পথভ্রষ্ট খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী ভারতের মুসলমানদের জন্য ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে নাজায়েয সাব্যস্ত করেছে। তার মতে ভারত দারুল আমান। ভারতের মুসলমানদের সাথে ভারত সরকারের চুক্তি হয়ে গেছে। এখন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে গাদ্দারী হবে। বরং মুসলমানদের দায়িত্ব হল নিজ দেশ মনে করে ভারতের সার্বিক উন্নয়নের চেষ্টা করা। এমনকি ভারতের সেনাবাহিনিতে যোগ দিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করা।
এখানে একটা আপত্তি উত্থাপিত হয় যে, ভারতে তো মুসলমানরা হিন্দু কতৃক নির্যাতিত। তাদের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রূ প্রতিনিয়তই হিন্দুদের হাতে দলিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় তো চুক্তি বহাল রয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না। কারণ, চুক্তি তো হয়েছিলই জান-মাল, ইজ্জত-আব্রূর নিরাপত্তার জন্য। এখন যখন আর নিরাপদ নেই তখন তো চুক্তির কোন ফায়েদা রইল না। কাজেই চুক্তি ভেঙ্গে গেছে বলে গণ্য হবে। ফলে হিন্দুদের জান-মাল অন্য সকল হরবীদের মতই মুসলমানদের জন্য হালাল বলে গণ্য হবে।
ভ্রষ্ট রহমানী এর উত্তর দিয়েছে, নির্যাতন যা হচ্ছে তা সরকারিভাবে হচ্ছে না। সাধারণ হিন্দুরা নির্যাতন করছে। সরকারি আইনে তো নির্যাতন নিষেধ। যেহেতু সরকারি আইনে নির্যাতন নিষিদ্ধ, তাই জনগণ কতৃক নির্যাতন সরকার কতৃক নির্যাতন বলে গণ্য হবে না। ফলে সরকারের সাথে যে চুক্তি হয়েছিল তা আপন তবিয়তেই বহাল আছে। কাজেই সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা জায়েয হবে না বরং গাদ্দারী বলে গণ্য হবে।
এই হল পথভ্রষ্টের বক্তব্য। ‘জাদীদ ফিকহি মাসায়েল’ নামক কিতাবে দারুল ইসলাম ও দারুল হরবের আলোচনায় সে এই মন্তব্য করেছে।
বাস্তবতা কি?
প্রথমত কথা হল, ভারত সরকারের সাথে মুসলমানদের কোন চুক্তি নেই। বরং ভারত মুসলমানদের ছিল। হিন্দুরা ইংরেজদের সহায়তায় তা জবরদখল করে নিয়েছে। এখন মুসলমানদের উপর ফরয হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের হিন্দুস্তান আবার ফিরিয়ে আনা এবং তাতে নববী আদলে খেলাফত কায়েম করা।
(চুক্তি কাকে বলে? কার সাথে কে চুক্তি করবে? কি কি শর্তে করবে? কি কি কারণে চুক্তি ভেঙ্গে যায়? ... ইত্যাদী বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। আমি সেদিকে যাচ্ছি না।)
দ্বিতীয়ত যদি ধরেও নেয়া হয় যে, তাদের সাথে এক সময় চুক্তি ছিল তবুও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং তাদের জান-মাল হরণ করা জায়েয। কেননা, মুসলমানদের জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রূর উপর আঘাত হানার দ্বারা হিন্দুরা তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
প্রশ্ন হল- রহমানী যে বলেছে, হামলা সরকারিভাবে হচ্ছে না, বেসরকারিভাবে হচ্ছে- সেটার কি জওয়াব?
