[ বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের করনীয় কি? ]
বর্তমানে হিন্দুত্ববাদী তাগুত হাসিনা সরকারের জুলুম নির্যাতনের মাত্রা সবদিক থেকে সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সর্বোস্তরের মানুষের পীঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তারা কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। সন্ত্রাসী পুলিশের অত্যাচারের মাত্রা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যে তারা সাধারণ জনতা, ডাক্তার, সাংবাদিক, ছাত্র কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না। তাদেরকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করছে। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের বাড়াবাড়ি তো সর্বোদিক দিয়ে সীমা অতিক্রম করেছে। আর এদেশের আলেম উলামা এবং ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সাথে যে আচরণ করা হচ্ছে তা কারোই অজানা নয়। এই তাগুতী শাসনযন্ত্র যে আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে চলে গেছে তাতে বিন্দুমাত্র কোনো সন্দেহ নেই। মাফিয়া হাসিনা ইসলাম ও মুসলিমদের ধ্বংস করার জন্য প্রকাশে ও গোপনে তাদের খোদা মালাউন ভারতের সাথে যে আঁতাত করছে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। মাফিয়া হাসিনা সরকার এদেশের মুসলমানদের জন্য একবিন্দুও কল্যাণ কামনা করে না। তাদের মূল টার্গেট হচ্ছে এদেশ থেকে ইসলাম ও মুসলিম ঝেঁটিয়ে নির্মূল করা এবং মালাউন ভারতের সাথে আঁতাত করে এদেশকে একটি সর্বোব্যাপী হিন্দুয়ানী রাষ্ট্রে পরিণত করা। যা আজ ইতোমধ্যে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে।
এখন এ অবস্থায় আমরা কি করতে পারি সে বিষয়ে আমার কিছু মতামত নিম্নরূপঃ
প্রথমে আমাদের বাংলাদেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যেহেতু বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, তাই বাংলাদেশে দ্বীন কায়েমের পথ ও পরিবেশ তৈরি করতে একটা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
দাওয়াহ, 'ইদাদ ও কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ ব্যতিত এই পথ ও পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব না। এজন্য আমাদের আত্নত্যাগের পথ বেছে নিতে হবে। এজন্য আমাদের আল্লাহর রাস্তায় আমাদের রক্ত প্রবাহিত করার শপথ নিতে হবে। জীবনের মায়া নিয়ে বসে থাকলে আমাদের কোন ফায়দাই হাসিল হবে না।
এজন্য আমাদের ঝুঁকি নিতে হবে। হয়তো শাহাদাত, নয়তো খিলাফা আমাদের এই শপথ নিতে হবে। আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার জন্য আমাদের মন ও মস্তিষ্ক এবং আমাদেরকে শারীরিকভাবে ঝালিয়ে নিতে হবে। এজন্য আমাদের মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রস্তুতি নিতে হবে।
এজন্য আমরা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার জন্য কিছু কিছু করে অর্থ সঞ্চয় করতে পারি। যেহেতু আমরা এখন স্বশস্ত্র জিহাদে অবতীর্ণ হতে পারছি না, তাই প্রচুর পরিমাণে দাওয়ার কাজ করতে পারি। এজন্য আমরা অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবেই দাওয়ার কাজ করতে পারি ইনশাআল্লাহ। মানুষকে আল্লাহর দিকে আনার জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করতে হবে আমাদের। যেহেতু আমরা সংখ্যায় কম এবং আমাদের হাতে সময়ও কম তাই আমাদের প্রত্যেককে অনেক বেশি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে