Announcement

Collapse
No announcement yet.

দ্বীনি ইলম ও দুনিয়াবি ইলম:

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দ্বীনি ইলম ও দুনিয়াবি ইলম:

    দ্বীনি ইলম ও দুনিয়াবি ইলম: ইলম অর্জন করা ফরজ। এক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিমাণ সকলের জন্য ফরজ। অর্থাৎ ফরজে আইন। তবে এই ন্যূনতম এর সীমানা আমরা যত ছোট মনে করি এটা আসলে তত ছোট নয়। এর দৈর্ঘ্যও অনেক। কারণ আমরা বাল্যকাল থেকেই শুনে আসছি যে জমিনে একবার সুবহানাল্লাহ বললেই জান্নাতে একটি গাছ লাগানো হয়ে যায়। কথা সত্য। কিন্তু কি করলে ওই লাগানো গাছটা কাটা হয়ে যায় সে খবর আমরা রাখি না। ফলে দ্বীনের একটি খন্ডিত ভার্শন নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। যার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। যাই হোক এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সুযোগ মিললে বিস্তারিত আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ। এখন আসি মূল আলোচনায়। আমরা সবাই জানি ইলম অর্জন করা ফরজ। তাহলেই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে কোন কোন ইলম অর্জন করা ফরজ ? কি পরিমান ইলম অর্জন করা ফরজ ? আমরা সাধারণত ইলমকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছি। ১. ওহির ইলম বা দ্বীনী ইলম ২. দুনিয়াবি ইলম। ওহির ইলম বলতে আমরা বুঝি বা বুঝাই সরাসরি কুরআন এবং হাদিসের ইলম এবং এই দুই মহান কিতাবের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য ইলম। কিন্তু দুনিয়াবি ইলম বলতে কি বুঝায় এর কোন সুস্পষ্ট রূপরেখা আমাদের সামনে নেই। তবে মোটামুটি গণহারে এটাই ধরে নেওয়া হয় যে পাশ্চাত্য সিস্টেমের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সমস্ত বিষয় অধ্যয়ন করা হয় সেগুলোই দুনিয়াবি ইলম। বিশেষ করে বিজ্ঞান সংক্রান্ত ইলম। ভয়াবহ এই ফিতনার যামানায় মুসলিম উম্মাহর মানসপটে খন্ডিত দ্বীনের এক ভয়াবহ ভার্সন বাসা বেঁধেছে। উম্মাহর অধিকাংশ সদস্য নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, জিকির, তিলাওয়াত, দান-খয়রাতসহ এ ধরনের বিষয়কে ইবাদত বা আমল মনে করে। কিন্তু রাষ্ট্র বা রাজ্য পরিচালনা করাও যে ইবাদত এবং নামাজ- রোজার মতই ফরজ ইবাদত এটা উম্মতের সামনে হাজির নেই। যে কারণে উম্মাহ মসজিদ-মাদ্রাসার ইমামতি বা নেতৃত্ব উলামায়ে কেরামের কাছে দিলেও রাষ্ট্র/রাজ্য পরিচালনার নেতৃত্ব দিয়ে দেয় কাফের, মুরতাদ, ফাসেক, চোর-বাটপার আর দুর্নীতিবাজদের হাতে । কারণ উম্মাহর প্রতিটি সদস্যই জানে নামাজ যেমন ফরজ নামাজের জন্য উপযুক্ত ইমাম নির্বাচনও ফরজ। তাই তারা আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত শরিয়াহ মোতাবেক ইমামতির সকল শর্ত যে বা যারা পূরণ করতে পারে তাদেরকই ইমাম বানায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্র/রাজ্য পরিচালনাকে উম্মাহ ফরজ ইবাদত মনে না করে উল্টো দুনিয়াবী কাজ মনে করে। তাই রাষ্ট্রের ইমাম