Announcement

Collapse
No announcement yet.

শিক্ষা ব্যবস্থা (৩য় পর্ব): ইসলামী শিক্ষার পথের প্রতিবন্ধকতা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শিক্ষা ব্যবস্থা (৩য় পর্ব): ইসলামী শিক্ষার পথের প্রতিবন্ধকতা

    নানাবিধ সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্তেজনার পরেও, ইসলামী ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে বিদ্যমান টানাপোড়েনের বাস্তবতার সত্ত্বেও, অনেক মুসলমানের মাঝে পশ্চিমা আধুনিকতার চিন্তাধারা ও কর্মপদ্ধতির প্রতি একপ্রকার নীরব, প্রশ্নহীন আনুগত্য লক্ষ করা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উপনিবেশিক শাসন থেকে আংশিক মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই মুসলিম বিশ্বে শিক্ষাবিষয়ক আলোচনা মূলত আধুনিক বিশ্বের কাঠামোয় ক্ষমতায়ন অর্জনের দিকে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে সামগ্রিকভাবে এক ধরণের অজ্ঞতা রয়েছে যে, আধুনিকতা ও এর জ্ঞানব্যবস্থা মূলত পশ্চিমা সংস্কৃতি ও সমাজের মধ্যে প্রোথিত।

    শুধু পাঠ্যক্রম বা পদ্ধতিগত বিষয় নয়, বরং আধুনিক পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি সমন্বিত মানদণ্ড ও আনুগত্যের কাঠামো হিসেবে দেখলে এর গভীর রাজনৈতিক প্রভাবও প্রতিভাত হয়। ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা যতটা পশ্চিমা শিক্ষার মডেল অনুসরণ করে, ততটাই এটি এই পশ্চিমা মানদণ্ডের অধীন হয়ে পড়ে। পশ্চিমা শিক্ষা যেখানে আধুনিকতার প্রতি আনুগত্য তৈরি করতে চায়, ইসলাম সেখানে নিজের এক স্বতন্ত্র চিন্তাধারা, নৈতিক মানদণ্ড ও কার্যপ্রণালী তৈরি করেছে—যা একটি কার্যকর সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতির ভিত্তি হতে পারে।

    (১)

    ইসলামী দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী, মানবজাতির ধর্মীয় ইতিহাস একটি ধারাবাহিকতা—যার চূড়ান্ত পরিণতি নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ হয়। তিনি মানুষের প্রকৃত ধর্ম—তাওহীদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন, যা বারবার বিকৃত হয়েছে মানবীয় প্রবৃত্তি ও বিস্মৃতির কারণে।

    কুরআন সেই সমস্ত মানুষকে চ্যালেঞ্জ করে, যারা বিকৃত ও বস্তুনির্ভর ধর্মব্যবস্থাকে আঁকড়ে ধরে আছে এবং নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর আগত বিশুদ্ধ বাণীর সত্যতা অস্বীকার করে। এই প্রসঙ্গে কুরআন-আল-মাজিদে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ঘোষণা করেন:
    فَمَنۡ حَآجَّكَ فِیۡهِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الۡعِلۡمِ فَقُلۡ تَعَالَوۡا نَدۡعُ اَبۡنَآءَنَا وَ اَبۡنَآءَكُمۡ وَ نِسَآءَنَا وَ نِسَآءَكُمۡ وَ اَنۡفُسَنَا وَ اَنۡفُسَكُمۡ ۟ ثُمَّ نَبۡتَهِلۡ فَنَجۡعَلۡ لَّعۡنَتَ اللّٰهِ عَلَی الۡكٰذِبِیۡنَ

    "অতঃপর তোমার নিকট জ্ঞান আসার পর যে তোমার সাথে এ বিষয়ে ঝগড়া করে, তবে তুমি তাকে বল, ‘এস আমরা ডেকে নেই আমাদের সন্তানদেরকে ও তোমাদের সন্তানদেরকে। আর আমাদের নারীদেরকে ও তোমাদের নারীদেরকে এবং আমাদের নিজদেরকে ও তোমাদের নিজদেরকে, তারপর আমরা বিনীত প্রার্থনা করি, ‘মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লা’নত করি’।" (সূরা আলে ইমরান; ৩:৬১)