জরুরি হলো আমাদের কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে কাজ করা। এক্ষেত্রে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তাছাড়া তানজীমের গাইডলাইন মেনে চলাও আমাদের অত্যন্ত জরুরি। আর যদি আমরা তার বিপরীত করি তবে কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণের সম্ভাবনাই বেশি। এজন্য আমাদের বেশি বেশি করে দ্বীনী ইলম অর্জন করতে হবে। আমরা তাদাব্বুর ও তাফাক্কুরের সহিত কোরআন তেলাওয়াত করতে পারি। আমরা বেশি বেশি করে হাদিসের কিতাবাদি, ফিকাহর কিতাবাদি, মাসআলা মাসায়েলের কিতাবাদি, ফতোয়ার কিতাবাদি ইত্যাদি অধ্যায়ন করতে পারি। এতে করে আমাদের দ্বীনী ইলমের পরিধি আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে ইনশাআল্লাহ এবং আমাদের সামনে বিভ্রান্তিগুলোও স্পষ্ট হতে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তাছাড়া প্রচুর হকপন্থি আলেম উলামাদের অভিও ভিডিও সিরিজ রয়েছে। আমরা সেগুলো শুনতে ও দেখতে পারি। আমরা মুজাহিদ ভাইদের ওয়েব সাইটগুলো নিয়মিত ভিজিট করতে পারি। এতে করে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে ইনশাআল্লাহ।
তাছাড়া আমরা সাধারণ মানুষকে বর্তমান কুফরী শাসন ব্যবস্থার ব্যাপারে সতর্ক করতে পারি। তাদের সামনে কোরআন ও সুন্নাহর সরল পথের দৃষ্টান্তগুলো উপস্থাপন করতে পারি। তাদেরকে আমরা দ্বীন সম্পর্কে গাফেল থাকার কঠিন পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করতে পারি এবং পরকালে আল্লাহ্ তা'আলার কঠোর আযাবের ব্যাপারে সতর্ক করতে পারি। যাতে করে তারা ইসলাম সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করতে পারে। যাতে করে তারা তাগুতের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং আল্লাহর সরল পথের দিকে আসার সুযোগ পায়।
তাগুত প্রশাসনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা কি কি পদক্ষেপ নিতে পারি এ বিষয়ে আমার কিছু মতামত নিম্নরূপঃ
প্রথমেই বলে নেই দ্বীনের বৃহৎ স্বার্থে ক্ষতিকর হয় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সাধারণ জনতার ক্ষয়ক্ষতি হয় এমন বিষয় থেকে সতর্ক থাকাই উত্তম এবং মুসলিম উম্মাহর জান মালের ক্ষয়ক্ষতি হয় এমন বিষয় সম্পূর্ণরূপে এরিয়ে চলা উচিত। আবার এমন বিষয় রয়েছে যেটা শরিয়তে হয়তো জায়েজ কিন্তু এর ফায়দা কম তাই এরকম বিষয় এরিয়ে চলাই উত্তম। এখানে একটা বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যেহেতু তাগুতের প্রশাসনযন্ত্র তথা পুলিশ, র*্যাব (rab), বিজিবি, সেনাবাহিনী ইত্যাদি ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি দুশমনি করছে তাই আমরা এখন তাদের বিরুদ্ধে ঝটিকা অপারেশন পরিচালনা করতে পারি। এক্ষেত্রে আমরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে গোপন অপারেশন পরিচালনা করতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া, তাদেরকে হত্যা করা মূল উদ্দেশ্য নয়।
