গুলশান হামলা মামলার তদন্তে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ইতিমধ্যে হামলার পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা, মদদদাতা ও সহযোগীদের একটি অংশ গোয়েন্দা জালে বন্দি। এদের মধ্যে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড সেই মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকও আছেন। এখন খোঁজা হচ্ছে কে তার ‘বস’। যার ছদ্মনাম ‘বাংলার বাঘ’। তার আরেকটি নাম জানা গেছে ‘রাজিব’। এটিও ছদ্মনাম। তার বিষয়ে এখন পর্যন্ত ধোঁয়াশার মধ্যেই আছেন গোয়েন্দারা। তাকে গ্রেফতার করা গেলে দেশে জঙ্গিদের বড় অংশের মূলোৎপাটন করা সম্ভব বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গুলশান হামলার বিষয়ে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও মদদদাতাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। প্রায় একই রকম তথ্য দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, তদন্তে বড় অগ্রগতি হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত অনেককে গোয়েন্দা জালে আনা সম্ভব হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এদিকে গুলশান হামলা মামলার কী সেই বড় অগ্রগতি- এ বিষয়ে যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। এ হামলায় অংশ নেয়া উগ্রবাদীরা জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের ফাঁসির পর তারা প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। দীর্ঘ বিরতির পর বরখাস্ত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হক জিয়া তাদের কথিত সামরিক অংশকে সংগঠিত করেন। এ অংশটিই মূলত টার্গেট কিলিংয়ে অংশ নিচ্ছে। শুধু জিয়াই নন তারও একাধিক বস এসবের সঙ্গে আছে। জিয়া এবং তার বসদের একজনকে গোয়েন্দা জালে আনার পর এই জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সফলতা আসে। এ সফলতার অংশ হচ্ছে দু’ডজনের বেশি জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য এখন গোয়েন্দা জালে। তাদের মধ্যে কিছু ‘আত্মঘাতী’ সদস্য আছে। এসব সদস্যের অধিকাংশই বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কম্পিউটার প্রকৌশলী ও বেসরকারি চাকরিজীবীও আছেন। আত্মঘাতীরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে ‘অমুসলিম নাম’। বিশেষ অ্যাপসের সাহায্যে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। এসব অ্যাপসেও তারা ছদ্মনাম ব্যবহার করে। এই অ্যাপস অনুসারে প্রধান নেতার ছদ্মনাম ‘বাংলার বাঘ’। এ ছাড়া তাদের অপর শীর্ষ নেতা বাঘ-২ নামও ব্যবহার করে বলেও তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার জেএমবির সদস্যরা জানিয়েছে তাদেরকে শীর্ষ নেতার কাছে নেয়ার সময় বিশেষ সানগ্লাস পরিয়ে দেয়া হয়। ফলে তারা নেতার চেহারা দেখতে পায় না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার প্রধান তদন্ত তদারক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম শনিবার যুগান্তরকে হাসি দিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি আমি পত্রিকায় দেখেছি। বিস্তারিত জানি না।’
সূত্র জানায়, গুলশান হামলার সহযোগী আত্মঘাতী জঙ্গিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এদের গ্রেফতারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছেন তারা। এমনকি হামলাসহ যে কোনো পরিস্থিতিও মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে তারা মাঠে নামেন।
শনিবার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তার কাছে জঙ্গিদের মূল আস্তানা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, অপারেশনভিত্তিক জঙ্গিরা হেডকোয়ার্টার নির্ধারণ করে থাকে। গুলশানের কিলিং মিশনের জন্য ভাটারা থানার একটি অভিজাত আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাটে সদর দফতর স্থাপন করে। ওই ফ্ল্যাটটিতে অভিযান চালানো হয়েছে ভাটারা থানা পুলিশের সহযোগিতায়। সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বগুড়া ও চট্টগ্রামেও কয়েকটি সফল অভিযান চালিয়েছে তদন্ত সংস্থা। উদ্ধার করা হয়েছে মেশিনগানসহ কিছু অস্ত্র।
ঘটনার পর আশপাশের প্রায় ১০০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। যা তদন্তে কাজে লাগানো হবে। সিটির অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, ফুটেজগুলো পর্যালোচনা চলছে। সেগুলো প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানো হবে। এই ফুটেজে তিন যুবককে রহস্যজনকভাবে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এটি আরও পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানো হতে পারে।
তদন্ত সংস্থা হামলায় ব্যবহৃত অধিকাংশ অস্ত্রের উৎস জানতে পেরেছে। তাদের কাছে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো ভারতের বিহারে একটি গোপন কারখানায় তৈরি। সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পোপনে বাংলাদেশে আনা হয়। বিহারের ওই অস্ত্র কারখানা থেকে প্রতিটি একে-২২ অস্ত্র কিনতে জঙ্গিদের খরচ পড়ে ৯০ হাজার টাকা। বিহারের স্বয়ংক্রিয় এসব মেশিনগান দিয়ে ব্রাশফায়ার করা সম্ভব। একই ধরনের আরও কিছু অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে মজুদ আছে। সেই অস্ত্রভাণ্ডারগুলোর সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। জঙ্গিরা কোথায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়- জানতে চাইলে এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত বাসায় ও বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের আড়ালে তারা প্রশিক্ষণ নেয়। দু-একজন বিভিন্ন সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানিতে সদস্য হিসেবে ভর্তি হয়ে অস্ত্র চালানো শেখে।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি নামে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় ইতালির ৯ জন, জাপানের ৭ জন, ভারতের একজন ও বাংলাদেশের ৩ জন জিম্মি নিহত হন। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জন নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত হয় ৬ জঙ্গি।