    তাফসিরকারগণের মতে, এটি ছিল বিশ্বাসের একটি চূড়ান্ত পরীক্ষা, যখন যুক্তি ও প্রমাণ সবই প্রদান করা হয়ে গেছে। কিন্তু যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল, তারা এই স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ থেকে পিছু হটে যায়। তারা নিজেদের বিকৃত মূল্যবোধ রক্ষা করে, তা-ই ধারণ করে এবং সময়ের প্রবাহে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন সভ্যতা গড়ে তোলে—যা আজকের পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থার রূপ নিয়েছে।

    এই সভ্যতা আজ বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করেছে, এবং মুসলিমদের কাছেও দাবি করছে একটি বিষয়—এর মানদণ্ড, নীতিমালা ও জীবনদর্শনের প্রতি আনুগত্য। অথচ ইসলামী মানদণ্ড থেকে দেখলে এই মূল্যবোধের ভিতর রয়েছে বিভ্রান্তি, বিচ্যুতি ও আত্মিক পতন।

    (২)

    ইসলামী নীতিমালা ও আনুগত্যের কাঠামোর ভেতরে কাজ করার অর্থ অনেক সময় সংঘর্ষের মুখোমুখি হওয়া—বিশেষত তাদের সাথে, যাদের চিন্তা-চেতনা ও স্বার্থ আজকের আধিপত্যশীল পাশ্চাত্য আধুনিকতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মুসলমানদের জন্য জ্ঞান ও দিকনির্দেশনার চূড়ান্ত উৎস হলো 'ওয়াহী', পার্থিব লালসা কিংবা বিকৃত গ্রন্থ নয়। ইসলামের প্রকৃত পরিচয় মানে হলো—একটি নির্দিষ্ট নৈতিক ও জীবনব্যবস্থার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা। কিন্তু যখন এই জীবনব্যবস্থা আধিপত্যশীল অথচ বিকৃত একটি ব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে ওঠে, তখন একজন মুসলিমের সামনে নৈতিক দ্বিধা ও চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি হয়।

    এটি নিছক কোনো তাত্ত্বিক ব্যাপার নয়; কারণ আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রভাবশালী মানদণ্ড এমন যেকোনো বিকল্প নীতিমালাকে হুমকি হিসেবে দেখে এবং প্রয়োজন হলে ধ্বংস করতেও পিছপা হয় না, যেন তাদের নিজের বিকৃত মানদণ্ডের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় থাকে। ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, এই পাশ্চাত্য ব্যবস্থা একটি বিকৃত ও মিথ্যাপূর্ণ ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ফলে, কেউ যদি ঐশী মানদণ্ডের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে, তবে তার জন্য এই আনুগত্যের মূল্য হতে পারে জীবন, জীবিকা, এমনকি বিশ্বাস ও ধর্মচর্চার পূর্ণ স্বাধীনতা হারানোর শামিল।

    এই সংঘর্ষটি সবচেয়ে প্রকটভাবে প্রকাশ পায় শিক্ষাব্যবস্থার ভেতর দিয়ে। শিক্ষা যদি কেবল একটি সার্টিফিকেট পাওয়ার পদ্ধতি না হয়ে বরং এক ধরনের ‘হওয়ার প্রক্রিয়া’ হয়—তাহলে বিষয়টি আরো জটিল হয়ে ওঠে। কারণ, যখন একজন ব্যক্তি কোনো শিক্ষার পেছনে ছুটে, তখন সে অনানুষ্ঠানিকভাবে একটি প্রতিশ্রুতি দেয়—সে এমন এক ব্যক্তি হয়ে উঠবে, যা সে আগে ছিল না। এখন, যদি ওই শিক্ষাব্যবস্থা তার নিজস্ব মূল্যবোধ থেকে খুব ভিন্ন হয়, তাহলে এই রূপান্তর হতে পারে গভীর ও গভীরতর।

