দাজ্জালী বিশ্ব কিছুতেই আপনাকে পরিপূর্ণরূপে দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ করতে দিবে না
দাজ্জালী বিশ্ব হচ্ছে এমন এক শিকড়বিহীন অন্ধকারাচ্ছন্ন বিশ্ব যা আপনাকে প্রতিনিয়ত অন্ধকারের দিকে দাওয়াত দিতে থাকবে। আর যদি কোনোভাবে দাজ্জালী বিশ্বের দাওয়াতে সাড়া দেন, তবে নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ্ তা’আলার সরল পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার দৃঢ় সম্ভাবনা রয়েছে। আলোচনাকে দীর্ঘায়িত না করে দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থার স্বরূপ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো, যাতে করে আমাদের পুরো আলোচনা বুঝতে সুবিধা হয়।
প্রথমে বোঝার চেষ্টা করি আসলে দাজ্জালী বিশ্ব আমাদেরকে সম্ভাব্য কোন কোন দিকে দাওয়াত দিতে পারে? আমাদেরকে নিশ্চিতভাবেই একটি জিনিস ধরে নিতে হবে যে দাজ্জালী বিশ্ব অবশ্য অবশ্যই আমাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর বিপরীত দিকে দাওয়াত দিবে, যা স্পষ্টরূপে গোমরাহির পথ। তারা আমাদেরকে অশ্লীল গান-বাজনা, নাটক-সিনেমা, নারী ও মদ, জুয়া, সুদ-ঘুষ ও যিনা-ব্যভিচারের দিকে দাওয়াত দিবে থাকবে, আর এগুলো ইসলামে সম্পূর্ণরূপে হারাম। এগুলোই হচ্ছে দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থার চাকচিক্যময় উপায়-উপকরণ। বেহুদা কথাবার্তা আর অসার খেলা-ধুলাই দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থার সহজলভ্য উপকরণ। তারা এগুলোর মাধ্যমে এমন এক কুরুচিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তুলতে চায়, যেখানে নারী-পুরুষ অবাধে মেলা-মেশা করতে পারবে কোনো প্রকার বাঁধা ছাড়াই। আর এটা তো সুস্পষ্ট জাহিলিয়াত ছাড়া আর কিছুই নয়।
আর আল্লাহ্ তা’আলার প্রদত্ত আসমানী বিধান বাদ দিয়ে তারা তাদের কুরুচিপূর্ণ দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এমন এক কমপ্লেক্স সিস্টেম চালু রেখেছে যেখানে প্রতিটি ঈমানদার ব্যক্তি পদে পদে বাঁধার সম্মুখীন হবেই, এটা সুনিশ্চিত। এটা এমন এক শয়তানি বিশ্ব ব্যবস্থা যেখানে আপনি চাইলেও আল্লাহ্ তা’আলার প্রদত্ত আসমানী বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণরূপে জীবন-যাপন করতে পারবেন না। আপনাকে পদে পদে বাঁধার সম্মুখীন হতে হবে। এটা এমন এক জটিল সিস্টেম যেখানে আপনি না চাইলেও ওরা ঠিকই আপনাকে চোখের যিনা করতে বাধ্য করবে। এটা এমন এক জটিল সিস্টেম যেখানে আপনি না চাইলেও ওরা ঠিকই আপনাকে আল্লাহ্ তা’আলার নাফরমানি করতে বাধ্য করবে। দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থার অধীনে আপনি এমন সব গুনাহ করতে বাধ্য হবেন, যা হয়তো আপনি কখনোই করতে চাইবেন না। আপনি হয়তো চিন্তা করছেন যে বেহায়া সুন্দরী নারীদের দিকে তাকাবেন না। কিন্তু দাজ্জালী বিশ্ব এমন সব উপায়-উপকরণ তৈরি করে রেখেছে যা আপনার অবচেতন মনে এক ধরনের কম্পন সৃষ্টি করবে। ফলে আপনি বাধ্য হবেন ফিতনায় জড়াতে। দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থা এমন সব উপায়-উপকরণ দিয়ে আপনাকে সব সময় ব্যস্ত রাখবে, ফলে আপনি দৈনন্দিন ইবাদতগুলোও যথাযথোভাবে আদায় করতে পারবেন না। ওরা আপনার সমাজের চারপাশে এমন সব ফিতনার উপকরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে যা আপনাকে কোনোভাবেই দ্বীনের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতে দিবে না। বরং এই দাজ্জালী বিশ্ব আপনার ইবাদতের নূন্যতম জায়গাটুকুও ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলবে। ফলে কিছুতেই আপনি পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ্ তা’আলার ইবাদত করতে পারবেন না। তাই একথা হলফ করে বলা যায় যে ইসলামে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা হচ্ছে এই শয়তানি দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থা।
এক্ষেত্রে আমাদের করণীয়,
একথা মোটামুটি নিশ্চিত যে যতদিন পর্যন্ত আমরা এই দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থাকে সমূলে উৎখাত করতে না পারবো, ততদিন পর্যন্ত পরিপূর্ণরূপে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। ফলশ্রুতিতে মুসলিমরা দ্বীনের মধ্যে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশ করতে পারবে না এবং মুসলিমদের দুরবস্থারও কোন পরিবর্তন হবে না। তাই সর্বপ্রথম আমাদেরকে দাজ্জালী বিশ্ব ব্যবস্থাকে সমূলে উৎখাতের জন্য জোড় প্রচেষ্টা চালাতে হবে যাতে করে কুফরী বিশ্ব ব্যবস্থার উৎখাতের মাধ্যমে ইসলামী শরিয়াহ প্রতিষ্ঠা করা যায়। এজন্য দাওয়াহ, ইদাদ ও জিহাদের নববী মানহাজে আমাদেরকে পরিপূর্ণরূপে ফিরে আসতে হবে। তবেই দ্বীন কায়েমের পথে সফলতা আশা করা যায় ইনশা আল্লাহ্।
পরিশেষে আল্লাহ্ তা’আলার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমাদেরকে কথাগুলো বোঝার তাওফিক দান করেন। আমিন
Comment