কে হবে এ নিয়ে তারা আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত শরিয়ার দ্বারস্থ না হয়ে নিজেদের মন মত যাকে তাকে এই দায়িত্ব দিয়ে দেয়। দুনিয়া তুচ্ছ, দুনিয়া নশ্বর, দুনিয়া ধোঁকা আমরা এটা উম্মতের মাথায় ভালোভাবে গেঁথে দিয়েছি। কিন্তু দুনিয়া-আখেরাতের শস্যক্ষেত্র এই বিষয়টি আমরা উম্মতের মাথায় ভালোভাবে গাঁথতে পারিনি। যদি পারতাম তাহলে উম্মত বুঝত নামাজ শুধু পড়তে বলা হয়নি বরং নামাজ কায়েম করতে অর্থাৎ নামাজ পড়তে বাধ্য করতে বলা হয়েছে । শুধু নিজেকে যাকাত দিতে বলা হয়নি বরং যাকাত ফরজ এমন প্রত্যেকের নিকট থেকে যাকাত আদায় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে । মদপান কে শুধুমাত্র হারাম ঘোষণা করা হয়নি বরং কেউ মদপান করলে তার উপর আল্লাহর দেওয়া শাস্তি প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে । জিনা শুধু হারাম ঘোষণা করা হয়নি বরং কেউ জিনার অপকর্ম করলে তার উপর ---- বা রজম কার্যকর করতে বলা হয়েছে। কিন্তু আফসোস উম্মাহ এই কাজগুলোকে ফরজ তো দূরের কথা দ্বীনের অংশই মনে করে না। যদি মনে করত তাহলে এ ব্যাপারে যারপরনাই পেরেশান থাকত। আচ্ছা বন্ধুরা আমরা তো সবাই জানি দুনিয়াতে আমরা আল্লাহতাআলার প্রতিনিধি। তো বলুনতো আমাদের মহান রব তাঁর কোন্ বিষয়ের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমাদেরকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন ? তার আগে বলুন তো কোন মিল-ফ্যাক্টরি, কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কোন ক্ষেত-খামার কার কথায় অর্থাৎ কার হুকুমে বা কার আইনে বা কার বিধান মত চলে ? মালিকের নাকি কর্মচারীর ? আপনার জমিতে আপনি ধান লাগাবেন না পাট লাগাবেন এই সিদ্ধান্ত কে নিবে আপনি না আপনার কামলা ? যদি বলেন আপনি তাহলে বলুন তো এই দুনিয়া বা দুনিয়ার জমিনের মালিক কে ? যদি বলেন আল্লাহ তাহলে বলুন তো এই দুনিয়া কার বিধান মোতাবেক চলবে ? আল্লাহর বিধান মোতাবেক নাকি মানুষের বিধান মোতাবেক ? কুরআনের বিধান মোতাবেক নাকি গণতন্ত্র- সমাজতন্ত্রের বিধান মোতাবেক ? যদি বলেন আল্লাহ তায়ালার বিধান মোতাবেক চলবে তাহলে রাষ্ট্র বা রাজ্য পরিচালনা শিক্ষা করা কি দ্বীনী বিষয় না দুনিয়াবি বিষয় ? রাষ্ট্র বা রাজ্য পরিচালনা করা ফরজ নাকি নফল ? আল্লাহর এই রাজ্য অর্থাৎ দুনিয়া কারা চালাবে আল্লাহর প্রতিনিধিরা নাকি শয়তানের প্রতিনিধিরা ? আবার ধরুন আমি যদি প্রশ্ন করি মুসলমানদের রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানা সম্প্রসারণ করা ফরজ নাকি নফল ? হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খিলাফার সীমানা যে জায়গায় রেখে গিয়েছিলেন সাহাবায়ে কেরাম (রা কি সীমানা সে পর্যন্তই রেখেছিলেন ? নাকি সম্প্রসারণ করেছিলেন ? যদি সম্প্রসারণ না করে থাকেন তাহলে হযরত উমর (রা অর্ধ জাহানের খলিফা কি করে হয়েছিলেন ? আচ্ছা ভাই বলুন তো মুসলমানদের রাষ্ট্রের আয়তন কতটুকু ? বাংলাদেশের সমান ? হিন্দুস্তানের সমান ? আফগানিস্তানের সমান ? নাকি দুনিয়ার প্রতিটা ইঞ্চি ? আচ্ছা বলুন তো বহি শত্রুর আক্রমণ হতে মুসলিমদেরকে এবং মুসলিমদের রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানাকে হেফাজত করা ফরজ নাকি নফল ? যদি মুসলিমদের রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানা সম্প্রসারণ করা ফরজ হয় এবং মুসলিমদের রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানা হেফাজত করা ফরজ হয় তাহলে সেই ফরজ পালন করা পন্থাটা কি ? মুসলিমদের রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানা কি মিছিল, মিটিং, মানববন্ধন, নির্বাচন এর মাধ্যমে সম্প্রসারিত হয়েছিল ? রোম, পারস্য, ফিলিস্তিন, স্পেন, বোখারা, সমরখন্দ, খোরাসান, হিন্দুস্তান কি মিছিল, মিটিং, মানববন্ধন, নির্বাচন এর মাধ্যমে বিজয় হয়েছিল ? নাকি যুদ্ধ/ জিহাদের মাধ্যমে বিজয় হয়েছিল ? যদি যুদ্ধ/ জিহাদের মাধ্যমে বিজয় হয়ে থাকে তাহলে যুদ্ধ/ জিহাদ কি দুনিয়াবী বিষয় না দ্বীনি বিষয় ? মুসলিমদের রাষ্ট্র/রাজ্য/খিলাফা পরিচালনা, মুসলিমদের রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানা সম্প্রসারণ এবং মুসলিমদের রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানাকে হেফাজত করা যদি দ্বীনি কাজ হয় এবং ফরজ কাজ হয় তাহলে এসব বিষয়ের ইলম অর্থাৎ রাষ্ট্র/রাজ্য/খিলাফা পরিচালনা ইলম, রাষ্ট্রের/রাজ্যের/খিলাফার সীমানা সম্প্রসারণ এর ইলম এবং রাষ্ট্র/রাজ্য/খিলাফা হেফাজতের ইলম তথা যুদ্ধ/জিহাদের ইলম কি দ্বীনি ইলম নাকি দুনিয়াবি ইলম ? রাষ্ট্র/রাজ্য/খিলাফা পরিচালনা এবং যুদ্ধ/জিহাদের জন্য কি কি ইলমের প্রয়োজন ? এখন সকলেই চোখ বুজে উত্তর দিবেন হাতিয়ার বা অস্ত্রশস্ত্র এর ইলম অর্থাৎ পদার্থ বিজ্ঞানের ইলম, রসায়ন বিজ্ঞানের ইলম, ভূগোলের ইলম, মুসলিম এবং কাফের-মুশরিকদের অতীত ইতিহাসের ইলম, কাফির মুশরিকদের ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডনের ইলম ইত্যাদি। তাহলে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস কি দুনিয়াবী ইলম নাকি দ্বীনি ইলম ? তবে হ্যাঁ বলতে পারেন যে বর্তমান বিশ্বে নাস্তিকতা আর বস্তুবাদের মোড়কে বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইলম শিক্ষা দেয়া হচ্ছে এটা হচ্ছে একটা সমস্যা। হ্যাঁ এটা সমস্যা । তাই বলে কি এর কোন সমাধান খুঁজে বের করতে হবে না ?
    এসো জিহাদ শিখি

  • #2
    জাযাকাল্লাহ ভাই! জিহাদের ইলমও দ্বীনি ইলম , রাষ্ট্র পরিচালনাও দ্বীনি ইলম , আসলিহা , বোমা বারুদের ইলমও দ্বীনি ইলম।

    শ্রদ্ধেয় ভাই! কলেজ-ভর্সিটিতে এখন যে রসায়ন ও ফিজিক্স পড়ানো হয়, এ যুগের জিহাদের ক্ষেত্রে এগুলোর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা কেমন?

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তাআলা সম্মানিত ভাইয়ের ইলেমে বারাকাহ দান করুন এবং আমাদের জন্য আরো আরো উপকারী ইলেম উপস্থাপন করার তাওফীক দান করুন আমীন।

      Comment

      Working...
      X