ইসলামের নামে জঙ্গিবাদঃ পর্যালোচনা ৪
শায়খ 'ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ' বইয়ের ১১ পৃষ্ঠার প্রথম প্যারায় উল্লেখ করেছেন -
“পক্ষান্তরে ইসলামের ইতিহাসে আমরা যুদ্ধ দেখতে পেলেও সন্ত্রাস খুবই কম দেখতে পাই। ইসলামের ইতিহাসে বিভিন্ন প্রকারের যুদ্ধ হয়েছে। যেমন মুসলিমি রাষ্ট্রের সাথে অমুসলিম রাষ্ট্রের, মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে মুসলিম রাষ্ট্রের, মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে বিদ্রোহীদের যুদ্ধ ইত্যাদি। কিন্তু ইসলামের ইতিহাসে মুসলিম সমাজে মুসলমানদের মধ্যে, অথবা অমুসলিমদের মধ্যে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের মাধ্যমে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা বা অন্য কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের উদাহারাণ খুবই কম।“
শায়খ বলতে চেয়েছেন, মুসলিম/অমুসলিম রাস্ট্রের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নভাবে কোনো দল বা ব্যক্তিবিশেষের ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে পরিচালিত যুদ্ধের সংখ্যা ‘খুবই কম’। অর্থাৎ, মরহুম শায়খের ভাষ্যমতে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য রাস্ট্রবাসীর পরিচালিত বিদ্রোহ করা হচ্ছে জঙ্গিবাদ/সন্ত্রাস।
উক্ত বক্তব্য পেশ করার দুটি কারণ হতে পারে – ১/ অজ্ঞতা। ২/ হঠকারিতা।
ইসলামের ইতিহাসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মুসলিমদের যুদ্ধের ইতিহাস –
১/ সাইয়দিনা আলি (রা)’র বিরুদ্ধে মুয়াবিয়া (রা)’র যুদ্ধ। অর্থাৎ মুয়াবিয়া (রা) সন্ত্রাস/জঙ্গিবাদের পথ বেছে নিয়েছিলেন (নাউজুবিল্লাহ)
২/ ইয়াজিব বিন মুয়াবিয়া’র বিরুদ্ধে সাইয়দিনা হুসাইন বিন আলি (রাদি)’র অবস্থান। যুদ্ধের সৈন্য/দল গঠনের জন্য কুফা গমন। যা স্পষ্টতই শায়খের ভাষায় সন্ত্রাস/জঙ্গিবাদ। আল্লাহ্* মাফ করুন। আমীন।
৩/ উমাইয়া খিলাফতের বিরুদ্ধে মাদিনায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম মুসলিম আবদুল্লাহ বিন জুবায়ের (রাদি)’র বিদ্রোহ এবং যুদ্ধ। উমাইয়া খিলাফত থেকে হিজাজকে বিচ্ছিন্ন করে সেখানে হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। শায়খের সংজ্ঞানুযায়ী বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে যা পরিষ্কার সন্ত্রাস/জঙ্গিবাদ। নাস্তাগফিরুল্লাহিল আজিম।
৪/ হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বিরুদ্ধে প্রখ্যাত তাবি’ঈ সাইদ বিন জুবায়ের (রহ)’র বিদ্রোহ। বর্তমানের জঙ্গি/সন্ত্রাসীদের সাথে যা হুবহু মিলে যায়। আল্লাহ্* শায়খকে মাফ করুন। আমীন।
৫/ আব্বাসি খিলাফতের বিরুদ্ধে হাসান বিন আলি (রাদি)’র দুই নাতি নাফসে জাকিয়া জায়েদ বিন আলি (রহ) ও ইব্রাহিম (রহ) বিদ্রোহ। কুফাতে বিদ্রোহে লিপ্ত নাফসে জাকিয়া (রহ)’র এহেন কর্মকাণ্ডকে তৎকালীন সময়ে কুফায় অবস্থানকারী ইমাম আবু হানিফা (রহ) “ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ” আখ্যায়িত করেননি। বরং, আব্বাসিয় খিলাফতের বিরুদ্ধে পরিচালিত জিহাদকে ‘বদরের যুদ্ধের’ সাথে তুলনা করেন।
سئل عن الجهاد معه , فقال: خروجه يضاهي خروج رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم بدر.
ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) কে যায়েদ বিন আলী (রহঃ) এর সাথে মিলে জিহাদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। প্রতি উত্তরে তিনি বলেন, তার এই জিহাদ তো বদরের দিন রসূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম এর জিহাদ সদৃশ। (দেখুন: মানাকিবুল ইমামিল আজাম, খন্ড:১, পৃষ্ঠা:২৬০/২৬১)
ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) কে যায়েদ বিন আলী (রহঃ) এর সাথে মিলে জিহাদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। প্রতি উত্তরে তিনি বলেন, তার এই জিহাদ তো বদরের দিন রসূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম এর জিহাদ সদৃশ। (দেখুন: মানাকিবুল ইমামিল আজাম, খন্ড:১, পৃষ্ঠা:২৬০/২৬১)
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন:
"ولا ينال عهدي الظالمين"
“যালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না।” (সূরা বাকারা: ১২৪)
হানাফি মাজহাবের প্রখ্যাত ইমাম জাসসাস (রহঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন:
"وكان مذهبه ( يعني أبا حنيفة ) مشهورا في قتال الظلمة , وأئمة الجور, ولذلك قال الأوزاعي: " احتملنا أبا حنيفة على كل شيء حتى جاءنا بالسيف " يعني قتال الظلمة , فلم نحتمله .... وقضيته في أمر زيد بن على مشهورة , وفي حمله المال إليه , وفتياه الناس سرا في وجوب نصرته والقتال معه , وكذلك أمره مع محمد وإبراهيم ابني عبد الله بن حسن.
অত্যাচারী ও জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে কিতালের ব্যাপারে তার [ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)] মাযহাব প্রসিদ্ধ। এই কারণেই ইমাম আওঝা‘য়ী (রহঃ) বলেন, আমরা আবূ হানীফাকে সব বিষয়ে মেনে নিয়েছি যতক্ষণ না সে তরবারি (জালিম শাসকের বিরুদ্ধে জিহাদ) নিয়ে আসে। আমরা তার থেকে এটা মেনে নিতে পারি না। জায়েদ বিন আলী (রহিঃ) এর সাথে তাঁর ঘটনা প্রসিদ্ধ। তিনি তাকে অর্থ প্রদান করেছেন।
গোপনে মানুষকে ফতওয়া প্রদান করেছেন যে তাকে সাহায্য করা ও তার সাথে মিলে কিতাল করা ওয়াজিব। এমনি ভাবে আব্দুল্লাহ বিন হাসানের দুই ছেলে মুহাম্মদ ও ইব্রাহীম এর সাথে তাঁর বিষয়টিও জানা। (আহকামুল কুরআন, খন্ড:১, পৃষ্ঠা:৭০)
"ولا ينال عهدي الظالمين"
“যালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না।” (সূরা বাকারা: ১২৪)
হানাফি মাজহাবের প্রখ্যাত ইমাম জাসসাস (রহঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন:
"وكان مذهبه ( يعني أبا حنيفة ) مشهورا في قتال الظلمة , وأئمة الجور, ولذلك قال الأوزاعي: " احتملنا أبا حنيفة على كل شيء حتى جاءنا بالسيف " يعني قتال الظلمة , فلم نحتمله .... وقضيته في أمر زيد بن على مشهورة , وفي حمله المال إليه , وفتياه الناس سرا في وجوب نصرته والقتال معه , وكذلك أمره مع محمد وإبراهيم ابني عبد الله بن حسن.
