Announcement

Collapse
No announcement yet.

কুফরে আমলী এবং কিছু বিভ্রান্তির নিরসন -৩

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কুফরে আমলী এবং কিছু বিভ্রান্তির নিরসন -৩

    পূর্বোক্ত আলোচনার পর এবার ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্যের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা করব। সাথে প্রাসঙ্গিক হিসেবে আরো অনেক বিষয় আসবে।


    প্রথমে ‘ফাতাওয়া শামী’‘বাবুল মুরতাদ’ থেকে কিছু নির্বাচিত বক্তব্য উল্লেখ করবো। সাথে সাথে সেগুলো থেকে নির্গত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফায়েদার উপরও আলোকপাত করবো। বক্তব্যগুলো বুঝার সুবিধার্থে তরজমার ফাঁকে ফাঁকে আমার নিজের পক্ষ থেকে কিছু কথা যোগ করবো। সেগুলো থার্ড ব্র্যাকেট [] এ দেয়া হবে। ওয়াল্লাহু তাআলাল মুওয়াফফিক!


    বক্তব্য- ১:
    وقد حقق في المسايرة أنه لا بد في حقيقة الإيمان من عدم ما يدل على الاستخفاف من قول أو فعل.اهـ
    “(মুহাক্কিক ইবনুল হুমাম রহ. তাঁর কিতাব) ‘আল-মুসায়ারাহ্’ তে বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করেছেন যে, ঈমানের জন্য অবমাননা বুঝায় মতো কোন ক্বওল বা ফে’ল-কথা বা কাজ না পাওয়া যাওয়া অত্যাবশ্যক।” (ফাতাওয়া শামী: ৬/৩৫৫)

    ফায়েদা:
    উপরোক্ত বক্তব্য থেকে বুঝা গেল, ঈমান সহীহ হওয়ার জন্য এমন কোন কথা বা কাজ না পাওয়া যাওয়া আবশ্যক যা আল্লাহ, নবী-রাসূল, আসমানী কিতাব, দ্বীন বা অকাট্য কোন দ্বীনী বিষয়ের শানের অবমাননা বুঝায়। অতএব, আন্তরিক বিশ্বাস এবং মৌখিক স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও যদি এমন কোন কথা বা কাজ পাওয়া যায় যা আল্লাহ, নবী-রাসূল, আসমানী কিতাব, দ্বীন বা অকাট্য কোন দ্বীনী বিষয়ের শানের অবমাননা বুঝায় তাহলে সে আর মু’মিন থাকবে না, মুরতাদ হয়ে যাবে।

    এখান থেকে আরোও বুঝা গেল, কুফর শুধু আকীদা বিশ্বাসের নাম নয়। আকীদা বিশ্বাসের দ্বারা যেমন কাফের হয়, কুফরী কথা ও কাজের দ্বারাও তেমনি কাফের হয়ে যায়।



