Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩৬ || “আরব বিশ্বে ইসরাইলের আগ্রাসী নীল নকশা” ।। মাহমুদ শীছ খাত্তাব || ৫ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩৬ || “আরব বিশ্বে ইসরাইলের আগ্রাসী নীল নকশা” ।। মাহমুদ শীছ খাত্তাব || ৫ম পর্ব

    আরব বিশ্বে ইসরাইলের আগ্রাসী নীল নকশা
    ।।মাহমুদ শীছ খাত্তাব ||
    এর থেকে৫ম পর্ব


    ইরাকে

    লর্ড রথচাইল্‌ড নামক একজন য়াহূদী পুঁজিপতির নিকট আরিশ, সিনাই ও সাইফ্রাস দ্বীপ'[1] য়াহূ দী উদ্বাস্তুদের বসতি স্থাপনের ভবিষ্যত পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত নকশা হার্জেল একটি চিঠির মাধ্যমে ১৯০২ সালে প্রেরণ করেন।

    য়াহূ দী নেতা হার্জেল উক্ত চিঠিতে এ বিষয়ে খুব জোর দিয়ে বলেছেন যে, য়াহূ দী বসতি স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো রাজনৈতিক। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় তীরবর্তী ঐ এলাকায় য়াহূদী কলোনী স্থাপন তাদেরকে প্যালেস্টাইনে খুঁটি গাড়তে উৎসাহিত করবে।

    এই সংগে হার্জেল সর্বপ্রথম দ্ব্যর্থহীনভাবে ইরাকে কলোনী স্থাপনের একটি গোপন পরিকল্পনা বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করেন।

    উল্লেখ্য যে, ইরাকে কলোনী স্থাপনের উক্ত পরিকল্পনা হঠাৎ করে পেশ করা হয়নি। ১৯০৩ সালের ৪ঠা জুন তারিখে তৎকালীন উসমানীয় খিলাফতের অধীনে মিসরের প্রধানমন্ত্রী ইযযত পাশার নিকটে হার্জেল কর্তৃক লিখিত একটি পরে ইরাকে ও একর (Acre) জেলাতে যাহ্ দী কলোনী স্থাপনের অনুমতি দান ও এ ব্যাপারে কোনরূপ বাধা না দেওয়ার বিষয়ে তাঁর পূর্ব প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।[2]

    ইরাকে য়াহূদী আগ্রাসী লক্ষ্য শুরু হয় আন্তর্জাতিক য়াহূদী সংস্থা গঠনের ঊষালগ্ন থেকেই। সূচনাকাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত, যে সময়ে ইরাকের অধিকাংশ য়াহূ দী অধিবাসী অধিকৃত প্যালেস্টাইনে হিজরত করে, য়াহূদীরা সে সময়ে একটি বড় ধরনের প্রচেষ্টা নেয় এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতা অর্জনের জন্য বিরাট অংকের টাকা ব্যয় করে। তারা সৌধ নির্মাণের জন্য বহু শহরে জমি ও কৃষিকাজের জন্য বহু কৃষি জমি ক্রয় করে। তাদের এই অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারলাভ করে দীওয়ানীর পাহাড়িয়া ‘ডেহুক, 'নাহিরা' 'আমারা এলাকায় যেখানে তারা সর্বাপেক্ষা উর্বর ভূমি ক্রয় করে।

    তারা খোদ বাগদাদেও বিরাট এলাকা কিনে নেয়। বিশেষ করে কার- রাদার (Kerreda) পূর্ব উপকণ্ঠে। তবে সুখের বিষয়, আযমেই (Azmieh) এলাকার বাসিন্দারা য়াহূ দীদের গোপন দুরভিসন্ধি বুঝতে পারে এবং তাদের নিকট জমি বিক্রির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

    ১৯৪৮ সালে য়াহূ দীরা ইরাক ছেড়ে চলে আসার সময় প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিল এই বলে যে, “সে দিন অচিরেই আসবে, যে দিন আমরা পুনরায় ইরাকে ফিরে আসবো এবং আমাদের ভূমি ও সম্পত্তির উপর দাবী পেশ করবো ।"