অত্যাচারী ও জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে কিতালের ব্যাপারে তার [ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)] মাযহাব প্রসিদ্ধ। এই কারণেই ইমাম আওঝা‘য়ী (রহঃ) বলেন, আমরা আবূ হানীফাকে সব বিষয়ে মেনে নিয়েছি যতক্ষণ না সে তরবারি (জালিম শাসকের বিরুদ্ধে জিহাদ) নিয়ে আসে। আমরা তার থেকে এটা মেনে নিতে পারি না। জায়েদ বিন আলী (রহিঃ) এর সাথে তাঁর ঘটনা প্রসিদ্ধ। তিনি তাকে অর্থ প্রদান করেছেন।
গোপনে মানুষকে ফতওয়া প্রদান করেছেন যে তাকে সাহায্য করা ও তার সাথে মিলে কিতাল করা ওয়াজিব। এমনি ভাবে আব্দুল্লাহ বিন হাসানের দুই ছেলে মুহাম্মদ ও ইব্রাহীম এর সাথে তাঁর বিষয়টিও জানা। (আহকামুল কুরআন, খন্ড:১, পৃষ্ঠা:৭০)
দেখা যাচ্ছে, হানাফি মাজহাবের আলেম মরহুম শায়খ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গিরের ফিল্টারে ইমাম আবু হানিফা (রহ)ই জঙ্গিবাদের মদদদাতা হিসেবে আখ্যায়িত হতে পারেন বৈ কি! আল্লাহ্* তা’আলা সহজ করুন।
উপরোক্ত ৫টি ‘জঙ্গিবাদী’ কার্যক্রমের সবগুলোই আহলুস সুন্নাহ’র স্বীকৃত ইমাম সাহাবি, তাবি’ই ও তাবে-তাবি’ইনদের দ্বারা পরিচালিত। পরবর্তী সময়েরগুলো তো বাদই রয়ে গেল। সুতরাং, শায়খের বক্তব্য থেকে সৃষ্ট বিভ্রান্তি থেকে যেন আল্লাহ্* তা’আলা আমাদের সকলকে হিফাজত করেন। আমীন।
উপরোক্ত বিদ্রোহগুলোর প্রতিটিই হয়েছিল এমন শাসকদের বিরুদ্ধে যারা মুসলিম ভূমির শাসক ছিলেন এবং নিজেরাও মুসলিম ছিলেন। কোনো আলেমই তাদেরকে কখনো কাফির ফতোয়া দেন নি। তথাপি হাক্কপন্থি মুসলমানেরা শারিয়া’র পূর্ণাঙ্গতা দানের সদিচ্ছায় জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত হয়েছেন। (শায়খের ভাষায় জঙ্গিবাদ/সন্ত্রাস)।
এখন আমরা দেখব, কাফির শাসকদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের অবস্থানের ব্যাপারে শারিয়াহ’র রায় –
ফিকহের স্বতঃসিদ্ধ হুকুম হচ্ছে ইসলামী ভূখণ্ড কাফির/মুরতাদদের দখলে গেলে সেখানে শারিয়াহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ওয়াজিব।
১/ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) এর ফতওয়া:
وأجمعوا على أن الإمامة لا تنعقد لكافر ولو طرأ عليه الكفر انعزل وكذا لو ترك إقامة الصلوات والدعاء إليها وكذا البدعة..( مرقاة المفاتيح : 11 / 303)
،
উলামাগণ একমত হয়েছেন যে, কোনো কাফের শাসনভার পেতে পারে না। যদি শাসক হবার পর তার উপর কুফর আপতিত হয়, তবে সে অপসারিত হবে। একই হুকুম বর্তাবে, যদি নামায কায়েম, নামাযের দিকে আহবান ছেড়ে দেয়, অথবা বিদ‘আত করে। (মেরকাত,খন্ড:১১, পৃষ্ঠা:৩০৩)
،
উলামাগণ একমত হয়েছেন যে, কোনো কাফের শাসনভার পেতে পারে না। যদি শাসক হবার পর তার উপর কুফর আপতিত হয়, তবে সে অপসারিত হবে। একই হুকুম বর্তাবে, যদি নামায কায়েম, নামাযের দিকে আহবান ছেড়ে দেয়, অথবা বিদ‘আত করে। (মেরকাত,খন্ড:১১, পৃষ্ঠা:৩০৩)
২/ শায়েখ ত্বকী উসমানী (দাঃ বাঃ) তাকমীলায়ে ফাতহুল মুলহিমে مسئلة الخروج علي أئمة الجور “জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ” - নামক একটি অধ্যায় রচনা করেছেন।
