Announcement

Collapse
No announcement yet.

মোডারেট সুলতান ও তার কুফর প্রীতি। ...মুসাল্লাহ কাতিব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মোডারেট সুলতান ও তার কুফর প্রীতি। ...মুসাল্লাহ কাতিব

    মোডারেট সুলতান ও তার কুফর প্রীতি
    ...মুসাল্লাহ কাতিব

    ইসলামের মধ্যে মোডারেশন একটি মারাত্মক ভাইরাস। বাহ্যিকভাবে এটি অনেকের নিকট ভালো মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এ মতবাদের দ্বারা ইসলামের চরম ক্ষতি সাধন হচ্ছে। আধুনিকায়নের নামে এ মতবাদ ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলীকে বিকৃত এমনকি রহিতকরণের অপতৎপরতায় লিপ্ত। মডারেটরা জিহাদের মতো পবিত্র বিধানকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন এমনকি অস্বীকার করার মতো ঘৃণ্য আকীদা পোষণ করে থাকে। গণতন্ত্রকে ‘ইস্লামাইজেশন’ করার মতো অবাস্তব ও উদ্ভট চিন্তা তারাই প্রচার করে থাকে। ইসলামিক শিক্ষা-সংস্কৃতিকে পাশ্চাত্যের ধাঁচে ‘মাইগ্রেশন’ করা, সুন্নাহর পরিবর্তে পাশ্চাত্য স্টাইলের অনুসরণ করা তাদের অন্যতম কাজ। এ সমস্ত মোডারেট উন্নত জীবনযাপনের জন্য পাশ্চাত্যে পাড়ি জমাতেই বেশি আগ্রহী। এক্ষেত্রে তারা ঈমান-আকীদা বিসর্জন দিতেও দ্বিধা করে না। বিশেষ করে, মোডারেট দাঈদের বিলাসী জীবনযাপন এবং কুফফার ও তাগুতদের সাথে তাদের অন্তরঙ্গতা মাজলুমদের দৃষ্টিতে একটি চরম আশ্চর্যের বিষয়। কারণ, যেই কালেমার জন্য কুফফাররা মুসলিমদের হত্যা করছে; সেই কালেমার দাওয়াতই মডারেটরা নির্দ্বিধায় তাদের দেশে দিয়ে বেড়ায়। বাধা দেওয়া তো দূরের কথা; বরং কুফফাররা তাদেরকে উৎসাহ ও সহযোগিতা প্রদান করে। তারই ধারাবাহিকতায় এসব মোডারেট বিশ্ব ব্যাপী তাগুতী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও তা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মুসলিম বিশ্বের সেক্যুলার শাসক, যারা মূলত ‘আইম্মাতুল কুফর’দের এজেন্ট; এমন ব্যক্তিদেরকে অনেকে মুসলমানদের ইমাম হিসেবে প্রচার করে যাচ্ছে।

    যাই হোক, সম্প্রতি মুসলিম বিশ্বে একটি হুজুগ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেটা হলো, বর্তমান বিশ্বের অতি উৎসাহী কিছু লোক তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে মুসলমানদের সুলতান, খলীফা ও ইসলামের ত্রাণকর্তা ইত্যাদি বলে উম্মাহকে বিভ্রান্ত করছে। এ সম্পর্কে কিছু বাস্তবতা উম্মাহর সামনে তুলে ধরা সময়ের দাবি। এরদোগান মূলত মিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ মুরসি’র মতো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় আসা একই ভাবধারার অর্থাৎ মোডারেট মুসলিম নেতা। এমনকি এরদোগান নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন, “আমি বিশ্বাস করি না যে, ইসলামী সংস্কৃতি এবং গণতন্ত্র একত্রে চলতে পারে না।” আর আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট মি. ওবামা তো তুরস্ক সফরে এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তুরস্ক তাদের ঘনিষ্ঠতম পাঁচ মিত্রের অন্যতম। আর মি. এরদোগানের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, “একজন নেতা কীভাবে একই সঙ্গে ইসলামিক, গণতান্ত্রিক ও সহিষ্ণু (!) হতে পারেন, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এরদোগান”। এই যার অবস্থা, তিনি কি বাস্তবেই মুসলিম উম্মাহর কল্যাণকামী সুলতান (!) নাকি পাশ্চাত্যের একনিষ্ঠ বন্ধু ও সেবাদাস? তা কিঞ্চিৎ পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

