চরমোনাই পীরের দৃষ্ঠতা!!
(বয়ান টি সকল ভাইকে শুনার অনুরোধ, মাত্র 7:71 এমবি)
দেখুন তার দৃষ্ঠতা মুলক কিছু কথা:
মুরশরেকদের একটি পদ্ধতি আপনি জিহাদ হিসেবে কাজ চালাইলেন কিভাবে? এই পদ্ধতিতো মুশরেকদের। এটা মুসলমানদের না। এটা কুরআন হাদিসে বাতাই নাই।
যদি মুশরকেদের একটা পদ্ধতি আপনে নাফেজ করল, গযওয়া আহযাব বলতে পারেন, খন্দকের যুদ্ধ বলতে পারেন, জিহাদ বলতে পারেন এবং ফযিলাত বর্ণনা করত …… অথচ খন্দকের পদ্ধতি এটি কাদের?? বুজেন না আমার বাংলা কথা বুজেন না, আপনারা পাথরে মত কেন, ছাত্ররা পাথরের মত থাকবে কেন? গাছের মত ছাত্ররা থাকবে কেন, ছাত্ররা পাথরের মত থাকবে কেন? প্রশ্ন করার সাথে সাথে আমার আগে জওয়াব দিতে হবে, না হলে বুঝবেন কোন কচু!!!
মজুসীদের পদ্ধতি, মুশরেকদের পদ্ধতি, সেটা আহযাব, সেইটাকে আমি কেন গাওযা বললাম সেটাকে আমিকে জিহাদ বললাম…. এক কথায় সেটি প্রতিহত করার একটি পদ্ধতি…….
১. কুরআন সুন্নাহ ও জমহুর সালাফে সালেহীনগনের ব্যাখ্যার পরিবর্তে জিহাদের এক নতুন ব্যাখ্যা।
রাসূল সা: জিহাদের ব্যখ্যায় বলেন:
عَنْ عَمْرِو بْنِ عَبْسَةَ ... قَالَ : وَمَا الْجِهَادُ ؟ قَالَ : أَنْ تُقَاتِلَ الْكُفَّارَ إِذَا لَقِيتَهُمْ قَالَ : فَأَيُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ ؟ قَالَ : مَنْ عُقِرَ جَوَادُهُ وَأُهْرِيقَ دَمُه. (مسند احمد بن حنبل: رقم الحديث: 17068)
হযরত আমর ইবনে আবাসা রা: বলেন এক ব্যাক্তি রাসুল সা: এক জিজ্ঞাসা করেলন। জিহাদ কি? রাসুল সা: ইরশাদ করলেন: যখন কাফেরর মুখোমুখী হবে তখন তাদের সাথে লড়াই (কিতাল) করবে। অত:পর তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেনে: কোনটি উত্তম জিহাদ? রাসুল সা: ইরশাদ করলেন, যে ব্যক্তির ঘোড়ারে পা কেটে দেওয়া হয়েছে, এবং সে শহীদ হয়েছে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ১৭০৬৮)
উপরুক্ত হাদীস থেকে আমারা যে অর্থটি পেলাম। রাসূল সা: জিহাদের ব্যাখ্যা করেছেন কাফেরদের সাথে লাড়াই তথা কিতাল করা। অনুরুপ ফকীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসি্সরিগনও জিহাদের পারিভাষিক অর্থের ক্ষেত্রে শব্দের কিছু পরিবর্তন ব্যাতিত সকলেই দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য কুফফারদের সাথে লাড়াইকেই জিহাদের পারিভাষিক অর্থ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
কিন্ত চরম আশ্চর্যের বিষয়, উক্ত পীরসাহেব পূর্বর্তীদের মতের বিপরীত এমন এক অর্থ বর্ণনা করলেন। যাতে জিহাদের জন্য কিতালের কোন প্রয়োজনিয়তা নেই। বরং কিয়ামত পর্যন্ত দ্বীন কায়েমের সকল প্রচেষ্টাকেই জিহাদ বলে আক্ষায়িত করেছেন। তা যে কোন পদ্ধতি বা পন্থায় হোক। তাই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং এ ছাড়া আরো যত পদ্ধতি হবে সবগুলোকেই জিহা্দ বলে আখ্যায়িত করেন।
২. দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য রাসূল সাল্লাহল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা আজমাঈনগনের জিহাদের (রাজিআল্লাহ আনহুম) আমলি পদ্ধতিকে অনাবশ্যক মনে করা। এর পরিবর্তে যে কোন কাজকে শুধু উদ্দেশ্যের কারণে জিহাদ বলে গ্রহণ করা।
আর এটি এমন ভ্রষ্টতা যার থেকে বড় কোন ভ্রষ্টতা হতে পারেনা। অথচ রাসুল صلى الله عليه وسلم ক্বিয়ামত পর্যন্ত আগত সকলকে সাহাবাদের আদর্শ পদ্ধতিকে আকড়ে ধরার কঠোর ভাবে নির্দেশ করেছেন।
العرباض بن سارية - رضي الله عنه - قَالَ : وعظنا صلى الله عليه وسلم مَوعظةً وَجلَتْ منها القُلُوبُ، وذرِفت منها الْعُيُونُ ..... ............ عليكم بسنَّتي وسنَّة الخلفاء الراشدين من بعدي، تمسكوا بها وعضّوا عليها بالنواجذ، وإِياكم ومحدثات الأمور، فإِن كل محدثة بدعة
হযরত ইরবাজ ইবনে সারিয়া রা: বলেন রাসুল সা: আমাদেরকে এমন উপদেশ দিলেন যার দ্বারা অন্তরসমূহ প্রকম্পিত হয় এবং চোখ দ্বারা অশ্রু প্রবাহিত হয়। অত:পর রাসুল সা: বলেন তোমরা আমার পরে আমার এবং খোলাফায়ে রাশিদীন এর আদর্শ শক্তভাবে আকড়ে থাকবে। তোমাদের কে আমি নবআবিষ্কৃত (ধর্ম নয় এমন বস্তুকে ধর্মিয় বলে গ্রহণ করা) বস্তুর ব্যপারে সতর্ক করছি। যেন রাখ প্রত্যেক নব আবিষ্কিৃত বস্তুই বিদা‘ত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللّهِ صلى الله عليه وسلم أَنّهُ قَالَ: "وَالّذِي نَفْسُ مُحَمّدٍ بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمّةِ يَهُودِيّ وَلاَ نَصْرَانِيّ، ثُمّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ، إِلاّ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النّارِ". (مسلم: باب وجوب الإِيمان برسالة نبيّنا محمد صلى الله عليه وسلم إِلى جميع الناس ونسخ الملل بملة)
হযরত আবু হুরাইয়া রা: রাসূর সা: থেকে বর্ণনা করেন। রাসুল সা: বলেন, আল্লাহর শপথ যার হাতে আমার প্রাণ। যে কোন ব্যক্তি, চাই সে ইহুদী হউক বা খৃষ্টান। আমার রিসালাতের সংবাদ শুনার পর আমার উপর ঈমান ব্যাতিত মৃত্যু বরণ করবে, সে জাহান্নামী হবে।
৩. তীর, তরবারী, ঘোড়া ইত্যাদির ব্যবহার প্রয়োজনিয়তা নেই। এই খোড়া উযুহাতে ইত্যাদির ফযিলতকে অস্বিকার।
অথচ যুদ্ধে অভিজ্ঞ কোন সেনাপতিই কোন কালে সৈনিকদের জন্য এই গুলোর ব্যবহার ও গুরুত্বকে অস্বিকর করতে পারেনা। যদিও এই গুলোর সাথে আধুনিক অনেক নতুন যন্ত্রপতি যোগহয়েছে এবং আরো হতে থাকবে। আধুনিক কালের সকল উন্নত সেনাবাহনী এখনো ঘোড়া, তরবারী, ছুরী, ইত্যাদির প্রশিক্ষণে অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বরং কমান্ডোদের অবিচ্ছেদ্ধ অংশ বালা হয় কামান্ডো নাইফ (বিশেষ ধরনের চাকু) কে।
عروة البارقي عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال الخيل معقود في نواصيها الخير إلى يوم القيامة الأجر والمغنم. (التاريخ الكبير للامام بخاري – رقم الحديث: 137، 7/15)
