Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। ষষ্ঠদশ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। ষষ্ঠদশ পর্ব

    আবাবিল প্রকাশন মিডিয়া পরিবেশিত
    ইসলাম ও গণতন্ত্র
    ।।মাওলানা আসেম ওমররহিমাহুল্লাহ।।
    এর থেকে– ষষ্ঠদশ পর্ব


    এখানে কাফের হওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য


    উপরের আলোচনা দ্বারা এতটুকু বুঝে এসেছে যে, এই আয়াতে وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ যে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর শরীয়ত দ্বারা ফয়সালা না করবে, সে কাফের'- এই কাফের হওয়ার বিস্তারিত বিবরণ আসলাফে উম্মত বর্ণনা করেছেন। যা খারেজীদের থেকে সরে এবং আধুনিক মুরজিয়্যাদের থেকে বেঁচে আহলে সুনাত ওয়াল জামাতের পথ এখন আমরা এ বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করব

    সর্বপ্রথম বুঝতে হবে, শরীয়তে কুফর দুই প্রকার

    ১. কুফরে আকবার এটাকে হাকিকী (প্রকৃত) কুফরও বলা হয়। এই কুফর ইসলামের গণ্ডি থেকে খারেজ করে দেয়। যার কারণে বিবাহ সম্পর্কও ছিন্ন হয়ে যায়।

    ২. কুফরে আসগার৷ এটাকে কুফরে মাজাযীও বলা হয়। ওলামায়ে কেরাম এটাকে كفردونكفر বলেনএই কুফরের কারণে মানুষ ইসলামের গণ্ডি হতে খারেজ হয় না।

    যারা আল্লাহর শরীয়ত দ্বারা ফয়সালা করে না, তাদের সম্পর্কে সালফে সালেহীনের বর্ণিত তাফসীরের বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে। আর সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, ফুকাহা, মুহাদ্দিসীন ও মুফাসসিরিনে কেরাম রহিমাহুমাল্লাহ এই আয়াতের মর্ম ইহা বর্ণনা করেছেন যে-

    কোনো ব্যক্তি যদি কুরআনের আইন অনুযায়ী ফয়সালা করা ওয়াজিব মনে না করে, তবে সে 'কুফরে আকবারে' লিপ্ত সুতরাং সে এমন কাফের, যে ইসলামের গণ্ডি থেকে পরিপূর্ণরূপে খারেজ হয়ে গিয়েছে। পক্ষান্তরে কোনো ব্যক্তি যদি কুরআনের আইন দ্বারা ফয়সালা করা ওয়াজিব তো মনে করে কিন্তু বাস্তবে এর আলোকে ফয়সালা করে না, আবার নিজের এই আমলকে গুনাহের কাজ মনে করে, তাহলে এটা কুফরে আসগারযা মিল্লাত থেকে খারেজ করে নাএমন ব্যক্তি ফাসেক

    এ বিষয়টি ইমাম সদরুদ্দীন ইবনে আবিল ইজ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি (৭৩১-৭৯২ হিজরী) ‘শরহে আকিদাতুত তাহাবিয়্যাহ’ গ্রন্থে আরোও বিস্তারিত আলোচনা করেছেনকিতাবটি আরব ওলামায়ে কেরামের নিকটও সমাদৃত। স্মর্তব্য, ‘আকিদাতুত তাহাবিয়্যাহ’ আকিদার বিখ্যাত কিতাব, যা বড় বড় মাদরাসাগুলোতেও পড়ানো হয়আর ইমাম তাহাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহিও শীর্ষ ইমামদের অন্যতমতিনি বলেন-

    هنا أمر يجب أن يتفن له.وهو: أن الحكم بغير ما أنزل الله قد يكون كفرا ينقل عن الملة . وقد يكون معصية: كبيرة أو صغيرة . ويكون كفرا : إما مجازيا . وإما كفرا أصغر. علي القو لين المذكورين . وذلك بحسب حال الحاكم:فإنه إن عتقد أن الحكم بما أنزل الله غير واجب . وأنه مخير فيه .أواستهان به مع تيقنه أنه حكم (الله)2 .فهذا كفر أكبر3.وإن اعتقد و جوب الحكم بما أنزل الله . وعلمه في هذه الواقعة. وعدل عنه مع اعترا فه بأنه مستحق للعقوبة . فهذا عاص . يسمي كافرا كفرا مجازيا . أوكفرا أصغر . وإن جهل حكم الله فيها. مع بذل جهده واستفراغ وسعه في معرالحكم وأخطأ . فهذا مخطئ . له أجر علي اجتهاده . خطؤه مغفور.