জওয়াব:
হামলা কি শুধু বেসরকারিভাবেই হচ্ছে, না’কি সরকারের ছত্রছায়ায়ও হচ্ছে তা দুনিয়ার সামান্য খবর রাখেন মত ব্যক্তির কাছেও অস্পষ্ট থাকার কথা নয়।
দ্বিতীয়ত:
চুক্তি ভঙ্গ হওয়ার জন্য সরকারিভাবে হামলা হওয়া তো শর্ত নয়। সরকারের সম্মতি থাকাই যথেষ্ট। এমনকি হামলার কথা জানা থাকা সত্ত্বেও যদি সরকার হামলাকারীকে প্রতিহত করে চুক্তিবদ্ধ মুসলমানদের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রূর সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে তাহলে এতটুকু চুপ থাকাই সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং মুসলমানদের জন্য তাদেরকে হত্যা করা এবং তাদের মাল লুণ্টন করা বৈধ বলে গণ্য হবে। সরকারিভাবে হামলাও শর্ত নয়, সরকারের সম্মতিতে হামলা হওয়াও শর্ত নয়।
শরহুস সিয়ারিল কাবীরে বলা হয়েছে,
إلا أن تظهر الخيانة منهم بأن كانوا التزموا أن لا يقتلوا ولا يأسروا منا أحدا ثم فعلوا ذلك، فحينئذ يكون هذا منهم نقضا للعهد. فلا بأس بأن نقتل أسراهم وأن نأسرهم كما كان لنا ذلك قبل العهد ... فإن فعل ذلك جماعتهم، أو أميرهم، أو واحد منهم على وجه المحاربة وهم يعلمون بذلك فلا يغيرونه، فحينئذ يكون نقضا للعهد منهم، لأن فعل أميرهم يشتهر لا محالة، والواحد منهم إذا فعله مجاهرة فلم يغيروا عليه فكأنهم أمروه بذلك ... ومباشرة ذلك الفعل على سبيل المجاهرة بمنزلة النبذ للعهد الذي جرى بيننا وبينهم .اهـ
“তবে যদি তাদের থেকে খিয়ানত প্রকাশ পায় (তাহলে চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং তাদেরকে কতল ও বন্দী করা বৈধ হয়ে হবে।) যেমন- তাদের সাথে শর্ত ছিল যে, তারা আমাদের কাউকে হত্যা বা বন্দী করবে না। কিন্তু পরবর্তীতে তারা তা করে (অর্থাৎ আমাদের কাউকে হত্যা বা বন্দী করে)। তাহলে তাদের উক্ত কর্ম চুক্তি ভঙ্গ বলে সাব্যস্ত হবে। তখন তাদেরকে হত্যা বা বন্দী করতে আমাদের জন্য কোন বাধা-নিষেধ নেই, যেমন চুক্তির আগে তাদেরকে হত্যা ও বন্দী করা আমাদের জন্য বৈধ ছিল। … যদি উক্ত কর্ম তারা তাদের জামাআত নিয়ে করে থাকে কিংবা তাদের আমীর তা করে থাকে কিংবা প্রকাশ্যভাবে তাদের কোন একজন তা করেছে অথচ তারা জানা থাকা সত্ত্বেও তাকে প্রতিহত করেনি, তাহলে তাদের চুক্তি ভেঙ্গে গেছে বলে গণ্য হবে। কেননা, তাদের আমীরের কর্মটি প্রকাশ্যে হবে অবশ্যই। আর তাদের কোন একজন যখন উক্ত কর্মটি প্রকাশ্যে করেছে অথচ তারা তাকে প্রতিহত করেনি তাহলে ধরা হবে যেন তারা তাকে তা করতে আদেশ দিয়েছে। আর প্রকাশ্যে এমন কর্মে লিপ্ত হওয়া আমাদের ও তাদের মাঝে সম্পাদিত চুক্তি ভঙ্গেরই নামান্তর।” [শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ১/১৬৭]
অন্যত্র বলা হয়েছে,
أن المستأمنين لو غدر بهم ملك أهل الحرب، فأخذ أموالهم وحبسهم ثم انفلتوا: حل لهم قتل أهل الحرب وأخذ أموالهم، باعتبار أن ذلك نقض للعهد من ملكهم . وكذلك لو فعل ذلك بهم رجل بأمر ملكه، أو بعلمه ولم يمنعه من ذلك.اهـ
“দারুল হরবের রাষ্ট্রপ্রধান যদি চুক্তিবদ্ধ মুসলমানদের সাথে গাদ্দারী করে তাদের মাল হরণ করে নেয় এবং তাদেরকে বন্দী করে ফেলে এরপর কোনভাবে তারা ছুটে যেতে সক্ষম হয়, তাহলে উক্ত হরবীদের কতল করা এবং তাদের মাল লুট করা তাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে। কেননা, উক্ত কর্ম তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য। তদ্রূপ হরবীদের কোন এক ব্যক্তিও যদি রাষ্ট্রপ্র্রধানের অনুমতিক্রমে তা করে থাকে কিংবা তার এ কাজ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপ্রধান তাকে বাধা না দেয় তাহলেও (তা চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং তাদের জন্য হরবীদেরকে কতল করা এবং তাদের মাল লুট করা বৈধ হয়ে হবে।)” [শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ২/৫১]