হযরত উরওয়া বারেকী রা: রাসূল সা: থেকে বর্ননা করেন রাসুল সা: বলেন। ঘোড়ার কপালে কিয়ামত পর্যন্ত কল্যান নিহিত রয়েছে। এর দারা সে সওয়াব ও গণিমত লাভ করবে। (তারিখুল কাবীর, ইমাম বুখারী)
৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গৃহীত কাজকে কুরআন হাদিসে নেই বলে চরম দৃষ্ঠতা প্রদর্শন। (আল্লাহ তায়ালার কাছে আমরা কথার ভ্রষ্টতা তেকে আশ্রয় চাই)
অথচ রাসুল সা: এর সকল কাজ, কথা, সমর্থন, সাহাবা আজমাঈণদের কাজ ও কথা ইসলামের বিধান হিসেবে সর্বগৃহীত নীতি।
উপরন্তু আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা: এর কথা, কাজ এর ব্যপারে ইরশাদ করেন:
وما ينطق عن الهوى ان هو الا وحي يوحى
তিনি নিজ থেকে কিছু বলেন না, বরং তিনি যা বলেন তাতো প্রাপ্ত ওহী। (নজম: ৪)
ما آتاكم الرسول فخذوه وما نهاكم عنه فانتهوا
আরো ইরশাদ করেন: রাসুল সা: তোমাদের যা করতে বলেন তা কর। এবং যা থেকে নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাক।
৫. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম ও সাহবা আজমাইন এর কাজকে মুশরিকদের কাজ বলা, মুসলিমদের কাজ বলতে অস্বিকার। নাউযুবিল্লাহ
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
আপনি যদি শিরক করেন আপনার আমাল বিনষ্ট হয়ে যাবে। এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তরভু্ক্ত হবেন।
لئن اشركت ليحبطن عملك ولتكونن من الخاسرين
হে নবী আপনি বলুন, আমি একনিষ্টভাবে আল্লাহরই ইবাদত করি। তোমরা তাকে ব্যাতিত যারই ইবাদত করনা কেন। (যুমার: ১৪,১৫)
قُلِ اللَّهَ أَعْبُدُ مُخْلِصًا لَّهُ دِينِي، فَاعْبُدُوا مَا شِئْتُم مِّن دُونِهِ
হে নবী আপনি বলুন, আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমর জীবন, আমার মরণ একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। তার সাথ কোন শরিক নাই। আমি এই ব্যপারেই নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছি। এবং আমি সর্বপ্রথম মুসলমান। ১৬২-১৬৩
قُلْ إنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْت وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ
৬. বর্তমান গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন পদ্ধতিকে জিহাদ বলা।
গণতন্ত্রযে একটি কুফর শিরকে ভরপুর মতবাদ, এবং ইসলাম ভিন্ন একটি দ্বীন/ আদর্শ তা জানতে দেখতে পারেন, শায়খ আসিম ওমর হাফিজাহুল্লাহ এর “আদয়ান কি জঙ্গ, দ্বীনে ইসলাম ইয়া দ্বীনে জমহুরীয়াত” নামক কিতবাটি । যার বাংলা অনুবাদ “গনতন্ত্র একটি দ্বীন”
৭. কুরআন-সুন্নার আলোকে জিহাদের অংশ গ্রহণকারীদের চরমপন্থি, ধোকাবাজ, ফেতনাবাজ বলে গালি দেওয়া।
৮. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম, সাহাবা আজামাইনদের আদর্শ কে বাদ দিয়ে অন্যকোন ব্যক্তির মত ও আদর্শ কে শুধু মাত্র এই অযুহাতে গ্রহণ করা যে সেটি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বা বিপরীত নয়। চাই সে অনুসৃত ব্যাক্তি কাফেরই হোক না কেন?
অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন:
لقد كان لكم في رسول الله اسوة حسنة لمن كان يرجوا لله واليوم الآخرة
তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ সা: এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদরশ।
قل ان كنتم تحبون الله فاتبعوني يحبب كم الله
হে নবী আপনি বলুন যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভালবাস, আমার অনুসরণ কর। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ভালবাসবেন। (সুরা: আলে-ইমরান:
অন্যদের (ভিন্ন ধমালম্বীদের) মত-পথ গ্রহণ করতে নিষধ করে রাসূল সা: ইরশাদ করেন:
হযরত যাবের রা: থেকে বর্ণিত হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা: আহলে কিতাবদের কিছু লিখনি নিয়ে রাসূল সা: এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন। ইয়া রাসুল্লাল্লাহ! আমি কতক আহলে কিতাব থেকে কিছু সুন্দর বিষয়ে অবগত হয়েছি। হযরত জাবের রা: বলেন, তখন রাসূল সা: রাগান্তিত হয়ে বললেন। হে খাত্তাবের বেটা, তুমি এখনো্ সে গুলো নিয়ে পরে আছো। ঐ সত্তার শপথ যার হাতে আমার জীবন। আমি তোমাদের নিকট এক সুভ্র/ পরিচ্ছ্ন্ন আদর্শ নিয়ে এসেছি। তোমরা তাদের কাছে কোন বিষয় জিজ্ঞাসা করবেনা। হতে পারে তারা সত্য বলবে, অথচ তোমরা তাকে মিথ্যা হিসেবে গ্রহণ করবে। অথবা মিথ্যা বলবে আর তোমার সেটি সত্য হিসেবে গ্রহণ করবে। শপথ্ ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ, যদি মুসা আ: আজ জীবিত থাকতেন। আমার অনুসরণ ব্যতিত তার মুক্তির কোন পথ হতোনা।
عَنْ جَابِرٍ ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِكِتَابٍ أَصَابَهُ مِنْ بَعْضِ الْكُتُبِ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، إنِّي أَصَبْتُ كِتَابًا حَسَنًا مِنْ بَعْضِ أَهْلِ الْكِتَابِ ، قَالَ : فَغَضِبَ ، وَقَالَ : أَمُتَهَوِّكُونَ فِيهَا يَا ابْنَ الْخَطَّابِ ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ، لَقَدْ جِئْتُكُمْ بِهَا بَيْضَاءَ نَقِيَّةً ، لاَ تَسْأَلُوهُمْ عَن شَيْءٍ فَيُخْبِرُوكُمْ بِحَقٍّ فَتُكَذِّبُوا بِهِ ، أَوْ بِبَاطِلٍ فَتُصَدِّقُوا بِهِ ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ، لَوْ كَانَ مُوسَى كان حَيًّا اليَوم مَا وَسِعَهُ إلاَّ أَنْ يَتَّبِعَني. (مصنف ابن أبي شيبة، باب من كره النظر في كتاب اهل الكتاب، رقم الحديث: 26949)
এই আলোচনায় আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে যে সকল সংশয় মনে হয়ছে তার কিছু এখানে উল্লেখ করেছি, আরো অনেক সংশয় সৃষ্টি কারি বস্তু রয়েছে। সম্মানিত আলেম ভাইদের নিকট এর উত্তর কামনা করছি।
(বয়ান টি সকল ভাইকে শুনার অনুরোধ, মাত্র 7:71 এমবি)
দেখুন তার দৃষ্ঠতা মুলক কিছু কথা:
মুরশরেকদের একটি পদ্ধতি আপনি জিহাদ হিসেবে কাজ চালাইলেন কিভাবে? এই পদ্ধতিতো মুশরেকদের। এটা মুসলমানদের না। এটা কুরআন হাদিসে বাতাই নাই।
যদি মুশরকেদের একটা পদ্ধতি আপনে নাফেজ করল, গযওয়া আহযাব বলতে পারেন, খন্দকের যুদ্ধ বলতে পারেন, জিহাদ বলতে পারেন এবং ফযিলাত বর্ণনা করত …… অথচ খন্দকের পদ্ধতি এটি কাদের?? বুজেন না আমার বাংলা কথা বুজেন না, আপনারা পাথরে মত কেন, ছাত্ররা পাথরের মত থাকবে কেন? গাছের মত ছাত্ররা থাকবে কেন, ছাত্ররা পাথরের মত থাকবে কেন? প্রশ্ন করার সাথে সাথে আমার আগে জওয়াব দিতে হবে, না হলে বুঝবেন কোন কচু!!!
