ইন্টারনেটভিত্তিক গোপন গোনাহ আপনাকে ধ্বংস করছে না তো!
আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন আপনাকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।গুনাহের পশরা নিয়ে বসে আছি আমরা। বাড়িতে আফিসে কিংবা রাস্তায় আপনাকে গুনাহের সাগরে ভাসিয়ে দিচ্ছে। যেনো কূল কিনারা হারিয়ে দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করছেন আপনি। দিনকে রাত বানিয়ে ফেলেছেন। আর রাতকে দিন বানিয়ে ফেলেছেন। এই স্মার্টফোনের বেড়াজালে প্রতিনিয়ত আপনার সুন্দর সময়গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেতভিত্তিক গোপন গুনাহ আপনাকে ধ্বংস করছে না তো? ইন্টারনেট জগতে পা বাড়ানো প্রতিটি ব্যক্তি কোন না কোনভাবে পর্নোগ্রাফির সাথে পরিচিত৷ বর্তমানে নগ্নতার কড়াল গ্রাসে এদেশের অধিকাংশ তরুণ ও যুবসমাজ।
বাংলাদেশের স্কুলগামী ৭০-৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। দেশের এগারো কোটি পঁচাত্তর লক্ষ লোক ইন্টারনেটে আসক্ত। যুবক ও তরুণদের মধ্যে প্রতি একশ জনে একাশি জন পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। একটি দেশের অর্ধেকের বেশি সিটিজেন যদি এভাবে এডিক্টেড হয়ে পড়ে তাহলে সে জাতির ধ্বংস অনিবার্য!
পর্নোগ্রাফি পৃথিবীর এক নাম্বার মাদক।
গবেষণায় দেখা গেছে, পর্নোগ্রাফি দেখার সময় মস্তিষ্কে অতিমাত্রায় ডোপামিন নিঃসরণ হয়—যা এক ধরনের আরাম ও আনন্দের অনুভূতি তৈরি করে।
পর্নোগ্রাফি দেখার ফলে মস্তিষ্কে এমন পর্যায়ের ডোপামিন তৈরি হয় যেটা আর অন্য কোন স্বাভাবিক উপায়ে তৈরি হয় না। যার কারণে বারবার মস্তিষ্কে পর্নোগ্রাফি দেখার ইচ্ছা জাগে। অন্য কোন কাজে তখন আর ভালো লাগে না। পর্নোগ্রাফি দেখার সময় উচ্চমাত্রায় ডোপামিন নিঃসরণের ফলে ব্যক্তির মস্তিষ্কের গঠন পরিবর্তন হয়ে যায়। মাদকসেবনের ফলে ঠিক একই রকম পরিবর্তন ঘটে মানব মস্তিষ্কের। পর্নোগ্রাফি পৃথিবীর এক নাম্বার মাদক। পর্নোগ্রাফি অতি সহজেই মানুষ হাতের কাছে পেয়ে যায়। বর্তমান সময়ে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা মাদাকাসক্ত ব্যক্তির চাইতেও বেশি। এর বয়াবহতা মানব জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
বিশেষ করে বৈবাহিক ও সাংসারিক জীবনকে বিষিয়ে তুলবে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিদ্রাহীনতা, মাথাব্যাথা , চুল পড়ে যাওয়া,বিষণ্ণতা, বিকৃত যৌন ধারণা, আত্মসম্মান হ্রাস, শারীরিক দুর্বলতার মতো মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনে। এছাড়া আসক্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত, সামাজিক, শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে।
পর্নোগ্রাফি ছেড়ে দিলে একজন ব্যক্তির জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন ও সফলতা বয়ে আনবে। তার আয়রোজগারে বরকত বয়ে আনবে। শারীরিক ও মানসিক ভাবে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে আসবে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন সুখে শান্তিতে পরিপূর্ন থাকবে।
পর্নোগ্রাফি ছাড়া কঠিন কেন? দীর্ঘদিন পর্নোগ্রাফি দেখার ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক গঠন বিকৃত হয়ে যায়। যা তাকে বার বার একই গুনাহের কাজ করতে উদ্ভুদ্ধ করে।একা একা এই পথ থেকে ফিরে আসা কঠিন। এমনকি বিয়ের পরেও মানুষ এই অভ্যাস ত্যাগ করতে পারে না।এজন্য অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।
প্রিয় ভাইয়েরা আপনার পরকালকে এইভাবে ধ্বংস করবেন না। জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ মত মহান কাজ থেকে গাফেল হওয়ার জন্য অন্যতম একটি কারণ বর্তমান যুগের অশ্লীলতা।
হে মর্দে মুমিন! তুমি হিম্মত করো। গুনাহের অন্ধকারে তুমি বিলীন হয়ে যেয়ো না। তুমি গর্জে উঠো তিতুমীরের মত। তুমি গর্জে উঠো হাজী শরীয়তউল্লাহর মত। এই উম্মাহ তোমার আপেক্ষায়! হে ভাই আমার! নিজেকে শয়তানের অনুসারী বানিয়ো না!
তুমি নিজেকে গড়ে তুলো উম্মাহর মা বোনদের মুক্তির জন্য। ন্যায় ও ইনসাফ পূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য৷ যদি তোমার মধ্যে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা না হয় তবে কি হবে এই উম্মাহর?
হায়েনার রক্তচক্ষু থেকে তবে কি আমার বোনেরা ধর্ষণের বিচার পাবে না?
রাসুলের(সা.) কটুক্তির বিচার হবে ইনশা-আল্লাহ তোমাদের জাগরণে। শাহজালাল এর গর্জন শুনে আবারো প্রকম্পিত হবে হিন্দু গেরুয়ার দল। আবারো বাবরি মসজিদ তৈরি হবে পৃথিবীর বুকে।ইনশা-আল্লাহ।
প্রিয় ভাইয়েরা স্মরণ করুন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَهُوَ مَعَكُم أَينَ ما كُنتُم وَاللَّهُ بِما تَعمَلونَ بَصيرٌ
তোমরা যেখানেই থাক না কেন, আল্লাহ তোমাদের সাথেই আছেন। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।[৫৭:৪] আল হাদীদ
সেদিন আর খুব বেশি দূরে নয় যেদিন মানুষকে আল্লাহ তায়ালার সামনে দাড় করানো হবে। সেদিন গোপন ভেদসমূহ প্রকাশ করা হবে।অপরাধীরা তার রবের সামনে অবনতমস্তক হয়ে রইবে। সেদিন আমাদের সমস্ত আমলের হিসেব নেওয়া হবে। তিনি আমাদের চোখের খেয়ানত ও গোপন গুনাহ সমূহ সম্পর্কে ভালভাবে অবগত আছেন। অতএব আজ থেকেই আমাদের তাওবা করা উচিত সমস্ত গোপন ও প্রাকাশ্য গুনাহ থেকে৷ যে গুনাহ আমাকে রবের অবাধ্য বানায় সেই গুনাহ চিরদিনের জন্য আমাদের ত্যাগ করা উচিত। জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ মত মহান ও উঁচু মাপের কাজের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো চোখের খেয়ানত।
নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারিকে ভালোবাসেন।হে আল্লাহ! আপনি ছাড়া আমাদের তাওবা কবুলকারী কেও নেই। আপনি ক্ষমা করতে ভালবাসেন।আমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের গুনাহসমূহকে মাফ করে, আপনার প্রিয় বান্দা হিসাবে কবুল করুন। (আমিন)