    এই প্রক্রিয়ার শেষে যে ব্যক্তি বেরিয়ে আসে, সে আর আগের মতো থাকে না। তার ভেতরে গড়ে ওঠে নতুন ধরনের আনুগত্য—সেই শিক্ষাব্যবস্থা ও তার অন্তর্নিহিত নীতিমালার প্রতি। এই রূপান্তর কেবল বাহ্যিক নয়, বরং আত্মিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক স্তরেও ঘটে থাকে।

    শিক্ষা শুধু একমুখী গ্রহণের প্রক্রিয়া নয়—এটি দ্বিমুখী, এমনকি পারস্পরিক আনুগত্যের লেনদেন। একদিকে শিক্ষার্থী কোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জ্ঞান, প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেট নেয়, আরেকদিকে সেই শিক্ষার্থী নিজেও সেই প্রতিষ্ঠানকে বৈধতা দেয়। শুধু টিউশন ফি বা দান নয়, শিক্ষার্থী যখন কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা গ্রহণ করে, তখন সে বলে দেয়—“এই ব্যবস্থাই সত্য, এই নীতিমালাই গ্রহণযোগ্য।”

    যখন সেই শিক্ষার্থী পুরস্কার, পেটেন্ট বা গবেষণা অনুদান পায়, তখন সেটা প্রতিষ্ঠানের সুনাম বাড়ায়। এমনকি পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে লেখা ছাপানো বা আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করাও সেই নীতিমালার প্রতি আনুগত্য প্রকাশের আরেক রূপ। এই কাজগুলো শুধু ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং এক বিকৃত ও আধিপত্যশীল মানদণ্ডকে বৈধতা দেওয়া।

    বিশেষত যখন মুসলিম শিক্ষার্থীরা নিজেদের সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে উঠে এসে পাশ্চাত্য কাঠামোয় শিক্ষিত হয়, তখন তারা নিজেদের সভ্যতাকেই প্রান্তিক করে। তারা যে ব্যবস্থার ভেতর ঢুকে পড়ছে, সেটি তাদের বিশ্বাসব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক—তবু তারা সেটিকেই ‘প্রগতি’ ভেবে বরণ করে নিচ্ছে।

    শিক্ষা মানে কেবল কিছু তথ্য জানা নয়, বরং নিজের মধ্যে এক পরিবর্তনের শপথ। ইসলাম অনুযায়ী শিক্ষিত হওয়ার মানে হলো—আল্লাহর বিধানের প্রতি আনুগত্য ও তা জীবনে বাস্তবায়নের চেষ্টা। এর বাইরে যত কিছু, তা নিছক মোহ, শূন্য খ্যাতি।

    একটি মুসলিম সমাজ যখন ইসলামের মূলনীতি নিয়ে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিতে বাঁচে, তখন সেটাই হয় একটি বিকল্প সভ্যতার ভিত্তি। আর উম্মাহর ক্ষেত্রে, সেই বিকল্প সভ্যতা হতে পারে এক বিস্তৃত সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আন্দোলনের সূচনা—যা আধুনিকতার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সক্ষম।

    শেষ পর্যন্ত, এই প্রশ্নগুলো শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, পুরো মানবজাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে গেলে আমাদের জানতে হবে—মানবতার প্রকৃত সমস্যাগুলো কী, এবং কীসের কারণে এই সমাজব্যবস্থা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। কারণ, যে নীতিমালা অন্যায় এবং বিকৃত, তার প্রতি আনুগত্য শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজ, উম্মাহ ও মানবতার ভবিষ্যতেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলে।

    অর্থাৎ, আপনি যখন কোনো একটি চিন্তাপদ্ধতি বা জীবনের নীতিমালাকে গ্রহণ করেন, তখন আপনি শুধু বর্তমান নয়—পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎও রচনা করছেন। এর প্রভাব পড়ে ধর্মচর্চা থেকে শুরু করে কৃষি, স্থাপত্য, চিকিৎসা, বিজ্ঞান—জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে।