মজুসীদের পদ্ধতি, মুশরেকদের পদ্ধতি, সেটা আহযাব, সেইটাকে আমি কেন গাওযা বললাম সেটাকে আমিকে জিহাদ বললাম…. এক কথায় সেটি প্রতিহত করার একটি পদ্ধতি…….
১. কুরআন সুন্নাহ ও জমহুর সালাফে সালেহীনগনের ব্যাখ্যার পরিবর্তে জিহাদের এক নতুন ব্যাখ্যা।
রাসূল সা: জিহাদের ব্যখ্যায় বলেন:
عَنْ عَمْرِو بْنِ عَبْسَةَ ... قَالَ : وَمَا الْجِهَادُ ؟ قَالَ : أَنْ تُقَاتِلَ الْكُفَّارَ إِذَا لَقِيتَهُمْ قَالَ : فَأَيُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ ؟ قَالَ : مَنْ عُقِرَ جَوَادُهُ وَأُهْرِيقَ دَمُه. (مسند احمد بن حنبل: رقم الحديث: 17068)
হযরত আমর ইবনে আবাসা রা: বলেন এক ব্যাক্তি রাসুল সা: এক জিজ্ঞাসা করেলন। জিহাদ কি? রাসুল সা: ইরশাদ করলেন: যখন কাফেরর মুখোমুখী হবে তখন তাদের সাথে লড়াই (কিতাল) করবে। অত:পর তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেনে: কোনটি উত্তম জিহাদ? রাসুল সা: ইরশাদ করলেন, যে ব্যক্তির ঘোড়ারে পা কেটে দেওয়া হয়েছে, এবং সে শহীদ হয়েছে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ১৭০৬৮)
উপরুক্ত হাদীস থেকে আমারা যে অর্থটি পেলাম। রাসূল সা: জিহাদের ব্যাখ্যা করেছেন কাফেরদের সাথে লাড়াই তথা কিতাল করা। অনুরুপ ফকীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসি্সরিগনও জিহাদের পারিভাষিক অর্থের ক্ষেত্রে শব্দের কিছু পরিবর্তন ব্যাতিত সকলেই দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য কুফফারদের সাথে লাড়াইকেই জিহাদের পারিভাষিক অর্থ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
কিন্ত চরম আশ্চর্যের বিষয়, উক্ত পীরসাহেব পূর্বর্তীদের মতের বিপরীত এমন এক অর্থ বর্ণনা করলেন। যাতে জিহাদের জন্য কিতালের কোন প্রয়োজনিয়তা নেই। বরং কিয়ামত পর্যন্ত দ্বীন কায়েমের সকল প্রচেষ্টাকেই জিহাদ বলে আক্ষায়িত করেছেন। তা যে কোন পদ্ধতি বা পন্থায় হোক। তাই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং এ ছাড়া আরো যত পদ্ধতি হবে সবগুলোকেই জিহা্দ বলে আখ্যায়িত করেন।
২. দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য রাসূল সাল্লাহল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা আজমাঈনগনের জিহাদের (রাজিআল্লাহ আনহুম) আমলি পদ্ধতিকে অনাবশ্যক মনে করা। এর পরিবর্তে যে কোন কাজকে শুধু উদ্দেশ্যের কারণে জিহাদ বলে গ্রহণ করা।
আর এটি এমন ভ্রষ্টতা যার থেকে বড় কোন ভ্রষ্টতা হতে পারেনা। অথচ রাসুল صلى الله عليه وسلم ক্বিয়ামত পর্যন্ত আগত সকলকে সাহাবাদের আদর্শ পদ্ধতিকে আকড়ে ধরার কঠোর ভাবে নির্দেশ করেছেন।
