﷽
ঈমানের প্রথম খুটি তথা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য কালেমায়ে তাওহীদ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) জানাটা এতটাই জরুরী যে এটি ছাড়া আখিরাতে নাজাত পাওয়া যাবে না।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কি?
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হল তাওহীদের কালেমা। এর রয়েছে দুটি রূকন। যার একটি ব্যতীত অপরটি গ্রহণযোগ্য হবে না।
১) আল কুফর বিত তাগুত,
২) ঈমান বিল্লাহ।
এর কোন একটিকে অস্বীকার করা মানে গোটা কালেমাকেই অস্বীকার করা। এজন্যেই এদুটিকে তাওহীদের রূকন বলা হয়।
নামাজের কোন রূকন ছুটে গেলে যেমন পুরো নামাজই বাতিল হয়ে যায়। ঠিক তেমনি কারো যদি তাওহীদের কোন একটি রূকন ছুটে যায় তাহলে তার কালিমাও বাতিল হয়ে যাবে।
অতএব আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য এর রূকনগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আদায় করতে হবে।
এবার আসা যাক তাওহীদের সর্বপ্রথম রূকন আল কুফর বিত তাগুত কি?
কালেমার প্রথম অংশ লা ইলাহার মাধ্যমে আল কুফর বিত তাগুত করা হয়। অর্থাৎ সমস্ত প্রকার তাগুতকে অস্বীকার, বর্জন করাই হল আল কুফর বিত তাগুত। এটি তাওহীদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রূকন।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন,
فمن يّکفر باالطغوت ويٶ من با لله فقداستمسك بالعروت الوثق لا انفصام لها والله سميع عليم
অতএব যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনবে, সে অবশ্যই এমন এক রশিকে শক্তভাবে ধরলো যা কখনো ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন। (বাকারা ২:২৫৬)।
ولقد بعثنا فی کلّ أمّة رّسولا أن اعبدوا الله واجتنبوا الطغوت
“এবং নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তারা যেন শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করে এবং তাগুতকে বর্জন করে…”। (সূরা নাহল ১৬:৩৬)।
ألم تر إلی اللذين يزعمون أنّهم أمنوا بمآ أنزل إليك ومآ أنزل من قبلك يريدون أن يتحاکموٓا إلی الطغوت وقد أمروٓا أن يکفروا به ويرید الشطن ان يضلهم ضللا بعيدا
“… এবং তারা (বিরোধের ক্ষেত্রে) ফায়সালার জন্য তগুতের কাছেই যাতে চায় যদিও তারা তাগুতকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে। কিন্তু শয়তান তাদের সুদূর বিপথে নিয়ে যেতে চায়।’’ (সূরা নিসা ৪:৬০)।
والّذین إجتنبوا الطغوت ان يعبدوها وأنابوٓ إلی الله لهم البشری فبشّر عباد
“যারা ইবাদত না করার মাধ্যমে তাগুতকে প্রত্যাখান করে এবং অনুশোচনার সাথে আল্লাহ তাআলার অভিমুখী হয়, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদের ঘোষণা দাও।’’(সূরা যুমার ৩৯:১৭)
তাগুতকে না জানলে, তাগুতকে না চিনলে তাকে অস্বীকার করা যায় না। তাই তাগুতকে অস্বীকার, বর্জন করার জন্য আমাদেরকে জানতে হবে-
তাগুত কি?