এক্ষেত্রে আমাদের পরিচয় গোপন রাখা অত্যন্ত জরুরি। এই অপারেশনগুলো পরিচালনা করার ক্ষেত্রে আমরা এক, দুই অথবা তিন জন অংশগ্রহণ করতে পারি। খুব দ্রুত এই অপারেশন গুলো পরিচালনা করার কথা মাথায় রাখতে হবে। যাতে করে আমাদের ফায়দা হাসিল হয়। এক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য আমরা নিজেদের কাছে কিছু হাতিয়ার যেমন ছোট আকারের ছুরি, স্টীলের তার, হাতুড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারি। এক্ষেত্রে অপারেশন পরিচালনা করার স্থান ও সময় নির্ধারণ করা জরুরি। সাধারণত রাতের বেলা ও জনাকীর্ণ স্থান এধরনের অপারেশন পরিচালনার জন্য উত্তম। তবে পরিস্থিতি বুঝে দিনের বেলা ও কম জনাকীর্ণ স্থানেও এধরনের অপারেশন পরিচালনা করা যেতে পারে। তবে খুব সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে করে টার্গেট ও উদ্দেশ্য হাসিল হয়। যেখানে তাগুত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেশি এরকম জায়গায় অপারেশন পরিচালনা করা যাবে না। বরং যেখানে বিছিন্নভাবে এক, দুই অথবা তিন জন সদস্য রয়েছে এরকম জায়গা এধরনের অপারেশন পরিচালনা করার জন্য উপযুক্ত।
তবে এ ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যেন সাধারণ মানুষের জানমালের কোন ক্ষয়ক্ষতি না হয়। তাগুতের বাহিনীর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েই সেখান থেকে খুব দ্রুত প্রস্থান করতে হবে লোকজন আসার আগেই। এর পর প্রয়োজন অনুযায়ী নিরাপদ স্থানে পৌঁছে যেতে হবে। মানুষের মাঝে খুব দ্রুত মিশে যেতে হবে, যাতে করে তাগুতের গোয়েন্দা বাহিনী আপনাকে ধরতে না পারে।
এর থেকে আমরা যে আগ্নেয়াস্ত্র গনিমত লাভ করতে পারবো তা পরবর্তীতে প্রশিক্ষণ ও টার্গেট কিলিং এর কাজে ও অন্যান্য অপারেশনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আর সবচেয়ে বড় ফায়দা হচ্ছে এধরনের অপারেশনের পর তাগুতের বাহিনী অনেক বেশি কড়াকড়ি আরোপ করবে। তারা জনগণের উপর অহেতুক হয়রানির চেষ্টা করবে। এতে করে জনগণ তাদের উপর আরো বেশি বিদ্রোহী ভাবাপন্ন হবে। এভাবে আমরা জনগণকে তাগুত সরকারের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে পারি। তাগুত প্রশাসন যত বেশি কঠোর হবে জনগণ ততো বেশি তাদের উপর বিদ্রোহী ভাবাপন্ন হবে।
এক সময় জনগণ তাগুত সরকারকে উৎখাতের জন্য মাঠে নামতে বাধ্য হবে। এমন পরিস্থিতিতে মাজলুম জনগণের পাশে তাগুত প্রশাসনের কেউ না কেউ দাঁড়াবে। ঠিক এই সুযোগটাকেই আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
এখানে একটা জিনিস আমাদের খুব ভালো করে মনে রাখা উচিত যে জনগণের মধ্যে কেউ কেউ পুরাতন তাগুতকে উৎখাত করে নতুন তাগুতকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কাজ করবে। তারা আল্লাহর শরিয়াহ আইনের পরিবর্তে বাতিল আইনই বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। আমাদের এমনটা কোনো ভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।
এমন পরিস্থিতিতে কিছু না কিছু অস্ত্র আমাদের হাতে আসবেই ইনশাআল্লাহ। আমাদের রসদপত্র ভারি হোক অথবা হালকা হোক উভয় অবস্থাতেই আমাদের আল্লাহর রাস্তায় কালেমার পতাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে। নির্দিষ্ট কোন এলাকা কিংবা বিছিন্ন ছোট ছোট এলাকা নিয়ে ইসলামী সাম্রাজ্য গঠন করে আমাদের পরবর্তী ধাপের জন্য মাথা ঠান্ডা রেখে ধৈর্যের সাথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের একটি জিনিস খুব ভালো ভাবে মনে রাখতে হবে যেন সাধারণ জনগণ আমাদের প্রতি বিদ্রোহী ভাবাপন্ন না হয়। বরং তাদের সাথে একাকার হয়ে মিশে থাকতে হবে। আমাদের প্রতি তাদের যেন শক্তিশালী সমর্থন থাকে সেই দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
এতে করে আমাদের জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহজ হবে। আস্তে আস্তে আমাদের সম্মানিত আলেম উলামাদের সাথে নিয়ে শক্তিশালী ইসলামী শরিয়াহ বোড এবং ইসলামী আদালত গঠন করতে হবে।
