Announcement

Collapse
No announcement yet.

মুসলিমদের উপর সাদা চামড়ার আমেরিকান ও ইউরোপীয়ানদের বর্বর অর্থনৈতিক শোষণ

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মুসলিমদের উপর সাদা চামড়ার আমেরিকান ও ইউরোপীয়ানদের বর্বর অর্থনৈতিক শোষণ



    মুসলিমদের উপর সাদা চামড়ার আমেরিকান ও ইউরোপিয়ানদের বর্বর অর্থনৈতিক শোষণ

    মুসলিমদের উপর সাদা চামড়ার আমেরিকান ও ইউরোপিয়ানদের বর্বর অর্থনৈতিক শোষণ
    যতদিন পর্যন্ত না শিরক ও কুফরে নিমজ্জিত এই বিশ্ব ব্যবস্থাকে চিরতরে ধ্বংস করা সম্ভব হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর মুক্তি আসবে না। এজন্য সর্বপ্রথম মুসলিমদেরকে গোলামির জিঞ্জির থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শিরক ও কুফরের মুলে কুঠারাঘাত করতে হবে। তবেই মুসলিম উম্মাহর মুক্তি মিলবে ইনশা আল্লাহ্।

    আজকে আমরা পশ্চিমা ক্রুসেড ও জায়োনিস্টদের ইসলাম ও মুসলিমদেরকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ্। মুসলিমদের সর্বশেষ খেলাফত ধ্বংস করার পর অভিশপ্ত ক্রুসেড ও জায়োনিস্টরা বুঝতে পারে যে, মুসলিমদেরকে একেবারে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তাই তারা ধাপে ধাপে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকে। মুসলিমদেরকে ধারাবাহিকভাবে ধ্বংস করতে তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক প্রজেক্ট হাতে নিতে থাকে। তারা খুব ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারে যে, একটি জাতিকে চিরতরে পঙ্গু ও ধ্বংস করতে হলে তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা জরুরী। নিরবচ্ছিন্ন অর্থনৈতিক প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারলেই সেই জাতিকে গোলামের জাতিতে আবদ্ধ করা সম্ভব। এজন্যই তারা অর্থনৈতিক শোষণকে তাদের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয়। মুসলিমদেরকে কোণঠাসা এবং দাস বানিয়ে রাখার জন্য তারা এমন এক শেকড়-বিহীন বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলে, যার ভিত্তি হচ্ছে গণতন্ত্র ও সুদ-ভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।

    গণতন্ত্র ও সুদ-ভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমেই পশ্চিমা সাদা চামড়ার ক্রুসেড ও জায়োনিস্টরা ইসলামকে ধ্বংসের মিশনে নেমেছে। পুরো পৃথিবীকে নিজেদের কব্জায় রাখতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে তাদের নিজেদের পছন্দসই দালাল শাসকদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। আর এজন্য তারা গণতন্ত্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। মূলত কাফেরদের কাছে ইসলামকে কোণঠাসা করে রাখার একটি আদর্শ হাতিয়ার হচ্ছে গণতন্ত্র। সেই সাথে গণতন্ত্র অর্থনৈতিকভাবে শোষণের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। গণতন্ত্র এমন এক শাসন ব্যবস্থা যা একনায়কতন্ত্রের চেয়ে নিকৃষ্ট শাসন ব্যবস্থা। গণতন্ত্রে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর নিকৃষ্ট মানুষের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ে। যার ফলে তারা ইচ্ছামতো রাষ্ট্রকে শাসন করতে পারে। ফলে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই তাদের আগ্রাসন ও শোষণের শিকার হয়। গণতন্ত্রের মাধ্যমেই মূলত সুদ-ভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আবির্ভাব হয়েছে, যা ইসলামী যাকাত-ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিপরীত। সুদ-ভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মূল সূত্রই হচ্ছে শোষণ। শোষণ আর আগ্রাসনের মাধ্যমেই বর্তমান ক্রুসেড ও জায়োনিস্ট রাষ্ট্রগুলো দাঁড়িয়ে আছে। পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করেই পশ্চিমা ক্রুসেড ও জায়োনিস্টরা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর উপর শোষণের স্টিম রোলার চালিয়ে আসছে। সারা পৃথিবীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে তারা একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও মুদ্রার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে। চাইলেও পৃথিবীর কোন একক রাষ্ট্র এই কুটিল জাল থেকে বের হয়ে আসতে পারবে না।

    বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পৃথিবীর স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোকে কোন না কোনভাবে পশ্চিমা ক্রুসেড জায়োনিস্ট রাষ্ট্রগুলোর উপর নির্ভর করতে হয়। আর ঠিক এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে পশ্চিমা ক্রুসেড ও জায়োনিস্ট রাষ্ট্রগুলো। এখন চাইলেই তারা পৃথিবীর অর্থনীতিকে তাদের পছন্দ মত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। চাইলেই তারা পৃথিবীর যেকোনো রাষ্ট্রের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করতে পারে। আর এভাবেই তারা পৃথিবীর ছোট ছোট রাষ্ট্রগুলোকে গোলামের জাতিতে পরিণত করেছে। এখন কোন রাষ্ট্র যদি তাদের নীতির বিরোধিতা করে, তাহলে তাদের উপর নেমে আসে অবর্ণনীয় জুলুম নির্যাতন। তাদেরকে প্রায় সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।

    সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হলো, মুসলিমদের ঘাড়ের উপর চেপে বসা পশ্চিমা ক্রুসেড ও জায়োনিস্টদের দালাল শাসকেরা তাদের এই জুলুম-নির্যাতন ও গোলামীকে মেনে নিয়েছে। আর এটাই ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক বিষয়। তারা পশ্চিমা ক্রুসেড ও জায়োনিস্টদের এমনভাবে আনুগত্য করছে, যার দরুন মুসলিমরা অর্থনৈতিক, সামরিক, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সবদিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছে। পশ্চিমা ক্রুসেড ও জায়োনিস্টদের দালাল শাসকেরা আমাদের বুঝিয়েছে, দিনদিন আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হচ্ছে। হ্যাঁ মাথাপিছু আয় বাড়ছে একথা ঠিক। তবে তা ধনীদের বাড়ছে, গরিবদের নয়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হচ্ছে ঠিকই। তবে এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সমাজের অভিজাত শ্রেণীর হচ্ছে, গরিবদের নয়। সমাজে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ছিল তা বর্তমানে আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে এবং দিনদিন এই সমস্যা আরোও বাড়তেই থাকবে। আর এটা হচ্ছে পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার ফল। বিষয়টিকে উদাহরণের মাধ্যমে আরও স্পষ্ট করা যাক। ধরুন, একটি রাষ্ট্রে ৫০ জন মানুষ আছে। এদের মধ্যে ১৫ জন কৃষক, ১২ জন সবজি বিক্রেতা, ১০ জন মুদি দোকানী, ৫ জন স্কুল শিক্ষক, ৩ জন সরকারি অনুগত পুলিশ বাহিনীর সদস্য, ৩ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আর বাকি ২ জন রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্ষমতাবলে নিয়োজিত আছেন। ধরুন এই রাষ্ট্রের মানুষের প্রকৃত আয় যথাক্রমে কৃষকের ৪০ মার্কিন ডলার, সবজি বিক্রেতার ৬০ মার্কিন ডলার, মুদি দোকানীর ৮০ মার্কিন ডলার, স্কুল শিক্ষকের ১০০ মার্কিন ডলার, সরকারি অনুগত পুলিশ বাহিনীর ৩ হাজার মার্কিন ডলার, প্রশাসনিক কর্মকর্তার ৪ হাজার হাজার মার্কিন ডলার এবং রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্ষমতাবলে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাথাপিছু আয় ১০ হাজার মার্কিন ডলার। এই রাষ্ট্রের জনগণের সর্বমোট ব্যক্তিগত আয় হচ্ছে ১৭,২৮০ মার্কিন ডলার। তাহলে পুঁজিবাদের মাথাপিছু আয়ের সূত্র অনুযায়ী এই রাষ্ট্রের জনগণের মাথাপিছু আয় দাঁড়াচ্ছে ৩৪৫.৬০ মার্কিন ডলার। প্রিয় উম্মাহ একটু ভালো করে খেয়াল করুন আসলেই কি সুদ-ভিত্তিক পুঁজিবাদের মাথাপিছু আয়ের সূত্র অনুযায়ী সর্বনিম্ন উপার্জনক্ষম কৃষকের আয় ৪০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৩৪৫.৬০ মার্কিন ডলার দাঁড়াচ্ছে, কিংবা ক্ষমতাবলে রাষ্ট্র-যন্ত্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়োজিত ব্যক্তির আয় ১০ হাজার মার্কিন ডলার থেকে ৩৪৫.৬০ মার্কিন ডলারে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। না মোটেও তা নয়। বরং কৃষকের আয় যা ছিল তাই থেকে যাচ্ছে এবং সমাজের এলিট শ্রেণীদের আয় পূর্বের চেয়ে কমছে না। প্রকৃত অবস্থা এই যে কৃষকের আয় যদি ১০ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পায়, তবে তার বিপরীতে সমাজের পুঁজিপতিদের আয় তারচেয়ে কয়েকগুণ থেকে কয়েকশগুণ বৃদ্ধি পায়। এই হচ্ছে বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনীতির অবস্থা।

