Announcement

Collapse
No announcement yet.

বিশ্বের সবচাইতে ধনী ও রহস্যে ঘেরা পরিবার ‘রথসচাইল্ড’

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বিশ্বের সবচাইতে ধনী ও রহস্যে ঘেরা পরিবার ‘রথসচাইল্ড’

    বিশ্বের সবচাইতে ধনী ও রহস্যে ঘেরা পরিবার ‘রথসচাইল্ড’
    প্রতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকা হয়, সেই তালিকার প্রথম দিকের সবাইকেই আমরা কমবেশি চিনি। কিন্তু একটা বিষয় জেনে খুবই অবাক লাগতো, পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ও ধনী পরিবার হিসেবে পরিচিত রথচাইল্ড পরিবারের কারো নাম সেখানে কখনোই দেখা যায় না! আসলে তাদের সম্পদের সঠিক হিসাব একমাত্র পরিবারের লোকেরা ছাড়া বাইরের কারো কাছে প্রকাশ পায় না। তবে বাইরের অনেক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি নানানভাবে তাদের সম্পদের পরিমাণ আন্দাজ করে থাকেন।
    বর্তমান পৃথিবী অনেক উন্নত হচ্ছে, অথচ ধনী গরীবের ব্যবধান ক্রমেই বেড়ে চলছে। এই ইস্যুর আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে সম্প্রতি “অক্সফাম”-এর প্রকাশিত এক রিপোর্ট। এখানে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক (নিম্নতর আয়ের) সমপরিমাণ লোকের সম্পদের পরিমাণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনী ৮ জন লোকের সম্পদের পরিমাণের সমান! ব্যাপারটা ধরতে পারছেন? ৮ জন লোকের যে পরিমাণ সম্পদ, ৩৬০ কোটি লোকেরও সেই পরিমাণ সম্পদ!
    পৃথিবী খুব নিষ্ঠুর জায়গা। উল্লেখ্য যে ফোর্বস সাময়িকীর হিসাব অনুযায়ী শীর্ষ ৮ জন ধনীর মোট সম্পদের পরিমাণ ৪২৬.২ বিলিয়ন ডলার (ফেব্রুয়ারি, ২০১৭)। এই টাকা আসলে কত টাকা, তা হয়তো অনেকের মাথায়ই ধরবে না। আধুনিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা যে সাধারণ মানুষের জীবনের উন্নয়নে নিদারুনভাবে ব্যর্থ, এইটাই সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
    অক্সফামের এই রিপোর্টে নানা সমস্যার কথা উঠে আসলেও আসেনি এই বৈষম্যের পেছনে যেটা সবচেয়ে বড় কারণ তার কথা –“গ্লোবাল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কিং সিস্টেম”। আর হ্যাঁ, এই প্রসঙ্গ আসলেই এসে পড়ে রথচাইল্ড পরিবারের কথা। পৃথিবীর বর্তমান বর্তমান ব্যাঙ্কিং সিস্টেম কয়েকশ বছর ধরে অনেকটাই রথসচাইল্ড ফ্যামিলির পরিকল্পনায় গড়া। এর শুরু হয়েছিল অষ্টাদশ শতাব্দীতে জার্মানীতে, মেয়ার আমশেল রথসচাইল্ডের হাত ধরে।