যাতে করে আমরা জিহাদি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সঠিক ও যুগউপযোগী দিক নির্দেশনা পাই। এক্ষেত্রে দায়িত্বশীলদের অবশ্যই স্বচ্ছতার সাথে দ্বীনের স্বার্থে কাজ করতে হবে। যাতে করে অন্যরা তাদের কাজের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়। আস্তে আস্তে আমাদের তানজিমের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের করনীয় ও দায়িত্ব নির্ধারণ, আলাপ আলোচনা, সভা সেমিনার, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতা, ভাবের আদান-প্রদান, ভ্রাতৃত্ববোধ ইত্যাদির মাধ্যমে ধাপে ধাপে আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সংকটকালীন সময়ে আমরা কিভাবে সংকটকে কাটিয়ে উঠতে পারি সেই বিষয়ে আলাপ আলোচনা ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার মাধ্যমে সংকটকে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে।
এক্ষেত্রে আমাদের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন ও শক্তিশালী করণ, তাদের রসদপত্র ও প্রশিক্ষণের দিকটি সর্বাধিক বিবেচনায় রাখতে হবে। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দা বিভাগের শক্তিশালী করণের কথাও আমলে রাখতে হবে। মোটকথা আগ্রাসী শত্রুর মোকাবেলায় সব ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
যতক্ষণ না সমস্ত ফিতনা ও ভ্রান্তি এবং দ্বীন কায়েম হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ আমাদের আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ চলতে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আর কি কি করতে পারি এ বিষয়ে বিজ্ঞ ভাইদের কাছে আরও কোনো ভালো পরামর্শ থাকলে জানাবেন ইনশাআল্লাহ।
বর্তমানে হিন্দুত্ববাদী তাগুত হাসিনা সরকারের জুলুম নির্যাতনের মাত্রা সবদিক থেকে সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সর্বোস্তরের মানুষের পীঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তারা কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। সন্ত্রাসী পুলিশের অত্যাচারের মাত্রা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যে তারা সাধারণ জনতা, ডাক্তার, সাংবাদিক, ছাত্র কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না। তাদেরকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করছে। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের বাড়াবাড়ি তো সর্বোদিক দিয়ে সীমা অতিক্রম করেছে। আর এদেশের আলেম উলামা এবং ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সাথে যে আচরণ করা হচ্ছে তা কারোই অজানা নয়। এই তাগুতী শাসনযন্ত্র যে আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে চলে গেছে তাতে বিন্দুমাত্র কোনো সন্দেহ নেই। মাফিয়া হাসিনা ইসলাম ও মুসলিমদের ধ্বংস করার জন্য প্রকাশে ও গোপনে তাদের খোদা মালাউন ভারতের সাথে যে আঁতাত করছে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। মাফিয়া হাসিনা সরকার এদেশের মুসলমানদের জন্য একবিন্দুও কল্যাণ কামনা করে না। তাদের মূল টার্গেট হচ্ছে এদেশ থেকে ইসলাম ও মুসলিম ঝেঁটিয়ে নির্মূল করা এবং মালাউন ভারতের সাথে আঁতাত করে এদেশকে একটি সর্বোব্যাপী হিন্দুয়ানী রাষ্ট্রে পরিণত করা। যা আজ ইতোমধ্যে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে।
এখন এ অবস্থায় আমরা কি করতে পারি সে বিষয়ে আমার কিছু মতামত নিম্নরূপঃ
