Announcement

Collapse
No announcement yet.

(প্রস্তাবিত) করণীয়: নৈরাজ্যবাদ কি কোন সমাধান হতে পারে?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • (প্রস্তাবিত) করণীয়: নৈরাজ্যবাদ কি কোন সমাধান হতে পারে?

    যেকোনো সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার আগে সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে—সেই সমস্যাটিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করা। কারণ যদি আমরা জানিই না সমস্যাটা আসলে কোথায়, তাহলে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করাটাই বৃথা হয়ে যায়। এখন আমরা যে সমস্যার মুখোমুখি, সেটি কেবল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নয়, বরং আরও গভীর, আরও প্রাতিষ্ঠানিক।

    আমরা যদি দৈনন্দিন জীবনে পালনীয় ইবাদতগুলোর দিকে তাকাই—যেমন নামাজ, রোজা, হজ্জ বা দান-সদকা—এইসব ইবাদত নিয়ে পাশ্চাত্য ব্যবস্থার তেমন কোনো আপত্তি নেই। তারা এইসবকে ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয় হিসেবে মেনে নেয়। আপনি নামাজ পড়েন, আপনি রোজা রাখেন—এগুলো আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তারা এগুলো নিয়ে মাথা ঘামায় না, কারণ এগুলো সামাজিক বা রাজনৈতিক কাঠামোতে কোনো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় না।

    আসল সংকট শুরু হয় তখন, যখন ইসলাম কেবল ব্যক্তিগত ইবাদতের সীমা ছাড়িয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সমাজব্যবস্থা হিসেবে আবির্ভূত হয়। যখন ইসলাম বলে, রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি হবে আল্লাহর নির্দেশনা, বিচারব্যবস্থা পরিচালিত হবে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে, অর্থনীতি হবে সুদমুক্ত, এবং সমাজব্যবস্থা হবে ইনসাফভিত্তিক—তখনই সমস্যার সূত্রপাত হয়। পশ্চিমা বিশ্ব তখন চমকে ওঠে। কারণ, এটি কেবল একটি ধর্মীয় মতবাদ নয়, এটি একটি বিকল্প সভ্যতা।

    এই বিকল্প সভ্যতা তাদের বর্তমান সেক্যুলার কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করে। আর এই সেক্যুলারিজম, যা তারা প্রতিষ্ঠা করেছে, সেটার মূল ভিত্তি হচ্ছে এমন একটি শাসনব্যবস্থা, যেখানে ধর্মের কোনো প্রভাব থাকবে না। তাত্ত্বিকভাবে সেক্যুলারিজম ধর্মহীনতা নয়, আবার ধর্মবিশ্বাসও নয়। বরং এটি এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে সব ধর্মের প্রতি সমান দূরত্ব বজায় রাখা হয়। এক অর্থে সব ধর্মই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু একই সঙ্গে সব ধর্মই নিরপেক্ষ বা অপ্রাসঙ্গিক।

    এই কারণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলতে পারেন, “আমরা ইসলামকে ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি আছি।” তার বক্তব্যটা স্পষ্ট করে দেয়, সমস্যা ধর্ম নিয়ে নয়, সমস্যা ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে। মুসলমানরা আমেরিকায় এসে সিনাগগ, চার্চ কিনে সেগুলো মসজিদে রূপান্তর করেছে—তাতে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। এমনকি ইসলাম গ্রহণ করেছে অসংখ্য অমুসলিম, এটাও তারা মেনে নিয়েছে। কারণ, ইসলাম যদি ব্যক্তিগত পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকে, তবে তাতে তাদের শাসনব্যবস্থার কোনো সমস্যা হয় না।

    কিন্তু ইসলাম যখন রাষ্ট্রব্যবস্থা হিসেবে কথা বলে, শাসনের দৃষ্টিকোণ থেকে কথা বলে, তখনই তা হয়ে যায় ‘ফান্ডামেন্টালিজম’। আর কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই ইসলামি আদর্শকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে—পশ্চিমা বিশ্ব সেই সুযোগটাই নিয়ে ফান্ডামেন্টালিজমকেই সন্ত্রাসবাদ হিসেবে চিত্রিত করে। একে তারা যুদ্ধঘোষণার অজুহাত বানিয়ে ফেলে। ফলে কখনও তারা ‘সন্ত্রাসবাদের’ বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, কখনও ‘মৌলবাদের’ বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু মূল যুদ্ধটা হয় ইসলামি শাসনব্যবস্থা এবং সামাজিক রীতিনীতি—এই গোটা কাঠামোটার বিরুদ্ধে।