    'য়াহূ দীদের সম্প্রসারণবাদী তৎপরতা শুধু মাত্র নীল ও ইউফ্রেটিসের মধ্যবর্তী এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং টাইগ্রীস নদীর এলাকাসহ সমগ্র ইরাককে কলোনী বানানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকবে যাতে তাদের সীমানা উত্তর ও পূর্ব ইরাকে যথাক্রমে তুর্কী ও ইরানী সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত হ'তে পারে। ১৯৬৭-এর ৬ই জুন জেরুজালেম দখলের দিন (তৎকালীন ইসরাঈলী প্রধান মন্ত্রী) মোশেদায়ান ঘোষণা করেন, “আমরা জেরুজালেম অধিকার করেছি এবং এখন ইয়াস্ত্রের (মদীনা) ও বাবেল দখলের পথে রয়েছি।"


    সউদী আরব ও আরব উপসাগরে

    য়াহূ দীরা সর্বদা আকাবা উপসাগর তীরবর্তী সউদী ভূমিসমূহ দখলের আশা পোষণ করে—যাতে পূর্ব সীমান্তে ১৫ মাইল দীর্ঘ একটি নিরাপদ বাউণ্ডারী সৃষ্টি হয়। ইসরাঈল আকাবা উপসাগরকে একটি হ্রদে পরিণত করতে চায় যা লোহিত সাগর এবং প্রাচ্যের আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশ- সমূহের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করবে

    ইসরাঈল তার প্রভাব বলয় দক্ষিণে বহু দূরবর্তী মদীনা শরীফ পর্যন্ত বিস্তৃত করতে চায় এই অজুহাতে যে, এই অঞ্চলসমূহ এককালে তাদেরই ছিল এবং সেখান থেকে মুহাম্মাদ (স.) তাদেরকে বের করে দিয়েছিলেন।

    তারা আরও উচ্চ আশা পোষণ করেন যে, তাদের সীমানা বর্ধিত হবে মদীনা শরীফ থেকে ১৯২ মাইল দক্ষিণে 'ইয়ামবা' (Yamba) বন্দর পর্যন্ত এবং নজদের তৈলকূপ এলাকা পর্যন্ত। এর পিছনে তারা এই উদ্ভট দাবী পেশ করে যে, আরবদের তুলনায় তারাই তেল সম্পদের ব্যবস্থাপনায় অধিকতর যোগ্যতার অধিকারী।

    য়াহূদীরা আরব সাগর তীরবর্তী আমীর শাসিত ও শেখ শাসিত এলাকা- সমূহ নিজ অধিকারে আনতে চায় যাতে এই এলাকার তেল খনিগুলোকে কাজে লাগানো যায় এবং ভারত ও দূরপ্রাচ্যের এশীয় দেশসমূহের মধ্যে যোগাযোগের সূত্র হিসেবে এই এলাকাকে ব্যবহার করা যায়।

    ১৯৬৭ সালে ৬ই জুন জেরুজালেম দখলের পর মোশেদায়ান ঘোষণা করেছিলেন যে, মক্কা-মদীনা দখলের পথ এখন আমাদের জন্য উন্মুক্ত । আরব দেশসমূহে ইসরাঈলের সম্প্রসারণবাদী লালসার কোন শেষ নেই। তারা দাবী করে যে, আরব দেশসমূহের অগাধ সম্পদ ভোগ করার ন্যায্য হকদার তারাই। কেননা তারাই এ সব দেশে পাশ্চাত্য সভ্যতা বহন করে এনেছে এবং তারাই আরবদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূল কারণ।

    [1]. ভূগোলে উল্লেখিত সাইপ্রাস দেশ নয় বিস্তারিত দেখুন Laxicon of the countries, P. 7-26.
    [2]. Hertzel’s memoirs P. 1503-4






    আরও পড়ুন​
    ৪র্থ পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------------------- ৬ষ্ঠ পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 4 days ago.
Working...
X