    এখানে এই মাসআলাটি খুব ভালোভাবে বোঝা জরুরি তা হল, আল্লাহর শরীয়ত ব্যতীত ফয়সালা করা, কখনো এমন কুফরি হয়, যা ইসলামের গণ্ডি থেকে খারেজ করে দেয় । কখনো কবিরা গুনাহ কিংবা সগিরা গুনাহ হয়আর কখনো কুফরে মাজাযী বা কুফরে আসগার হয় বিষয়টি বিচারকের অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত । বিচারক (বা রাষ্ট্র -লেখক) যদি এই বিশ্বাস (নজরিয়া) লালন করে যে, আল্লাহর আইন অনুযায়ী ফয়সালা করা ওয়াজিব নয় । (এবং তার এই বিশ্বাস রয়েছে যে) সে এই ফয়সালা করার ক্ষেত্রে স্বাধীন (ইচ্ছা করলে সে আল্লাহর আইনে ফয়সালা করবে, ইচ্ছা করলে অন্য কোনো আইনে) অথবা বিচারক (অথবা রাষ্ট্র লেখক) আল্লাহর আইন অনুযায়ী ফয়সালা করাকে গুরুত্ব না দেয়, যদিও সে এ কথার ইয়াকিন রাখে যে, এটা আল্লাহর আইন- এ সবগুলো সুরতই কুফরে আকবারের অন্তর্ভুক্ত । (অর্থাৎ এগুলো এমন কুফরি যা মুরতাদ বানিয়ে দেয়)

    আর যদি সে আল্লাহর আইন অনুযায়ী ফয়সালা করাকে ওয়াজিব মনে করে, আর এই ফয়সালার ব্যাপারে তার আল্লাহর আইন সম্পর্কে ইলমও থাকে, এরপরও সে এই আইন দ্বারা ফয়সালা করা হতে বিরত থাকে, উপরন্ত সে এ কথা স্বীকারও করে যে, এর কারণে সে আযাবের উপযুক্ত হবে, তবে এমন বিচারক (অথবা রাষ্ট্র লেখক) গুনাহগার হবে । তাকে এমন কাফের বলা হবে, যে কুফরে আসগারে লিপ্ত রয়েছে। আর যদি এই ফয়সালার ব্যাপারে আল্লাহর আইন সম্পর্কে অবগত না থাকে, কিন্তু সে এই আইন সম্পর্কে জানার প্রাণন্তকর চেষ্টা করেছে, অতপর ফয়সালা করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছে, তাহলে একে ‘ভুল করেছে' বলা হবে। সে তার ইজতিহাদের সাওয়াব পাবে এবং তার ভুল ক্ষমা করা হবে[1]

    শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি ‘মিনহাজুস সুন্নাহ' গ্রন্থে বলেন-

    لاريب أن من لم يعتقد وجوب الحكم بما أنزل الله علي رسوله فهو كافر فمن استحل أن يحكم بين الناس بما يراه هو عدلا من غير اتباع لما أنزل الله فهو كافر...

    আর এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত শরীয়ত দ্বারা ফয়সালা করা ওয়াজিব হওয়ার বিশ্বাস রাখে না, সে ব্যক্তি কাফের । অনুরূপ শরীয়ত ব্যাতীত অন্য কোনো )ব্যবস্থা) কে ন্যায় ও ইনসাফ মনে করে মানুষের মামলার ফয়সালা করাকে আইনসম্মত (হালাল-বৈধ) মনে করলে, সে কাফের [2]

    ইমাম ইবনে কাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহিও (৬৯১-৭৫১) হিজরী মোতাবেক ১২৯২-১৩৫০ ঈসায়ী) ‘মাদারিজুস সালেকীন' গ্রস্থে এই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন, যা ইমাম ইবনে আবিল ইজ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি করেছেন । তিনি বলেন-

    الصحيح أن الحكم بغير ما أنزل الله يتناول الكافرين. الأصغر الأكبر بحسب حال الحاكم...