দেখুন! আবার দেখুন! ভাল করে দেখুন! কত পরিষ্কার কথা-
“কিংবা প্রকাশ্যভাবে তাদের কোন একজন তা করেছে অথচ তারা জানা থাকা সত্ত্বেও তাকে প্রতিহত করেনি, তাহলে তাদের চুক্তি ভেঙ্গে গেছে বলে গণ্য হবে। কেননা … তাদের কোন একজন যখন উক্ত কর্মটি প্রকাশ্যে করেছে অথচ তারা তাকে প্রতিহত করেনি তাহলে ধরা হবে যেন তারা তাকে তা করতে আদেশ দিয়েছে।”
“তদ্রূপ হরবীদের কোন এক ব্যক্তিও যদি রাষ্ট্রপ্র্রধানের অনুমতিক্রমে তা করে থাকে কিংবা তার এ কাজ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপ্রধান তাকে বাধা না দেয় তাহলেও (তা চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং তাদের জন্য হরবীদেরকে কতল করা এবং তাদের মাল লুট করা বৈধ হয়ে হবে।)”
এমন পরিষ্কার বক্তব্য থাকা সত্ত্বেও কিভাবে হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের চুক্তি বহাল আছে বলে মন্তব্য করা সম্ভব!? যেখানে একজন হামলা করলেই চুক্তি ভেঙ্গে যায়, তাদের জান-মাল বৈধ হয়ে যায়, সেখানে আজ যুগ যুগ ধরে সমগ্র ভারতে সরকারি বেসরকারি সকল পন্থায় গোটা হিন্দু জাতীর দ্বারা মুসলমানরা যেখানে নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, হাজারো নয় লাখো কোটি মুসলমান নির্মমভাবে নিহত হচ্ছে, হাজারো হাজার মা বোন পাশবিকতার শিকার হচ্ছে, সহায় সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে ভিটেমাটিহীন করা হচ্ছে- সেখানে কোন বিবেকবান বলতে পারে এখনও তাদের সাথে চুক্তি বহাল আছে আর মুসলমানদের উপর ফরয উক্ত চুক্তি রক্ষা করা এবং ভারতের মালাউনেদের জান মালের উপর কোনরূপ আঘাত না হানা??!! একমাত্র রহমানীর মত পথভ্রষ্টরাই এমন ফতোয়াবাজি করতে পারে। শরীয়ত সম্পর্কে অজ্ঞরাই কেবল এমন মূর্খতাসূলভ মন্তব্য করতে পারে। কিংবা তারাই করতে পারে যারা দুনিয়ার সামান্য সুখ-সুবিধা আর সুনাম-সুখ্যাতীর লোভে দ্বীনকে বিক্রি করে দিয়েছে। হে আল্লাহ! তুমি মুসলিম উম্মাহকে এসব অজ্ঞ-মূর্খ-পথভ্রষ্ট নামধারী আলেম থেকে হিফাযত কর। আমীন।
এখানে একটা আপত্তি উত্থাপিত হয় যে, ভারতে তো মুসলমানরা হিন্দু কতৃক নির্যাতিত। তাদের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রূ প্রতিনিয়তই হিন্দুদের হাতে দলিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় তো চুক্তি বহাল রয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না। কারণ, চুক্তি তো হয়েছিলই জান-মাল, ইজ্জত-আব্রূর নিরাপত্তার জন্য। এখন যখন আর নিরাপদ নেই তখন তো চুক্তির কোন ফায়েদা রইল না। কাজেই চুক্তি ভেঙ্গে গেছে বলে গণ্য হবে। ফলে হিন্দুদের জান-মাল অন্য সকল হরবীদের মতই মুসলমানদের জন্য হালাল বলে গণ্য হবে।
ভ্রষ্ট রহমানী এর উত্তর দিয়েছে, নির্যাতন যা হচ্ছে তা সরকারিভাবে হচ্ছে না। সাধারণ হিন্দুরা নির্যাতন করছে। সরকারি আইনে তো নির্যাতন নিষেধ। যেহেতু সরকারি আইনে নির্যাতন নিষিদ্ধ, তাই জনগণ কতৃক নির্যাতন সরকার কতৃক নির্যাতন বলে গণ্য হবে না। ফলে সরকারের সাথে যে চুক্তি হয়েছিল তা আপন তবিয়তেই বহাল আছে। কাজেই সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা জায়েয হবে না বরং গাদ্দারী বলে গণ্য হবে।
এই হল পথভ্রষ্টের বক্তব্য। ‘জাদীদ ফিকহি মাসায়েল’ নামক কিতাবে দারুল ইসলাম ও দারুল হরবের আলোচনায় সে এই মন্তব্য করেছে।
বাস্তবতা কি?
