে বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক, দার্শনিক আর মনস্তাত্ত্বিক তত্ত্বগুলোর ধীরে ধীরে আগ্রাসন চলছে। এগুলোর ভাষা, কাঠামো, ব্যাখ্যা—সবকিছু এমনভাবে সাজানো, যেন মনে হয় এগুলোই সত্য, এগুলোর মধ্যেই মানুষের মুক্তি লুকিয়ে আছে। আর এই ভাবনার মধ্যে পড়ে গিয়েই অনেক মুসলমান ইসলামের সেই মূল চেতনাটাই ভুলে যাচ্ছে—যেখানে আল্লাহই সর্বময় কর্তৃত্ব, সত্য, ন্যায় আর মুক্তির উৎস।

    আমরা কখনো কখনো বড় বড় তত্ত্ব আর জটিল ধারণার মধ্য দিয়ে ইসলামকে বোঝাতে চেষ্টা করি। যেমন আমি আগের পর্বে বলেছি “Banality of Evil” তত্ত্বটা আমাদের বোঝা দরকার, কারণ এটা আমাদের শেখায়—কীভাবে সাধারণ মানুষও অনৈতিকতার অংশীদার হয়ে যায়, যদি সে চিন্তা না করে, প্রশ্ন না করে, কেবল সিস্টেমের আদেশ পালন করে।

    তবে এখানেই একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দাঁড়ায়:
    এই তত্ত্বটা কি আসলেই আমাদের জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ? এই ধারণা জানা কি আমাদের জন্য আবশ্যিক?

    সত্যি কথা হলো—আমরা মুসলমানরা কি আদৌ কোনো তত্ত্বের মুখোমুখি হওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছি? আল্লাহ কি আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন কোনো তত্ত্ব, কোনো দর্শন বা কোনো মনস্তাত্ত্বিক কাঠামোকে বোঝার বা বিতর্ক করার জন্য? নাকি আমাদের দায়িত্ব ছিল একমাত্র সত্য—ইসলামের আলোকে জীবন গঠন করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, এবং আল্লাহর প্রেরিত বার্তাকে নিজের ও সমাজের মধ্যে বাস্তবায়ন করা?

    এই প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আজ আমরা অনেকেই ইসলাম বোঝার জন্য, সমাজ বিশ্লেষণের জন্য, অথবা “বাংলাদেশের মুসলমানরা কেন এমন”—এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য একের পর এক থিওরি মুখস্থ করছি। কেউ বলছে “Colonial hangover”, কেউ বলছে “false consciousness”, কেউ বলছে “banality of evil”, কেউ আবার “existential crisis” টেনে আনছে।

    কিন্তু একটু দাঁড়িয়ে ভাবুন—এই তত্ত্বগুলো কি সেই সাধারণ মুসলমানের হৃদয় স্পর্শ করে, যে একমুঠো ভাত জোগাড় করে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে? যে তার সন্তানের হালাল রিজিকের চিন্তায় ঘুম হারায়, কিন্তু প্রতিদিন সূরা ফাতিহায় “ইহদিনা-স্-সিরাতাল মুস্তাকিম” বলে কান্না করে?

    আমরা কি তার অবস্থা বুঝতে তত্ত্ব খুঁজি, নাকি কুরআনের আলোকে তার হৃদয়ের ভাষা বুঝি?

    আসলে, আমরা যদি এই সব তত্ত্বের মুখোমুখি না হই, তাহলে কি সত্য বোঝা অসম্ভব? মোটেও না। বরং অনেক সময় এই তত্ত্বগুলো আমাদের বিভ্রান্ত করে দেয়। আমাদের চিন্তাকে এমনভাবে শৃঙ্খলিত করে ফেলে, যে আমরা কুরআনের সরল কিন্তু গভীর বাণীর সঙ্গে আর কানেক্ট করতে পারি না।

