আল্লাহ সুবঃ মুসলিম জাতীর জন্য বিভিন্ন ইবাদত নির্ধারণ করে দিয়েছেন যার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করবে । কিন্তু মানুষ আল্লাহ সুবঃ দেয়া নির্ধারিত ইবাদত বাদ দিয়ে মনগড়া নতুন নতুন বিদআত তৈরি করেছে । এর মধ্য থেকে একটা হল শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত্র । বাংলাদেশসহ পাক ভারত উপমহাদেশে এ রাতটি “ শবে বরাত ” হিসাবে পরিচিত । ‘শবে বরাত’ শব্দ দুটি ফার্সি । ‘শব’ মানে রাত আর ‘বরাত’ মনে ভাগ্য । একত্রে শব্দ দুটির অর্থ হচ্ছে ‘ভাগ্যরজনী’ । অনেকে এ রাতে অনেক কিছু করে যার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই । আর একশ্রেনির আলেম আছে যারা সবার কাছে প্রিয় হওয়ার জন্য এবং হাদিয়া-তোহফা পাওয়ার জন্য কোরআনের আয়াত কে বিকৃত করে এ রাতের ফযিলত ও মর্যাদা বর্ণনা করে থাকে যা ইহুদীদের অভ্যাস ছিল । তাদের ধারণা অনুযায়ী এ রাতে মানুষের আগামী এক বছরের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করা হয় , তারা তাদের ধারণা ও বিশ্বাসের পক্ষে কুরআনের সূরা দুখানের নিচের আয়াতগুলোকে প্রমান হিসাবে পেশ করে থাকে ।
আল্লাহ সুবঃ এরশাদ করেন
‘হা-মীম । সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ । নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে ; নিশ্চয় আমি সতর্ককারী । সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়’ । ( সূরা দুখান আয়াত ১-৪ )
যারা বিশ্বাস করে শবে বরাতের মর্যাদা ও এ রাতে সকল বিষয়ে আল্লাহ সুবঃ চূড়ান্ত ফায়সালা হয় তারা বলে যে , আয়াতে উল্লেখিত ‘লাইলাতুন মুবারাকাতুন’ বরকতময় রাত হচ্ছে শবে বরাত । আর এ রাতেই সকল বিষয়ে ফায়সালা হয় ।
আমরা বিষয়টা চিন্তা করলেই বুঝা যাবে যে , বরকতময় রাত কোনটি ?
সূরা দুখানের তিন নং আয়াতে আল্লাহ সুবঃ বিলেছেন ‘ আমি এটি (কোরআন ) নাযিল করেছি বরকতময় রাতে’ । এর আগে দুই নং আয়াতে বলেছেন ‘কিতাবুম মুবীন’ মানে সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ । যেহেতু কোরআন কে আল্লাহ সুবঃ সুস্পষ্ট কিতাব বলেছেন সেজন্য সুস্পষ্ট কিতাব থেকে জেনে নিব বরকতময় রাত কোনটি । সুস্পষ্ট কিতাব বলে দিয়েছেন কোরআন নাযিল হয়েছে রামাদান মাসে , শাবান মাসে নয় । আর বরকতময় রাত সেটিই যে রাতে কোরআন নাযিল হয়েছে ।
সুস্পষ্ট কিতাব বলে দিয়েছেন আমি রমাদান মাসে নাযিল হয়েছি ।
‘ রমযান মাস যাতে কোরআন নাযিল হয়েছে’ (সূরা বাকারা ১৮৫ আয়াত ) এবার আমরা বুঝলাম রমযান মাসে কোরআন নাযিল হয়েছ , এবার সুস্পষ্ট কিতাবকে জিজ্ঞাসা করব রমযান মাসে দিনে না রাতে নাযিল হয়েছ ? রাতে হলে কোন রাতে ? সুস্পষ্ট কিতাব উত্তর দেয় ।
‘নিশ্চয় আমি ইহা (কোরআন ) কদরের রাতে নাযিল করেছি’ ( সূরা কদর ১ আয়াত ) এই আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কোরআন মাজীদ নাযিল হয়েছে রমযান মাসের লাইলাতুল কদরে বা শবে কদরে শবে বরাতে নয় । আর সূরা দুখানের তিন নং আয়াতে কোরআন নাযিলের রাতকেই লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকতময় রাত বাল হয়েছে । ইরশাদ হয়েছে