العرباض بن سارية - رضي الله عنه - قَالَ : وعظنا صلى الله عليه وسلم مَوعظةً وَجلَتْ منها القُلُوبُ، وذرِفت منها الْعُيُونُ ..... ............ عليكم بسنَّتي وسنَّة الخلفاء الراشدين من بعدي، تمسكوا بها وعضّوا عليها بالنواجذ، وإِياكم ومحدثات الأمور، فإِن كل محدثة بدعة
হযরত ইরবাজ ইবনে সারিয়া রা: বলেন রাসুল সা: আমাদেরকে এমন উপদেশ দিলেন যার দ্বারা অন্তরসমূহ প্রকম্পিত হয় এবং চোখ দ্বারা অশ্রু প্রবাহিত হয়। অত:পর রাসুল সা: বলেন তোমরা আমার পরে আমার এবং খোলাফায়ে রাশিদীন এর আদর্শ শক্তভাবে আকড়ে থাকবে। তোমাদের কে আমি নবআবিষ্কৃত (ধর্ম নয় এমন বস্তুকে ধর্মিয় বলে গ্রহণ করা) বস্তুর ব্যপারে সতর্ক করছি। যেন রাখ প্রত্যেক নব আবিষ্কিৃত বস্তুই বিদা‘ত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللّهِ صلى الله عليه وسلم أَنّهُ قَالَ: "وَالّذِي نَفْسُ مُحَمّدٍ بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمّةِ يَهُودِيّ وَلاَ نَصْرَانِيّ، ثُمّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ، إِلاّ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النّارِ". (مسلم: باب وجوب الإِيمان برسالة نبيّنا محمد صلى الله عليه وسلم إِلى جميع الناس ونسخ الملل بملة)
হযরত আবু হুরাইয়া রা: রাসূর সা: থেকে বর্ণনা করেন। রাসুল সা: বলেন, আল্লাহর শপথ যার হাতে আমার প্রাণ। যে কোন ব্যক্তি, চাই সে ইহুদী হউক বা খৃষ্টান। আমার রিসালাতের সংবাদ শুনার পর আমার উপর ঈমান ব্যাতিত মৃত্যু বরণ করবে, সে জাহান্নামী হবে।
৩. তীর, তরবারী, ঘোড়া ইত্যাদির ব্যবহার প্রয়োজনিয়তা নেই। এই খোড়া উযুহাতে ইত্যাদির ফযিলতকে অস্বিকার।
অথচ যুদ্ধে অভিজ্ঞ কোন সেনাপতিই কোন কালে সৈনিকদের জন্য এই গুলোর ব্যবহার ও গুরুত্বকে অস্বিকর করতে পারেনা। যদিও এই গুলোর সাথে আধুনিক অনেক নতুন যন্ত্রপতি যোগহয়েছে এবং আরো হতে থাকবে। আধুনিক কালের সকল উন্নত সেনাবাহনী এখনো ঘোড়া, তরবারী, ছুরী, ইত্যাদির প্রশিক্ষণে অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বরং কমান্ডোদের অবিচ্ছেদ্ধ অংশ বালা হয় কামান্ডো নাইফ (বিশেষ ধরনের চাকু) কে।
عروة البارقي عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال الخيل معقود في نواصيها الخير إلى يوم القيامة الأجر والمغنم. (التاريخ الكبير للامام بخاري – رقم الحديث: 137، 7/15)
হযরত উরওয়া বারেকী রা: রাসূল সা: থেকে বর্ননা করেন রাসুল সা: বলেন। ঘোড়ার কপালে কিয়ামত পর্যন্ত কল্যান নিহিত রয়েছে। এর দারা সে সওয়াব ও গণিমত লাভ করবে। (তারিখুল কাবীর, ইমাম বুখারী)
৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গৃহীত কাজকে কুরআন হাদিসে নেই বলে চরম দৃষ্ঠতা প্রদর্শন। (আল্লাহ তায়ালার কাছে আমরা কথার ভ্রষ্টতা তেকে আশ্রয় চাই)