    পশ্চিমা সভ্যতা তার নিজস্ব চিন্তা ও কাজের ধারা ধরে রাখতে একটি জটিল আনুগত্যের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এই নেটওয়ার্কের প্রধান হাতিয়ার হলো শিক্ষা—এবং তার সঙ্গে যুক্ত সাময়িক পুরস্কার, চাকরি, সুযোগ, খ্যাতি। এখন যদি কেউ নিজেকে ঈশ্বরীয় নীতিমালার প্রতি আনুগত দাবি করে, তাহলে তার উচিত—সে কোন ধরনের শিক্ষা গ্রহণ করছে, কেন করছে, এবং তার লক্ষ্য কী—এই প্রশ্নগুলোর গভীরে যাওয়া।

    ঔপনিবেশিকতার ছায়া থেকে সদ্য বের হয়ে আসা বহু জাতির মতো, মুসলমানদেরও দরকার নিজেদের শিক্ষা-পদ্ধতি নতুন করে যাচাই করা। কমিউনিটির বাস্তব চাহিদা বোঝা জরুরি, পশ্চিমা ব্যবস্থাকে অবিচারহীনভাবে ‘রপ্তানি’ করে নেওয়া নয়।

    পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা মানে, স্থানীয় সংস্কৃতির ওপর এক ধরনের পাতলা পর্দা চাপিয়ে দেওয়া—একই সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক বিভ্রান্তি ও সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়ের ফাটল তৈরি করা। এবং সবচেয়ে খারাপ দিক হলো—এই ব্যবস্থা কার্যত ঔপনিবেশিকতার জন্য কাঠামোগত সহায়তা তৈরি করে দেয়, যা শত শত বছর ধরে অ-পশ্চিমা জাতিদের শিকলে বেঁধে রেখেছে।

    এখন যারা এসব প্রশ্নকে এড়িয়ে যায়—তারাও নিরপেক্ষ বা নির্দোষ নন। আজকের দিনে, যখন এক ধরনের মার্কিন জয়োল্লাস ও নিয়ন্ত্রণনীতি গোটা পৃথিবীতে থাবা বসাচ্ছে, তখন নীরবতা বা উদাসীনতা মানে হলো—নিজেকে অপমান করা, এবং ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের প্রতি নীরব সমর্থন দেওয়া। তা সে সরাসরি হোক বা ঘুরপথে।

    (৩)
    ইসলামি ঐতিহ্যে জ্ঞান অন্বেষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বহু প্রসিদ্ধ হাদীসে নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: قال رسول الله ﷺ: «من سلك طريقاً يلتمس فيه علماً سهّل الله له به طريقاً إلى الجنة»
    অনুবাদ: যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের জন্য কোনো পথে বের হয়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। (সুনান আবু দাউদ, হাদীস: ৩৬৪১); অথবা
    “طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ"
    অনুবাদ: প্রত্যেক মুসলিমের উপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। (সূত্র: ইবনে মাজাহ, হাদীস: ২২৪)

    এই হাদীসগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসলমানরা এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান পশ্চিমা সভ্যতা এক নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে সেই জ্ঞানান্বেষীদের জন্য।

    আজকের তথাকথিত “তথ্যযুগ” (information age)—একটি পণ্যমুখী, ভোগবাদী ও ব্যক্তি-আসক্ত সময়, যেখানে তথ্য আর জ্ঞানের পার্থক্য প্রায় বিলুপ্ত। কোনটা উপযোগী, আর কোনটা কেবল আকর্ষণনির্ভর—এই পার্থক্য নির্ধারণে এখন প্রধান মাপকাঠি হচ্ছে বিজ্ঞাপন আর মানুষের আকাঙ্ক্ষা। এমন পরিবেশে টিকে থাকতে চাইলে, শুধু তথ্য খোঁজা নয়—তথ্যের ভেতর থেকে মূল্যবান জ্ঞান চিনে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন জরুরি।