তাতে তিনি প্রসিদ্ধ ফকীহ হাকিমুল উম্মাত হযরত আশরাফ আলী থানবী (রহঃ) এর বরাত দিয়ে অবস্থাভেদে শাসকদেরকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করেন। তিনি শাসকদের তৃতীয় শ্রেণীর ব্যাপারে উল্লেখ করেন:
والقسم الثالث: أن يطرأ عليه الكفر , سواء كان كفر تكذيب وجحود , أو كفر عناد ومخالفة , أو كفراستخفاف أو استقباح لأمور الدين . وفي هذه الصورة ينعزل الإمام , وينحل عقد الإمامة , فإن أصر على بقائه إماما , وجب على المسلمين عزله بشرط القدرة ولكن يشترط في ذلك أن يكون الكفر متفقا عليه
শাসকদের তৃতীয় শ্রেণী হলো ঐ শাসক যার উপর কুফর আপতিত হয়েছে। চাই তা কুফরে তাকজীব হোক (কোনো হালালকে হারাম আর হারামকে হালাল করা)। কুফরে জুহূদ হোক (আন্তরিক ভাবে আল্লাহর বিধান জানা সত্ত্বেও মৌখিকভাবে ও কর্মগত ভাবে তা অস্বীকার করা)। কুফরে ‘ইনাদ হোক (সত্যকে জানা ও সত্য বলে স্বীকার করা সত্ত্বেও দম্ভ করে তার সামনে আত্মসমর্পণে অস্বীকার করা। যেমন: আবূ তালেবের কুফরী), বা কুফরে মুখালাফাহ হোক (আল্লাহর কোনো বিধানকে তার বিধান হিসাবে জানা সত্ত্বেও তার বিরোধিতা করা। যেমন: মিরাসের ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান জানা সত্ত্বেও এর বিরোধিতা করা। এই বিধান পরিবর্তনের আবেদন তোলা)। চাই কুফরে এস্তেখফাফ হোক বা ইস্তেহজা হোক (আল্লাহর কোন বিধানকে তুচ্ছজ্ঞান করা বা সেটাকে ভালো মনে না করা। যেমন: তাচ্ছিল্য করে জিহাদকে জঙ্গিবাদ বলা। হুদুদ, কিসাসকে মধ্যযুগীয় আইন বলে আখ্যায়িত করা)।
দ্বীনী বিষয় সমূহের সাথে যে কোনো ধরনের কুফরীই হোক না কেন। এক্ষেত্রে শাসক অপসারিত হবে। শাসনের দায়িত্বভার তার থেকে চলে যাবে। তথাপি সে যদি শাসক হিসাবে থাকতে জোর জবরদস্তি করে, তবে মুসলমানদের উপর ওয়াজিব হবে তাকে অপসারিত করা। তবে শর্ত হলো সক্ষমতা থাকা এবং কুফরটি মুত্তাফাক আলাই্*হ্* হওয়া (অর্থাৎ যাকে সকল ইমাম কুফর মনে করতেন)। [দেখুন: তাকমীলায়ে ফাতহুল মুলহীম, খন্ড:৩, পৃষ্ঠা: ৩২৬-৩৩১]
শাসকদের তৃতীয় শ্রেণী হলো ঐ শাসক যার উপর কুফর আপতিত হয়েছে। চাই তা কুফরে তাকজীব হোক (কোনো হালালকে হারাম আর হারামকে হালাল করা)। কুফরে জুহূদ হোক (আন্তরিক ভাবে আল্লাহর বিধান জানা সত্ত্বেও মৌখিকভাবে ও কর্মগত ভাবে তা অস্বীকার করা)। কুফরে ‘ইনাদ হোক (সত্যকে জানা ও সত্য বলে স্বীকার করা সত্ত্বেও দম্ভ করে তার সামনে আত্মসমর্পণে অস্বীকার করা। যেমন: আবূ তালেবের কুফরী), বা কুফরে মুখালাফাহ হোক (আল্লাহর কোনো বিধানকে তার বিধান হিসাবে জানা সত্ত্বেও তার বিরোধিতা করা। যেমন: মিরাসের ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান জানা সত্ত্বেও এর বিরোধিতা করা। এই বিধান পরিবর্তনের আবেদন তোলা)। চাই কুফরে এস্তেখফাফ হোক বা ইস্তেহজা হোক (আল্লাহর কোন বিধানকে তুচ্ছজ্ঞান করা বা সেটাকে ভালো মনে না করা। যেমন: তাচ্ছিল্য করে জিহাদকে জঙ্গিবাদ বলা। হুদুদ, কিসাসকে মধ্যযুগীয় আইন বলে আখ্যায়িত করা)।