প্রথমত কথা হল, ভারত সরকারের সাথে মুসলমানদের কোন চুক্তি নেই। বরং ভারত মুসলমানদের ছিল। হিন্দুরা ইংরেজদের সহায়তায় তা জবরদখল করে নিয়েছে। এখন মুসলমানদের উপর ফরয হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের হিন্দুস্তান আবার ফিরিয়ে আনা এবং তাতে নববী আদলে খেলাফত কায়েম করা।
(চুক্তি কাকে বলে? কার সাথে কে চুক্তি করবে? কি কি শর্তে করবে? কি কি কারণে চুক্তি ভেঙ্গে যায়? ... ইত্যাদী বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। আমি সেদিকে যাচ্ছি না।)
দ্বিতীয়ত যদি ধরেও নেয়া হয় যে, তাদের সাথে এক সময় চুক্তি ছিল তবুও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং তাদের জান-মাল হরণ করা জায়েয। কেননা, মুসলমানদের জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রূর উপর আঘাত হানার দ্বারা হিন্দুরা তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
প্রশ্ন হল- রহমানী যে বলেছে, হামলা সরকারিভাবে হচ্ছে না, বেসরকারিভাবে হচ্ছে- সেটার কি জওয়াব?
জওয়াব:
হামলা কি শুধু বেসরকারিভাবেই হচ্ছে, না’কি সরকারের ছত্রছায়ায়ও হচ্ছে তা দুনিয়ার সামান্য খবর রাখেন মত ব্যক্তির কাছেও অস্পষ্ট থাকার কথা নয়।
দ্বিতীয়ত:
চুক্তি ভঙ্গ হওয়ার জন্য সরকারিভাবে হামলা হওয়া তো শর্ত নয়। সরকারের সম্মতি থাকাই যথেষ্ট। এমনকি হামলার কথা জানা থাকা সত্ত্বেও যদি সরকার হামলাকারীকে প্রতিহত করে চুক্তিবদ্ধ মুসলমানদের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রূর সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে তাহলে এতটুকু চুপ থাকাই সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং মুসলমানদের জন্য তাদেরকে হত্যা করা এবং তাদের মাল লুণ্টন করা বৈধ বলে গণ্য হবে। সরকারিভাবে হামলাও শর্ত নয়, সরকারের সম্মতিতে হামলা হওয়াও শর্ত নয়।
শরহুস সিয়ারিল কাবীরে বলা হয়েছে,
إلا أن تظهر الخيانة منهم بأن كانوا التزموا أن لا يقتلوا ولا يأسروا منا أحدا ثم فعلوا ذلك، فحينئذ يكون هذا منهم نقضا للعهد. فلا بأس بأن نقتل أسراهم وأن نأسرهم كما كان لنا ذلك قبل العهد ... فإن فعل ذلك جماعتهم، أو أميرهم، أو واحد منهم على وجه المحاربة وهم يعلمون بذلك فلا يغيرونه، فحينئذ يكون نقضا للعهد منهم، لأن فعل أميرهم يشتهر لا محالة، والواحد منهم إذا فعله مجاهرة فلم يغيروا عليه فكأنهم أمروه بذلك ... ومباشرة ذلك الفعل على سبيل المجاهرة بمنزلة النبذ للعهد الذي جرى بيننا وبينهم .اهـ
“তবে যদি তাদের থেকে খিয়ানত প্রকাশ পায় (তাহলে চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং তাদেরকে কতল ও বন্দী করা বৈধ হয়ে হবে।) যেমন- তাদের সাথে শর্ত ছিল যে, তারা আমাদের কাউকে হত্যা বা বন্দী করবে না। কিন্তু পরবর্তীতে তারা তা করে (অর্থাৎ আমাদের কাউকে হত্যা বা বন্দী করে)। তাহলে তাদের উক্ত কর্ম চুক্তি ভঙ্গ বলে সাব্যস্ত হবে। তখন তাদেরকে হত্যা বা বন্দী করতে আমাদের জন্য কোন বাধা-নিষেধ নেই, যেমন চুক্তির আগে তাদেরকে হত্যা ও বন্দী করা আমাদের জন্য বৈধ ছিল। … যদি উক্ত কর্ম তারা তাদের জামাআত নিয়ে করে থাকে কিংবা তাদের আমীর তা করে থাকে কিংবা প্রকাশ্যভাবে তাদের কোন একজন তা করেছে অথচ তারা জানা থাকা সত্ত্বেও তাকে প্রতিহত করেনি, তাহলে তাদের চুক্তি ভেঙ্গে গেছে বলে গণ্য হবে। কেননা, তাদের আমীরের কর্মটি প্রকাশ্যে হবে অবশ্যই। আর তাদের কোন একজন যখন উক্ত কর্মটি প্রকাশ্যে করেছে অথচ তারা তাকে প্রতিহত করেনি তাহলে ধরা হবে যেন তারা তাকে তা করতে আদেশ দিয়েছে। আর প্রকাশ্যে এমন কর্মে লিপ্ত হওয়া আমাদের ও তাদের মাঝে সম্পাদিত চুক্তি ভঙ্গেরই নামান্তর।” [শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ১/১৬৭]