    ‘আর সঠিক কথা হল, কুরআন ব্যতীত (অন্য আইন দ্বারা) ফয়সালার করলে দুই প্রকারের কুফরি হতে পারে | এক. ছোট কুফরি দুই. বড় কুফরি । আর এটা নির্ভর করে বিচারকের অবস্থার উপর... ।' (মাদারিজুস সালেকীন : ২৫৯)

    এরপর ইমাম ইবনে আবিল ইজ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহির ব্যাখ্যাই বর্ণনা করেছেন। -

    ইতিপূর্বে ইমাম আবু জাফর নুহাস রহমাতুল্লাহি আলাইহির (৩৮৮ হিজরী) বিশ্লেষণও উল্লেখ করা হয়েছে । তিনি বলেন-

    আমার বক্তব্য হল, যে ব্যক্তি এ কথা বলবে যে, বিবাহিত যেনাকারীকে রজম করা ওয়াজিব নয়, সে কাফের হয়ে গিয়েছে কারণ সে আল্লাহর একটা আইন প্রত্যাখ্যান করেছে। [মাআনিল কুরআন]

    ইমাম আবু বকর জাসসাস হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার “আহকামুল কুরআনে" আরও একটা পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন । যা বর্তমান যুগের সে সব মানুষের চোখ খোলার জন্য যথেষ্ট, যারা অনৈসলামী আইনকে ইসলামী প্রমাণ করা জন্য উঠে পড়ে লেগেছে এবং অনৈসলামী আইন দ্বারা ফয়সালাকারী আদালত সম্পর্কে এ কথা বলে যে, এই আদালত ইসলামী আইনের আলোকে ফয়সালা করে যাহোক, ইমাম আবু বকর জাসসাস হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    فَإِنْ كَانَ الْمُرَادُ جَحْدَ حُكْمِ اللَّهِ أَوِ الْحُكْمَ بِغَيْرِهِ مَعَ الْإِخْبَارِ بِأَنَّهُ حُكْمُ اللَّهِ، فَهَذَا كُفْرٌ يُخْرِجُ عَنِ الْمِلَّةِ، وَفَاعِلُهُ مُرْتَدٌّ...

    আর যদি (এই আয়াতের কুফরি দ্বারা) উদ্দেশ্য আল্লাহর আইন দ্বারা ফয়সালা করা অস্বীকার অথবা কুরআন ব্যতীত অন্য আইন দ্বারা ফয়সালা করে এ কথা বলা যে, আল্লাহর আইন দ্বারা ফয়সালা করা হয়েছে, এটা (উভয় সুরতে) এমন কুফরি, যা মিল্লাতে ইসলাম থেকে খারেজ করে দেয়আর যে ব্যক্তি এমন করে সে মুরতাদ[3]


    গণতান্ত্রিক আদালত ও জজ


    গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আদালতগুলো শুধু সেই নিয়মের অধীনেই ফয়সালা দেয়াকে আবশ্যক মনে করে, যে নিয়ম এই ব্যবস্থার অধীনে আইনের অংশ সাব্যস্ত হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোনো নিয়ম অনুযায়ী ফয়সালা করাকে হারাম ও বেআইনী মনে করেএ পরিমাণ হারাম মনে করে যে, তারা এই আইন ছাড়া অন্য আইন (চাই সে আইন আল্লাহরই হোক না কেন) পড়াকেও সময় নষ্ট মনে করে। তাদের কলেজগুলোতে সে সব কুফরি আইনই পড়ানো হয় এবং এর উপরই মামলায় লড়াই করা ও জজ হওয়ার সার্টিফিকেট দেয়া হয় । এর বিপরীতে কেউ আল্লাহর আইনের যত বড় আলেম ও মুফতীই হোক না কোনো, তাকে উকিল ও জজের সার্টিফিকেট দেয়ার যোগ্যই মনে করে না তারা । বরং তারা আলেমদেরকে তুচ্ছ ও মূর্খ মনে করে এর দ্বারা তাদের আকিদা অনুমান করা আলেমদের জন্য কঠিন হওয়ার কথা নয় যে, তাদের ঈমান কোন আইনের উপর, আল্লাহর আইনের উপর নাকি নিজ হাতে তৈরিকৃত আইনের উপর?