    একটি সহজ উদাহরণ ধরা যাক—আপনি যদি কোনো বড় অনলাইন বইয়ের দোকান বা সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে “শিশু লালন-পালন” টাইপ করেন, তাহলে কয়েক হাজার বই, প্রবন্ধ, ওয়েবসাইট এক মুহূর্তেই সামনে চলে আসবে। বাস্তবতা হলো, সময় ও অর্থের বিচারে এসব সব কিছু পড়া বা যাচাই করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।

    তবুও, যদি কেউ সিদ্ধান্ত নেয়—সে জীবনের বাকি সময় শুধুই এসব পড়ে যাবে, কাজকর্ম ভুলে, পরিবার-সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, তাহলে বলা যাবে সে হয়তো “জ্ঞান অন্বেষণ” করছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—সে কি সত্যিই জ্ঞানী হয়ে উঠছে?

    উপরোক্ত হাদীসগুলোর প্রেক্ষিতে যখন আমরা জ্ঞান অন্বেষণের বিষয়ে কথা বলি, তখন একটি মৌলিক প্রশ্ন সামনে আসে—আরবিতে ব্যবহৃত শব্দ ইল্‌ম (علم) এর অনুবাদ। সাধারণভাবে এটি “knowledge” বা “জ্ঞান” হিসেবে অনুবাদ করা হয়, আবার অনেক সময় “science” বা “বিজ্ঞান” বলেও ব্যাখ্যা করা হয়। কিন্তু যদি ইল্‌ম মানে হয় ‘জ্ঞান’, তাহলে তথাকথিত ‘তথ্য’—যা ইংরেজিতে information—তার জন্য ইসলামি পরিভাষায় কী শব্দ রয়েছে?

    এই প্রশ্ন আরও গভীরতর হয় যখন আমরা ভাবি—যে হাদীসগুলোতে জ্ঞান অন্বেষণের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো কি তথ্য খোঁজার দিকেও ইঙ্গিত করে? ইসলামি ঐতিহ্যে কি এমন কোনো বোধগম্য মানদণ্ড আছে, যা আমাদের তথ্য আর জ্ঞান—এই দুইয়ের মধ্যে অর্থবহ পার্থক্য করতে শেখায়?

    এমন কিছু হাদীস আছে, যেটি এই জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে সহায়তা করে। বহু প্রজন্ম ধরে ইসলামি আলেমগণ এই হাদীসটির ওপর গভীর চিন্তা করেছেন এবং ধারাবাহিকভাবে তা এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে পৌছে দিয়েছেন। যদিও আধুনিক, উপনিবেশিক ধাঁচে গড়ে ওঠা ‘পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত’ মুসলিম আমলাতন্ত্র এই জ্ঞানের ধারা থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন।

    عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: العِلْمُ ثَلاَثَةٌ: آيَةٌ مُحْكَمَةٌ، أَوْ سُنَّةٌ قَائِمَةٌ، أَوْ فَرِيضَةٌ عَادِلَةٌ، وَمَا سِوَى ذَلِكَ فَهُوَ فَضْلٌ.

    অনুবাদ: আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: "জ্ঞান তিন প্রকার: সুস্পষ্ট আয়াত, ন্যায়সঙ্গত ফরজ, এবং প্রতিষ্ঠিত সুন্নাহ। এর বাইরে যা কিছু আছে, তা অতিরিক্ত।" (সূত্র: সুনান আবু দাউদ; হাদীস নম্বর- ২৮৮৫)


    এই হাদীস আমাদের সামনে এক অবিশ্বাস্য শক্তিশালী প্রশ্ন তুলে ধরে: তথ্য কি আমাদের গড়ার মতো শক্তি রাখে, নাকি শুধু বিভ্রান্ত করে? জ্ঞান কি সত্য ও কর্মের মধ্যে সেতুবন্ধন, নাকি শব্দ ও সংখ্যার স্তূপ?

    আজকের তথ্যময় জগতে মুসলিমদের চ্যালেঞ্জ হলো—তারা যে তথ্য সংগ্রহ করছে, তা কি ইল্‌ম ? নাকি তারা কেবল অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ততায় ডুবে যাচ্ছে?