    প্রকৃতপক্ষে পুঁজিবাদের ধারক-বাহকেরা এই সূত্রের মাধ্যমে মুসলিমদেরকে ধোঁকা দিতে চায়। মূলত পুঁজিবাদের মাথাপিছু আয়ের সূত্র অর্থনৈতিক শোষণের হাতিয়ার ছাড়া আর কিছু নয়। আসলে সুদ-ভিত্তিক পুঁজিবাদের ধারক-বাহকেরা গড় মাথাপিছু আয়ের সাফল্যকে তাদের সাফল্য বলে চালিয়ে দেয়। এটাকেই তারা দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য হিসেবে চালিয়ে দেয়। তাই আমরাও তাদের সুরে সুর-মিলিয়ে বলতে পারি গড় মাথাপিছু আয়ের সূত্র ও সাফল্য হচ্ছে সমাজের পুঁজিপতিদের সূত্র ও সাফল্য। এই সূত্র হচ্ছে বড়লোকদের পকেট ভারী করার সূত্র। প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমা সুদ-ভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে গরিবরা সবসময় গরিবই থেকে যায় আর ধনীরা দিনদিন আরও ধনী হতে থাকে। আর এভাবেই পশ্চিমা সাদা চামড়ার ক্রুসেড ও জায়োনিস্টরা মুসলিমদেরকে দিনের পর দিন ধোঁকা দিয়ে আসছে। এভাবেই তারা মুসলিমদেরকে গোলামের জাতিতে পরিণত করেছে এবং দিনের পর দিন অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করে আসছে। উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা আরও স্পষ্ট করা যাক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ফেডারেল সর্বনিম্ন বেতন ঘণ্টা প্রতি ৭.২৫ মার্কিন ডলার। সেই হিসেবে একজন আমেরিকানের ৮ ঘণ্টার বেতন দাঁড়ায় ৫৮ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশী টাকায় যার মান দাঁড়ায় প্রায় ৪,৯৬৮ টাকা। তাহলে একজন আমেরিকানের পুরো একমাসের বেতন দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১,৪৯,০৪০ টাকা। অপরদিকে বাংলাদেশের একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের সারা মাসের বেতন ওভারটাইমসহ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা প্রায়। সেই হিসেবে একজন বাংলাদেশীর বিপরীতে একজন আমেরিকানের মাসিক বেতন পায় ১২ গুন বেশি। সুবহানাল্লাহ! এই একটি মাত্র উদাহরণ থেকেই স্পষ্ট যে পশ্চিমা সাদা চামড়ার ক্রুসেড ও জায়োনিস্টরা মুসলিমদের উপর কতই না ভয়াবহ অর্থনৈতিক শোষণ চালাচ্ছে।

    এতো তাদের আগ্রাসন ও শোষণের সামান্য কিছু দিক মাত্র। তারা এরচেয়ে আরোও জঘন্য চক্রান্তে লিপ্ত আছে। প্রিয় উম্মাহ এই ভয়াবহ লাঞ্ছনা থেকে বের হয়ে আসতে হলে আমাদেরকেই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ভয়াবহ এই লাঞ্ছনা থেকে কিভাবে বের হয়ে আসা যায় তা নিয়ে আমাদের চিন্তা ফিকির করা উচিত। তা না হলে আমরা চিরদিনই গোলামের জাতিতে রয়ে যাবো। আল্লাহর একজন নগণ্য গোলাম হিসেবে আপনাদের সামনে কিছু কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র। আশা করি আপনারা এনিয়ে চিন্তা ফিকির করবেন। পরিশেষে আল্লাহ্ তা’আলার কাছে দোয়া করি তিনি যেন আমাদের হারানো গৌরব ও মর্যাদা আবার ফিরিয়ে দেন। আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন।

  • #2
    মাশাআল্লাহ, উপকারী পোস্ট। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X