    আচ্ছা, কেউ যদি হঠকারিতার আশ্রয় নিয়ে দলিল-প্রমাণ ছাড়াই নিজের জিদের উপর অটল থেকে তাদেরকে প্রথম দলের (কুফরে আকবারে লিপ্ত) অন্তর্ভুক্ত না করে, তবে তাদের নিকট আমাদের জিজ্ঞাসা, সে তাদেরকে দ্বিতীয় দলে কিভাবে গণ্য করতে পারে, যখন নাকি ইমাম ইবনে আবিল ইজ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কুফরে আসগারের সুরতে এই শর্ত বর্ণনা করেছেন যে, ‘আল্লাহর আইন ব্যতীত অন্য আইনে ফয়সালাকারী এই ইয়াকিন রাখে যে, এমন কাজ করলে তাকে আযাবে নিপতিত হতে হবে'


    আপনারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে চলমান আদালত ও জজদের অবস্থা একটু লক্ষ্য করুন। তারা কেমন দ্বীধাহীনচিত্তে গায়রুল্লাহর আইন দিয়ে বিচার করে যাচ্ছেনিজেদেরকে আযাবের উপযুক্ত মনে করা তো দূরের কথা, নিজেদেরকে বরং ন্যায়পরায়ন, কাজি এবং আল্লাহর ওলি মনে করে । এজন্য একটা হারাম বরং কুফরি কাজকে আল্লাহর নৈকট্যের মাধ্যম মনে করা সমস্ত আলেমদের নিকট এমন কুফরি, যা দ্বীন থেকে খারেজ করে দেয় । ইমাম সাহেবের নিকটও এরা দ্বিতীয় দলের অন্তর্ভুক্ত নয় ।




    হক্কানী আলেমদের নিকট কয়েকটি আবেদন

    প্রচলিত সংসদ, আদালত ও এর বিচারকরা কি এই বিশ্বাস (নজরিয়া) রাখে না : সমস্ত মামলায় (বিশেষত সুদ, যেনা, চুরি ইত্যাদি) আল্লাহর নাযিলকৃত আইন অনুযায়ী ফয়সালা করা তাদের উপর ওয়াজিব নয় বরং সেই আইন অনুযায়ী ফয়সালা করা ওয়াজিব (আবশ্যক) যা সংসদে মঞ্জুর হয়ে আইনের অংশ হয়েছে? ইমাম সদরুদ্দীন ইবনে আবিল ইজ হানাফী এবং ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রহিমাহুমাল্লাহ ওই সময় কুফরে আকবারের হুকুম বর্ণনা করছেন, যখন বিচারক এই বিশ্বাস রাখে যে, সে ইচ্ছা করলে কুরআনের আইনে ফয়সালা করবে, ইচ্ছা করলে অন্য আইনে, এই স্বাধীনতা তার রয়েছে । আর এখানকার সুরতহাল হল, বিচারকরা অন্য আইনে (কুরআন ব্যতীত গায়রুল্লাহর আইনে) বিচার করাকেই নিজেদের জন্য ফরয করে বসেছেএমনকি তারা শপথই করে, আমরা সংসদের (গায়রুল্লাহর) পক্ষ হতে অনুমোদিত আইনেই বিচার করব।

    বলুন, প্রচলিত ব্যবস্থা কুরআন দ্বারা ফয়সালা করার গুরুত্ব দেয়? নাকি কুরআনের আইন (প্রস্তরাঘাত, বেত্রাঘাত, হাত কর্তন, কিসাস, সুদের নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি) বাস্তবায়নকে প্রতিহত করে? কুরআনের আইনকে তারা বাস্তবায়নের উপযুক্তই মনে করে না কুরআন হাদীস এবং ফিকাহর পরিবর্তে তাদের কলেজগুলোতে সেই আইনই পড়ানো হয়, যা ইংরেজরা বানিয়েছে

    বলুন, এই বিচার ব্যবস্থায় কেউ কি নিজেকে গুনাহগার মনে করে?