প্রথমে আমাদের বাংলাদেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যেহেতু বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, তাই বাংলাদেশে দ্বীন কায়েমের পথ ও পরিবেশ তৈরি করতে একটা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
দাওয়াহ, 'ইদাদ ও কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ ব্যতিত এই পথ ও পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব না। এজন্য আমাদের আত্নত্যাগের পথ বেছে নিতে হবে। এজন্য আমাদের আল্লাহর রাস্তায় আমাদের রক্ত প্রবাহিত করার শপথ নিতে হবে। জীবনের মায়া নিয়ে বসে থাকলে আমাদের কোন ফায়দাই হাসিল হবে না।
এজন্য আমাদের ঝুঁকি নিতে হবে। হয়তো শাহাদাত, নয়তো খিলাফা আমাদের এই শপথ নিতে হবে। আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার জন্য আমাদের মন ও মস্তিষ্ক এবং আমাদেরকে শারীরিকভাবে ঝালিয়ে নিতে হবে। এজন্য আমাদের মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রস্তুতি নিতে হবে।
এজন্য আমরা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার জন্য কিছু কিছু করে অর্থ সঞ্চয় করতে পারি। যেহেতু আমরা এখন স্বশস্ত্র জিহাদে অবতীর্ণ হতে পারছি না, তাই প্রচুর পরিমাণে দাওয়ার কাজ করতে পারি। এজন্য আমরা অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবেই দাওয়ার কাজ করতে পারি ইনশাআল্লাহ। মানুষকে আল্লাহর দিকে আনার জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করতে হবে আমাদের। যেহেতু আমরা সংখ্যায় কম এবং আমাদের হাতে সময়ও কম তাই আমাদের প্রত্যেককে অনেক বেশি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে জরুরি হলো আমাদের কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে কাজ করা। এক্ষেত্রে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তাছাড়া তানজীমের গাইডলাইন মেনে চলাও আমাদের অত্যন্ত জরুরি। আর যদি আমরা তার বিপরীত করি তবে কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণের সম্ভাবনাই বেশি। এজন্য আমাদের বেশি বেশি করে দ্বীনী ইলম অর্জন করতে হবে। আমরা তাদাব্বুর ও তাফাক্কুরের সহিত কোরআন তেলাওয়াত করতে পারি। আমরা বেশি বেশি করে হাদিসের কিতাবাদি, ফিকাহর কিতাবাদি, মাসআলা মাসায়েলের কিতাবাদি, ফতোয়ার কিতাবাদি ইত্যাদি অধ্যায়ন করতে পারি। এতে করে আমাদের দ্বীনী ইলমের পরিধি আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে ইনশাআল্লাহ এবং আমাদের সামনে বিভ্রান্তিগুলোও স্পষ্ট হতে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তাছাড়া প্রচুর হকপন্থি আলেম উলামাদের অভিও ভিডিও সিরিজ রয়েছে। আমরা সেগুলো শুনতে ও দেখতে পারি। আমরা মুজাহিদ ভাইদের ওয়েব সাইটগুলো নিয়মিত ভিজিট করতে পারি। এতে করে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে ইনশাআল্লাহ।
তাছাড়া আমরা সাধারণ মানুষকে বর্তমান কুফরী শাসন ব্যবস্থার ব্যাপারে সতর্ক করতে পারি। তাদের সামনে কোরআন ও সুন্নাহর সরল পথের দৃষ্টান্তগুলো উপস্থাপন করতে পারি। তাদেরকে আমরা দ্বীন সম্পর্কে গাফেল থাকার কঠিন পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করতে পারি এবং পরকালে আল্লাহ্ তা'আলার কঠোর আযাবের ব্যাপারে সতর্ক করতে পারি। যাতে করে তারা ইসলাম সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করতে পারে। যাতে করে তারা তাগুতের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং আল্লাহর সরল পথের দিকে আসার সুযোগ পায়।