    আমরা “বাংলাদেশের সাধারণ মুসলমানের অবস্থা” ব্যাখ্যা করতে চাই, ঠিক আছে। কিন্তু সেটা করার জন্য আমাদের দরকার তত্ত্ব নয়, তাকওয়া। দরকার একটি বিশুদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি, যেটা কুরআন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ থেকে আসে। যে চোখে তাকালে আমরা দেখব—এমন এক সমাজ, যারা ভুলে গিয়েছে আল্লাহর বড়ত্ব, যারা অন্যায়ের মুখে নিরব থাকে এই ভেবে যে “বড়লোকের সাথে ঝামেলা ভালো না”, যারা ইসলামকে শুধু রিচুয়াল হিসেবে জানে, জীবনব্যবস্থা হিসেবে নয়।

    এই বাস্তবতা বোঝার জন্য 'banality of evil' আমাদের চোখ খুলতে পারে—হয়তো। কিন্তু চোখ খুলে রাখার শক্তি তো আমরা পাই ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম থেকেই।

    সুতরাং, যদি কেউ প্রশ্ন করে—“এই তত্ত্বটা জানা কি জরুরি?”
    উত্তর হবে—জানলে ভালো, না জানলেও ক্ষতি নেই; কিন্তু জানার পরও যদি কুরআনের আলোতে বিচার না করি, তাহলে তত্ত্ব জেনে কোনো লাভ নেই।

    আর যদি কেউ প্রশ্ন করে—“তাহলে আমরা সাধারণ মুসলমানের অবস্থা কীভাবে ব্যাখ্যা করব?”
    উত্তর হবে—যেভাবে কুরআন ব্যাখ্যা করে। মানুষের অন্তরের গভীরে তাকিয়ে, তাদের আমল ও আকিদার আলোকে। তত্ত্ব দিয়ে নয়, তাকওয়ার চশমা দিয়ে।

    "এখন প্রয়োজন হলে আমরা সাধারণ মুসলমানের অবস্থা কীভাবে ব্যাখ্যা করব?”


    এই প্রশ্নের উত্তর ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত সরল, অথচ গভীর—আমাদের অন্তরে আল্লাহর বড়ত্বের প্রতি প্রকৃত প্রশান্তি নেই।

    আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি, কিন্তু সেই বিশ্বাস অনেক সময় এক ধরনের 'তাত্ত্বিক স্বীকৃতি'তে সীমাবদ্ধ থাকে। বাস্তব জীবনে যখন আমরা সিদ্ধান্ত নেই, ভরসা করি, ভয় করি—তখন আমাদের হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভরসার জায়গাটা দুর্বল হয়ে পড়ে।

    একটা সহজ উদাহরণ ধরা যাক:
    ধরুন, সমাজের একজন দরিদ্র মানুষ আমাদের কাছে এসে বলল—“আমাকে ৫ লাখ টাকা দিন, আমি ব্যবসা করব এবং আপনাকে লভ্যাংশ দেব।”
    অন্যদিকে, একজন প্রতিষ্ঠিত, সুপরিচিত ব্যবসায়ীও একই প্রস্তাব দিল—আপনাকে টাকা দিতে হবে, বিনিময়ে সে লভ্যাংশ দেবে।

    এই দুইজনের মধ্যে আমরা কার কথায় আস্থা রাখব? নিঃসন্দেহে আমরা সেই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর প্রস্তাবকে গুরুত্ব দেব। কারণ, আমাদের মনে ধারণা—এই ব্যক্তি ব্যবসা করতে জানে, তার সক্ষমতা আছে, সে লাভ তুলতে পারবে। অর্থাৎ, আমাদের আস্থা নির্ধারিত হয় তার পরিচিতি, প্রমাণিত দক্ষতা ও প্রতিষ্ঠার ওপর।