‘নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে’ ( সূরা দুখান ৩ আয়াত ) কুরআন যে মহান আল্লাহর কিতাব , তিনি নিজে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন কোরআন রমযান মাসে নাযিল হয়েছে । রমযানের কোন রাতে নাযিল হয়েছে তাও সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে , তিনি কদরের রাতে নাযিল করেছেন এত সুস্পষ্টভাবে বলার পরও ‘বরকতময় রাত’ বলে কোন রাত কে বুঝানো হয়েছে তা অস্পষ্ট থাকবে কিভবে । বরকতময় রাত বলে লাইলাতুল কদর বা শবে কদর কেই বুঝানো হয়েছে , শবে বরাত কে নয় ।
বুঝাগেল যে , সূরা দুখানের তিন নং আয়াতে মরকতময় রাত বলে লাইলাতুল কদর কে বুঝানো হয়েছে এবং চার নং আয়াতে বলা হয়েছে যে ‘প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়’ তা লাইলাতুল কদরেই করা হয় , শবে বরাতে নয় । আল্লাহ সুবঃ সূরা কদরের চার নং আয়াতে বলেছেন ,
‘সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন’ ।
তাহলে ভাগ্য নির্ধারণ করাও হয় লাইলাতুল কদরে শবে বরাতে নয় ।
তাফসীরের কিতাবে এমনিই আছে । তাফসীরের কিতাবে ‘মরকতময় রাত’ কে শবে কদরের কথাই বলা হয়েছে , শবে বরাতের কথা বলা হয়নি । যেমন , তাফসীরে ইবনে কাসির , তাফসীরে আদওয়াউল বয়ান , তাফসীরে ফী যিলালিল কোরআন , তাফসীরে কুরতুবী এবং তাফসীরে মাআরেফুল কোরআন । এখানে শুধু মাআরেফুল কোরআনের তাফসীর উল্লেখ করছি কারণ এদেশের মানুষ কাথায় কথায় এসব তাফসীরের কথাই বলে ।
তাফসীরে মাআরেফুল কোরআনের বক্তব্য ;
‘অধিকাংশ তফসীরবিদের মতে এখনে শবে কদর বুঝানো হয়েছে , যা রমযান মাসের শেষ দশকে হয় । এ রাত্রিকে ‘মোবারক’ বলার কারণ এই যে , এ রাত্রিতে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অসংখ্য কল্যাণ ও বরকত নাযিল হয় । সূরা কদরে এক নং আয়াতে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, কোরআন পাক শবে কদরে নাযিল হয়েছে । এতে বোঝা গেল যে , এখানেও বরকতের রাত্রি বলে শবে কদরই বুঝানো হয়েছে’ ।
একটু সামনে গিয়ে বলেন ;
ইকরিমাহ প্রমুখ কয়েকজন তফসীরবিদ থেকে বর্ণিত আছে , এ আয়াতে বরকতের রাত্রি বলে শবে কদর অর্থাৎ শাবান মাসের পনের তারিখের রাত্রি বোঝান হয়েছে । কিন্তু এ রাত্রিতে কোরআন অবতরণ কোরআন ও হাদিসের অন্যান্য বর্ণনার পরিপন্থী । ‘ রমযান মাস যাতে কোরআন নাযিল হয়েছে’ (সূরা বাকারা ১৮৫ আয়াত ) এবং ‘নিশ্চয় আমি ইহা (কোরআন ) কদরের রাতে নাযিল করেছি’ ( সূরা কদর ১ আয়াত ) এর ন্যায় সুস্পষ্ট বর্ণনা সত্ত্বেও বলা যায় না যে , কোরআন শবে বরাতে নাযিল হয়েছে । তবে কোন কোন রেওয়ায়েতে শাবানের পনের তারিখকে শবে বরাত অথবা ‘লায়লাতুসসফ’ নামে অভিহিত করা হয়েছে এবং এর বরকতময় হওয়া ও এতে রহমত নাযিল হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে । এর সাথে কোন কোন রেওয়ায়েতে রহমত নাযিল হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে । অর্থাৎ ‘ এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা আমার পক্ষ থেকে করা হয় ।