গুলশান হামলার বিষয়ে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও মদদদাতাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। প্রায় একই রকম তথ্য দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, তদন্তে বড় অগ্রগতি হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত অনেককে গোয়েন্দা জালে আনা সম্ভব হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এদিকে গুলশান হামলা মামলার কী সেই বড় অগ্রগতি- এ বিষয়ে যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। এ হামলায় অংশ নেয়া উগ্রবাদীরা জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের ফাঁসির পর তারা প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। দীর্ঘ বিরতির পর বরখাস্ত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হক জিয়া তাদের কথিত সামরিক অংশকে সংগঠিত করেন। এ অংশটিই মূলত টার্গেট কিলিংয়ে অংশ নিচ্ছে। শুধু জিয়াই নন তারও একাধিক বস এসবের সঙ্গে আছে। জিয়া এবং তার বসদের একজনকে গোয়েন্দা জালে আনার পর এই জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সফলতা আসে। এ সফলতার অংশ হচ্ছে দু’ডজনের বেশি জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য এখন গোয়েন্দা জালে। তাদের মধ্যে কিছু ‘আত্মঘাতী’ সদস্য আছে। এসব সদস্যের অধিকাংশই বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কম্পিউটার প্রকৌশলী ও বেসরকারি চাকরিজীবীও আছেন। আত্মঘাতীরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে ‘অমুসলিম নাম’। বিশেষ অ্যাপসের সাহায্যে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। এসব অ্যাপসেও তারা ছদ্মনাম ব্যবহার করে। এই অ্যাপস অনুসারে প্রধান নেতার ছদ্মনাম ‘বাংলার বাঘ’। এ ছাড়া তাদের অপর শীর্ষ নেতা বাঘ-২ নামও ব্যবহার করে বলেও তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার জেএমবির সদস্যরা জানিয়েছে তাদেরকে শীর্ষ নেতার কাছে নেয়ার সময় বিশেষ সানগ্লাস পরিয়ে দেয়া হয়। ফলে তারা নেতার চেহারা দেখতে পায় না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার প্রধান তদন্ত তদারক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম শনিবার যুগান্তরকে হাসি দিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি আমি পত্রিকায় দেখেছি। বিস্তারিত জানি না।’
সূত্র জানায়, গুলশান হামলার সহযোগী আত্মঘাতী জঙ্গিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এদের গ্রেফতারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছেন তারা। এমনকি হামলাসহ যে কোনো পরিস্থিতিও মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে তারা মাঠে নামেন।
শনিবার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তার কাছে জঙ্গিদের মূল আস্তানা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, অপারেশনভিত্তিক জঙ্গিরা হেডকোয়ার্টার নির্ধারণ করে থাকে। গুলশানের কিলিং মিশনের জন্য ভাটারা থানার একটি অভিজাত আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাটে সদর দফতর স্থাপন করে। ওই ফ্ল্যাটটিতে অভিযান চালানো হয়েছে ভাটারা থানা পুলিশের সহযোগিতায়। সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বগুড়া ও চট্টগ্রামেও কয়েকটি সফল অভিযান চালিয়েছে তদন্ত সংস্থা। উদ্ধার করা হয়েছে মেশিনগানসহ কিছু অস্ত্র।
ঘটনার পর আশপাশের প্রায় ১০০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। যা তদন্তে কাজে লাগানো হবে। সিটির অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, ফুটেজগুলো পর্যালোচনা চলছে। সেগুলো প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানো হবে। এই ফুটেজে তিন যুবককে রহস্যজনকভাবে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এটি আরও পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানো হতে পারে।
তদন্ত সংস্থা হামলায় ব্যবহৃত অধিকাংশ অস্ত্রের উৎস জানতে পেরেছে। তাদের কাছে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো ভারতের বিহারে একটি গোপন কারখানায় তৈরি। সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পোপনে বাংলাদেশে আনা হয়। বিহারের ওই অস্ত্র কারখানা থেকে প্রতিটি একে-২২ অস্ত্র কিনতে জঙ্গিদের খরচ পড়ে ৯০ হাজার টাকা। বিহারের স্বয়ংক্রিয় এসব মেশিনগান দিয়ে ব্রাশফায়ার করা সম্ভব। একই ধরনের আরও কিছু অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে মজুদ আছে। সেই অস্ত্রভাণ্ডারগুলোর সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। জঙ্গিরা কোথায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়- জানতে চাইলে এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত বাসায় ও বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের আড়ালে তারা প্রশিক্ষণ নেয়। দু-একজন বিভিন্ন সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানিতে সদস্য হিসেবে ভর্তি হয়ে অস্ত্র চালানো শেখে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যমতে, জেএমবি ও এবিটির কর্মীরা মনে করে, ‘গণতন্ত্র’ ইসলাম অনুমোদিত কোনো ব্যবস্থা নয়। এটা তাগুতের (শয়তানি শক্তি) শক্তি। এই গণতান্ত্রিক সরকারের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী শয়তানের অনুসারী। তাই তারা এ রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা, আইন-কানুন কোনো কিছুই মানে না। তারা মনে করে, সারা বিশ্বে ‘শরিয়াহ’ আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ লক্ষ্যেই তারা কাজ করছে। এটা তাদের ভাষায় জিহাদ। তাদের দাবি, এতে তাদের বিজয় হবে।
Comment