তাগুত শব্দটি তুগইয়ান শব্দ থেকে আগত, যার অর্থ সীমালঙ্ঘন করা, বাড়াবাড়ি করা, স্বেচ্ছাচারিতা করা। অপরদিকে তাগুত শব্দের অর্থ সীমালংঘনকারী, আল্লাহদ্রোহী, বিপথে পরিচালনাকারী। তবে শরীয়তের পারিভাষিক অর্থে তাগুত ভিন্ন অর্থ বহন করে।
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় তাগুত হল আল্লাহকে বাদ দিয়ে যার ইবাদাত করা হয় এবং সে এতে সন্তুষ্ট থাকে।
তাগুত অনেক প্রকারের হয়। তন্মধ্যে বড় বড় তাগুত ৫টি। যথা :
১) আশ শাইত্বন,
২) আল হাওয়া (প্রবৃত্তি),
৩) আল্লাহর বিধান পরিবর্তনকারী শাসক,
৪) আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে বিচার-ফয়সালাকারী,
৫) যারা গায়েবের (অদৃশ্যের) জ্ঞান আছে এরূপ দাবী করে। যেমন : গণক, জ্যেতিষি, যাদুকর,পীর-ফকির- যারা মানুষের অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ ইত্যাদি অদৃশ্যের খবর আছে বলে দেওয়ার দাবী করে।
তাগুত বর্জনের উপায় :
আল্লাহ তা আলা বলেন,
قد کانت لکم أسوة حسنة فیٓ إبرهيم والّذين معهوٓ إذ قالوا لقومهم إنّا برءٶا منکم وممّا تعبدون من دون الله کفرنا بکم وبدا بيننا وبينکم العدوة والبغضٓاء أبدا حتّ تٶمنوا با لله وحدهوٓ
অবশ্যই তোমাদের জন্য ইব্রাহীম ও তার অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তারা বলেছিল তোমাদের সঙ্গে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যার ইবাদাত কর তাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি হল শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য। যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছ...(মুমতাহিনা ৬০:০৪)।
সুতরাং তাগুতকে অস্বীকার করার উপায় হল :
১) অস্বীকার করা : যবান ও মুখ দিয়ে; লা ইলাহা বলার দ্বারা এই উদ্দেশ্য নেব যে, আমরা সকল প্রকার তাগুতকে অস্বীকার,বর্জন করছি,
২) অন্তর দ্বারা : তাগুতকে অন্তর থেকে ঘৃণা- অপছন্দ করা। এর প্রতি অন্তরে শত্রুতা ও ক্রোধ পোষণ করা। একে অবিশ্বাস,অস্বীকার, বর্জন করা। এর সাথে কুফরি করা, একে বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য বলে অন্তবিশ্বাস করা,
৩) কাজের দ্বারা : তাগুতের বিরুদ্ধাচারণ করা; তাকে সিজদা না করা, তার বিধান না মানা, দুআ, আনুগত্য, ইবাদাত, দাসত্ব, বন্দেগী না করা এবং তাগুতের বিরুদ্ধে জিহাদ,ক্বিতাল,দ্বাওয়াহ ইত্যাদি কর্মকান্ড ও কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে তার প্রতি বিদ্বেষী ভাব প্রকাশ করা,
৪) তাগুতের বিপরীতে কাজ করা : আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা,তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করা,ফিরে যাওয়া,ভরসা করা, আল্লাহ ও তার রাসূলের পক্ষে কাজ করা।
চলবে... ইনশা আল্লাহ...
ঈমানের প্রথম খুটি তথা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য কালেমায়ে তাওহীদ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) জানাটা এতটাই জরুরী যে এটি ছাড়া আখিরাতে নাজাত পাওয়া যাবে না।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কি?
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হল তাওহীদের কালেমা। এর রয়েছে দুটি রূকন। যার একটি ব্যতীত অপরটি গ্রহণযোগ্য হবে না।
১) আল কুফর বিত তাগুত,
২) ঈমান বিল্লাহ।
এর কোন একটিকে অস্বীকার করা মানে গোটা কালেমাকেই অস্বীকার করা। এজন্যেই এদুটিকে তাওহীদের রূকন বলা হয়।
নামাজের কোন রূকন ছুটে গেলে যেমন পুরো নামাজই বাতিল হয়ে যায়। ঠিক তেমনি কারো যদি তাওহীদের কোন একটি রূকন ছুটে যায় তাহলে তার কালিমাও বাতিল হয়ে যাবে।
অতএব আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য এর রূকনগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আদায় করতে হবে।
এবার আসা যাক তাওহীদের সর্বপ্রথম রূকন আল কুফর বিত তাগুত কি?
কালেমার প্রথম অংশ লা ইলাহার মাধ্যমে আল কুফর বিত তাগুত করা হয়। অর্থাৎ সমস্ত প্রকার তাগুতকে অস্বীকার, বর্জন করাই হল আল কুফর বিত তাগুত। এটি তাওহীদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রূকন।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন,
فمن يّکفر باالطغوت ويٶ من با لله فقداستمسك بالعروت الوثق لا انفصام لها والله سميع عليم
অতএব যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনবে, সে অবশ্যই এমন এক রশিকে শক্তভাবে ধরলো যা কখনো ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন। (বাকারা ২:২৫৬)।
ولقد بعثنا فی کلّ أمّة رّسولا أن اعبدوا الله واجتنبوا الطغوت
“এবং নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তারা যেন শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করে এবং তাগুতকে বর্জন করে…”। (সূরা নাহল ১৬:৩৬)।
ألم تر إلی اللذين يزعمون أنّهم أمنوا بمآ أنزل إليك ومآ أنزل من قبلك يريدون أن يتحاکموٓا إلی الطغوت وقد أمروٓا أن يکفروا به ويرید الشطن ان يضلهم ضللا بعيدا
“… এবং তারা (বিরোধের ক্ষেত্রে) ফায়সালার জন্য তগুতের কাছেই যাতে চায় যদিও তারা তাগুতকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে। কিন্তু শয়তান তাদের সুদূর বিপথে নিয়ে যেতে চায়।’’ (সূরা নিসা ৪:৬০)।
والّذین إجتنبوا الطغوت ان يعبدوها وأنابوٓ إلی الله لهم البشری فبشّر عباد
“যারা ইবাদত না করার মাধ্যমে তাগুতকে প্রত্যাখান করে এবং অনুশোচনার সাথে আল্লাহ তাআলার অভিমুখী হয়, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদের ঘোষণা দাও।’’(সূরা যুমার ৩৯:১৭)
তাগুতকে না জানলে, তাগুতকে না চিনলে তাকে অস্বীকার করা যায় না। তাই তাগুতকে অস্বীকার, বর্জন করার জন্য আমাদেরকে জানতে হবে-
তাগুত কি?