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন , এর অর্থ কোরআন অবতরণের রাত্রি অর্থাৎ শবে কদরে সৃষ্টি সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা স্থির করা হয় , যা পরবর্তী শবে কদর পর্যন্ত এক বছরে সংঘটিত হবে । অর্থাৎ এ বছর কারা কারা জন্মগ্রহণ করবে , কে কে মারা যাবে এবং এ বছর কি পরিমাণ রিযিক দেয়া হবে । মাহদভী বলেন , এর অর্থ এই যে , আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তকদীর পূর্বাহ্ণে স্থিরকৃত সকল ফয়সালা এ রাত্রিতে সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাগণের কাছে অর্পণ করা হয় । কেননা , কোরআন ও হাদিসের অন্যান্য বর্ণনা সাক্ষ্য দেয় যে , আল্লাহ সুবঃ এসব ফায়সালা মানুষের জন্মের পূর্বেই সৃষ্টিলগ্নে লিখে দিয়েছেন । অতএব, এ রাত্রিতে এগুলোর স্থির করার অর্থ এই যে , যে ফেরেশতাগণের মাধ্যমে ফয়সালা ও তকদীর প্রয়োগ করা হয় , এ রাত্রিতে সারা বছরের বিধানাবলী তাদের কাছে অর্পণ করা হয় । (মাআরিফুল কোরআন সূরা দুখান ৩-৪নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য )
আলোচনা দ্বারা যা বুঝানো উদ্দেশ্য ,
যে আলেমরা সূরা দুখানের তিন নং আয়াত দ্বারা শবে বরাতের বয়ান করে তা কোরআনের পরিপন্থী এবং তাফসীরেরও পরিপন্থী । আয়াতে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বলে শবে কদরই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে , শবে বরাত নয় যা আয়াত তাফসীরের মাধ্যমে জানতে জানা গেল ।
সূরা দুখানের চার নং আয়াত দ্বারাও শবে কদরই উদ্দেশ্য , শবে বরাত নয় । শবে কদরেই আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তকদীর পূর্বাহ্ণে স্থিরকৃত সকল ফয়সালা শুধু ফেরেশতাগণের কাছে অর্পণ করা হয় বা বুঝিয়ে দেয়া হয় যা আগামী এক বছর ঘটবে । কারন তকদীর মানুষ সৃষ্টির বহু আগেই লেখা হয়েছে গেছে । এ রাতে তকদীর লেখা হয় না । শবে বরাতে এমন কিছুই করা হয় না ।
আল্লাহ সুবঃ আমাদের কে সঠিক ইলম দান করুণ । আমিন ! ...
আল্লাহ সুবঃ এরশাদ করেন
‘হা-মীম । সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ । নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে ; নিশ্চয় আমি সতর্ককারী । সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়’ । ( সূরা দুখান আয়াত ১-৪ )
যারা বিশ্বাস করে শবে বরাতের মর্যাদা ও এ রাতে সকল বিষয়ে আল্লাহ সুবঃ চূড়ান্ত ফায়সালা হয় তারা বলে যে , আয়াতে উল্লেখিত ‘লাইলাতুন মুবারাকাতুন’ বরকতময় রাত হচ্ছে শবে বরাত । আর এ রাতেই সকল বিষয়ে ফায়সালা হয় ।
আমরা বিষয়টা চিন্তা করলেই বুঝা যাবে যে , বরকতময় রাত কোনটি ?