    এবার চিন্তা করুন—ঠিক এই একই মানসিকতা আমরা প্রয়োগ করি দুনিয়ার ক্ষমতাধরদের ক্ষেত্রে।
    কোনো রাজনৈতিক শক্তি, কোনো জালিম সরকার, কোনো বড় রাষ্ট্র যখন আমাদের সামনে আসে, তখন আমাদের মনে হয়—“এদের হাতেই তো নিরাপত্তা আছে, আমার ভালো-মন্দের নিয়ন্ত্রণ তো এদের হাতেই!”
    আমরা বিশ্বাস করতে থাকি, তারাই পারে আমাদের রুটি, রুজি, সম্মান, শান্তি কিংবা নিরাপত্তা দিতে।

    কিন্তু একজন মুমিনের জন্য এই ভাবনাটা ভয়ংকর বিপদজনক।
    কারণ, এই জায়গাটাই—আল্লাহর বড়ত্বের জায়গা।
    এই বিশ্বাসটাই যে কেবল আল্লাহই রিজিকদাতা, নিরাপত্তার একমাত্র উৎস, ভালো-মন্দের চূড়ান্ত নির্ধারক—এই বিশ্বাস যদি অন্তরে না থাকে, তবে ঈমান কেবল মুখের বুলি হয়, জীবনের চালিকা শক্তি নয়।

    কুরআনে শত শত আয়াত আছে, যেখানে আল্লাহর বড়ত্ব এবং ক্ষমতার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তবে, নিচের দুটি আয়াত আমাদের বুঝতে সাহায্য করতে পারে যে আল্লাহর বড়ত্ব এবং ক্ষমতা আসলে কত বিশাল। এই আয়াত দুটি যদি আমরা মনোযোগ দিয়ে চিন্তা করি, তবে আমাদের হৃদয়ে আল্লাহর অপরিসীম শক্তি এবং মহত্ত্বের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপিত হবে। আল্লাহর ক্ষমতা ও রাজত্বের বিষয়টি আমাদের চিন্তা ও বিশ্বাসের অংশ হয়ে যাবে, যা আমাদের জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি পরিবর্তন করে দিতে পারে।

    আল্লাহর বড়ত্ব সম্পর্কে এই উপলব্ধি আমাদের জীবনে শান্তি এবং আস্থার জন্ম দেবে, কারণ আমরা জানব, আল্লাহর নীচে পৃথিবীর কোন শক্তি বা ক্ষমতা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাঁর হাতে সবকিছু, এবং একদিন আমাদের সকলকে তাঁর সামনে হিসাব দিতে হবে।
    سورة الزمر ٣٩:٦٧
    "وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِۥ وَ الْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُۥ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَ السَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِۥ سُبْحَانَهُ وَ تَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ"
    এই আয়াতটি আল্লাহর অপরিসীম ক্ষমতা ও বড়ত্বের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। এখানে বলা হচ্ছে, যারা আল্লাহকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে না, তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে, কারণ কিয়ামতের দিন আল্লাহ সারা পৃথিবীকে এক হাতে ধারণ করবেন এবং আকাশগুলো তাঁর ডান হাতে ভাঁজ করে রাখবেন। এই আয়াতে আমরা দেখতে পাই, আল্লাহর রাজত্বে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই, তিনি সমস্ত কিছুর মালিক এবং তাঁর কোনো শরীক নেই। এই বিশালত্ব এবং শক্তির উপলব্ধি যদি আমাদের হৃদয়ে স্থির থাকে, তবে আমাদের জীবনে কোনো ধরনের জুলুম বা অন্যায় ক্ষমতার প্রভাব পড়বে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহর এই অতুলনীয় শক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হবে, এবং তখন সমস্ত পৃথিবীর বস্তু এবং ক্ষমতার প্রতি আমাদের ধারণা সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হবে। আমাদের জীবন ও কর্মে আল্লাহর মহানত্ব ও একমাত্রত্বের ধারণা দৃঢ় থাকলে, আমাদের কখনো কোনো তন্ত্র-মন্ত্র বা পৃথিবীর অন্যায়ের শিকার হওয়ার ভয় থাকবে না, কারণ আমরা জানি—আল্লাহই একমাত্র সত্য, এবং তিনি সবকিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