    অনৈসলামী আইন দ্বারা ফয়সালাকারী আদালতকে ইসলামী আইন দ্বারা ফয়সালাকারী আদালত বলে এটাকে (অনৈসলামী আইনকে) ইসলামী সাব্যস্ত করা হচ্ছে না?

    তাই হক্কানী আলেমদের নিকট আবেদন, তারা ইমাম সদরুদ্দীন ইবনে আবিল ইজ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহির এই ভাষ্য (ইবারত) এসব তথাকথিত আলেমদেরকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিন ।

    فانه ان اعتقد أن الحكم بما أنزل الله غير واجب .وأنه مخير فيه أو استهان به مع تيقنه أنه حكم (الله ) فهذا كفرأكبر...

    বিচারক (অথবা রাষ্ট্র -লেখক) যদি এই বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহর আইন অনুযায়ী ফয়সালা করা ওয়াজিব নয় । (আর তার এই বিশ্বাস রয়েছে যে) সে এই ফয়সালা করার ক্ষেত্রে স্বাধীন (আল্লাহর আইনেও ফয়সালা করতে পারে, অন্য আইনেও করতে পারে)অথবা বিচারক (অথবা রাষ্ট্র -লেখক) আল্লাহর আইন অনুযায়ী ফয়সালা করাকে গুরুত্ব না দেয়, যদিও সে এ কথার ইয়াকিন রাখে যে, এটা আল্লাহ আইন, তবে এ সমস্ত সুরতে সে কুফরে আকবার (এমন কুফরি যা মুরতাদ বানিয়ে দেয়) করেছে... ৷

    এই ভাষ্যে উল্লেখিত প্রতিটি বিষয় ভিন্ন ভিন্নভাবে স্বতন্ত্র কুফরে আকবার । অথচ এই বাতিল ও ভ্রান্ত ব্যবস্থায় এই কুফরে আকবারের সবগুলোই এক সাথে বিদ্যমান রয়েছে।

    হযরত ওলামায়ে কেরাম তাদের ব্যাপারে কি রায় দেন যারা তাদের আদালতের ভিত্তি, মূল ও উৎস আল্লাহর কিতাব ছেড়ে মানুষকে বানিয়েছে? মানুষ যে আইনই তৈরি করে, এই আদালতগুলো সে আইন অনুযায়ী বিচার করতে বাধ্য থাকে বিচারব্যবস্থায় এর উপরই শপথ নেয় আর তারা সারা জীবন এই শপথের আনুগত্য করেই কাটায়এর বিনিময়ে প্রতিদান প্রপ্তির (ভাতা ও প্রমোশন) আর এর বিরোধিতা করলে শাস্তির (চাকরি চলে যাওয়া) বিশ্বাস রাখে... ৷ হযরত ওলামায়ে কেরাম এদের ব্যাপারে কি হুকুম দেন?

    ইমাম সাহেব রহমাতুল্লাহি আলাইহির ভাষ্যের এই শব্দাবলীও গভীরভাবে ভাবনার দাবি রাখে । তিনি বলেছেন مع تيقنه أنه حكم الله অর্থাৎ বিচারক যদিও এই ইয়াকিন রাখে যে এই আয়াত ও আহকাম (বিধি-বিধান) আল্লাহ প্রদত্ত, এরপরও যদি সে এই আইন অনুযায়ী ফয়সালা না করে, তবে সে কুফরে আকবারে লিপ্ত!

    [1] شرح الطحاوية في العقيدة السلفية : الجزء 2 , باب الاقرار بالربوبية أمر فطري والشرك أمر.... صدر الدين علي بن أبي العزالحنفي
    [2] منهاج السنة النبوية. الجزء 5. ص: 130 .أحمد بن عبد الحليم بن تيمة الحرني أبو العباس
    [3] احكام القران للجصاص: الجزء6. باب الحكم بين أهل الكتاب




    আরও পড়ুন​
Working...
X