সূরা দুখানের তিন নং আয়াতে আল্লাহ সুবঃ বিলেছেন ‘ আমি এটি (কোরআন ) নাযিল করেছি বরকতময় রাতে’ । এর আগে দুই নং আয়াতে বলেছেন ‘কিতাবুম মুবীন’ মানে সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ । যেহেতু কোরআন কে আল্লাহ সুবঃ সুস্পষ্ট কিতাব বলেছেন সেজন্য সুস্পষ্ট কিতাব থেকে জেনে নিব বরকতময় রাত কোনটি । সুস্পষ্ট কিতাব বলে দিয়েছেন কোরআন নাযিল হয়েছে রামাদান মাসে , শাবান মাসে নয় । আর বরকতময় রাত সেটিই যে রাতে কোরআন নাযিল হয়েছে ।
সুস্পষ্ট কিতাব বলে দিয়েছেন আমি রমাদান মাসে নাযিল হয়েছি ।
‘ রমযান মাস যাতে কোরআন নাযিল হয়েছে’ (সূরা বাকারা ১৮৫ আয়াত ) এবার আমরা বুঝলাম রমযান মাসে কোরআন নাযিল হয়েছ , এবার সুস্পষ্ট কিতাবকে জিজ্ঞাসা করব রমযান মাসে দিনে না রাতে নাযিল হয়েছ ? রাতে হলে কোন রাতে ? সুস্পষ্ট কিতাব উত্তর দেয় ।
‘নিশ্চয় আমি ইহা (কোরআন ) কদরের রাতে নাযিল করেছি’ ( সূরা কদর ১ আয়াত ) এই আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কোরআন মাজীদ নাযিল হয়েছে রমযান মাসের লাইলাতুল কদরে বা শবে কদরে শবে বরাতে নয় । আর সূরা দুখানের তিন নং আয়াতে কোরআন নাযিলের রাতকেই লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকতময় রাত বাল হয়েছে । ইরশাদ হয়েছে
‘নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে’ ( সূরা দুখান ৩ আয়াত ) কুরআন যে মহান আল্লাহর কিতাব , তিনি নিজে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন কোরআন রমযান মাসে নাযিল হয়েছে । রমযানের কোন রাতে নাযিল হয়েছে তাও সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে , তিনি কদরের রাতে নাযিল করেছেন এত সুস্পষ্টভাবে বলার পরও ‘বরকতময় রাত’ বলে কোন রাত কে বুঝানো হয়েছে তা অস্পষ্ট থাকবে কিভবে । বরকতময় রাত বলে লাইলাতুল কদর বা শবে কদর কেই বুঝানো হয়েছে , শবে বরাত কে নয় ।
বুঝাগেল যে , সূরা দুখানের তিন নং আয়াতে মরকতময় রাত বলে লাইলাতুল কদর কে বুঝানো হয়েছে এবং চার নং আয়াতে বলা হয়েছে যে ‘প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়’ তা লাইলাতুল কদরেই করা হয় , শবে বরাতে নয় । আল্লাহ সুবঃ সূরা কদরের চার নং আয়াতে বলেছেন ,
‘সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন’ ।
তাহলে ভাগ্য নির্ধারণ করাও হয় লাইলাতুল কদরে শবে বরাতে নয় ।
তাফসীরের কিতাবে এমনিই আছে । তাফসীরের কিতাবে ‘মরকতময় রাত’ কে শবে কদরের কথাই বলা হয়েছে , শবে বরাতের কথা বলা হয়নি । যেমন , তাফসীরে ইবনে কাসির , তাফসীরে আদওয়াউল বয়ান , তাফসীরে ফী যিলালিল কোরআন , তাফসীরে কুরতুবী এবং তাফসীরে মাআরেফুল কোরআন । এখানে শুধু মাআরেফুল কোরআনের তাফসীর উল্লেখ করছি কারণ এদেশের মানুষ কাথায় কথায় এসব তাফসীরের কথাই বলে ।
তাফসীরে মাআরেফুল কোরআনের বক্তব্য ;
‘অধিকাংশ তফসীরবিদের মতে এখনে শবে কদর বুঝানো হয়েছে , যা রমযান মাসের শেষ দশকে হয় । এ রাত্রিকে ‘মোবারক’ বলার কারণ এই যে , এ রাত্রিতে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অসংখ্য কল্যাণ ও বরকত নাযিল হয় । সূরা কদরে এক নং আয়াতে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, কোরআন পাক শবে কদরে নাযিল হয়েছে । এতে বোঝা গেল যে , এখানেও বরকতের রাত্রি বলে শবে কদরই বুঝানো হয়েছে’ ।