অথচ রাসুল সা: এর সকল কাজ, কথা, সমর্থন, সাহাবা আজমাঈণদের কাজ ও কথা ইসলামের বিধান হিসেবে সর্বগৃহীত নীতি।
উপরন্তু আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা: এর কথা, কাজ এর ব্যপারে ইরশাদ করেন:
وما ينطق عن الهوى ان هو الا وحي يوحى
তিনি নিজ থেকে কিছু বলেন না, বরং তিনি যা বলেন তাতো প্রাপ্ত ওহী। (নজম: ৪)
ما آتاكم الرسول فخذوه وما نهاكم عنه فانتهوا
আরো ইরশাদ করেন: রাসুল সা: তোমাদের যা করতে বলেন তা কর। এবং যা থেকে নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাক।
৫. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম ও সাহবা আজমাইন এর কাজকে মুশরিকদের কাজ বলা, মুসলিমদের কাজ বলতে অস্বিকার। নাউযুবিল্লাহ
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
আপনি যদি শিরক করেন আপনার আমাল বিনষ্ট হয়ে যাবে। এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তরভু্ক্ত হবেন।
لئن اشركت ليحبطن عملك ولتكونن من الخاسرين
হে নবী আপনি বলুন, আমি একনিষ্টভাবে আল্লাহরই ইবাদত করি। তোমরা তাকে ব্যাতিত যারই ইবাদত করনা কেন। (যুমার: ১৪,১৫)
قُلِ اللَّهَ أَعْبُدُ مُخْلِصًا لَّهُ دِينِي، فَاعْبُدُوا مَا شِئْتُم مِّن دُونِهِ
হে নবী আপনি বলুন, আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমর জীবন, আমার মরণ একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। তার সাথ কোন শরিক নাই। আমি এই ব্যপারেই নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছি। এবং আমি সর্বপ্রথম মুসলমান। ১৬২-১৬৩
قُلْ إنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْت وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ
৬. বর্তমান গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন পদ্ধতিকে জিহাদ বলা।
গণতন্ত্রযে একটি কুফর শিরকে ভরপুর মতবাদ, এবং ইসলাম ভিন্ন একটি দ্বীন/ আদর্শ তা জানতে দেখতে পারেন, শায়খ আসিম ওমর হাফিজাহুল্লাহ এর “আদয়ান কি জঙ্গ, দ্বীনে ইসলাম ইয়া দ্বীনে জমহুরীয়াত” নামক কিতবাটি । যার বাংলা অনুবাদ “গনতন্ত্র একটি দ্বীন”
৭. কুরআন-সুন্নার আলোকে জিহাদের অংশ গ্রহণকারীদের চরমপন্থি, ধোকাবাজ, ফেতনাবাজ বলে গালি দেওয়া।
৮. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম, সাহাবা আজামাইনদের আদর্শ কে বাদ দিয়ে অন্যকোন ব্যক্তির মত ও আদর্শ কে শুধু মাত্র এই অযুহাতে গ্রহণ করা যে সেটি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বা বিপরীত নয়। চাই সে অনুসৃত ব্যাক্তি কাফেরই হোক না কেন?
অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন:
لقد كان لكم في رسول الله اسوة حسنة لمن كان يرجوا لله واليوم الآخرة
তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ সা: এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদরশ।
قل ان كنتم تحبون الله فاتبعوني يحبب كم الله
হে নবী আপনি বলুন যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভালবাস, আমার অনুসরণ কর। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ভালবাসবেন। (সুরা: আলে-ইমরান:
অন্যদের (ভিন্ন ধমালম্বীদের) মত-পথ গ্রহণ করতে নিষধ করে রাসূল সা: ইরশাদ করেন:
হযরত যাবের রা: থেকে বর্ণিত হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা: আহলে কিতাবদের কিছু লিখনি নিয়ে রাসূল সা: এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন। ইয়া রাসুল্লাল্লাহ! আমি কতক আহলে কিতাব থেকে কিছু সুন্দর বিষয়ে অবগত হয়েছি। হযরত জাবের রা: বলেন, তখন রাসূল সা: রাগান্তিত হয়ে বললেন। হে খাত্তাবের বেটা, তুমি এখনো্ সে গুলো নিয়ে পরে আছো। ঐ সত্তার শপথ যার হাতে আমার জীবন। আমি তোমাদের নিকট এক সুভ্র/ পরিচ্ছ্ন্ন আদর্শ নিয়ে এসেছি। তোমরা তাদের কাছে কোন বিষয় জিজ্ঞাসা করবেনা। হতে পারে তারা সত্য বলবে, অথচ তোমরা তাকে মিথ্যা হিসেবে গ্রহণ করবে। অথবা মিথ্যা বলবে আর তোমার সেটি সত্য হিসেবে গ্রহণ করবে। শপথ্ ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ, যদি মুসা আ: আজ জীবিত থাকতেন। আমার অনুসরণ ব্যতিত তার মুক্তির কোন পথ হতোনা।
عَنْ جَابِرٍ ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِكِتَابٍ أَصَابَهُ مِنْ بَعْضِ الْكُتُبِ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، إنِّي أَصَبْتُ كِتَابًا حَسَنًا مِنْ بَعْضِ أَهْلِ الْكِتَابِ ، قَالَ : فَغَضِبَ ، وَقَالَ : أَمُتَهَوِّكُونَ فِيهَا يَا ابْنَ الْخَطَّابِ ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ، لَقَدْ جِئْتُكُمْ بِهَا بَيْضَاءَ نَقِيَّةً ، لاَ تَسْأَلُوهُمْ عَن شَيْءٍ فَيُخْبِرُوكُمْ بِحَقٍّ فَتُكَذِّبُوا بِهِ ، أَوْ بِبَاطِلٍ فَتُصَدِّقُوا بِهِ ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ، لَوْ كَانَ مُوسَى كان حَيًّا اليَوم مَا وَسِعَهُ إلاَّ أَنْ يَتَّبِعَني. (مصنف ابن أبي شيبة، باب من كره النظر في كتاب اهل الكتاب، رقم الحديث: 26949)
এই আলোচনায় আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে যে সকল সংশয় মনে হয়ছে তার কিছু এখানে উল্লেখ করেছি, আরো অনেক সংশয় সৃষ্টি কারি বস্তু রয়েছে। সম্মানিত আলেম ভাইদের নিকট এর উত্তর কামনা করছি।
হে আল্লাহ আমি আপনার নিকট কথার বিচ্যুতি থেকে এবং সকল প্রকার ফিতনা ও ভ্রষ্টতা থেকে আশ্রয় চাই।
اللهم ارنا الحق حقا وارزقنا اتباعه، و أرنا الباطل باطلا و ارزقنا اجتنابه
و صلى الله تعالى على خير خلقه محمد و آله وصحبه اجمعين
আল্
اللهم ارنا الحق حقا وارزقنا اتباعه، و أرنا الباطل باطلا و ارزقنا اجتنابه
و صلى الله تعالى على خير خلقه محمد و آله وصحبه اجمعين
Comment