তাগুত শব্দটি তুগইয়ান শব্দ থেকে আগত, যার অর্থ সীমালঙ্ঘন করা, বাড়াবাড়ি করা, স্বেচ্ছাচারিতা করা। অপরদিকে তাগুত শব্দের অর্থ সীমালংঘনকারী, আল্লাহদ্রোহী, বিপথে পরিচালনাকারী। তবে শরীয়তের পারিভাষিক অর্থে তাগুত ভিন্ন অর্থ বহন করে।
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় তাগুত হল আল্লাহকে বাদ দিয়ে যার ইবাদাত করা হয় এবং সে এতে সন্তুষ্ট থাকে।
তাগুত অনেক প্রকারের হয়। তন্মধ্যে বড় বড় তাগুত ৫টি। যথা :
১) আশ শাইত্বন,
২) আল হাওয়া (প্রবৃত্তি),
৩) আল্লাহর বিধান পরিবর্তনকারী শাসক,
৪) আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে বিচার-ফয়সালাকারী,
৫) যারা গায়েবের (অদৃশ্যের) জ্ঞান আছে এরূপ দাবী করে। যেমন : গণক, জ্যেতিষি, যাদুকর,পীর-ফকির- যারা মানুষের অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ ইত্যাদি অদৃশ্যের খবর আছে বলে দেওয়ার দাবী করে।
তাগুত বর্জনের উপায় :
আল্লাহ তা আলা বলেন,
قد کانت لکم أسوة حسنة فیٓ إبرهيم والّذين معهوٓ إذ قالوا لقومهم إنّا برءٶا منکم وممّا تعبدون من دون الله کفرنا بکم وبدا بيننا وبينکم العدوة والبغضٓاء أبدا حتّ تٶمنوا با لله وحدهوٓ
অবশ্যই তোমাদের জন্য ইব্রাহীম ও তার অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তারা বলেছিল তোমাদের সঙ্গে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যার ইবাদাত কর তাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি হল শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য। যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছ...(মুমতাহিনা ৬০:০৪)।
সুতরাং তাগুতকে অস্বীকার করার উপায় হল :
১) অস্বীকার করা : যবান ও মুখ দিয়ে; লা ইলাহা বলার দ্বারা এই উদ্দেশ্য নেব যে, আমরা সকল প্রকার তাগুতকে অস্বীকার,বর্জন করছি,
২) অন্তর দ্বারা : তাগুতকে অন্তর থেকে ঘৃণা- অপছন্দ করা। এর প্রতি অন্তরে শত্রুতা ও ক্রোধ পোষণ করা। একে অবিশ্বাস,অস্বীকার, বর্জন করা। এর সাথে কুফরি করা, একে বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য বলে অন্তবিশ্বাস করা,
৩) কাজের দ্বারা : তাগুতের বিরুদ্ধাচারণ করা; তাকে সিজদা না করা, তার বিধান না মানা, দুআ, আনুগত্য, ইবাদাত, দাসত্ব, বন্দেগী না করা এবং তাগুতের বিরুদ্ধে জিহাদ,ক্বিতাল,দ্বাওয়াহ ইত্যাদি কর্মকান্ড ও কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে তার প্রতি বিদ্বেষী ভাব প্রকাশ করা,
৪) তাগুতের বিপরীতে কাজ করা : আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা,তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করা,ফিরে যাওয়া,ভরসা করা, আল্লাহ ও তার রাসূলের পক্ষে কাজ করা।
চলবে... ইনশা আল্লাহ...
Comment