দ্বীনী বিষয় সমূহের সাথে যে কোনো ধরনের কুফরীই হোক না কেন। এক্ষেত্রে শাসক অপসারিত হবে। শাসনের দায়িত্বভার তার থেকে চলে যাবে। তথাপি সে যদি শাসক হিসাবে থাকতে জোর জবরদস্তি করে, তবে মুসলমানদের উপর ওয়াজিব হবে তাকে অপসারিত করা। তবে শর্ত হলো সক্ষমতা থাকা এবং কুফরটি মুত্তাফাক আলাই্*হ্* হওয়া (অর্থাৎ যাকে সকল ইমাম কুফর মনে করতেন)। [দেখুন: তাকমীলায়ে ফাতহুল মুলহীম, খন্ড:৩, পৃষ্ঠা: ৩২৬-৩৩১]
৩/ নজদের শায়খ, শায়েখ হামাদ বিন আতীক নাজদী (রহঃ) এর ফতওয়া:
(قال تعالى: {أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ} وقلت: ومثل هؤلاء ماوقع فيه عامة البواد او من شابههم من تحكيم عادات آبائهم وما وضعه أوائلهم من الموضوعات الملعونة التي يسمونها "شرح الرفاقة" يقدمونها على كتاب الله وسنة رسوله ومن فعل ذلك فإنه كافر يجب قتاله حتى يرجع إلى حكم الله و رسوله-
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন: “তারা কি তাহলে জাহিলিয়্যাতের বিধান কামনা করে?”
আমি বলি, আয়াতে উল্লিখিত ব্যক্তিদের অবস্থার মতোই হলো বর্তমান অধিকাংশ বেদুঈন ও তাদের সদৃশ অন্যান্যদের অবস্থা। অর্থাৎ যারা বিচার ফায়সালা করে তাদের বাপ-দাদার রীতি-নীতি অনুযায়ী এবং তাদের পূর্ব পুরুষ কর্তৃক বানোয়াট অভিশপ্ত একটি সংবিধান অনুযায়ী। যার নাম তারা রেখেছে ‘আর-রিফাক্বহ’। তারা সেটিকে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহের উপর প্রাধান্য দেয়।
আর যে ব্যক্তিই এধরনের কাজ করবে নিশ্চিতভাবে সে কাফের হয়ে যাবে। আর তার বিরুদ্ধে কিতাল ওয়াজিব হবে যতক্ষণ না সে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিধানের দিকে ফিরে আসে। (মাজমুয়াতুত তাওহীদ, পৃষ্ঠা:৩০৬ )
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন: “তারা কি তাহলে জাহিলিয়্যাতের বিধান কামনা করে?”
আমি বলি, আয়াতে উল্লিখিত ব্যক্তিদের অবস্থার মতোই হলো বর্তমান অধিকাংশ বেদুঈন ও তাদের সদৃশ অন্যান্যদের অবস্থা। অর্থাৎ যারা বিচার ফায়সালা করে তাদের বাপ-দাদার রীতি-নীতি অনুযায়ী এবং তাদের পূর্ব পুরুষ কর্তৃক বানোয়াট অভিশপ্ত একটি সংবিধান অনুযায়ী। যার নাম তারা রেখেছে ‘আর-রিফাক্বহ’। তারা সেটিকে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহের উপর প্রাধান্য দেয়।
আর যে ব্যক্তিই এধরনের কাজ করবে নিশ্চিতভাবে সে কাফের হয়ে যাবে। আর তার বিরুদ্ধে কিতাল ওয়াজিব হবে যতক্ষণ না সে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিধানের দিকে ফিরে আসে। (মাজমুয়াতুত তাওহীদ, পৃষ্ঠা:৩০৬ )
সুতরাং, ইতিহাস ও শারিয়াহ উভয়ের আলোকেই এটা প্রমাণিত হয় যে, মরহুম শায়খ “রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রনায়ক ব্যাতিত পরিচালিত জিহাদ”কে জঙ্গিবাদ/সন্ত্রাস বলার যে প্রয়াস চালিয়েছেন তার কোনো ভিত্তি নেই। ওয়াল্লাহু ‘আলাম।
আল্লাহ্* তা’আলা আমাদের সকলকে হিদায়াতের উপর অটল রাখুন। আমীন।
Comment