    উপরিউক্ত হাদীসটি আমাদেরকে একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়—মুসলিমদের উচিত তাদের জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্য ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা। কারণ মানুষ মরণশীল, তার সময় সীমিত। যদি আমরা সারাজীবন জ্ঞান অন্বেষণে কাটিয়ে দিই, কিন্তু সেই জ্ঞান কোন মানদণ্ডে যাচাই না করি, তাহলে আমরা হয়তো অনর্থক বিষয়েই জীবন ব্যয় করে ফেলি, অথচ যা প্রয়োজন ছিল তা অপূর্ণই রয়ে যায়।

    আজকের আধুনিকতাবাদী কিংবা তথাকথিত প্রগতিশীল মুসলমানেরা যখন প্রথম এই হাদীসটি শোনে, তখন তারা একে হালাল বা হারাম-এর চশমায় দেখার চেষ্টা করে। অথচ এই হাদীসের মূল কথা এটি নয়। এটি আসলে জ্ঞানের স্তরবিন্যাস ও অগ্রাধিকারের প্রশ্ন—কোন জ্ঞান আগে, কোনটা পরে, কোনটা মূল্যবান, আর কোনটা সময়ের অপচয়।

    এই জ্ঞানের শ্রেণিবিন্যাসের ঐতিহ্যটাই মুসলিম বিশ্ব হারিয়েছে আধুনিকতা ও ঔপনিবেশিক যুগে। একসময় যা ছিল মুসলিম রাষ্ট্রের শক্তি, আজ তা হারিয়ে গেছে এক বিদেশি সভ্যতার কাঠামোয়। এখন পশ্চিমা বিশ্ব বলে দেয়—কোনটা “গুরুত্বপূর্ণ” জ্ঞান, আর কোনটা “অপ্রয়োজনীয়।” তাদের সার্টিফিকেট ও ডিগ্রির কাঠামোই হয়ে উঠেছে এক ধর্মনিরপেক্ষ পুরস্কার-শাস্তির ব্যবস্থা, যেখানে “প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি” মানেই “প্রকৃত জ্ঞান।”

    এটাই আজকের ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার সবচেয়ে বড় প্রতারণা—নাম মুসলিম, সিলেবাস পশ্চিমা।

    (৪)

    আধুনিক যেসব মুসলমান পশ্চিমা রাজনৈতিক পুঁজি-বিনিয়োগ ব্যবস্থার ‘অনুমোদন’ পেয়েছে এবং নিজেদের সমাজে সীমিত পরিমাণ ক্ষমতা ধরে রেখেছে, তারা অধিকাংশই পশ্চিমা আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গির ভেতরে পুরোপুরি ডুবে গেছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি একটি ইউটিলিটারিয়ান (উপযোগবাদী) ও অর্থনীতি-কেন্দ্রিক চিন্তার উপর দাঁড়িয়ে, যেখানে বলা হয়—যে জ্ঞান সম্পদ সৃষ্টি করে না, তা মূল্যহীন। আগে বলা হতো, “জ্ঞানই শক্তি”; এখন বলা হচ্ছে, “জ্ঞানই সম্পদ।”

    কিন্তু ইসলামী ঐতিহ্য জ্ঞান ও সম্পদের সম্পর্ক নিয়ে কী বলে?
    قال رسول الله ﷺ: «لا حسد إلا في اثنتين: رجل آتاه الله مالاً فسلطه على هلكته في الحق، ورجل آتاه الله الحكمة فهو يقضي بها ويعلّمها»
    অনুবাদ: আনাস (রাদিআল্লাহু তায়া’লা আনহু) বর্ণিত রাসূল (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "দুই ব্যক্তিকে ছাড়া হিংসা করা বৈধ নয়: (১) যাকে আল্লাহ ধন দিয়েছেন এবং সে তা সৎ পথে ব্যয় করে; (২) যাকে আল্লাহ হিকমা (জ্ঞান ও প্রজ্ঞা) দিয়েছেন, এবং সে তা অনুযায়ী বিচার করে ও অন্যদের শিক্ষা দেয়। (সূত্র: সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৮১৫)