    سورة آل عمران ٣:٢٦
    "قُلِ ٱللَّهُمَّ مَٰلِكَ ٱلْمُلْكِ تُؤْتِى ٱلْمُلْكَ مَن تَشَآءُ وَتَنزِعُ ٱلْمُلْكَ مِمَّن تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَن تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَن تَشَآءُ بِيَدِكَ ٱلْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ"
    এই আয়াতটি আল্লাহর রাজত্বের অসীম ক্ষমতা এবং তিনি যেভাবে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী রাজত্ব দেন বা কেড়ে নেন, সেটি ঘোষণা করে। এই আয়াতটি আমাদের শেখায় যে, পৃথিবীর কোনো ক্ষমতা বা রাজত্ব আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। আল্লাহ যাকে চান তাকে সম্মানিত করেন এবং যাকে চান তাকে অপমানিত করেন। এর মধ্যে একটি শক্তিশালী বার্তা রয়েছে: আমাদের জীবনের সমস্ত কিছু আল্লাহর হাতে এবং তার মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। যদি আমাদের অন্তরে এই বিশ্বাস থাকে যে আল্লাহ একমাত্র মালিক, তিনি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক, তাহলে পৃথিবীর কোনো তন্ত্র বা ক্ষমতা আমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখলে, আমাদের মনের শান্তি এবং শক্তি বৃদ্ধি পাবে, কারণ আমরা জানি, আল্লাহ ছাড়া কেউ আমাদের জন্য কল্যাণ বা বিপদ আনতে পারে না।

    سورة الإسراء ١٧:١٤
    "اِقْرَأْ كِتَابَكَ ۚ كَفَىٰ بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا"
    এই আয়াতটি আমাদের ব্যক্তিগত দায়-দায়িত্বের দিকে নির্দেশ করে। আল্লাহ বলছেন, "তোমার কিতাব পড়, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব নিবে।" এখানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা রয়েছে: আমরা আমাদের কর্মের জন্য একান্তভাবে দায়ী। কোনো ব্যক্তি, সংগঠন বা জাতি আমাদের জন্য কাজ করবে না; বরং আমাদের নিজস্ব কাজের হিসাব নিতে হবে এবং একমাত্র আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডের বিচার হবে। যখন এই চিন্তা আমাদের হৃদয়ে প্রবলভাবে অবস্থান করবে, তখন আমরা কখনো কোনো মানুষের বা শক্তির সামনে মাথা নত করতে চাইবো না। বরং আমরা জানব, আল্লাহ আমাদের একমাত্র বিচারক, এবং তাঁর কাছে আমাদের সঠিক হিসাব দিতে হবে।

    এই তিনটি আয়াত আমাদের শেখায় যে, আল্লাহর বড়ত্ব ও রাজত্বের প্রতি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস থাকলে, পৃথিবীজুড়ে ঘটে যাওয়া ক্ষমতার পরিবর্তন বা অন্যায় আমাদের জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হতে পারবে না। আমরা জানি, আল্লাহ একমাত্র সত্য, সবকিছুর মালিক, এবং একদিন আমরা শুধুমাত্র তাঁর কাছে জবাবদিহি করব।


  • #2
    যদি কেউ প্রশ্ন করে—“তাহলে আমরা সাধারণ মুসলমানের অবস্থা কীভাবে ব্যাখ্যা করব?” উত্তর হবে—যেভাবে কুরআন ব্যাখ্যা করে। মানুষের অন্তরের গভীরে তাকিয়ে, তাদের আমল ও আকিদারআলোকেতত্ত্বদিয়ে নয়, তাকওয়ার চশমা দিয়ে।


    মাশাআল্লাহ ভাই অনেক সুন্দর করে বুঝিয়েছেন।
    আল্লাহ তাআলা আপনার লেখনিতে আরও বারাকাহ দান করুন।

    আর আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব নিয়ে যা বললেন, তাতে আমাদের আকিদা আরও মজবুত হবে ইনশাআল্লাহ।

    তাক্বাব্বালাল্লাহু মিনক!

    Comment

    Working...
    X