তাগুত প্রশাসনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা কি কি পদক্ষেপ নিতে পারি এ বিষয়ে আমার কিছু মতামত নিম্নরূপঃ
প্রথমেই বলে নেই দ্বীনের বৃহৎ স্বার্থে ক্ষতিকর হয় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সাধারণ জনতার ক্ষয়ক্ষতি হয় এমন বিষয় থেকে সতর্ক থাকাই উত্তম এবং মুসলিম উম্মাহর জান মালের ক্ষয়ক্ষতি হয় এমন বিষয় সম্পূর্ণরূপে এরিয়ে চলা উচিত। আবার এমন বিষয় রয়েছে যেটা শরিয়তে হয়তো জায়েজ কিন্তু এর ফায়দা কম তাই এরকম বিষয় এরিয়ে চলাই উত্তম। এখানে একটা বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যেহেতু তাগুতের প্রশাসনযন্ত্র তথা পুলিশ, র*্যাব (rab), বিজিবি, সেনাবাহিনী ইত্যাদি ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি দুশমনি করছে তাই আমরা এখন তাদের বিরুদ্ধে ঝটিকা অপারেশন পরিচালনা করতে পারি। এক্ষেত্রে আমরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে গোপন অপারেশন পরিচালনা করতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া, তাদেরকে হত্যা করা মূল উদ্দেশ্য নয়।
এক্ষেত্রে আমাদের পরিচয় গোপন রাখা অত্যন্ত জরুরি। এই অপারেশনগুলো পরিচালনা করার ক্ষেত্রে আমরা এক, দুই অথবা তিন জন অংশগ্রহণ করতে পারি। খুব দ্রুত এই অপারেশন গুলো পরিচালনা করার কথা মাথায় রাখতে হবে। যাতে করে আমাদের ফায়দা হাসিল হয়। এক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য আমরা নিজেদের কাছে কিছু হাতিয়ার যেমন ছোট আকারের ছুরি, স্টীলের তার, হাতুড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারি। এক্ষেত্রে অপারেশন পরিচালনা করার স্থান ও সময় নির্ধারণ করা জরুরি। সাধারণত রাতের বেলা ও জনাকীর্ণ স্থান এধরনের অপারেশন পরিচালনার জন্য উত্তম। তবে পরিস্থিতি বুঝে দিনের বেলা ও কম জনাকীর্ণ স্থানেও এধরনের অপারেশন পরিচালনা করা যেতে পারে। তবে খুব সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে করে টার্গেট ও উদ্দেশ্য হাসিল হয়। যেখানে তাগুত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেশি এরকম জায়গায় অপারেশন পরিচালনা করা যাবে না। বরং যেখানে বিছিন্নভাবে এক, দুই অথবা তিন জন সদস্য রয়েছে এরকম জায়গা এধরনের অপারেশন পরিচালনা করার জন্য উপযুক্ত।
তবে এ ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যেন সাধারণ মানুষের জানমালের কোন ক্ষয়ক্ষতি না হয়। তাগুতের বাহিনীর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েই সেখান থেকে খুব দ্রুত প্রস্থান করতে হবে লোকজন আসার আগেই। এর পর প্রয়োজন অনুযায়ী নিরাপদ স্থানে পৌঁছে যেতে হবে। মানুষের মাঝে খুব দ্রুত মিশে যেতে হবে, যাতে করে তাগুতের গোয়েন্দা বাহিনী আপনাকে ধরতে না পারে।
এর থেকে আমরা যে আগ্নেয়াস্ত্র গনিমত লাভ করতে পারবো তা পরবর্তীতে প্রশিক্ষণ ও টার্গেট কিলিং এর কাজে ও অন্যান্য অপারেশনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আর সবচেয়ে বড় ফায়দা হচ্ছে এধরনের অপারেশনের পর তাগুতের বাহিনী অনেক বেশি কড়াকড়ি আরোপ করবে। তারা জনগণের উপর অহেতুক হয়রানির চেষ্টা করবে। এতে করে জনগণ তাদের উপর আরো বেশি বিদ্রোহী ভাবাপন্ন হবে। এভাবে আমরা জনগণকে তাগুত সরকারের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে পারি। তাগুত প্রশাসন যত বেশি কঠোর হবে জনগণ ততো বেশি তাদের উপর বিদ্রোহী ভাবাপন্ন হবে।