    যদি আমরা কুরআনের দৃষ্টিতে বিশ্বাস করি যে, সম্পদ এই পৃথিবীর মোহময় ফাঁদগুলোর একটি, তাহলে এই হাদীসের গভীরতা আমাদের সামনে উন্মোচিত হয়। ইসলামী ঐতিহ্য আমাদের শেখায়—কীভাবে জ্ঞান ও সম্পদের মাঝে সূক্ষ্ম এবং অর্থবহ পার্থক্য করতে হয়।

    হযরত আলী (রাদিআল্লাহু তায়া’লা আনহু) যখন নেতৃত্বে আসেন, তখন উমাইয়া বংশীয় রাজতন্ত্রের সূচনা হচ্ছিল। তিনি নিজ চোখে দেখেছিলেন—কীভাবে জ্ঞানের সাথে সম্পদের দ্বন্দ্ব দিনকে দিন প্রকট হয়ে উঠছে। পরবর্তীতে আব্বাসীয় আমলে এই দ্বন্দ্ব আরো ঘনীভূত হয়। সে সময়ে জাফর সাদিক, আবু হানিফা ও ইবনে হানবাল (রাহি.)-এর মতো মহৎ জ্ঞানীরা কারাগারে বন্দি ছিলেন—কারণ তাঁরা মানুষকে সত্য জ্ঞানের দিকে ডাকতেন, আর রাজা-বাদশারা মানুষকে বিলাসিতা ও দুনিয়ার মোহে ভোলাতে চাইতেন।

    হযরত আলী (রাদিআল্লাহু তায়া’লা আনহু) বলেছেন,

    "জ্ঞান সম্পদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। জ্ঞান তোমাকে রক্ষা করে, আর সম্পদকে তোমাকে রক্ষা করতে হয়। জ্ঞান ব্যয় করলে বৃদ্ধি পায়, আর সম্পদ ব্যয় করলে হ্রাস পায়। জ্ঞান শাসক, আর সম্পদ শাসিত। সম্পদের মালিকরা জীবিত থাকা অবস্থায়ও মৃত, কিন্তু জ্ঞানীরা মৃত্যুর পরেও জীবিত থাকেন; তাদের দেহ অনুপস্থিত হলেও তাদের প্রভাব হৃদয়ে বিদ্যমান থাকে।"
    (সূত্র: এই বাণীটি ইবনু আবদুল বার (রহ.) এর "জামি' বায়ানুল ইলম ওয়া ফাদলিহি" গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে।)

    এই বর্ণনায় একেবারে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—জ্ঞান কখনোই সম্পদের সমান নয়। বরং সম্পদ একধরনের ক্ষয়িষ্ণু এবং বিভ্রান্তিকর বোঝা, আর জ্ঞান হলো একটি বৃদ্ধি পাওয়া ও মাঝে মাঝে নবজীবন দানকারী অনুগ্রহ।

    আলী (রাদিআল্লাহু তায়া’লা আনহু) এই দৃষ্টিকোন আমাদের সতর্ক করে দেয়—জ্ঞান ও সম্পদকে একাকার করলে পথ হারাতে হবে। পশ্চিমা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার আসল চেহারা—যেখানে বৈষম্য, লোভ এবং মানবতা ধ্বংসের চক্র অব্যাহত—তা এখন অনেকটাই উন্মোচিত। এ বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে, মুসলমানদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে নিজেদের ঐতিহ্যে ফিরে যাওয়া এবং একটি বিকল্প পথ নির্মাণ, যা জ্ঞান, শক্তি ও সম্পদের সম্পর্ক নিয়ে ইসলামী আলোচনার ভিত্তিতে গড়ে উঠবে।

    এই পথ হতে পারে ভবিষ্যতের নতুন দিগন্ত—একটি পুনর্জাগরিত দর্শন, যা মানুষ ও পরিবেশ উভয়ের মুক্তির উপায় হয়ে উঠবে।

