Announcement

Collapse
No announcement yet.

কুফরে আমলী এবং কিছু বিভ্রান্তির নিরসন-১

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কুফরে আমলী এবং কিছু বিভ্রান্তির নিরসন-১


    কুফরে আমলীর ফেতনা মহামারী আকার ধারণ করেছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এমনকি উলামাদেরও বিশাল অংশের আকীদা –


    “কুফর শুধু আকীদা বিশ্বাসেরই নাম। আকীদা বিশ্বাস সঠিক থাকলে আমলের দ্বারা কেউ কাফের হয় না। আমলের কুফর বড় কুফর না। আমলের কুফর ছোট কুফর। একে কুফরে আমলী বলা হয়। আর কাফের হওয়ার জন্য কুফরে ই’তেকাদী তথা আকিদা বিশ্বাসগত কুফর প্রয়োজন।”


    কুফরকে শুধু আকীদা বিশ্বাসের মাঝে সীমাবদ্ধ করে দেয়া চরমপন্থী মুরজিয়াদের আকীদা। কিন্তু এই ইরজায়ী আকীদা আজ আহলে সুন্নত দাবিদারদের মাঝে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাপকভাবে বলা হচ্ছে, “আমল যতই খারাপ হোক, আকীদা বিশ্বাস সঠিক থাকলে আমলের দ্বারা কেউ কাফের হয় না।”


    এই গলদ আকীদার কারণে আজ অনেক মুরতাদকে মুরতাদ মনে করা হচ্ছে না। শত কুফরী করেও শুধু মুখে ঈমানের দাবির কারণে তারা আজ মুসলমান। কেউ তাদেরকে কাফের বললে তাকে তিরস্কার করা হয়-‘তুমি কি তার বুক ফেঁড়ে দেখেছো তার দিলে ঈমান আছে কি নাই?’... ইত্যাদী ইত্যাদী।


    আজ যারা মুরতাদ শাসকদেরকে মুরতাদ বলে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত হয়েছেন তাদের বিরোধিতা চরমে উঠেছে। তাদেরকে অপবাদ দেয়া হচ্ছে, তারা খারিজী, তারা তাকফিরী, তারা ওয়াহহাবী ... ইত্যাদী ইত্যাদী।




    যারা মনে করে কুফর শুধু আকীদা বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত তাদেরকে জিজ্ঞেস করি-
    কোন ব্যক্তি যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি করে তাহলে সে মুসলমান না মুরতাদ?

    সাধারণত বলা হবে, সে মুরতাদ।

    প্রশ্ন করি, সে মুরতাদ কেন?


    উত্তরে যদি বলা হয়, ‘কারণ সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি করেছে’- তাহলে বলবো, উত্তর এমনটা হলে ‘আকীদা বিশ্বাস ছাড়া কাফের হয় না’ কথাটা দুরস্ত নয়। কারণ, এখানে তাকে কাফের বলা হচ্ছে তার কথা (অর্থাৎ কটুক্তির) কারণে; তার আকীদা বিশ্বাসের কারণে নয়। অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে তার আকীদা দুরস্ত থাকলেও শুধু এই কটুক্তির কারণেই সে মুরতাদ। তার আকীদা বিশ্বাস কি সেদিকে লক্ষ্য করা হবে না। যদি এমনটাই হয় তাহলে ‘আকীদা বিশ্বাস ছাড়া কাফের হয় না’ কথাটা আর দুরস্ত থাকছে না।


    আর যদি বলা হয়, ‘না। এখানে তাকে কাফের বলা হবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে তার বিরূপ আকীদার কারণ’; তাহলে জিজ্ঞেস করি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে যে তার আকীদা বিরূপ তা কিভাবে বুঝলেন? তার বুক ফেঁড়ে দেখেছেন?


    উত্তরে হয়তো বলবেন, ‘তার কটুক্তি থেকেই বুঝা যায়, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে তার আকীদা দুরস্ত নেই। যেহেতু আকীদা দুরস্ত নেই তাই কাফের।’ অর্থাৎ সে কটুক্তির কারণে কাফের নয়, বিরূপ আকীদার কারণে কাফের। আর তার আকীদা খারাপ থাকার দলীল হচ্ছে তার কটুক্তি। যদি তার আকীদা দুরস্ত থাকতো তাহলে সে কটুক্তি করতো না।


    উত্তর এমনটা হলে এখানে একটা আপত্তি আছে। আপনি বলতে চাচ্ছেন, আকীদা দুরস্ত থাকলে বাহ্যিকভাবে কুফরী কথা বলা সম্ভব নয়। জিজ্ঞেস করি ইয়াহুদীরা কাফের কেন? তারা কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সত্য নবী তা জানতো না? অন্তর থেকে কি তারা তা মানতো না? এরপরও তারা মুখে তা অস্বীকার করলো কিভাবে? মুখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করলো কিভাবে?