    বক্তব্য- ২:
    ( قوله من هزل بلفظ كفر ) أي تكلم به باختياره غير قاصد معناه ، وهذا لا ينافي ما مر من أن الإيمان هو التصديق فقط أو مع الإقرار لأن التصديق ، وإن كان موجودا حقيقة لكنه زائل حكما لأن الشارع جعل بعض المعاصي أمارة على عدم وجوده كالهزل المذكور ، وكما لو سجد لصنم أو وضع مصحفا في قاذورة فإنه يكفر ، وإن كان مصدقا لأن ذلك في حكم التكذيب.اهـ
    “যে ব্যক্তি হাসি তামাশায় কোন কুফরী কথা বললো সে কাফের হয়ে গেল। ‘হাসি তামাশায় বললো’ বলতে কথাটা বলেছে ইচ্ছাকৃতভাবেই তবে এর অর্থ সে উদ্দেশ্য নেয়নি। উপরে যে বর্ণিত হয়েছে, ঈমান শুধু তাসদীক-আন্তরিক বিশ্বাস কিংবা আন্তরিক বিশ্বাস ও মৌখিক স্বীকারোক্তির নাম- এর সাথে এই মাসআলার কোন বিরোধ নেই।
    [অর্থাৎ এ প্রশ্ন হবে না যে, যে ব্যক্তি হাসি তামাশায় কোন কুফরী কথা বললো সে তো আন্তরিকভাবে বিশ্বাস পোষণ করছে এবং মৌখিকভাবে সবকিছুর স্বীকারোক্তিও দিচ্ছে, আর হাসি তামাশায় যে কুফরী কথা বলেছে এর অর্থ তো সে উদ্দেশ্য নিচ্ছে না, শুধু হাস্যরসে কথাটা বলেছে, তাহলে সে কাফের হবে কেন? তার তো আন্তরিক বিশ্বাসও ঠিক আছে, মৌখিক স্বীকারোক্তিও ঠিক আছে, তাহলে সে কাফের হবে কেন- এ আপত্তি এখানে উঠানো যাবে না। ] কেননা, বাস্তবে তাসদীক-আন্তরিক বিশ্বাস বিদ্যমান থাকলেও বিধানগত দিক থেকে তা নেই বলে ধর্তব্য। কেননা, শারে’-শরীয়তদাতা কোন কোন গুনাহকে তাসদীক-আন্তরিক বিশ্বাস না থাকার আলামত নির্ধারণ করেছেন। যেমন – হাসি তামাশায় কুফরী কথা বলা যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তদ্রূপ যদি মূর্তিকে সাজদা করে কিংবা কুরআনে কারীমকে ময়লায় নিক্ষেপ করে তাহলে কাফের হয়ে যাবে। যদি সে আন্তরিকভাবে বিশ্বাসীও হয় তবুও কাফের হয়ে যাবে। কেননা, এই ধরণের কর্মকাণ্ড বিধানগতভাবে [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে] মিথ্যা প্রতিপন্ন করার সমার্থক। ” (ফাতাওয়া শামী: ৬/৩৫৬)


    ফায়েদা:
    এখান থেকে বুঝা গেল,
    # হাসি তামাশায় কুফরী কথা বললেও কাফের হয়ে যায়। কুফরী কথা দ্বারা কুফর উদ্দেশ্য না নিলেও, শুধু এমনি এমনি বললেও তাতে কাফের হওয়ার মাঝে কোন তফাৎ সৃষ্টি হয় না।
    # কাফের হওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃত কুফরী কথা বলা কিংবা ইচ্ছাকৃত কোন কুফরীকর্মে লিপ্ত হওয়াই যথেষ্ট। উক্ত কথা বা কর্ম যে কুফর সে তা জানে কি’না বা সে এর দ্বারা কুফর উদ্দেশ্য নিয়েছে কি’না ইত্যাদী কোন কিছুই দেখা হবে না। কাজটা কুফরী কাজ হওয়া কিংবা কথাটা কুফরী কথা হওয়া এবং সে তাতে স্বেচ্ছায় লিপ্ত হওয়াই কুফরের জন্য যথেষ্ট। তার আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকারোক্তি, জীবনভর নেক আমল- কোন কিছুই তাকে কুফর থেকে বাঁচাতে পারবে না।
    # মূর্তিকে সাজদা করা কিংবা কুরআনে কারীমকে ময়লায় নিক্ষেপ করা কুফরে আকবার যদিও তা কুফরে আমলী। অর্থাৎ এমন কুফর যা আকীদার সাথেও সম্পৃ্ক্ত নয়, কোন কথার সাথেও নয়; বরং তা বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা সম্পাদিত একটা আমল। অতএব, কুফরে আমলী মানেই ছোট কুফর- কথাটা ভিত্তিহীন। বরং এসব কুফরে আমলী সরাসরি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার মতই কুফর।



  • #2
    যাজাকুমুল্লাহ আখী, নব্য মুরজিয়াদেরকে প্রতিরোধে আপনার লেখাগুলো কার্যকরী প্রমানিত হবে ইংশাআল্লাহ।
    মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
    রোম- ৪৭

    Comment


    • #3
      জাজাকাল্লাহ,
      আল্লাহ আপনার মেহেনতকে ইখলাসের সাথে কবুল করুন| আমীন...!!

      Comment

      Working...
      X