    ইসলামি বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গিতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত যারা, যারা এর মূল্যবোধ ও আনুগত্যের কাঠামোকে মেনে নেন—তাদের দৃষ্টিতে আজকের পশ্চিমা সভ্যতা এক গভীর দ্বৈতব্যধিতে আক্রান্ত। কারণ এই সভ্যতা একদিকে যেমন সর্বোচ্চ বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষকে উৎসাহিত করে, অন্যদিকে ঠিক তেমনভাবেই তা সবচেয়ে নিচু স্তরের অন্যায়, অপসংস্কৃতি, ভোগবাদ ও লোভকে প্রশ্রয় দেয়। এমন এক সমাজে বাস করে, তার শিক্ষা ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে—যারা সত্যিকার অর্থে ইসলামি শিক্ষায় মনোযোগী, তাদের সামনে একটি মৌলিক চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়ায়। হাদীস ও ইসলামি শিক্ষায় বারবার উঠে এসেছে, কোন জ্ঞান মূল্যবান, কোনটা তুচ্ছ; কোনটি মানুষকে আল্লাহর দিকে টানে, আর কোনটি নিছক দুনিয়াবি স্বার্থে বন্দী রাখে। ইসলামে জ্ঞান মানে কেবল তথ্য নয়, বরং তাকওয়া, নৈতিকতা, বিনয় এবং দায়িত্ববোধ তৈরি—এগুলোই প্রকৃত আলিম বা জ্ঞানীর পরিচয়। যে শিক্ষা এসব তৈরি করতে ব্যর্থ হয়, তা মূলত ত্রুটিপূর্ণ।

    চলুন এবার দেখি, পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থার ফলাফল কী—এবং ইসলামের প্রত্যাশার সঙ্গে তা কতোটা মেলে। পশ্চিমে একজন ব্যক্তি কঠিন একাডেমিক শিক্ষা পাস করে বের হতে পারে, কিন্তু হতে পারে সে নৈতিকভাবে দেউলিয়া, আত্মিকভাবে শূন্য। এমনকি সে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগ্রি ও সম্মান পেয়েছে, কিন্তু একইসাথে সে হতে পারে একজন নাস্তিক, ধর্মত্যাগী, কিংবা শয়তানবাদী। পশ্চিমা আধিপত্যের দুনিয়ায় এদেরকে সফল ব্যাংকার, রাজনীতিবিদ কিংবা কর্পোরেট প্রধান হিসেবে দেখা যেতে পারে। কিন্তু একজন মুসলমানের দৃষ্টিতে এইসব শিক্ষাগত ফলাফল স্পষ্টভাবে ব্যর্থতা—হয় শিক্ষার্থী নিজের লক্ষ্য হারিয়েছে, না হয় গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই পচে গেছে।


    শিক্ষা ব্যবস্থা (১ম পর্ব): আধুনিক শিক্ষার ব্যর্থতা এবং সীমাবদ্ধতা

    https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...%E0%A6%B7%E0%A 6%BE-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A 7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE-%E0%A7%A7%E0%A6%AE-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A6%86%E0%A6%A7%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A 6%95-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A 6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A 6%A5%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%B8%E0%A7%80%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A 6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%A4%E0%A6%BE

    শিক্ষা ব্যবস্থা (২য় পর্ব): ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থাকে পশ্চিমাকরণ

    https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...%E0%A6%B7%E0%A 6%BE-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A 7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE-%E0%A7%A8%E0%A7%9F-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A 7%80-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A 6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8% E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A 6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%A3

    فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَ انۡتَظِرۡ اِنَّهُمۡ مُّنۡتَظِرُوۡنَ

  • #2
    জাযাকাল্লাহ। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আপনার সবকয়টা লেখা পড়া হয়েছে। আমি আশা করছি, আপনি এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করবেন। আল্লাহ আপনার কলমে বারাকাহ দান করুন।

    Comment


    • #3
      প্রিয় Ibnul Irfan ভাই, আল্লাহ আপনার লিখনীতে বরকত দান করুন। নিয়মিত লিখে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন
      একটি অনুরোধ ভাই, আমাদের মত সাধারণ পাঠকদের জন্য আরেকটু সহজবোধ্য ভাষায় লিখলে ভাল হয়।

      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment

      Working...
      X