জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের "মূলা" LGBT ও মানবাধিকার নামক বিষাক্ত নীতিবোধ গলাধঃকরণের এক ভয়ংকর নীল নকশা!
(SDGs) হল টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা যা Millennium Development Goals এর স্থলে প্রতিস্থাপন করা হয় .২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭০ তম অধিবেশনে Transforming our world: The 2030 Agenda for Sustainable Development শিরোনামের একটি কর্মসূচী গৃহীত হয়,যা SDGs নামে পরিচিত । SDGs এর মেয়াদ ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত । 'জাতিসংঘ' বাংলাদেশে এই সংস্থার অংশীদাররা ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে চলেছে।
এ লক্ষ্যগুলো বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে অনুভূত হওয়া উন্নয়নের বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, পৃথিবীর পরিবেশ ও জলবায়ু রক্ষায় এবং সকল মানুষ যাতে শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে, তা নিশ্চিতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো একটি বৈশ্বিক আহ্বান যার উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশে জাতিসংঘ সরকারকে সহযোগিতা করে চলেছে।
এতে মোট ১৭ টি লক্ষ্যমাত্রা ও ১৬৯ টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অন্ত্রভুক্ত রয়েছে।
এসডিজির জাতিসংঘের ১৭টি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিম্নরূপ:
অভীষ্ট লক্ষ্য ১- দারিদ্র্য নির্মূল
অভীষ্ট লক্ষ্য ২ - ক্ষুধামুক্তি
অভীষ্ট লক্ষ্য ৩ - সুস্বাস্থ্য
অভীষ্ট লক্ষ্য ৪ -মানসম্মত শিক্ষা
অভীষ্ট লক্ষ্য ৫ -লিঙ্গ সমতা
অভীষ্ট লক্ষ্য ৬ -বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন
অভীষ্ট লক্ষ্য ৭ - সাশ্রয়ী ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি অভীষ্ট লক্ষ্য ৮ - উপযুক্ত কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
অভীষ্ট লক্ষ্য ৯ - শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো উন্নয়ন
অভীষ্ট লক্ষ্য ১০ -বৈষম্য হ্রাস
অভীষ্ট লক্ষ্য ১১ -টেকসই শহর ও জনগণ
অভীষ্ট লক্ষ্য ১২ -পরিমিত ভোগ ও উৎপাদন
অভীষ্ট লক্ষ্য ১৩ -জলবায়ু বিষয়ে পদক্ষেপ
অভীষ্ট লক্ষ্য ১৪ -সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান
অভীষ্ট লক্ষ্য ১৫ -স্থলভাগের জীবন
অভীষ্ট লক্ষ্য ১৬ -শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং
অভীষ্ট লক্ষ্য ১৭ - অভিষ্টের জন্যে অংশীদারিত্ব।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহের;(SDGs)মূলমন্ত্র হচ্ছেঃ “Leave no one behind” যার অর্থ দাঁড়ায় “কাউকে পেছনে না ফেলে”। এই শ্লোগানটির বাংলায় প্রচলিত রূপ হচ্ছে “কাউকে বাদ দিয়ে নয়, বাহ্যিকভাবে সুন্দর এই শ্লোগানের অন্তরালে যে কথাটি লুকায়িত আছে সেটাকে এভাবে বলা যায় “LGBT বাদ দিয়ে নয়, জাতিসংঘের মতে LGBT একটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী।
২০১৫ সালে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি-মুন বলেন: ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে যা একটিমাত্র নির্দেশনামূলক নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি: কাউকে বাদ দিয়ে নয়। আমরা কেবল তখনই এই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়ন করতে পারব যদি আমরা যৌন অভিমুখিতা (sexual orientation) বা লিঙ্গ পরিচয় (gender identity) নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে পৌঁছাই… LGBT ব্যক্তিদের প্রান্তিককরণ এবং বর্জনের সমাপ্তি একটি মানবাধিকারমূলক অগ্রাধিকার – এবং একটি উন্নয়ন আবশ্যক।
২০১৫ সালে UNDP প্রশাসক হেলেন ক্লার্ক এক ভাষণে বলেন: নারী সমকামী, পুরুষ সমকামী, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার এবং আন্তঃলিঙ্গের মানুষের অন্তর্ভুক্তি ‘টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা’ এবং ‘সকলের জন্য মানবাধিকার' -এর মূল বিষয়।
নারী সমকামী, পুরুষ সমকামী, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার এবং আন্তঃলিঙ্গের মানুষের অন্তর্ভুক্তি ‘টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা’ এবং ‘সকলের জন্য মানবাধিকার' কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় স্থাপন করার পাঁয়তারা চলছে। যার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ও ব্যক্তি হিসেবে ডঃ ইউনুসকে কাজে লাগাতে মরিয়া পশ্চিমা শক্তি।
UNDP-র এক রিপোর্টে বলা হয়: LGBTI সম্প্রদায়ের মানুষগণ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে। তাই, যদি দেশগুলিকে ২০১৫-পরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (SDGs) অর্জন করতে হয় যার একটি মূল বৈশিষ্ট্য হল ‘কাউকে বাদ দিয়ে নয়’ –এই নীতি ও প্রতিশ্রুতি, তাহলে LGBTI সম্প্রদায়ের মানুষের চাহিদা এবং মানবাধিকারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া অপরিহার্য।
উপরোক্ত আলোচনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, জাতিসংঘের ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের মূলাগুলো রাষ্ট্রের সম্মুখে ঝুলিয়ে দিয়ে, এ জাতিকে LGBTI ও মানবাধিকারের এক বিষাক্ত নীতিবোধ গলাধঃকরণের এক ভয়ংকর নীল নকশা বাস্তবায়নে জাতিসংঘ আজ মহামানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। যার মূল কাজ সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে লিঙ্গ পরিচয়ের (অর্থাৎ নারী-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে, স্বামী-স্ত্রীর) পার্থক্যকে মুছে ফেলে এক নরকীয় পশুত্ত্ব সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এবং মানুষের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত ইসলাম নামক বৃক্ষটি উপড়ে ফেলা, যা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার এক মাত্র উদ্দেশ্য।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রার মাধ্যমে পশ্চিমা শক্তি; মুসলিম সমাজের ইসলামের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের ভিতকে নড়াতে পারবে না এবং এর মাধ্যমে তারা কোন লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে না বরং দিন দিন এদেশের মানুষ ইসলামের নীতি-আদর্শকেই আঁকড়ে ধরবে -ইনশাআল্লাহ ।
উৎস: জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন- وَمَكَرُوا وَمَكَرَ اللَّهُ ۖ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ আর তারা কুটকৌশল করেছে এবং আল্লাহ কৌশল করেছেন। আর আল্লাহ উত্তম কৌশলকারী। (সূরাঃ আলে-ইমরান -৫৪)
হে আমাদের প্রতিপালক মহান আল্লাহ, মুসলিম সমাজ ও রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের LGBTI ও মানবাধিকারের এ বিষাক্ত নীতিবোধ গলাধঃকরণের ভয়ংকর নীল নকশা ভেঙে দেয়ার তাওফীক দান করুন এবং এ ভয়াবহ ফিতনা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাজত করুন -আমীন
Comment