ভূয়া ‘মূল্যবোধ’: ইহুদীবাদীদের বিশ্ব নিয়ন্ত্রনের অপকৌশলের আরেক নাম
ইহুদীবাদীরা সারা বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু ভুয়া ‘মূল্যবোধ’ চালু করেছে। মিডিয়ার মাধ্যমে নিজেরা সেই ভুয়া ‘মূল্যবোধ’গুলোর প্রচার করে এবং পাঠ্যবইয়ে সে সব অন্তর্ভূক্ত করে সাধারণ মানুষের মনে তা গেথে দিয়েছে। এরপর সেই সব ‘মূল্যবোধের’ দোহাই দিয়ে তারা নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে খুব সহজে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রচলিত সেই সব ভুয়া ‘মূল্যবোধ’ বুঝতে হলে, আমাদেরকে আগে বাংলাদেশে প্রচলিত বিভিন্ন মূল্যবোধগুলো একটু চোখ বুলিয়ে নিতে হবে, তাহলে বিদেশীগুলো বুঝতে সহজ হবে। যেমন, বর্তমানে বাংলাদেশে একটি মহল যে সব কথা অত্যধিক ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে-
-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা,
-বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন
- পাকিস্তানী
-একাত্তরের চেতনা
-সাম্প্রদায়িক
-জঙ্গি
যারা এসব শব্দগুলো ব্যবহার করে, বাস্তবে দেখা যায়, তারা নিজেরাই সেগুলো মানে না। কিন্তু এসব শব্দ ব্যবহার করে তারা খুব সহজেই প্রতিপক্ষকে দমন করে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ইহুদীবাদীরা এ ধরনের অনেক শব্দ ব্যবহৃত করে। যেমন-
১) গণতন্ত্র : বাস্তবে আসলে গণতন্ত্র একটি মরিচীকার নাম, কোন দেশেই আসলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। কিন্তু এই গনতন্ত্রের অজুহাত দিয়ে ইহুদীবাদীরা নিজস্ব পছন্দের সরকারকে ক্ষমতায় আনে। তবে নিজেদের পছন্দ হলে তারা গণতন্ত্রকেও ল্যাং মারতে পিছপা হয় না। যেমন মিশরে মুরসিকে সরিয়ে সিসিকে ক্ষমতায় আনা।
২) বাক স্বাধীনতা : বাক স্বাধীনতার আড়লে যে চেতনা কাজ করছে আসলে তার নাম ইসলাম বিদ্বেষ। মসজিদের হুজুর কি খুতবা দিবে সেটা আইন করে বন্ধ করলে বাক স্বাধীনতা হরণ হয়েছে, এটা কখন তারা বলবে না।বরং ইসলাম বিদ্বেষী কথা বলতে বাধা দিলে বাক স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়েছে বলে গলা ফাটাবে।
৩) ধর্মনিরপেক্ষতা : সংখ্যাগুরুর ধর্মকে দমিয়ে রাখার অপকৌশল আর ধর্মহীনতা।
৪) সংখ্যালঘুর অধিকার : সংখ্যালঘুর নাম করে সংখ্যাগুরুকে দমন করা অস্ত্র।
৫) জেন্ডার ইকুয়ালিটি : অসম দুটি বিষয়কে সমান করার নামে সামাজিক বিশৃঙ্খলতা তৈরী করা।
৬) নারীর ক্ষমতায়ন : নারীকে ঘর থেকে বের করে বাইরে চাকরীতে লাগানো। সন্তানকে কাজের বুয়া দিয়ে লালন-পালন করানো। অতঃপর মানসিকবিকারগ্রস্থ নতুন প্রজন্ম তৈরী, যাদের উপর ইহুদীবাদীদের নিয়ন্ত্রন খুবই সহজ হবে।
৭) মানবাধিকার : আইন-কানুন-নিয়ম শৃঙ্খলার ভঙ্গ করা । চোরের মা’র বড় গলা।
৮) এইচআইভি/এইডস এডুকেশন/ : কিভাবে অবিবাহিত হয়েও জন্মনিরোধক ব্যবহার করে যা খুশি তাই করা যায় সেটা শেখানো।
৯) এনজিও/ডেভেলপমেন্ট : ছোট দেশগুলোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করা, ছোট দেশের ডেভেলপমেন্টের কথা বলে সম্রাজ্যবাদীদের আর্থিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা।
১০) কালচার/সংষ্কৃতি : লোকাল প্যাগানিজম প্রমোট করা ।
১১) জলবায়ু পরিবর্তন/পরিবেশ রক্ষা : কোন দেশের শিল্প কলকারখানা নিয়ন্ত্রণ করা। কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের কথা বলে নতুন শিল্প কারাখানা তৈরী করতে না দেয়া।
১২) বয়ঃসন্ধি শিক্ষা : গোপন কথা প্রকাশ্যে বলে মানুষকে লজ্জাহীন করা।
১৩) নারী স্বাধীনতা : নারীকে বস্ত্রহীন ও বল্গাহারা করা।
১৪) শ্রমিক অধিকার : উপর দিয়ে বলবে শ্রমিক অধিকারের কথা, কিন্তু ভেতর দিয়ে টার্গেট একদেশে শিল্প বন্ধ করে অন্য দেশে সেটা ওপেন করা। শিল্প-কারাখানার মালিকদের দেউলিয়া করা এবং শ্রমিকদের বেকার বানানো।
১৫) নারী স্বাস্থ্য ও পুষ্টি : বাল্যবিবাহ হ্রাস করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ । বাল্যবিবাহ হ্রাস করে বাল্যপ্রেমে উৎসাহ দেয়া। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নিজস্ব সম্রাজ্যবাদ ঠিক রাখা।
এসব প্রতিটি অস্ত্রই তারা মজুদ করেছে তাদের ইচ্ছেমত যখন যেখানে যেভাবে নিজেদের স্বার্থে ব্যাবহার করার প্রয়োজন হয় তা করার জন্য। ওরা স্বেচ্ছাচারী, অবিশ্বাসী ও অত্যাচারী। কিন্তু এসবের শেষ অবশ্যই একদিন হবে ইনশাআল্লাহ।
আমরা ইহুদীবাদের চক্রান্ত থেকে তখনই বের হয়ে আসতে পারবো, যখন এসব কথিত ‘ভুয়া মূল্যবোধ’কে অস্বীকার করে লাথি দিয়ে দূরে ঠেলতে পারবো। যতদিন এ খাঁচা থেকে আমরা বের না হতে পারবো, ততদিন মন-মস্তিষ্কে, কার্যত ওদের হাতে বন্দি থাকবো এটা নিশ্চিত । এটাই দেখা যাচ্ছে একমাত্র প্রকৃত মুজাহিদীনগণ ব্যতিত অন্যদের বেলায়।
.
Comment