এক সময় জনগণ তাগুত সরকারকে উৎখাতের জন্য মাঠে নামতে বাধ্য হবে। এমন পরিস্থিতিতে মাজলুম জনগণের পাশে তাগুত প্রশাসনের কেউ না কেউ দাঁড়াবে। ঠিক এই সুযোগটাকেই আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
এখানে একটা জিনিস আমাদের খুব ভালো করে মনে রাখা উচিত যে জনগণের মধ্যে কেউ কেউ পুরাতন তাগুতকে উৎখাত করে নতুন তাগুতকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কাজ করবে। তারা আল্লাহর শরিয়াহ আইনের পরিবর্তে বাতিল আইনই বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। আমাদের এমনটা কোনো ভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।
এমন পরিস্থিতিতে কিছু না কিছু অস্ত্র আমাদের হাতে আসবেই ইনশাআল্লাহ। আমাদের রসদপত্র ভারি হোক অথবা হালকা হোক উভয় অবস্থাতেই আমাদের আল্লাহর রাস্তায় কালেমার পতাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে। নির্দিষ্ট কোন এলাকা কিংবা বিছিন্ন ছোট ছোট এলাকা নিয়ে ইসলামী সাম্রাজ্য গঠন করে আমাদের পরবর্তী ধাপের জন্য মাথা ঠান্ডা রেখে ধৈর্যের সাথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের একটি জিনিস খুব ভালো ভাবে মনে রাখতে হবে যেন সাধারণ জনগণ আমাদের প্রতি বিদ্রোহী ভাবাপন্ন না হয়। বরং তাদের সাথে একাকার হয়ে মিশে থাকতে হবে। আমাদের প্রতি তাদের যেন শক্তিশালী সমর্থন থাকে সেই দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
এতে করে আমাদের জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহজ হবে। আস্তে আস্তে আমাদের সম্মানিত আলেম উলামাদের সাথে নিয়ে শক্তিশালী ইসলামী শরিয়াহ বোড এবং ইসলামী আদালত গঠন করতে হবে।
যাতে করে আমরা জিহাদি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সঠিক ও যুগউপযোগী দিক নির্দেশনা পাই। এক্ষেত্রে দায়িত্বশীলদের অবশ্যই স্বচ্ছতার সাথে দ্বীনের স্বার্থে কাজ করতে হবে। যাতে করে অন্যরা তাদের কাজের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়। আস্তে আস্তে আমাদের তানজিমের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের করনীয় ও দায়িত্ব নির্ধারণ, আলাপ আলোচনা, সভা সেমিনার, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতা, ভাবের আদান-প্রদান, ভ্রাতৃত্ববোধ ইত্যাদির মাধ্যমে ধাপে ধাপে আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সংকটকালীন সময়ে আমরা কিভাবে সংকটকে কাটিয়ে উঠতে পারি সেই বিষয়ে আলাপ আলোচনা ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার মাধ্যমে সংকটকে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে।
এক্ষেত্রে আমাদের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন ও শক্তিশালী করণ, তাদের রসদপত্র ও প্রশিক্ষণের দিকটি সর্বাধিক বিবেচনায় রাখতে হবে। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দা বিভাগের শক্তিশালী করণের কথাও আমলে রাখতে হবে। মোটকথা আগ্রাসী শত্রুর মোকাবেলায় সব ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
যতক্ষণ না সমস্ত ফিতনা ও ভ্রান্তি এবং দ্বীন কায়েম হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ আমাদের আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ চলতে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আর কি কি করতে পারি এ বিষয়ে বিজ্ঞ ভাইদের কাছে আরও কোনো ভালো পরামর্শ থাকলে জানাবেন ইনশাআল্লাহ।
Comment