    আমশেল রথসচাইল্ড তার পাঁচ পুত্রকে পাঁচটি দেশে পাঠিয়ে তাদের ব্যাঙ্ককে প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ইউরোপের ঐ সময়কার সবচেয়ে সমৃদ্ধ শহর গুলাতে নেপলস (ইটালি), প্যারিস (ফ্রান্স) , ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া) ও লন্ডন (ইংল্যান্ড)-এ একটি করে ছেলে পাঠিয়ে দেন। তারা সেখানে গিয়ে রাজপরিবারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতো, তাদের যুদ্ধ চালানোর জন্য বিপুল পরিমাণে লোন দিতো। ফরাসী বিপ্লবের সময় রথসচাইল্ড ব্যাংক ফুলেফেঁপে উঠে। দেখা গেল, ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সের যুদ্ধ চলছে, রথসচাইল্ডের এক পুত্র ইংল্যান্ড সরকারকে আবার আরেক পুত্র ফরাসী সরকারকে লোন দিচ্ছে! ফলে যেই জিতুক বা হারুক, ভরে উঠছে রথসচাইল্ড পরিবারের ব্যাংক! প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইউরোপের বিভিন্ন যুদ্ধের পেছনে তাদের হাত আছে বলে নানা সময়ই গুঞ্জন ওঠে। তারাই বিভিন্ন শাসককে উস্কানি দেয় এবং টাকা ধার দেয়ার লোভ দেখিয়ে যুদ্ধে জড়ানোর চেষ্টা করে।
    ইউরোপের ৫টি শহরে সবচাইতে ধনী পরিবারগুলোর সাথে ব্যবসার পাশাপাশি সারা ইউরোপজুড়ে নিজেদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে রথসচাইল্ডরা । ফলে অর্থনৈতিক দুনিয়ার কোথায় কি ঘটতে যাচ্ছে সেইটা আঁচ করার পাশাপাশি পরবর্তী “ঘটনাটি” ঘটানোর কাজটাও খুব ভালোভাবেই করতে পারতো তারা। এদের স্পাই ছিলো সর্বত্র। সব জায়গা থেকেই এই স্পাইরা খবর সংগ্রহ করতো, আর রথচাইল্ডরা নিজেদের টাকা, সম্পদ বাড়ানোর কাজে তা ব্যবহার করতো।
    ওয়াটারলুর যুদ্ধে ব্রিটিশদের টাকার যোগান দিচ্ছিল রথসচাইল্ডদের ব্যাংক। ব্রিটিশ রথচাইল্ড ব্যাংকের প্রধান নাথান রথসচাইল্ড একটা চাল চাললেন। স্পাইয়ের মাধ্যমে খবর পেলেন ব্রিটিশরা জিতে যাচ্ছে। কিন্তু তিনি সস্তা দরে স্টক এক্সচেঞ্জে সব ব্রিটিশ শেয়ার বেচা শুরু করলেন! তাদের দেখাদেখি বাকি সব লোকেও তাদের শেয়ার বেচা শুরু করলো, তারা ভেবেছিল রথসচাইল্ডরা তো আর ভুল করবে না! ওদিকে নাথানের লোক গোপনে সব শেয়ার সস্তায় কিনে নিচ্ছিল। নাথানের লন্ডন ফেরার পরের দিনই জানা গেলো বৃটিশদের জয়ের কথা। একদিনেই নাথানের সম্পদের পরিমান বেড়ে গেলো ২০ গুণ। নাথান রথচাইল্ডের হাত দিয়ে এভাবে বৃটিশ অর্থনীতি চলে এলো একটি মাত্র পরিবারের হাতে।
    ওয়াটারলুর যুদ্ধে ফরাসীরা পরাজিত হলো। ফরাসী সরকার তখন বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ধার করতে শুরু করে, রথসচাইল্ডদের বাদ দিয়ে। কারণ অহংকারী ফরাসী অভিজাতরা ইহুদী রথসচাইল্ডদের কাছে হাত পাততে চায়নি। তাদের মন যোগাতে রথসচাইল্ডরা পার্টি, উপহার, শিল্পকলার লেনদেন করেও পাত্তা পাচ্ছিলো না। আবারও নতুন চাল চাললো রথসচাইল্ড পরিবার। ১৮১৮ সালের অক্টোবরে তারা দ্রুত কিনে নিতে শুরু করলো ফ্রান্সের দুটো প্রধান কোম্পানীর সরকারী বন্ড। ফলে বন্ডের দাম বেড়ে গেলো বহু গুণে। এরপর হঠাৎ করেই পরের মাসে তারা একসাথে সব বন্ড বাজারে ডাম্প করাতে ফরাসী অর্থনীতির বারোটা বেজে গেলো! এইবার ফরাসী রাজা বাধ্য হলেন রথসচাইল্ডদের কাছে হার মানতে। পৃথিবীর দুটো প্রধান অর্থনীতি- বৃটেন ও ফ্রান্স রথসচাইল্ডের হাতের মুঠোয় চলে এলো।
    ১৮৭৫ সালে প্রথম ইহুদী হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জায়গা করে নেন লায়োনেল রথসচাইল্ড। বিনিময়ে সেই সময় মাত্র কয়েক ঘন্টার নোটিশে ব্রিটিশ সরকারকে সেই সময়কার ৪ মিলিয়ন পাউন্ড ধার দেন, যা দিয়ে ব্রিটিশরা সুয়েজ খালের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়!
    রথচাইল্ডদের টাকার জোরের আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যারন রথসচাইল্ড ব্রিটিশ সরকারকে লোন দেন এই শর্তে, যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনে ইহুদীদের জন্য নিজস্ব দেশ তৈরি করতে হবে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লর্ড বেলফোর রাজি হয়ে যে ঘোষণা দেন এই ইস্যুতে তা “বেলফোর ঘোষণা” নামে পরিচিত। সেই ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কারণে বলা হয়, পৃথিবীতে ইসরাইল একমাত্র দেশ যা টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে!