অন্যত্র বলা হয়েছে,
أن المستأمنين لو غدر بهم ملك أهل الحرب، فأخذ أموالهم وحبسهم ثم انفلتوا: حل لهم قتل أهل الحرب وأخذ أموالهم، باعتبار أن ذلك نقض للعهد من ملكهم . وكذلك لو فعل ذلك بهم رجل بأمر ملكه، أو بعلمه ولم يمنعه من ذلك.اهـ
“দারুল হরবের রাষ্ট্রপ্রধান যদি চুক্তিবদ্ধ মুসলমানদের সাথে গাদ্দারী করে তাদের মাল হরণ করে নেয় এবং তাদেরকে বন্দী করে ফেলে এরপর কোনভাবে তারা ছুটে যেতে সক্ষম হয়, তাহলে উক্ত হরবীদের কতল করা এবং তাদের মাল লুট করা তাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে। কেননা, উক্ত কর্ম তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য। তদ্রূপ হরবীদের কোন এক ব্যক্তিও যদি রাষ্ট্রপ্র্রধানের অনুমতিক্রমে তা করে থাকে কিংবা তার এ কাজ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপ্রধান তাকে বাধা না দেয় তাহলেও (তা চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং তাদের জন্য হরবীদেরকে কতল করা এবং তাদের মাল লুট করা বৈধ হয়ে হবে।)” [শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ২/৫১]
দেখুন! আবার দেখুন! ভাল করে দেখুন! কত পরিষ্কার কথা-
“কিংবা প্রকাশ্যভাবে তাদের কোন একজন তা করেছে অথচ তারা জানা থাকা সত্ত্বেও তাকে প্রতিহত করেনি, তাহলে তাদের চুক্তি ভেঙ্গে গেছে বলে গণ্য হবে। কেননা … তাদের কোন একজন যখন উক্ত কর্মটি প্রকাশ্যে করেছে অথচ তারা তাকে প্রতিহত করেনি তাহলে ধরা হবে যেন তারা তাকে তা করতে আদেশ দিয়েছে।”
“তদ্রূপ হরবীদের কোন এক ব্যক্তিও যদি রাষ্ট্রপ্র্রধানের অনুমতিক্রমে তা করে থাকে কিংবা তার এ কাজ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপ্রধান তাকে বাধা না দেয় তাহলেও (তা চুক্তি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে এবং তাদের জন্য হরবীদেরকে কতল করা এবং তাদের মাল লুট করা বৈধ হয়ে হবে।)”
এমন পরিষ্কার বক্তব্য থাকা সত্ত্বেও কিভাবে হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের চুক্তি বহাল আছে বলে মন্তব্য করা সম্ভব!? যেখানে একজন হামলা করলেই চুক্তি ভেঙ্গে যায়, তাদের জান-মাল বৈধ হয়ে যায়, সেখানে আজ যুগ যুগ ধরে সমগ্র ভারতে সরকারি বেসরকারি সকল পন্থায় গোটা হিন্দু জাতীর দ্বারা মুসলমানরা যেখানে নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, হাজারো নয় লাখো কোটি মুসলমান নির্মমভাবে নিহত হচ্ছে, হাজারো হাজার মা বোন পাশবিকতার শিকার হচ্ছে, সহায় সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে ভিটেমাটিহীন করা হচ্ছে- সেখানে কোন বিবেকবান বলতে পারে এখনও তাদের সাথে চুক্তি বহাল আছে আর মুসলমানদের উপর ফরয উক্ত চুক্তি রক্ষা করা এবং ভারতের মালাউনেদের জান মালের উপর কোনরূপ আঘাত না হানা??!! একমাত্র রহমানীর মত পথভ্রষ্টরাই এমন ফতোয়াবাজি করতে পারে। শরীয়ত সম্পর্কে অজ্ঞরাই কেবল এমন মূর্খতাসূলভ মন্তব্য করতে পারে। কিংবা তারাই করতে পারে যারা দুনিয়ার সামান্য সুখ-সুবিধা আর সুনাম-সুখ্যাতীর লোভে দ্বীনকে বিক্রি করে দিয়েছে। হে আল্লাহ! তুমি মুসলিম উম্মাহকে এসব অজ্ঞ-মূর্খ-পথভ্রষ্ট নামধারী আলেম থেকে হিফাযত কর। আমীন।
Comment