একটু সামনে গিয়ে বলেন ;
ইকরিমাহ প্রমুখ কয়েকজন তফসীরবিদ থেকে বর্ণিত আছে , এ আয়াতে বরকতের রাত্রি বলে শবে কদর অর্থাৎ শাবান মাসের পনের তারিখের রাত্রি বোঝান হয়েছে । কিন্তু এ রাত্রিতে কোরআন অবতরণ কোরআন ও হাদিসের অন্যান্য বর্ণনার পরিপন্থী । ‘ রমযান মাস যাতে কোরআন নাযিল হয়েছে’ (সূরা বাকারা ১৮৫ আয়াত ) এবং ‘নিশ্চয় আমি ইহা (কোরআন ) কদরের রাতে নাযিল করেছি’ ( সূরা কদর ১ আয়াত ) এর ন্যায় সুস্পষ্ট বর্ণনা সত্ত্বেও বলা যায় না যে , কোরআন শবে বরাতে নাযিল হয়েছে । তবে কোন কোন রেওয়ায়েতে শাবানের পনের তারিখকে শবে বরাত অথবা ‘লায়লাতুসসফ’ নামে অভিহিত করা হয়েছে এবং এর বরকতময় হওয়া ও এতে রহমত নাযিল হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে । এর সাথে কোন কোন রেওয়ায়েতে রহমত নাযিল হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে । অর্থাৎ ‘ এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা আমার পক্ষ থেকে করা হয় ।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন , এর অর্থ কোরআন অবতরণের রাত্রি অর্থাৎ শবে কদরে সৃষ্টি সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা স্থির করা হয় , যা পরবর্তী শবে কদর পর্যন্ত এক বছরে সংঘটিত হবে । অর্থাৎ এ বছর কারা কারা জন্মগ্রহণ করবে , কে কে মারা যাবে এবং এ বছর কি পরিমাণ রিযিক দেয়া হবে । মাহদভী বলেন , এর অর্থ এই যে , আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তকদীর পূর্বাহ্ণে স্থিরকৃত সকল ফয়সালা এ রাত্রিতে সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাগণের কাছে অর্পণ করা হয় । কেননা , কোরআন ও হাদিসের অন্যান্য বর্ণনা সাক্ষ্য দেয় যে , আল্লাহ সুবঃ এসব ফায়সালা মানুষের জন্মের পূর্বেই সৃষ্টিলগ্নে লিখে দিয়েছেন । অতএব, এ রাত্রিতে এগুলোর স্থির করার অর্থ এই যে , যে ফেরেশতাগণের মাধ্যমে ফয়সালা ও তকদীর প্রয়োগ করা হয় , এ রাত্রিতে সারা বছরের বিধানাবলী তাদের কাছে অর্পণ করা হয় । (মাআরিফুল কোরআন সূরা দুখান ৩-৪নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য )
আলোচনা দ্বারা যা বুঝানো উদ্দেশ্য ,
যে আলেমরা সূরা দুখানের তিন নং আয়াত দ্বারা শবে বরাতের বয়ান করে তা কোরআনের পরিপন্থী এবং তাফসীরেরও পরিপন্থী । আয়াতে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বলে শবে কদরই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে , শবে বরাত নয় যা আয়াত তাফসীরের মাধ্যমে জানতে জানা গেল ।
সূরা দুখানের চার নং আয়াত দ্বারাও শবে কদরই উদ্দেশ্য , শবে বরাত নয় । শবে কদরেই আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তকদীর পূর্বাহ্ণে স্থিরকৃত সকল ফয়সালা শুধু ফেরেশতাগণের কাছে অর্পণ করা হয় বা বুঝিয়ে দেয়া হয় যা আগামী এক বছর ঘটবে । কারন তকদীর মানুষ সৃষ্টির বহু আগেই লেখা হয়েছে গেছে । এ রাতে তকদীর লেখা হয় না । শবে বরাতে এমন কিছুই করা হয় না ।
আল্লাহ সুবঃ আমাদের কে সঠিক ইলম দান করুণ । আমিন ! ...
Comment