    আধুনিক যুগে এসে রথসচাইল্ড ফ্যামিলি অকল্পনীয় সম্পদের অধিকারী হয়েছে। তারা কখনোই তাদের সম্পদের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করে না। তাদের সম্পদ নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। এই কোম্পানীগুলোও তাদের পরিবারের লোকেরাই নিয়ন্ত্রন করে।
    তাদের নিজের নামে খুব অল্প কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকে আছে। তাদের সম্পদ বেশিরভাগই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা। তেল, কয়লা, ব্যাংক প্রভৃতি নানা ধরণের কোম্পানীতে তাদের বিনিয়োগ আছে। ধারণা করা হয় আমেরিকান কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা বড় ব্যাংকেই তাদের শেয়ার আছে। যারা আগে জানতেন না, তাদের জন্য তথ্য- আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক “ফেডারেল রিজার্ভ” একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো সরকারী ব্যাংক নয়। বর্তমানে এই বিশাল পরিবারের প্রধান হলেন লর্ড জেকব রথসচাইল্ড।
    অনুমান করা হয় মোটামুটি ২০ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ আছে তাদের। ফোর্বসের ৮ জন শীর্ষ ধনীর সম্মিলিত সম্পদের প্রায় পাঁচ গুণ। তার মানে পৃথিবীর মোট জনগণের চারভাগের তিন ভাগ তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে।

    ২০১৫ সালে রথসচাইল্ড পরিবারের দুইজন প্রতিনিধির বাংলাদেশ সফরের খবর মেলে দেশের শীর্ষসারির এক গণমাধ্যম থেকে। ‘বাংলাদেশে ব্যবসার সম্ভাবনা যাচাই করছে রথসচাইল্ড গ্রুপ’ নামক শীর্ষ খবরের পর এই সংক্রান্ত আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি।
    এই অল্প লোকের হাতে বিপুল সম্পদের জমা হওয়া নিশ্চিতভাবেই আধুনিক সভ্যতার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। এর সমাধান কি তাও কেউ জানে না। এর পরিণতি কী, তা নিয়েও রয়েছে নানান দুর্ভাবনা আর সংশয়। নানা সময়ে এই বৈষম্য নিরসনে নানান থিওরীর জন্ম হয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি একটিও।
    মনিরুল ইসলাম মণি | Feb 20, 2017 | অদ্ভুত,বিস্ময়,অবিশ্বাস্য, এরাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড |

  • #2
    শায়েখ আসেম ওমর হাফিজাহুল্লাহ তাঁর ' ইমাম মাহদির দোস্ত দুশমন দ্বীন বড় না দেশ বড় ' নামক কিতাবে এ ব্যাপারে কিছু আলোচনা করেছেন।

    Comment


    • #3
      Originally posted by ibn jiad View Post
      ২০১৫ সালে রথসচাইল্ড পরিবারের দুইজন প্রতিনিধির বাংলাদেশ সফরের খবর মেলে দেশের শীর্ষসারির এক গণমাধ্যম থেকে। ‘বাংলাদেশে ব্যবসার সম্ভাবনা যাচাই করছে রথসচাইল্ড গ্রুপ’ নামক শীর্ষ খবরের পর এই সংক্রান্ত আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি।
      মনিরুল ইসলাম মণি | Feb 20, 2017 | অদ্ভুত,বিস্ময়,অবিশ্বাস্য, এরাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড |
      হুমম! বাংলাদেশে ব্যবসার সম্বাবনা আছে! সেটা হলো ভারতের হিন্দু বাংলাদেশের মুসলিমের মাঝে যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়া ও ভারতকে লোন দেয়া এবং প্ললোভন দেয়া যে, তারা বাংলাদেশকে দখল করে ভোগ করতে পারবে বর্তমানের দখলদ্বারিত্ব ছাড়া যতটুকু ভোগ করতে পারছে তার চেয়ে বেশি।

      Comment

      Working...
      X