    যদি বলেন, ‘না। তারা মুখে যেমন অস্বীকার করতো অন্তরেও তেমনি অবিশ্বাস পোষণ করতো’- তাহলে আপনি কুরআন বিরোধী কথা বলেছেন। কারণ, কুরআনে কারীমের স্থানে স্থানে বলা আছে, তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্য নবী বলে বিশ্বাস করতো। এতদসত্বেও বাহ্যিকভাবে তাঁকে সত্যায়ন করতো না। মিথ্যা প্রতিপন্ন করতো। অতএব, কুরআনে কারীমের এই বিবরণ থেকে স্পষ্ট, অন্তরে পরিপূর্ণ বিশ্বাস বজায় থাকা সত্ত্বেও কাফের হওয়া সম্ভব। শুধু সম্ভব যে তাই নয়; বরং কুরআনে কারীমের ভাষ্য মনে বিশাল এক জনগোষ্ঠী অন্তরে বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও কাফের হয়ে আছে। অতএব, ‘আকীদা বিশ্বাস ছাড়া কাফের হয় না’ কথাটা কুরআনে কারীমের আলোকে আর দুরস্ত থাকছে না।



    আচ্ছা, আরেকটা কথা জিজ্ঞেস করি।
    কটুক্তিকারী যদি নিজে স্বীকার করে যে, অন্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে তার আকীদা সম্পূর্ণ দুরস্ত। এতদসত্ত্বেও শুধু খাহেশাতের কারণে কটুক্তি করেছে- তাহলে তাকে কাফের বলা হবে কি’না?


    যদি বলেন, ‘বলা হবে’- তাহলে আপনাদের আকীদা ‘আকীদা বিশ্বাস ছাড়া কাফের হয় না’ দুরস্ত থাকছে না। কারণ, এখানে কটুক্তিকারী নিজে স্বীকার করছে যে, তার আকীদা দুরস্ত। এরপরও কটুক্তির কারণে তাকে কাফের বলা হচ্ছে। অতএব, অন্তরে বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও কথায় কাজে কাফের হতে পারে।


    আর যদি বলেন, ‘না। তাকে কাফের বলা হবে না’- তাহলে প্রস্তুত থাকুন; অচিরেই হয়তো আপনাকে কাফের ফতোয়া দিয়ে শুলিতে ছড়ানো হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তিকারীকে যে কাফের মনে করে না তাকে মুসলমান বলার অবকাশ নেই। ফিকহের কিতাবাদি খুলে দেখুন, আপনার ব্যাপারে এরকম বিধানই বর্ণিত আছে।
    #######################
    #######################


    (চলবে ইনশাআল্লাহ!)




  • #2
    মাশাআল্লাহ ...
    জাযাকাল্লাহ ...
    খুব সুন্দর বিষয় হাতে নিয়েছেন । আল্লাহ তৌফীক দান করুণ । আমিন !

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ আখি,

      Comment


      • #4
        Al-Hamdulillah.zazakallah zajakallah akhi

        Comment


        • #5
          জাঝাকাল্লাহ আখি...!!!

          Comment


          • #6
            জাঝাকাল্লাহু খাইরান ভাই।

            শায়খ আলবানী (রঃ) এর এই রকম একটা মতামত আছে - যা দরবারী সালাফীদের খুবই প্রিয় একটি দলীল। উনার আসল মতামতটি তুলে ধরে, সেটির লাইন বাই লাইন পর্যালোচনা করার অনুরোধ রইল।
            কথা ও কাজের পূর্বে ইলম

            Comment


            • #7
              জাঝাকাল্লাহু খাইরান ভাই।

              শায়খ আলবানী (রঃ) এর এই রকম একটা মতামত আছে - যা দরবারী সালাফীদের খুবই প্রিয় একটি দলীল। উনার আসল মতামতটি তুলে ধরে, সেটির লাইন বাই লাইন পর্যালোচনা করার অনুরোধ রইল।
              কথা ও কাজের পূর্বে ইলম

              Comment


              • #8
                ভাই বখতিয়া, খেয়াল রাখা উচিত উলামায়ে সূ'দের বিরোদ্ধে কিছু বলার ক্ষেত্রে আলামী উমারারা নিষেধ করেছেন। তাতে দাওয়াহ কাজে সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই পৃথিবীর যে কোন ব্যাক্তির ব্যপারেই আমাদের মত কম জানা ব্যক্তিরা কথা না বললেই ভাল হবে।

                গঠন মূলক আলোচনা করুন। ইনংশাআল্লাহ।
                মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
                রোম- ৪৭

                Comment


                • #9
                  Originally posted by Taalibul ilm View Post
                  জাঝাকাল্লাহু খাইরান ভাই।

                  শায়খ আলবানী (রঃ) এর এই রকম একটা মতামত আছে - যা দরবারী সালাফীদের খুবই প্রিয় একটি দলীল। উনার আসল মতামতটি তুলে ধরে, সেটির লাইন বাই লাইন পর্যালোচনা করার অনুরোধ রইল।

                  ইনশাআল্লাহ করা হবে।

                  Comment


                  • #10
                    আল্লহু আকবার! শক্তিশালী আলোচনা।
                    ٱلَّذِينَ ءَاتَيْنَٰهُمُ ٱلْكِتَٰبَ يَعْرِفُونَهُۥ كَمَا يَعْرِفُونَ أَبْنَآءَهُمُ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
                    যাদেরকে (অর্থাৎ ইয়াহুদী, নাসারা) আমি কিতাব দান করেছি , তারা তাকে (মুহাম্মদ সাঃকে) চেনে, যেমন তাদের সন্তানদেরকে চেনে। যারা নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে ফেলেছে, তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না। -(সূরা আনআম ২০ নং আয়াত)
                    আল্লাহ আমাকে মাফ করুন ও ক্ষমা করে দিন।
                    হয়তো শরীয়াহ নয়ত শাহাদাহ।

                    Comment


                    • #11
                      মাশাআল্লাহ চমতকার উপস্থাপনা , মুরজিয়াদের যাকে বলে একেবারে মাইনকা চিপায় ফেলেদেয়া হলো। খুযহুম আখযা আযীযিম্মুকতাদির রঙ্গে বর্নালিযুক্ত ।

                      Comment

                      Working...
                      X