    তারা কখনোই ইসলামি আকিদা, ইবাদত, নামাজ, রোজা, দোয়া, তাসবীহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না। এসব তো বরং তাদের সেক্যুলার সমাজে ধর্মীয় স্বাধীনতার অংশ হিসেবেই স্থান পায়। তাদের লড়াই হচ্ছে সেই ইসলামের বিরুদ্ধে, যা সমাজ বদলাতে চায়, যা শাসনক্ষমতা আল্লাহর হাতে ফিরিয়ে দিতে চায়, যা দুনিয়ার শোষণমূলক ক্ষমতা কাঠামো ভেঙে দিতে চায়।

    এখানেই এসে দাঁড়ায় ইনকিলাব বা বিপ্লবের প্রশ্ন। আধুনিক দুনিয়ায় বিপ্লব মানে হচ্ছে—রাষ্ট্রের সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনা। বিপ্লব মানে কেবল কোনো ধর্মের প্রচার বা গ্রহণ নয়, বরং পুরো শাসনব্যবস্থাকে আমূল বদলে ফেলা। এজন্য আমরা দেখি, কনস্টানটাইন খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করার পর পুরো রোমান সাম্রাজ্য সেই ধর্মে দীক্ষিত হয়ে যায়, যা ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় পরিবর্তন। কিন্তু তবুও ইতিহাস তাকে কোনো বিপ্লব হিসেবে মূল্যায়ন করে না। কেননা, এই ধর্মান্তর কোনো রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক কাঠামো বদলায়নি।

    আসল বিপ্লব হবে তখন, যখন শাসনব্যবস্থা বদলাবে, সমাজের নীতি ও আইন পাল্টে যাবে, অর্থনীতির ভিত্তি রূপান্তরিত হবে, এবং এসব কিছুই ঘটবে একটি নতুন আদর্শকে কেন্দ্র করে—যেমন ইসলামি আদর্শ।

    তাহলে এখন প্রশ্ন আসে,
    এই বিপ্লব বা পরিবর্তন কি নৈরাজ্যের মাধ্যমে হবে?
    নৈরাজ্যবাদ বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা বা ক্ষমতার কাঠামোর বিরুদ্ধে একটি বিকল্প ব্যবস্থাপনার উত্থান। এই বিকল্প ব্যবস্থা যখন সমাজে তার অবস্থান সুদৃঢ় করতে শুরু করে, মানুষকে প্রভাবিত করে এবং সামাজিক বাস্তবতায় প্রভাব বিস্তার করতে চায়, তখন তা স্বভাবতই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় পূর্বতন ব্যবস্থার প্রতি। এ চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান কাঠামোর জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, ফলে তারা প্রতিরোধে নামে। এই প্রতিরোধের মুখোমুখি সংঘর্ষ, দমন-পীড়ন ও বিপরীতমুখী প্রচেষ্টার ফলে এক ধরণের ‘নৈরাজ্য’ বা গণ্ডগোলপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যেখানে পুরনো আর নতুন ব্যবস্থার মধ্যকার টানাপোড়েন প্রকট হয়ে ওঠে।

    এই বাস্তবতার এক উজ্জ্বল ও ইতিহাসপ্রসূত উদাহরণ হলো আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন। তিনি যখন মক্কায় নবুয়তের দাওয়াত শুরু করেন, তখন মক্কায় কুরাইশদের নেতৃত্বে একটি জমাটবাঁধা সামাজিক ও ধর্মীয় কাঠামো প্রতিষ্ঠিত ছিল। এই কাঠামোর কেন্দ্রে ছিল পৌত্তলিক উপাসনা, গোত্রকেন্দ্রিক স্বার্থ, শ্রেণিভিত্তিক বৈষম্য ও আর্থিক শোষণ। এই ব্যবস্থা অনেকের জন্য সুবিধাজনক হলেও, এটি অধিকাংশ মানুষের জন্য ছিল অবিচার, অবমাননা এবং নিপীড়নের উৎস।

    এই পটভূমিতে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ঘোষণা ছিল অত্যন্ত বিপ্লবী। এটি কেবল একটি আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় বাক্য নয়, বরং এক গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘোষণাও বটে। এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি বললেন, সমাজের প্রচলিত ‘মুরুব্বি’ শক্তি, প্রতিমা, গোত্রীয় অহংকার, ধন-সম্পদ কিংবা রাজনৈতিক কর্তৃত্ব—সবকিছুকে অস্বীকার করে শুধুমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে হবে। এটি সরাসরি মক্কার তৎকালীন ক্ষমতা কাঠামোর ভিত্তিমূলেই আঘাত করেছিল।

    নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই দাওয়াত প্রথমে গোপনে, পরে প্রকাশ্যে পরিচালিত হয়। ধীরে ধীরে এটি বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে—দাস, নিপীড়িত, যুবক এবং এমনকি কিছু প্রভাবশালী লোকও এতে আকৃষ্ট হন। তখন কুরাইশ নেতৃবৃন্দ বুঝতে পারে, এটি নিছক ধর্মীয় প্রচার নয়, বরং একটি মৌলিক ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তনের প্রক্রিয়া।

    এরপর শুরু হয় সংঘর্ষের ধারা। তারা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবী (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুম)দের ওপর চালাতে থাকে অবর্ণনীয় নির্যাতন। হযরত বিলাল (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু.)-কে বালুর উপর ফেলে পাথর চাপিয়ে রাখা হয়, সুমাইয়্যাহ (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা)-কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, আবু যর গিফারী (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু)-কে মারধর করা হয়, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই কাবার সামনে আক্রমণের শিকার হন—এই সমস্ত ছিল বিদ্যমান ব্যবস্থার প্রতিরোধের বহিঃপ্রকাশ। তারা চেয়েছিল এই নতুন বার্তা থেমে যাক, এই দাওয়াত নিভে যাক, আর সমাজে বিদ্যমান কাঠামো আগের মতোই বজায় থাকুক।

    কিন্তু ইসলামি দাওয়াত থেমে যায়নি। বরং ক্রমাগত বাধার মুখে এটি আরও সংগঠিত ও পরিপক্ক হতে থাকে। কষ্ট, হিজরত, বয়কট, ঘেরাও—সব কিছুর মধ্য দিয়ে গড়ে উঠতে থাকে একটি নতুন মুসলিম উম্মাহ, যাদের মধ্যে ছিল একাত্মতা, ন্যায়ের প্রতি দৃঢ়তা এবং তাওহিদের চেতনা।

    শেষ পর্যন্ত নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় হিজরত করেন এবং সেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এই রাষ্ট্র ছিল বিদ্যমান মক্কী ব্যবস্থার এক পূর্ণ বিকল্প। এখানেই ইসলাম একটি সংগঠিত সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোতে পরিণত হয়। রাষ্ট্র, বিচার, যুদ্ধ ও শান্তি—সবই পরিচালিত হতে থাকে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী।

    মদিনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর পুরনো ও নতুন ব্যবস্থার মধ্যে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বদর, উহুদ, খন্দক। মক্কার কাঠামো প্রতিটি যুদ্ধে ইসলামী রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রতিটি যুদ্ধ মুসলমানদের জন্য শিক্ষা, ঐক্য এবং আত্মপ্রত্যয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে।

    এই ধারাবাহিক দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত পরিণতি ছিল ফতহে মক্কা—যখন নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোনো রক্তপাত ছাড়াই মক্কা বিজয় করেন। সেই জায়গা, যেখান থেকে তাকে নির্যাতনের মাধ্যমে বের করে দেওয়া হয়েছিল, সেই জায়গাতেই তিনি ফিরে এলেন বিজয়ী হিসেবে। এটি ছিল ঐ নৈরাজ্যিক পরিস্থিতির পরিণতি, যেখানে একটি পুরনো জুলুমের ব্যবস্থা পরাজিত হয় এবং একটি নতুন ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা সমাজে স্থান করে নেয়।

    এই পুরো ইতিহাস প্রমাণ করে যে ইসলামি দাওয়াত একটি নির্দিষ্ট ধরনের নৈরাজ্যিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই সমাজ পরিবর্তন করে, কিন্তু সেটি বিশৃঙ্খল নয়, বরং অত্যন্ত লক্ষ্যভিত্তিক, সংগঠিত ও নৈতিক চেতনায় উজ্জ্বল। এটি কোনো বিক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া নয়, বরং জ্ঞান, দাওয়াত, সবর ও কৌশলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত অন্যায় ব্যবস্থার বিপরীতে একটি ন্যায়নিষ্ঠ ব্যবস্থার সুসংহত রূপ।

    এটাই ছিল সেই নৈরাজ্য, যা আদতে ছিল এক নতুন সভ্যতার জন্ম।

    ভূমিকা পর্বে আমি হাকিমুল উম্মাহ শায়খ আয়মান আল জাওয়াহিরি–এর দাওয়াতি কাজের মাকসাদ নিয়ে কিছু প্রাথমিক কথা বলেছিলাম। লক্ষ্য করার মতো বিষয় হলো, সেখানে কোথাও “নৈরাজ্যবাদ” বা “অরাজকতা” শব্দটি ছিল না। বরং আলোচনার প্রতিটি বাক্যে ছিল স্পষ্ট দিকনির্দেশনা—কোথা থেকে শুরু করতে হবে, কিসের ভিত্তিতে পথ চলতে হবে। তাহলে এখন প্রশ্ন উঠছে: সমাধান বা উত্তরণে কেন “নৈরাজ্যবাদ” নামক ধারণা জড়ানো হচ্ছে?

    এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আগে বুঝতে হবে শায়খ আয়মান কী বলেছিলেন, এবং কেন বলেছিলেন। তাঁর মতে, দাওয়াতি কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অবিচ্ছেদ্য ভিত্তি হচ্ছে মেরুকরণ—একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ও বিশ্বাসভিত্তিক ফয়সালা। অর্থাৎ, আপনি সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক কাঠামোকে দ্বিত্বে ভাগ করবেন: একদিকে থাকবে ইমান, অন্যদিকে কুফর; একদিকে হক, অন্যদিকে বাতিল; একদিকে থাকবে আল্লাহর বিধানভিত্তিক ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা, অন্যদিকে থাকবে মানবগঠিত ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো।

    এটাই হলো মেরুকরণ—মানসিক বিভাজন, চিন্তার শুদ্ধীকরণ, এবং বিশ্বাসের খাঁটি সীমারেখা টেনে দেওয়া। আপনি যখন এই মেরুকরণ করবেন, তখন আপনি এমন এক জায়গায় দাঁড়াবেন, যেখান থেকে সত্য ও মিথ্যার দূরত্ব চোখে পড়বে। তখন আপনি স্রোতের বিপরীতে দাঁড়াবেন, প্রশ্ন তুলবেন, মুখোশ খুলে দেবেন। আর তখনই শুরু হবে ‘নৈরাজ্য’ বলে লেবেল লাগানোর খেলা।

    বস্তুত, আপনি কিছুই করেননি—শুধু সত্যকে স্পষ্টভাবে বলেছেন। কিন্তু তবুও আপনাকে “নৈরাজ্যবাদী” বলা হবে। কেননা, যারা এতদিন ‘শান্তি’র নামে কুফরের পর্দা টানিয়ে রেখেছিল, তাদের কাছে এই মেরুকরণই সবচেয়ে বড় হুমকি। তারা জানে, আপনি যখন বিভাজন করবেন, মানুষকে চেতনার দিক থেকে আলাদা করবেন, তখন সেই মানসিক বিপ্লব বাস্তবের ময়দানেও আসবে।

    তাই, এ যেন এক পূর্বঘোষিত ভয়—আপনি যদি সত্যকে স্পষ্ট করেন, তাহলে আপনাকে “নৈরাজ্যবাদী” বলে অপবাদ দেওয়া হবে।

    সুতরাং আমাদের কাজ শুরু করতে হবে মেরুকরণ দিয়ে। ময়দানে নামার আগেই মনে এই ফয়সালার আগুন জ্বালাতে হবে। কোনটা হক, কোনটা বাতিল—এই দ্ব্যর্থহীন অবস্থান না নিলে দাওয়াত কেবল আবেগ থাকবে, আকার পাবে না।


    এখন প্রশ্ন হলো, এই মেরুকরণ আমরা কীভাবে করব? কোন ভাষায় বলব, কোন মাধ্যম ব্যবহার করব, কোন প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে তা বাস্তবায়ন করব? মূল কাজ এখানেই—এই চিন্তাতেই।


    গ্রন্থসাহায্য:
    দ্বীন কায়েমের নববি রূপরেখা
    -ডা. ইসরার আহমেদ​
    Last edited by Rakibul Hassan; 3 days ago.
    فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَ انۡتَظِرۡ اِنَّهُمۡ مُّنۡتَظِرُوۡنَ

  • #2
    Keep going, we're with you.

    Comment


    • #3
      এখন প্রশ্ন হলো, এই মেরুকরণ আমরা কীভাবে করব? কোন ভাষায় বলব, কোন মাধ্যম ব্যবহার করব, কোন প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে তা বাস্তবায়ন করব? মূল কাজ এখানেই—এই চিন্তাতেই।
      আশা করি এ বিষয়ে অচিরেই আপনার লেখনী পাব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনার লেখায় আরও বরকত দান করুন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ
        فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَ انۡتَظِرۡ اِنَّهُمۡ مُّنۡتَظِرُوۡنَ

        Comment

        Working...
        X