    প্রথমেই তার যে বৈশিষ্ট্য বিদগ্ধ বিশ্লেষকদের কাছে ধরা পড়ে তা হলো, তার দেশ ন্যাটো নামক পশ্চিমা সামরিক জোটের অন্যতম এবং একমাত্র মুসলিম (!) সদস্য রাষ্ট্র। যে দাজ্জালী জোট বিশ্ব ব্যাপী ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে এবং মুসলিম নিধনে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়; আফগানিস্তানে ইসলামী ইমারাত ধ্বংস করে তাগুতী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন আগ্রাসনের অংশীদার হিসেবে এ তুরস্ক তৃতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক সৈন্য পাঠিয়েছিল এবং বর্তমানেও তার দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সৈন্য সেখানে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত।
    এরদোগান ও তার দেশের ইসরাইল প্রীতি তো এখন আর গোপন বিষয় নয়। মুসলিম দেশসমূহের মাঝে ইসরাইলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হচ্ছে তুরস্ক। এই কথিত সুলতান ক্ষমতায় আসার পর ইসলাম ও মানবতার সবচেয়ে নিকৃষ্ট দুশমন ইয়াহুদীদের সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করেন। তিনি ২০০৫ সালে ২ দিন ব্যাপী ইসরাইল সফরে যান, এমনকি তুরস্কের পার্লামেন্টে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজকে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ দিয়ে মুসলমানদের গৌরবময় ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছিলেন।
    মি. এরদোগান, যিনি ইসরাইলের আগুন নিভাতে বিশেষ বিমান পাঠিয়ে সাহায্য করতে পারলেও ফিলিস্তিন, আরাকান বা অন্য কোনো নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য একটি ঠেলা গাড়ীও পাঠাতে পারেননি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার মায়াকান্না ও নামে মাত্র কিছু ত্রাণ পাঠানো, এগুলো মূলত তাদের কপট রাজনৈতিক চালবাজি ছাড়া কিছু নয়। আক্রান্ত মাজলুমদের সাহায্য করা তো দূরের বিষয়, বরং উল্টো আইএস দমনের নামে আমেরিকার সাথে মিলে সিরিয়ার সাধারণ মুসলিমদের উপর বিমান হামলা ও গণহত্যায় সক্রিয় অংশীদার এই কথিত সুলতান। তার দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করে ইসরাইল সিরিয়াতে বিমান হামলা করলেও তাদের কথিত সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয় না। এ হলো সংক্ষেপে, মোডারেট সুলতানের ইয়াহুদী প্রীতির কিঞ্চিৎ উদাহরণ।

    আর প্রভু আমেরিকার খেদমতে তিনি তো তুরস্কের ‘ইন্সারলিঙ্ক’ নামক বিমানঘাঁটি উৎসর্গ করেই রেখেছেন; যাতে মার্কিনীরা নির্বিঘ্নে ইরাক-সিরিয়াতে মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে। শুধু তাই নয়, সোমালিয়ার মুজাহিদীনের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও কুফফার সংঘের সাথে শরিক হয়ে তার সৈন্য যুদ্ধ করে চলছে এবং সেখানে তুরস্কের একমাত্র সামরিক ঘাঁটি রয়েছে; যেখানে তারা সেখানকার মুরতাদ সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করে যাচ্ছে। এমন অসংখ্য দলীল এই কথিত সুলতানের মুখোশ উম্মাহর নিকট উন্মোচন করে দিয়েছে।

    ন্যাটো, ইসরাইল তথা কুফফারদের মিত্র হওয়ার পরও তার একটি সাধ রয়ে গেছে; সেটা হলো, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ এর সদস্যপদ লাভ করা। এক্ষেত্রে বেচারা কুফফারদের নিকট অনেক ধরনা দিয়েছেন; কিন্তু প্রভুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
    উম্মাহর ঘাড়ে চেপে বসা এ জাতীয় গাদ্দাররা আর যাই হোক, উম্মাহর অভিভাবক বা সুলতান হতে পারে না। কারণ এরা উম্মাহর চিন্তা-চেতনা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রুর সাথে প্রতিনিয়ত খেয়ানত করে যাচ্ছে। ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুদের সাথে আঁতাত করছে এবং কাফেরদের এজেণ্ডা মুসলিম ভূমিগুলোতে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এদের বাস্তবতা হলো, যখন এরা মুমিনদের সাথে মিশে তখন বলে, আমরা তো বেশ ঈমানদার। আবার যখন কুফফার নেতাদের সাথে মিশে তখন বলে, আমরা মূলত তোমাদের সাথেই আছি। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে এদের অবস্থা আগেই প্রকাশ করে দিয়েছেন।
    وَإِذَا لَقُوا الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا إِلَى شَيَاطِينِهِمْ قَالُوا إِنَّا مَعَكُمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُونَ
    “যারা ঈমান এনেছে; তাদের সাথে যখন এরা মিলিত হয়, তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আর যখন নিজেদের শয়তানদের (নেতৃবর্গের) সাথে একান্তে মিলিত হয়, তখন বলে, আমরা তোমাদেরই সঙ্গে আছি। আমরা শুধু তামাশা করছিলাম।” -সূরা বাকারা: ১৪

    আল্লাহ তাআলা সমস্ত মুনাফিক থেকে এ উম্মাহকে পরিত্রাণ দান করুন। আমীন!

    ......Al-balagh 1439 | 2017 | issue 6......

  • #2
    জাজাকাল্লাহু খাইরান

    Comment


    • #3
      আমিন, জাযাকাল্লাহ খায়রান।

      Comment

      Working...
      X